![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গুপী বাঘার মত আমারও নতুন দেশ দেখার বড্ড শখ। দেশে যাব মনস্থির করতেই পুরোনো সে শখ মাথা চাড়া দিয়ে উঠল।যাওয়ার পথে দু’একটা দেশে ঢুঁ মেরে যেতেই হবে, রথ দেখা হবে ,কলা বেচাও হবে। ছোটবেলায় “ইস্তাম্বুল যাত্রীর পত্র” বইয়ে ইস্তাম্বুলের নীল মসজিদ বা Blue Mosque সম্পর্কে পড়ে দেখার সাধ হয়েছিল কিন্তু সাধ্য ছিল না। সে বইয়ের লেখকের নাম বা বিষয়বস্তুর অনেক কিছু আজ আর আমার মনে নেই। এরপর মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা দিতে প্রথমবার যখন ঢাকা আসি আমাদের প্রতিবেশী গোবিন্দদার মুখে শুনেছিলাম ইস্তাম্বুল নাকি মসজিদের শহর। দেশে ফেরার প্রাক্কালে নীল মসজিদ দেখার সুপ্ত বাসনাকে উসকে দিলেন আশরাফ ভাই। ফেসবুকে আড্ডা দিতে দিতে আশরাফ ভাইয়ের কাছেই শুনলাম উনি ইস্তাম্বুলে ৮ দিন কাটিয়েছিলেন কিন্তু ওর মনে হয়েছে অনেক কিছুই দেখতে বাকী ,আরো কিছু দিন থাকতে পারলে ভাল হত ইত্যাদি । ভেবেচিন্তে টার্কিশ এয়ারলাইন্সে ঢাকা যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম, পথে তুরস্ক দেখা হবে বাড়তি পাওনা। “ট্রাভেল ওয়ার্ল্ড” এর দেলোয়ার ভাইকে ৭ দিন ইস্তাম্বুলে থাকার বাসনা জানাতেই উনি বাগড়া দিলেন- এতদিন থেকে কি করবেন, দু দিনই যথেস্ট। একদিনের সিটি ট্যুর, আর একদিনের বসফরাস ক্রুইজ, ইস্তাম্বুলে বিশেষ কিছু দেখার নেই।আশ্রাফ ভাই এবং দেলোয়ার ভাই দুজনের দৃস্টিভঙ্গি ভিন্ন হওয়ার কারনেই দুজনের বক্তব্য দু’রকম। মনে পড়ল সুখরাম ঝুনঝুনওয়ালাকে।রবীন্দ্রসাহিত্য আলোচনা সভায় বিশাল অঙ্কের চাঁদা দিয়ে মাড়োয়ারী ব্যাবসায়ী সুখরাম ঝুনঝুনওয়ালা হলেন সভাপতি।সব শেষে সভাপতির ভাষন দিতে উঠে দাড়ালেন সুখরাম “ ভাই সব আপনারা সবাই রবীন্দ্রনাথকে সাহিত্যিক হিসেবেই চেনেন কিন্তু তিনি যে একজন বড় মাপের ব্যাবসায়ী ছিলেন তা আপনারা বোধহয় জানেন না। বিনা পুঁজিতে, শুধুমাত্র কাগজ কলম দিয়ে তিনি বিপুল অর্থ উপার্জন করেন। আপনারা এই কীর্তিমান ব্যাবসায়ীর স্মরন সভায় আমাকে সভাপতিত্ব করার সুযোগ দেওয়াতে আমি আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ” ব্যাবসায়ী দেলোয়ার ভাই ইস্তাম্বুলে ব্যাবসায়ের কিছু খুজে পাননি্ বলেই হয়ত তার বক্তব্য এই রকম । মধ্যপন্থা হিসেবে ইস্তাম্বুলে পাঁচ দিনের যাত্রাবিরতির ব্যাবস্থা রেখে টিকিট কাটলাম।
যাত্রাঃ- টার্কিশ এয়ারলাইন্সের বোয়িং সময় মতই রাত দশটা পঞ্চাশ মিনিটে টোরোন্টোর পিয়ারসন্স ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে উড়াল দিল। বিমানের ক্যাপ্টেনের ঘোষনায় জানলাম ইস্তাম্বুল পৌঁছতে আমাদের প্রায় ৮ ঘন্টা লাগবে। কিছুক্ষন পর বিমানবালা রাতের খাবার দিয়ে গেলে খাওয়াদাওয়া সেরে নিয়ে, চোখে ঠুলি পরে,চাদর মুড়ি দিয়ে নিদ্রা দেবীর কোলে আশ্রয় নিলাম। বিমান বালার ডাকে যখন ঘুম ভাঙ্গল ইস্তাম্বুল পৌছতে তখন ঘন্টা খানেক বাকি। বিমানের খাওয়া দাওয়া শেষ হওয়ার কিছুক্ষনের মধ্যেই ঘোষনা এল “আর অল্প কিছুক্ষনের মধ্যেই আমরা ইস্তাম্বুলের কামাল আতা তুর্ক বিমানবন্দরে পৌছাব।বিমান থেকে নেমে ভিসা নিতে গিয়ে যথারীতি অতিরিক্ত জেরার মুখে পড়লাম। এখন গা সওয়া হয়ে যাওয়ায় ইমিগ্রেশান অফিসারের জেরাকে কোন পাত্তাই দিলাম না। বিশ ডলার ভিসা ফি নিয়ে অফিসার এন্ট্রী ভিসার সীল মেরে পাসপোর্ট ফেরত দিলেন। কনভেয়ার বেল্ট থেকে মালামাল জোগাড় করে নিয়ে এলাম বি্মান বন্দর লাউঞ্জে।এবার ট্যাক্সির পালা। টোরোন্টো থেকে আগে ভাগেই হোটেল ঠিক করে রেখেছিলাম ইস্তাম্বুল শহরের পুরোন অংশ সুলতান আহমেত এ। পুরোন এ এলাকার সুবিধা হল দর্শনীয় জায়গা গুলো হোটেল থেকে কাছেই।বিমান বন্দর লাউঞ্জে ঢুকতেই সহাস্য বদনে এগিয়ে এলেন ট্যাক্সি দালাল ভাই। হোটলের ঠিকানা দেখে নিয়ে জানালেন আরামদায়ক, বিলাসবহুল,দ্রুতগতির, নিরাপদ ট্যাক্সির ব্যাবস্থা করে দেবেন পঞ্চান্ন ডলারের বিনিময়ে। পঞ্চাশ ডলার ট্যাক্সি ড্রাইভারের আর পাঁচ ডলার হল দালাল ভাই এর কমিশন। “দালাল হইতে সাবধান” মনে পড়ায় তাকে খারিজ করে দিয়ে গেলাম ট্যুরিস্ট ইনফরমেশান সেন্টারে। এখানে ট্যাক্সির জন্য দিতে হবে ১০০ ডলার। ধন্যবাদ জানিয়ে বিদায় নিয়ে রাস্তায় চলে এলাম। লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ট্যাক্সিগুলো একের পর এক যাত্রী তুলে নিয়ে রওয়ানা দিচ্ছে। আশরাফ ভাইয়ের কাছে শুনেছিলাম ইস্তানবুলের ট্যক্সি চালকেরা বিশ্বস্ত,পরে বুঝেছিলাম তারা বিপদজনক নয় কিন্তু ঠগ।কুছ পরোয়া নেহি মনে করে সামনে ট্যাক্সি এসে দাড়াতেই মালপত্র তুলে দিয়ে উঠে বসলাম। চালক ভাই হোটেলের ঠিকানা দেখে নিয়ে রওয়ানা দিলেন। মুশকিল হল তার ইংরাজীর দৌড় Yes, No, Very good পর্যন্ত। সুলতান আহমেত এলাকা পুরোনো ঢাকার মত ঘিঞ্জি এবং ট্রাফিক জ্যাম লেগেই আছে। ঘন্টা দুয়েক এ গলি সে গলি ঘুরিয়ে চল্লিশ লিরার ট্যাক্সি ভাড়াকে ৬৫ লিরা বানিয়ে অবশেষে যখন চালক ভাই হোটেলের সামনে নামিয়ে দিলেন তখনো দিনের আলো আছে।হোটেল রুমে মালপত্র রেখে স্নান করলাম, কফি খে্লাম। কিছুক্ষন বিশ্রাম নিয়ে এলাম হোটেলের রিসিপশানে। রিসিপশানিস্টকে জানালাম পরের দিন থেকে ইস্তাম্বুল দেখার বাসনা। বিভিন্ন ট্যুর কোম্পানীর তালিকা হাজির করলে শুধুমাত্র পরের দিনের জন্য সিটি ট্যুর বুক করলাম একশ ডলার দিয়ে। ভেবেছিলাম যেহেতু এই হোটেলে থাকছি হোটেলের তরফ থেকে সহযোগিতা পাব,কিন্তু সে গুড়ে বালি, এখানেও গচ্চা। একটু পরেই দেখলাম সিটি ট্যুর টিকিটের প্রকৃত দাম ৮০ ডলার এবং ২০ ডলার হোটেলের রেফারেন্স ফি। সরাসরি ট্যুর কোম্পানী থেকে টিকেট কিনলে এই ২০ ডলার বাঁচত।সেই সন্ধ্যাতেই শুরু করলাম পায়ে হেটে শহর পরিক্রমা। (চলবে)
২| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৪০
সোজা কথা বলেছেন: অভিজ্ঞতাটা ভালো।অন্য কেউ যাওয়ার সময় কাজে লাগবে।তারা হয়ত দালাল আর অতিরিক্ত গচ্ছার হাত থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারবে !
৩| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:০৯
বীরেনদ্র বলেছেন: @খেয়াঘাট, পরবর্তী পর্ব থেকে ছবি থাকবে।
৪| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:২১
মনিরা সুলতানা বলেছেন: ভ্রমণ কাহিনি ভাল লাগে ...
ছবি দিলে আরো ভাল লাগত
৫| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:০৪
পাখা বলেছেন: চলুক সাথে আছি...
৬| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:০৯
মামুন রশিদ বলেছেন: মাড়োয়ারী সুখরাম ঝুনঝুনওয়ালার গল্পটা বেশ লেগেছে । চলতে থাকুক ।
৭| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ২:২১
শোভন শামস বলেছেন: ভ্রমণ কাহিনি ভাল লাগে
ধন্যবাদ
চলতে থাকুক
৮| ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০৮
ভষ্ম মানব বলেছেন: ছবি নাই কেন ? যা পড়ুম না
৯| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:০০
এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন: ইসলাম তার আত্মা হারিয়েছে। এ বাক্যটি অপ্রিয় হলেও বর্তমান সময় সত্যি মানতে হয়। পৃথিবীর প্রায় সকল মুসলীম দেশেই গাদ্দারীতে ভরা।
১০| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:৪০
েবনিটগ বলেছেন: আমি বিভিন্ন লকের কাছে শুনেছি istanbul নাকি পুরা taut বাটপার এ ভঁরা
১১| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫৮
বীরেনদ্র বলেছেন: @েবনিটগ, Yes it is true
১২| ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৮:১০
ভ্রমন কারী বলেছেন: টাউট, বাটপার গো দেশ দেখতে মন চায়
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:০৬
খেয়া ঘাট বলেছেন: কিছু ছবি দিলে ভালো হতো ভাই।