![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভারাডেরো
ভারাডেরোর এয়ারপোর্ট খুবই ছোট কিন্তু বেশ সাজানো গোছানো এবং পরিস্কার পরিচ্ছন্ন। কানাডা, রাশিয়া, চীন ইত্যাদি অল্প কয়েকটা দেশের সর্বসাকুল্যে কুড়ি পঁচিশটা বিমান প্রতিদিন ওঠানামা করে এখান থেকে।ইমিগ্রেশান অফিসার ভদ্রমহিলা ইতিপূর্বে কোন বাংলাদেশী পাসপোর্ট দেখেননি। পাসপোর্ট হাতে নিয়ে ভাঙ্গা ভাঙ্গা ইংরেজীতে জানতে চাইলেন আমার দেশ কোথায়।বাধ্য হয়ে বলতে হল ভারতের পাশের দেশ হল আমার দেশ।ক্যামেরায় ছবি তুলে কম্পিউটারে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো তুলে নিয়ে জানতে চাইলেন যে আমার পাসপোর্টে সীল মারবেন কিনা। এ প্রশ্নের কারন কি তা জানতে চাইলে অফিসার জানালেন যে অনেক আমেরিকার নাগরিক কানাডা হয়ে ঘুরতে আসেন কিউবায়।যেহেতু আমেরিকার সাথে কিউবার কুটনৈতিক সম্পর্ক নেই আমেরিকার পাসপোর্টে তারা সীল মারেন না, অর্থাৎ কোনো আমেরিকার নাগরিক যে কিউবা ঘুরে গেলেন তার কোন প্রমান পাসপোর্টে রাখেন না তারা। কূটনৈতিক সম্পর্ক যখন নেই তখন এ ব্যাবস্থাই বা কেন?এর সহজ উত্তর হল অনান্য দেশের মতই কিউবারও আমেরিকান ডলারের খুব দরকার।
ইমিগ্রেশান শেষে মালপত্র যোগাড় করার জন্য এসে দাড়ালাম “Baggage Claim” এ।এখানকার কনভেয়ার বেল্ট ঢাকা বিমানবন্দরের মতই। টোরোন্টো বা উন্নত দেশের বিমানবন্দরগুলোতে দেখেছি ইমিগ্রেশান শেষ করে “Baggage Claim” এসে পৌছানোর আগেই মালপত্র এসে উপস্থিত। কিন্তু ঢাকার মত এখানেও মালপত্র গাড়িতে করে বয়ে নিয়ে এসে ফেলা হচ্ছিল কনভেয়ার বেল্টে ফলে স্যুটকেস দুটো খুজে পেতে সময় লাগল প্রায় ঘন্টা খানেক। কাস্টমস পার হয়ে লাউঞ্জে এসে Sunwing Airlines এর বুথে যোগাযোগ করলাম।এয়ারলাইন্স কর্মী একটা কার্ডে আমাদের নাম লিখে হাতে দিলেন, তারপর হোটেলের নাম জেনে নিয়ে জানালেন যে বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে গিয়ে আমাদের চড়তে হবে ২৭ নম্বর বাসে। বিমানবন্দর থেকে বের হয়েই বুঝলাম গরমের দেশে এসে পড়েছি। তাপমাত্রা খুব বেশী না হলেও আর্দ্রতার কারনে বেশ গরম লাগছিল।বিমান বন্দরের বাইরে সামান্য কয়েকটা ট্যাক্সি এবং পনের বিশটা বাস দাঁড়িয়ে।ট্যুর গাইড আমাদের কার্ড নিয়ে নাম পড়লেন।পদবী ভট্টাচার্য্য নাম দেখে এবং গিন্নীর শাঁখা সিন্দুর দেখে মন্তব্য করলেন যে আমরা ভারতীয় এবং কোলকাতা থেকে এসেছি।সবিনয়ে জানালাম যে আমরা বাংলাদেশের বাঙ্গালী।ভদ্রলোক জানালেন যে রবীন্দ্রনাথ হলেন তার প্রিয় কবি ।এই সুদুর পরবাসে স্প্যানিশ ভাষাভাষীর মুখে নিজ ভাষার কবির নাম শুনে গর্বে বুক ফুলে উঠল দুই ইঞ্চি।(চলবে) ।
বাইরের ভেজা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে কিছুক্ষন কাটানোর পর বাসে ওঠার সুযোগ পেলাম।বেশ আরামদায়ক, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত নতুন চকচকে বাস।বাসের আকার এবং গঠন আমেরিকা কানাডার বাসগুলো থেকে আলাদা।প্রথমে কিউবার তৈরী বাস ভাবলেও একটু পরেই সে ভুল ভাঙ্গল। বাসের গায়ে সোনালী ধাতব অক্ষরে লেখা Yutong ।তার পাশের চীনা ভাষার কিছু শব্দ দেখে বুঝলাম এ বাসগুলো চীনের তৈরী।কিউবাতে ব্যাক্তিগত মালিকানার কোন বাস নেই।বাসগুলো সরকারী মালিকানার Transtour, HavanaTours, Transgaviota ইত্যাদি বিভিন্ন কোম্পানী পরিচালনা করে থাকে।সমস্ত বাসই চমৎকার। সাতদিনের কিউবা সফরে কোন ভাঙ্গা বা রংচটা বাস চোখে পড়ে নি।
ঘন্টা খানেক পর বাস চলা শুরু হলে ট্যুরগাইড মিঃ রামন সবাইকে স্বাগত জানিয়ে কিউবা সম্পর্কে ট্যুরিস্টদের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো জানানো শুরু করলেন। রুশদেশের “ইভান” নামের মতই “রামন” নাম স্প্যানিশ ভাষাভাষী দেশগুলোতে ব্যাপক প্রচলিত।একদিনে আমরা রামন নামের তিনজন ট্যাক্সিচালকের দেখা পেয়েছিলাম ভারাডেরোতে।দু’ধরনের ট্যাক্সি আছে কিউবায়।সরকারী কোম্পানীর এবং ব্যাক্তি মালিকানার।ব্যাক্তি মালিকানার ট্যাক্সি সম্পর্কে ট্যুরগাইড সতর্ক করে দিলেও কিউবার কোথাও কখনো নিরাপত্তার কোন অভাব বোধ করিনি।ব্যাক্তি মালিকানার ট্যাক্সিগুলোর নম্বর P দিয়ে শুরু অর্থাৎ সেগুলো হল Private।মজার ব্যাপার হল ব্যাক্তিমালিকানার অধিকাংশ ট্যাক্সি হল ১৯৫৯ সালের কিউবার বিপ্লবের সময়কার আমেরিকান গাড়ী।বিরাট আকারের Dodge, Buick, Chrysler, Ford, ইত্যাদি ট্যাক্সি প্রায়ই চোখে পড়ে যা আমেরিকা কানাডাতে পুরোনো গাড়ী প্রদর্শনী বা Vintage Car Show তেই দেখা যায়। টোরোন্টোর এমনি এক প্রদর্শনীতে ১৯৩২ সালের তৈরী একটা ফোর্ড গাড়ীর দাম হাকা হচ্ছিল ১২০,০০০ ডলার, অথচ ভারাডেরোয় দেখলাম ১৯২৭ সালের তৈরী একটা ফোর্ড ট্যাক্সি দিব্বি চলছে। গাড়ীগুলো এত পূরোনো হলেও কিন্তু কালো ধোয়া বা বিকট শব্দ নেই কোনোটার।ত্রুটিপূর্ন কো্নো গাড়ীর রাস্তায় চলাচল করার অনুমতি নেই এখানে। সামান্য কিছুদিন আগ পর্যন্ত কিউবাতে ব্যাক্তিগত ট্যাক্সিও ছিল না। সব বাড়ির মালিকানা এখন বাড়ির বাসিন্দাদের যা আগে ছিল রাস্ট্রের। বাড়ী গাড়ী বেচাকেনা বা হাত বদল করার অনুমতি মিলেছে মাত্র দুই বছর।
২| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৫৫
বীরেনদ্র বলেছেন: জগত জুড়িয়া একজাতি আছে সে জাতির নাম মানুষ জাতি।@বিদ্রোহী
©somewhere in net ltd.
১|
০৩ রা ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৪২
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: জলের বুকে চাঁদের ছায়া দেখে কেমন ভাবুক হয়ে গেলাম!
একই চাঁদ একই জোছনা..... একই তার প্রতিবিম্ব ..অথচ আমরা পৃথিবীটাকে কত ভিন্ন সীমানায় ভিন্ন নামে বাগ করে ফেলেছি।
আকাশ নদী সগর প্রকৃতির নিত্যতায় কি দারুন ঐক্যের সুর!
অথচ মানুষগুলোই কেমন ভিন্ন ভিন্ন- যদিও তাদের মৌলিক চাহিদাগুলো সারা দুনিয়াতেই এক! হাসি, কান্না, ক্ষুধা, যৌনতা, প্রেম রাগ .কষ্ট..সব সব..একই! শুধু মানুসগুলো ভিন্ন হয়ে লড়ছে......................অন্তহীন...................