![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
[img|http://s3.amazonaws.com/somewherein/pictures/BirdSafetyHouse/BirdSafetyHouse-1434631007-57f3351_xlarge.jpg
বৃক্ষ সঙ্কটসহ অনুকূল আবহাওয়া আর মানুষের আন্তরিকতা বোধের অভাবে শ্যামল বাংলার বিভিন্ন প্রজাতির পাখি যখন কালের আবর্তে হারিয়ে যেতে বসেছে, ঠিক তখন পাখির অভয়াশ্রম গড়ে তোলার ব্যতিক্রমী দায়িত্ব কাঁধে নিয়েছেন সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার আগনুকালী গ্রামের সাংবাদিক মামুন বিশ্বাস ও ইমন সরকার। রাস্তার ধারে, পুকুরের পাড়ে, জমির ধারে যেখানেই বড়সড় আর মাঝারি ধরনের গাছ, সেখানেই ডালে ডালে কলস বাঁধা। বাজারে যাচ্ছিলেন স্থানীয় সবুজ হোসেন। তাঁকে থামিয়ে ঘটনাটি জিজ্ঞেস করলে হেসে বললেন, 'এসব আমাদের মামুন ও ইমন এর কান্ড। কলসি দিয়ে পাখিদের বাসা বানিয়ে দিয়েছে। সাংবাদিক এর পাশাপাশি ছেলেটা ইমনকে নিয়ে এসবেই মেতে থাকে। এদের সাথে কাজ করেন নবী বললেন, প্রথম দিকে আমাদের সবাইকে সবাই পাগল বলতো। এখন মাইনসে পায়তো আমাগো মাথায় তুলে রাখে। এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে লক্ষ করা গেল, সবার মধ্যেই তাঁকে 'পাগল' বলার ভেতরেও এক ধরনের অহঙ্কার কাজ করছে। মামুনের সংগঠনের নাম The Bird Safety House এর সাথে জড়িত আছে কামরুল,নবী,শাহীন,সবুজ সহ আরো অনেকই ।একে ওকে জিজ্ঞেস করতেই তাঁরা মামুনের বাড়ির ঠিকানা দিলেন। নাম শুনে বিশাল মানুষ মনে হলেও হালকা-পাতলা গড়নের মামুনকে দেখে বিশ্বাস করা শক্ত যে এতো বড় একটি কর্মযজ্ঞে তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বাড়ির সামনে বসে কথা হলো মামুনের সঙ্গে। এতো কাজ থাকতে পাখির জন্য বাসা বানানোর ইচ্ছে হলো কেন? প্রশ্ন করতেই তিনি জানান, আমাদের সময় থাকতে এই প্রকৃতির প্রতি যতœবান না হলে অদূর ভবিষ্যতে এগুলো হয়তো হারিয়ে যাবে আমাদের দেশ থেকে। পাখির জন্য নিরাপদ বাসা। আমরা পাখি শিকার থেকে নিজে বিরত থাকি এবং অন্যকে বিরত থাকতে বলি।বিভিন্ন ধরনের পাখি বিভিন্ন পোকা মাকড় খায়, কোন কোন পাখি সাপ ধরে খায়, কোন পাখি ইঁদুর ধরে খায়, কোন কোন পাখি উইপোকা ধরে খায়, কেউ মশা ধরে খায়। একটা বিষয় মনে রাখতে হবে পরিবেশ ধ্বংস করলে একদিন আমরাই অথবা আমাদের বংশধর পাবে তার বিরূপ প্রতিদান। পাখিরা হল আমাদের প্রকৃতির বন্ধু। এরাই আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশকে বাঁচিয়ে রেখেছে। প্রাকৃতিক পরিবেশ বেঁচে থাকলে আমরাও বেঁচে থাকবো।
তিনি আরো বলেন কিছু দিন আগে মোটর বাইক নিয়ে বাড়ী ফেরার পথে একটি আমগাছের পাশে কয়েকটি নিরাশ্রয় শালিকের বাচ্চা রাস্তার ধারে পড়ে থাকতে দেখে তাঁর মন কেমন করে ওঠে। মনে হয় 'আহারে ওরা ওদের মাকে হারিয়ে ফেলেছে, এই বাচ্চাগুলো এখন কোথায় যাবে'! পাখিগুলোকে অন্য একটি গাছের ডালে তুলে দিয়ে বাড়ি ফিরে ইমনের সাথে অনেক ভেবে মোটামুটি একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তিনি। সেই ভাবনা থেকে পরদিন বের হন কলসি কেনার জন্য। প্রথমে নিজের বাড়ির গাছে পাচটি কলস বাঁধেন। কিছু দিন যেতেই এসব কলসে আশ্রয় নেয় পাখি।মামুন আর ইমন অবাক হয়ে দেখতে থাকেন পাখিদের ঘর-সংসার, বংশবৃদ্ধি। নিজেদের সাফল্যে মুগ্ধ হন দুইজন। কাজের ফাকে তিনি এসব কাজ করেন।এছাড়া তারা অনলাইনে একটি পেজ খুলেছে মানুষকে সচেতন করতে http://www.facebook.com/TheBirdsafetyhouse তাদের কাজের ছবি সব সময় আপডেট হচ্ছে। বিভিন্ন জাতের গাছে ১০০টি শূন্য কলস লাগান ।গ্রামের চারদিকে বিভিন্ন ধরনের জনসচেতন মুলক পোষ্টার ব্যানার টানানো হয়েছে ।মাটির তৈরি কলস কেনেন তারা প্রতিটি কলসের সূতা সহ দাম ৪৭ টাকা । প্রতিটি কলস একটু বাঁকা করে বাঁধা হয়। বৃষ্টির পানি বেরুবার জন্য কলসের নিচে ফুটো করে দেওয়া হয়। খড়কুটো সংগ্রহ করে পাখিরা নিজেই কলসের ভেতর বাসা তৈরি করে।তাদের ১০০০০ হাজার কলসি বাধার টাগেট আছে বলে যানান।তারা বলেন সরকারী পৃষ্টপোষকা পেলে সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলা পাখির অভ্যয় অরণ্য গড়ে তোলা সম্ভব।
©somewhere in net ltd.