নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Bangladesh my home

বীরেনদ্র

Nothing much to say about

বীরেনদ্র › বিস্তারিত পোস্টঃ

সক্রেটিসের দেশে (প্রথম পর্ব) ।

২৭ শে আগস্ট, ২০১৬ রাত ৩:৩০


বছর দু'তিন আগে ইস্তাম্বুলের বসফরাস ক্রুইজে ট্যুর গাইড জানিয়েছিলেন যে ইস্তাম্বুল থেকে বেশ অল্প খরচে এথেন্স ঘুরে দেখা সম্ভব। সময় এবং ট্যাকের জোর কম থাকায় সে যাত্রা এথেন্স যাওয়া হয় নি, তবে মনে মনে ঠিক করে রেখেছিলাম যে আবার কখনো যদি ইস্তাম্বুল যাওয়া পড়ে তো এথেন্স না দেখে ঘরে ফিরবো না।মাস দু'য়েক আগে প্রান্তিক ট্রাভেল এজেন্সীর মনোজদা যখন টার্কিশ এয়ারলাইন্সে কানাডা যাওয়া আসার টিকেট কেটে দিচ্ছিলেন তখন তার কাছে এথেন্স শহর ঘুরে দেখার মনের ইচ্ছে প্রকাশ করি। সেই মোতাবেক রিটার্ন টিকেটে দেশে ফেরার সময় চারদিনের জন্য এথেন্স ভ্রমনের ব্যাবস্থা করে দিয়েছিলেন তিনি।
টোরোন্টোর পীয়ারসন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে টার্কিশ এয়ারলাইন্সের বিমান রাত বারোটায় উড়াল দিয়ে ইস্তাম্বুলের মাটি স্পর্শ করলো পরদিন বিকেল তিনটেয়। ইন্টারন্যাশনাল ট্রান্সফারের তীর চিহ্ন অনুসরন করে গিয়ে টার্কিশ এয়ার লাইন্সের এথেন্স ফ্লাইটের নির্দিস্ট গেটে পৌছে আবিস্কার করলাম যে বিমানের উড়াল দিতে নির্দিস্ট সময়ের চেয়ে এক ঘন্টা দেরী হবে। অনান্য সব বিমানবন্দরের মত ইস্তাম্বুলেও ফ্রী ওয়াইফাই থাকা সত্বেও সুইচের ভিন্নতার কারনে খুব বেশীক্ষন ব্রাউজিং করা গেল না। অগত্যা ওয়েটিং এরিয়ার পাশের সীটের সহযাত্রী গুজরাটের দম্পতির কাছ থেকে এথেন্স ভ্রমনের ব্যাপারে তালিম নেওয়া শুরু করলাম । ভদ্রলোকের দেওয়া তালিম এথেন্স সফরে বেশ কাজে লেগেছিলো- জীবনের ধন কিছুই যায় না ফেলা। এথেন্স বিমানবন্দর ইউরোপ বা উত্তর আমেরিকার বড় এয়ারপোর্টগুলোর চেয়ে অনেক হত দরিদ্র। কাস্টমস এবং ইমিগ্রেশানের ঝামেলা চুকিয়ে বাইরে বেরোতে বেরোতে বেজে গেল রাত এগারোটারও বেশী। আজ থেকে বহু বছর আগে নড়াইলে প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা শেষে প্রতিবেশী গোরাদা'র আসতে দেরী দেখে ভয়ে কেঁদেকেটে চোখ মুখ ফুলিয়ে ফেলেছিলাম। কিন্তু আজ পৃথিবীর যে কোনো প্রান্তে স্বচ্ছন্দে নিরাপদে চলাচল করতে আমার খুব একটা সমস্যা হয় না। দু'একবার টাউটের পাল্লায় পড়ে যেমন টাকা পয়সা হারিয়েছি, অনেক ক্ষেত্রে আবার টাউটকে টেক্কাও দিয়েছি । ইস্তাম্বুলে রেস্তোঁরায় খাওয়ার আগে বিয়ারের দাম জিজ্ঞেস না করে কিছু ডলার খুইয়েছিলাম, আবার কোলকাতার নেতাজী সুভাষ চন্দ্র এয়ারপোর্টে এক টাউটকে কিছুটা জব্দও করেছিলাম। গত ফেব্রুয়ারীতে ইমফল থেকে কোলকাতা হয়ে যখন ঢাকা ফিরছিলাম। নেতাজী সুভাষ চন্দ্র এয়ারপোর্টে বেশ কিছু বাংলাদেশী টাকা বিনিময় করার দরকার পড়ল। এক টাউট তখন বাঙ্গাল মনে করে আমাকে হাইকোর্ট দেখাতে চাইলো। তামাশা দেখতে কিছুক্ষন চুপ করেই ছিলাম। কিন্তু টাউট ভাই যখন ভারতীয় আইনে আমাকে দোষী সাব্যস্ত করতে চাইলো- "এত টাকা কিভাবে আনলেন, ভারতীয় আইন অনুসারে আপনি এত টাকা আনতে পারেন না। তখন বাধ্য হয়ে বললাম " দাদা আপনার এ ফন্দি ফিকির তো দ্বিতীয়ভাগে পড়ে এসেছি অনেক আগে, নতুন যদি কিছু ভান্ডারে থাকে তো সেগুলো ছাড়ুন। কানাডিয়ান পাসপোর্ট দেখিয়ে বললাম বেশী ট্যা ফোঁ করলে পুলিস ডাকবো। টাউট ভাই সাথে সাথে পিঠটান দিয়েছিলো।
আজকাল ইন্টারনেটের কল্যানে অনেক তথ্যই ঘরে বসে পাওয়া সম্ভব। কম খরচের হোটেল, কম পয়সায় ঘোরাঘুরি , কম পয়সায় খাওয়াদাওয়া ইত্যাদি সব "কম" এর প্রিন্ট করা কপি সাথে করে নিয়ে এসেছিলাম টোরোন্টো থেকে। কিন্তু প্রথমেই হোচট খেলাম এথেন্স এয়ারপোর্টের বাইরে এসে। আশা ছিলো বিমানবন্দরের সাবওয়ে স্টেশান থেকে M3 লাইনের ট্রেন ধরে কম পয়সায় হোটেলে পৌছে যাবো। সেদিন ছিলো রবিবার। সাবওয়ে স্টেশানে পৌছে টিকেট কাটতে গিয়ে জানলাম যে সেদিন পাতাল রেলের কর্মচারীদের ধর্মঘট। গ্রীসের নির্বোধ রেলওয়ে কর্মচারীরা সপ্তাহের কাজের দিনগুলোতে ধর্মঘট না ডেকে ছুটির দিনে কেনো ধর্মঘট ডাকলো তা আমার বাংলাদেশী ঘিলুতে কিছুতেই ঢুকলো না। মেট্রোরেল কাউন্টারের ভদ্রলোক কম খরচে হোটেলে পৌছানোর বিকল্প উপায় বাতলে দিলেন। ট্যাক্সি নিতে গিয়ে দাড়ালাম লম্বা লাইনে। একজনের জন্য ট্যাক্সি ব্যায়বহুল হবে বিধায় ট্যাক্সি স্ট্যান্ডের ট্রাফিক পুলিশ ভাই হোটেলের ঠিকানা জেনে নিয়ে আমাদের চারজনের দল তৈরী করে একই ট্যাক্সিতে মজুদ করে দিলেন। ট্যাক্সির যাত্রীরা হলেন জার্মান প্রবাসী একজন ব্রাজিলীয় ভদ্রলোক, নেদারল্যান্ডের এক বালক, তার গার্লফ্রেন্ড ইতালীয় বালিকা এবং অধম। স্থুলকায় হওয়া অধিকাংশ ক্ষেত্রে সমস্যা সৃস্টি করলেও গাড়ীতে চলাফেরা করার সময় তা কাজে লাগে। ড্রাইভারের পাশের একক সীটে চড়ে বসে এথেন্স নগরী কেন্দ্রের দিকে রওয়ানা দিলাম রাত বারোটার কিছু আগে। রাতের অল্প আলোতে এথেন্স শহর দেখতে দেখতে এগিয়ে চললাম। রবিবার ছুটির দিন এবং রাত গভীর হওয়ায় কারনে গাড়ী চলছিল বেশ দ্রুতগতিতে। গাড়ীতে সহযাত্রীদের সাথে গল্পে গল্পে যে নতুন বিদ্যালাভ করলাম তা হলো- ইংরেজীর I এর পরিবর্তে গ্রীক ভাষায় ক্ষেত্র বিশেষে ব্যবহার করা হয় পাঁচ পাঁচটি ভিন্ন ভিন্ন অক্ষর। ট্যাক্সি এথেন্স ডাউনটাউনের মোকা হোটেল( Athens Moka Hotel)এর সামনে আমাকে নামিয়ে দিলো রাত সাড়ে বারোটার দিকে।জামা কাপড় পালটে, স্নান সেরে, দাঁত মেজে বিছানা নিতে আরো এক ঘন্টা কেটে গেলো। ক্লান্ত থাকার পরেও যখন ঘুম আসছে না সাথে থাকা অব্যার্থ দাওয়াই ঘুমে বড়ি গলাধঃকরন করে নিলাম এবং এপাশ ওপাশ করতে করতে নিজের অজান্তেই এক সময় নিদ্রাদেবী দেখা দিলেন। (চলবে)।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৬ ভোর ৬:২৮

চাঁদগাজী বলেছেন:




অবস্হা এ রকম হলে, চলার কি দরকার আছে?

২| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৯:২৪

বীরেনদ্র বলেছেন: এখানে লেখার একটা সুবিধে আছে যে যে যা খুশি বলে বলুক, আমি আমার মত লিখে যাবো।

৩| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৯:৪৮

সায়া বলেছেন: চমৎকার। চালিয়ে যান। আশা করি, পরের পর্বে কিছু ছবি দেখতে পাবো।

৪| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৪:৩০

ইমরান আশফাক বলেছেন: আমি পিতার চাকরীর সুত্রে ৭৮ থেকে ৮০ সালের মধ্যে বেশ কয়েকবার এথেন্সে এয়ারপোর্ট গিয়েছি। আব্বা লিবিয়ায় ডাক্তার ছিলেন। ওখানে যাওয়া-আসার পথে হয় এথেন্স অথবা বৈরুত, দামেস্কোয় হোল্টেজ নিতে হতো। এথেন্স এয়ারপোর্ট তো খুব জমকালো ও ব্যস্ত মনে হয়েছিলো। ওটা মনে পুরানো এয়ারপোর্ট ছিলো।

৫| ২৮ শে আগস্ট, ২০১৬ ভোর ৬:১২

বীরেনদ্র বলেছেন: হীথ্রো(লন্ডন), জে এফ কে (নিউ ইয়র্ক), শিফল (আমস্টারডাম) এমনকি পীয়ারসন (টোরোণ্টো) এর চেয়ে অনেক দরিদ্র মনে হয়েছে AIA airport.

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.