![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মাঝরাতের হ য ব র
মাঝ রাতের পরের অংশের নাম আমার জানা নাই। তবে এ অংশটির প্রতি তোমার বিরক্তি বরাবরই, আর আমার জয় জয়কারের সময় এই একটি। এখানেই হয়তো তোমাতে আর আমাতে বিস্তর ফারাক ছিল। তারপরেও কি করে বলি যে, এই সময়টিতেই কখনো আনমনে তোমার চুলে আঙুল দিয়ে বিরুনি কেটেছি। কখনো একাগ্র মনে তাকিয়ে থেকেছি। আবার কখনো কখনো তোমাকে নিয়ে এক একটি প্রবন্ধ রচনা করেছি। তোমার বিরক্তিতে আমার কণ্ঠস্বর আমি হত্যা করেছি বটে, তবে স্বপ্ন আর ভেতরে ডুকরে ডুকরে কেঁদে উঠা স্বপ্নকে হত্যা করতে পারিনি। মানুষ মাত্রই কিছু স্বপ্ন আর কোন সুখের আশায় সময় ক্ষেপন করে। আমিও আমার স্বপ্নকে হত্যা করিনি, বরং কঠিন যত্নে লালন করেছি মাত্র। আমি ঠাই পাইনি হয়তো কোন মন্দিরে, অথবা কোন মসজিদের পাদেদেশে অথবা তোমার মায়াবী ছায়াতলে। তারপরেও আমার লালন করা ঐশ্বর্য আমি ছুড়ে ফেলতে পারিনি। আমার স্বপ্নকে হত্যা না করলেও হয়তো সেক্রিফাইস নামের শব্দের কাছে আমাকে মাথা নত করতে হয়েছে। তারপরেও আমি হেরে যাইনি। জীবন থেকে পালাইনি। যারা সপ্বের সৃষ্টিকর্তা, তাদের স্বপ্নের অনেক প্রকারভেদ থাকে। এরকম স্বপ্ন স্রষ্টাদের ঠকিয়েছে-এমন মনে করে কেউ কেউ বেশ তৃপ্তির ঢেকুর তুললেও, তার চোখে মুখে হয়তো অতৃপ্তির কিছু গ্লানির ছাপ ফুটে উঠে।
তোমার মনে হতেই পারে, তুমি এখন অনেক দুরে। তোমার এমন ক্ষুদ্র জ্ঞানের আমি ভত্সনা করছি না। বরং রহস্যটা খুলে বললেই হয়তো আর জীবনে অসীম জ্ঞান নিয়েই মানব জন্মে আসতে চাইবে, নইলে হয়তো কোন কাঠ পুতুল নয়তো কোন সিঁথির সিঁদুর, নয়তো কোন নুপুর হয়ে জন্ম নিয়ে শুধু ভোগ আর বিলাসের প্রাধান্য দিয়েই জীবন স্বার্থক হয়েছে বলে তৃপ্তির ঢেকুর তুলবে।
তোমার বিকৃত রাজনৈতিক দর্শনে আমি হতবাক হই। ভাবতে থাকি, মানুষ মাত্রই কি জীবনের সুখ অর্জনে ভেবে বসে, এ সমাজ, দেশ সবাই সুখ পেলো ? নাকি এটাও ভাবা যথার্থ যে, সৃষ্টির লক্ষ্য যদি হয়, সৃষ্টি আর বিনাশে, তবে তোমার সুখের লক্ষ্যই হলো জীবনে স্বাচ্ছন্দ আর উপভোগ ? ভাবলে কি ভুল হবে যে, সৃষ্টির এমন বিকৃত মবনসিকতার সাথে যারা নিজেদের এক করতে পেরেছে, তাদের মনের ভেতরেও বসবাস করছে বিকৃত লালসার ?
তোমার উচ্চারনকৃত মন্ত্র "পৃথিবীর সকল প্রানীর মঙ্গল হউক" এর যথার্থতা কোথায় ? সকল বলিদানের লক্ষ্য কি শুধুই স্বর্গ ? এমন বিনিময়রের বলিদানে আক্ষরিক অর্থে তৃপ্তির হাসি রেখা ফুটে উঠলেও, সেখানে কি দেখতে পাওয়া যায়, একটা লাল টিপ, এক খণ্ড লাল চন্দ্র বা এক চিলতে সিঁদূর ? সে বলিদানে কি পৃথিবীর সকল প্রানীর সুখে কিনতে পারা যায় ? নাকি বলিদানের বদলে প্রানীকুল হত্যা অর্থে বুঝায় ? বলতে পারো অরণ্য, এমন বিনিময়ের বলিদানে তোমরা কোন সুখ কিনতে চাও ?
সামগ্রিক সুখের আশায় কোন হত্যার লক্ষ্য স্থির থাকে। লক্ষ্য বিহীন হত্যায় টেররিস্ট আখ্যা দেয়া কি ভুল ? পাবার নেশায়, পাইয়ে দেবার নেশায় তোমরা জন্ম জন্মান্তরে টেররিস্ট হয়েছ, লালন করছো, মানবতার মৃত্যু ঘটাচ্ছো।
ওহা, তোমার রবী ঠাকুরের গান আমিও কম পছন্দ করিনা, তোমাদের নেতা মহাত্মা গান্ধির অহিংসা বাণি আমিও কম পছন্দ করিনা। কিন্তু জীবন দর্শনে এসব অলৌকিকতা মিলানো বড়ই কঠিন। আমি সারাক্ষনই টের পাই, অহিংসার নামে মসনদের লালসা, কিংবা প্রেমগাঁথার নামে যৌনতা বা অর্থ বিত্তের আড়ালে কিছু বিলাসিতা। তোমরা হয়তো এমন কর্মযজ্ঞকে মুক্তির সংগ্রাম বা মনের কথা বলতেই পারো, তবে আমি এসবকে বিলাসিতা বৈ অন্য কিছু ভাবতে পারিনা। আর এখানেই হয়তো-জীবন দর্শনের দুরত্ব রেখা স্পষ্ট হয়ে উঠে। এই বিভেদকে উচ্চাভিলাস বলে প্রত্যাখ্যান করলেও আমি এতেই ধন্য যে, আমি সামগ্রিকভাবে তাদেরই কাছাকাছি রয়েছি। তুমি হয়তো মায়ার জালে মানব মুক্তির স্বপ্ন দেখো, আর আমি হয়তো, বিশ্লেষনে মানব মুক্তির প্রকৃত পথ খুঁজছি। তোমার পথে হয়তো তোমাদের বিধাতা তোমাদের সাথে রয়েছেন, আর আমার চাওয়ার পথে হয়তো আমিই আমার বিধাতা। স্বপ্ন বিলাসী তোমরা হয়তো এ্যালকোহলের ভালোবাসায় বলে উঠ, তোমার প্রেয়সির ঠোটে অতি মূল্যবান চুম্বন তুমি করতে পেরেছ, অথবা, ইট পাথর বা মাটির তৈরী অবয়ব বানিয়ে মাথা নুইয়ে আত্মমর্যাদা খোয়াতে পারো, অথবা, মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে সুখের আশায় আত্মসমর্পন করতে পারে। কিন্তু আমি/আমরা তোমাদের মুক্তির ছায়া হয়ে আত্মসমর্পনের কথা ভাবতেই পারিনি কখনো। আমি সুখ তখনি পাই, যদি তোমার ঠোটে আমার চুম্বন লেপ্টে যায় অথবা তোমাদের বিধাতা আমার কাছে মাথা নোয়ায়।
বড়ই বাস্তববাদী হওয়ায় হয়তো তোমাদের চোখে, আমি রিক্ত, আমি পরাজিত একজন। তারপরেও তোমাদের এমন কৃত্রিম সুখ আর লালসায় আমার অট্রহাসি বের হয়। তোমাদের দাম্ভিক বিধাতাকে আমি সর্বদাই এই বলে ভত্সনা করি যে, তুমি বিধাতা হয়েছ বটে, তোমার সৃষ্টি মনুষ্যকূলের চেয়ে শ্রেষ্ঠ তুমি হতে পারোনি। হ্যাঁ অরণ্য, আমি মানুষ হয়েই থাকতে চেয়েছিলাম, হয়তো সেভাবেই আছি। মানুষ হয়ে থাকার নরকসম যন্ত্রনার মধ্যেও আমি তীর্যকভাবে তোমাদের বিধাতাকে ভত্সনা করার শক্তি পাই, কারন আমি মানুষের মাঝেই রয়েছি।
০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১:০৭
বিভক্ত আত্মা বলেছেন: অনেকদিন লিখতে গিয়ে থমকে গিয়েছি-কারণ, আমার ক্ষুদ্র লেখায় আপনার মত প্রথিতযশা ব্যক্তি মন্তব্য করেছেন, আমি কৃতজ্ঞ। ভেবেছেন-ভাবছেন, মূল্যায়ন করেছেন-আমি কৃতজ্ঞ।
২| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ২:১৭
বিভক্ত আত্মা বলেছেন: অনেকদিন লিখতে গিয়ে থমকে গিয়েছি-কারণ, আমার ক্ষুদ্র লেখায় আপনার মত প্রথিতযশা ব্যক্তি মন্তব্য করেছেন, আমি কৃতজ্ঞ। ভেবেছেন-ভাবছেন, মূল্যায়ন করেছেন-আমি কৃতজ্ঞ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৭ শে নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:০৪
গেম চেঞ্জার বলেছেন: ভাবনার প্রকাশে আপনি সার্থক। লেখায় শব্দের পরিমাপ করা হলে তেমন নয়। কিন্তু যদি ভাবের পরিমাপ করা হয় তবে সেটা নিঃসন্দেহে এতোটা সীমিত নয়। আমি অনেকক্ষণ লেখা নিয়ে ভাবলাম। জীবনের অর্থ ও মানুষের কার্যকলাপ নিয়ে যারা ভাবেন তাঁরা নিশ্চয়ই স্বশিক্ষিত। তাঁদের দুঃখবোধ হাওয়ায় মিলিয়ে যায় অনায়েসে। লেখার নিচের অংশদ্বয় আমার চিন্তার খোরাক জুগিয়েছে.......

আমি সারাক্ষনই টের পাই, অহিংসার নামে মসনদের লালসা, কিংবা প্রেমগাঁথার নামে যৌনতা বা অর্থ বিত্তের আড়ালে কিছু বিলাসিতা। তোমরা হয়তো এমন কর্মযজ্ঞকে মুক্তির সংগ্রাম বা মনের কথা বলতেই পারো, তবে আমি এসবকে বিলাসিতা বৈ অন্য কিছু ভাবতে পারিনা। আর এখানেই হয়তো-জীবন দর্শনের দুরত্ব রেখা স্পষ্ট হয়ে উঠে।
হয়তো তোমাদের চোখে, আমি রিক্ত, আমি পরাজিত একজন। তারপরেও তোমাদের এমন কৃত্রিম সুখ আর লালসায় আমার অট্রহাসি বের হয়। তোমাদের দাম্ভিক বিধাতাকে আমি সর্বদাই এই বলে ভত্সনা করি যে, তুমি বিধাতা হয়েছ বটে, তোমার সৃষ্টি মনুষ্যকূলের চেয়ে শ্রেষ্ঠ তুমি হতে পারোনি।
ভাল থাকুন। শুভকামনা রইলো।