![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তোমাদের কাছে স্বর্গকে কেমন মনে হয় ? ঠিক কি এইরকম যে, স্বর্গের নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হবে, ঝরনার ছন্দময় শব্দে তুমি পুলকিত হবে, তুমি তখন যা চাইবে তাই পাবে, তোমার সাথে থাকবে অপূর্ব সুন্দরী নারী, তুমি স্বর্গের বাগানে হাসবে, খেলবে, বেড়াবে, যা ইচ্ছা তাই করবে। সেখানে কোন কষ্ট তোমার থাকবে না। সকল ইচ্ছাগুলো তোমার হুকুম মানবে। তোমার সেই সুন্দরি নারীকে যত রুপে কল্পনা করবে, সেই রুপেই আবির্ভুত হবে তোমার সঙ্গী। সেখানেই তুমি অনন্তকাল ধরে বাস করবে। তোমার মনেই থাকবেনা, অন্য কোথাও কোন কষ্ট বিরাজমান আছে কিনা। তুমি স্বর্গের শরাব পান করবে। তুমি মাতাল হবে, তুমি যৌনতায় মগ্ন থাকবে, তুমি ভোগ করবে। তোমার সকল ভোগের ইচ্ছাগুলো তোমাকে প্রভু বলে স্বীকার করবে। এটাইতো স্বর্গ তাই না ?
আমার মনে হয়, তোমরা যারা মুসলিম, তোমাদের পবিত্র কোরআন শরীফে স্বর্গ সম্পর্কে ঠিক এমনই বর্ণনা রয়েছে। আবার তোমরা যারা খৃষ্টান বা ইহুদি, তোমাদের ধর্মগ্রন্থে স্বর্গ সম্পর্কে ঠিক এমনই বর্ণনা রয়েছে। আবার তোমরা যারা হিন্দু, তোমাদের ধর্মগ্রন্থে স্বর্গ সম্পর্কে ঠিক এমনই বর্ণনা থাকলেও, দেব-দেবীদের প্রেমের বা যৌন কর্মের বর্ণনা রয়েছে একটু তাত্বিক ভাবে। রাধা আর কৃষ্ণের প্রেম আমাদের সত্যিকারের ভালোবাসার পথ দেখায়। রাস পূর্ণিমায় ষোল শত গোপিনীর সাথে কৃষ্ণের রাসলীলার কাহিনীতে আমরা যৌনতা খুজে পাই, অথচ কৌশলে প্রেম, স্বর্গ এসবকে উপেক্ষা করি।
স্বর্গ মানেই হলো, ইচ্ছাগুলো তোমাকে প্রভু বলে মান্য করবে। স্বর্গের ভেতরে সাকি, শরাব সবই বৈধ। এমনকি তুমি সমকামি হতে চাইলেও তাতেও কোন বাধা বা অন্য রকম নিয়মের কথা বলা হয়নি। অর্থাৎ তুমি সেখানে সমকামি হতে পারবে, ধর্ষক হতে পারবে, বহুগামী হতে পারবে !
স্বর্গের প্রশ্ন আসতেই মেজাজটা বিগড়ে গেলো। তুমি মুসলিম হলে, তোমার সৃষ্টিকর্তাকে সেজদা করবে। ধর্ম রক্ষার জন্য মানুষ খুন করলেও কিছু যাবে আসবে না। এমনকি নারীর সকল অধিকার হরণ করে, তুমি তোমার ন্যায় অন্যায় কর্তৃত্ব দেখালেও তোমার ধর্ম তোমাকেই সাপোর্ট করবে। তোমার ইচ্ছা হলেই তুমি যে কোন বয়সী অনেকগুলো নারীর শরীর ভোগ করতে পারবে। তুমি হিন্দু হলেও সমস্যা নেই। তুমি নির্দ্বিধায় নারীর বস্ত্র হরন করতে পারবে, তুমি ইচ্ছে করলেই তোমার স্ত্রীকে সহ মরনে নিতে পারবে, তুমি ইচ্ছে করলেই নারীকে দাসী হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে। তুমি ইচ্ছা করলেই রক্ষিতা রাখতে পারবে।
বৌদ্ধ, খৃষ্টান ইহুদি হলেও তুমি এসব সুবিধা পাবে। তুমি তোমার বিধাতাকে কোন প্রশ্ন না করেই সকল ন্যায় অন্যায় মেনে নিয়ে তাকে পূজা করলেই তোমার জন্য এমন ইচ্ছা পূরণের স্বর্গ উপহার পাবে।
তোমরা যারা ধার্মিক, তোমাদের মনের মধ্যে এমন স্বর্গ পাবার বাসনা রয়েছে। তোমরা লোভ সামলাতে পারছো না। তাই ধর্ম পালন করতে গিয়ে করছো মারামারি, হত্যা। তারপরেও তোমাদের ওই স্বপ্নের স্বর্গ পেতেই হবে ! একবার সত্য বলতো তুমি কি কখনো এমন স্বর্গ দেখেছ ? শুধু কল্পনাই করেছ। আমি জানি আমার এমন কথায় তোমাদের মনে আঘাত লাগছে। তবে এমন সত্যে তুমি আঘাত পেলেও আমার করার কিছুই নাই।
তুমি না হয় মুসলিম, অন্যজন হয়তো হিন্দু, নয়তো বৌদ্ধ, খৃষ্টান বা অন্য ধর্মে বিশ্বাসী। তাই মৃত্যুর পরে তোমাদের লোভের বাস্তবায়নের লোভ তোমরা সামলাতে পারছো না।
আমি একজন মানুষ ধর্মে বিশ্বাস করি। মানবতার চর্চা করি। তোমরা কেউ স্বর্গ দেখনি, কিন্তু আমি স্বর্গ দেখেছি। তাই মানব প্রেমি হিসেবে মৃত্যুর পরের সকল স্বর্গকে প্রত্যাখান করে আমার দেখা স্বর্গটি এখন বা মৃত্যুর পরেও প্রত্যাশা করি। আমি সেই স্বর্গের সুখ, স্মৃতি সবই লালন করি, ধারন করি। মানুষকে মানবিক হতে বলি। আমি চাই বিশ্বের সকল মানুষই স্বর্গের অধিকারি হউক।
তোমরা যারা সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস কর, তোমরা সবাই মিথ্যাবাদী। একদিকে মৃত্যুর পরে তেমন স্বর্গ চাই, অপরদিকে পৃথিবীতে সুখের আশায় অর্থ বিত্তের মালিক হয়ে এখানকার স্বর্গের সুখও পেতে চাও। তোমরা তোমাদের নিজ নিজ ধর্মের ব্যাখ্যায় দ্বিধা দ্বন্দে পরেছ। প্রগতিশীল মানুষরা তোমাদের মৌলবাদ আখ্যা দিলেও তোমরা মৌলবাদ নও। তোমরা স্বার্থবাদ, তোমরা লোভী, তোমরা বিকৃত মানসিকতার মানুষ। অপরদিকে সকল মানবতাবাদী মানুষরা প্রকৃতপক্ষে মৌলবাদ। অর্থাৎ এসব মানুষের একটাই স্বপ্ন, একটাই আশা মানুষ এবং মানবতা।
তোমরা যারা ধার্মিক, সবার কাছে নিজ নিজ ধর্মের অনেক ব্যাখ্যা রয়েছে। আমার মত মানবতাবাদী মানুষ যা কিছু ভালো তাই গ্রহণ করি আর যা কিছু খারাপ তাই বর্জন করি। সে কারণেই আমি স্বর্গের সুখ অনুভব করি এবং সত্যিকারের স্বর্গ আমি দেখেছি। বিশ্বাস হয়না তাই না ?
এই ছবিটা দেখ, আর বল, এই ছবিটার মধ্যে কোথায় কোন কষ্টের ছায়া কি আছে, কোন অমানবিক আচরন কি আছে, নাকি তোমাদের মত অতি ধার্মিকতার নিষেধাজ্ঞা আছে ?
আমার দেখা স্বর্গের বর্ণনা আমি করছি। মিলিয়ে দেখতো তোমাদের সেই স্বপ্নের স্বর্গের সাথে কোন অংশে কম।
সময়টা ছিল রাস পূর্ণিমার রাত। বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা অনুযায়ি এই রাস পূর্ণিমার আগে এবং কদিন পরেও সকল মানুষের মধ্যে উদ্দীপনা কাজ করে। মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হয় চরম আবেগ। অবশ্য এ উদ্দীপনা যে শুধু মানুষের জন্যই বরাদ্দ তা কিন্তু নয়। সকল পশু, এমনকি জলজ প্রাণীর মধ্যেও উদ্দীপনা চরম আকার ধারন করে। বাংলা আর্শ্বিন মাসের এই সময়টাতে কাশফুল সবার মনকেই দোলা দেয়। উজ্জ্বল জোৎস্না শরীর শিহরিত হয়। শরীরে সৃষ্টি হয় কামনা, ভালোবাসা।
হাঁ, আমি এ সময়টায় স্বর্গের ভেতরেই ছিলাম। গাছে গাছে সবুজ পাতা, চারদিকে সবুজ ধানক্ষেত। নদীর পানিতে কুয়াশা আর রৌদ্রের আনাগোনা। আকাশে কখনো ঘন নীল, আবার কখনো অনেকগুলো মেঘ মাথার ওপর দিয়ে উড়ে উড়ে যায়। সেই রাস পূর্ণিমার রাতে তোমার মনের মানুষটিকে নিয়ে বের হয়ে যাও কোন বনে, অথবা কোন নদীর তীরে, অথবা সমূদ্র সৈকতে।
আমার মনেই ছিলনা যে, আমাদের চারপাশে আরো অনেক অনেক মানুষ রয়েছে। আমরা হেসেছি, খেলেছি, দৌড় দিয়েছি, জড়িয়ে ধরেছি, পাগলামি করেছি, আমরা আমাদের বয়সের কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। রাতের জোৎস্নায় আমার শরীরে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। আমার কাছে মনে হয়েছিল, স্বয়ং কৃষ্ণ আমাদের দেখে হিংসা করেছিল।
আমার বিশ্বাস, তোমরা যারা স্বর্গের আশায় মানুষ খুন করেছ, মানবতাকে খুন করেছ, তোমরা নিশ্চই পরপার থেকে আমাদের এই স্বর্গ সূখ দেখে হিংসা করেছ। আমি নিশ্চিত যে, তোমাদের ভাষায়, চোখের পাপ কথাটি তোমরা করেছ। আমার বিশ্বাস তোমাদের বিধাতার সাথে যদি দেখা হয়েই থাকে তবে তোমরাও হয়তো তোমাদের বিধাতাকে বলেছ, "হে প্রভু, এই মানুষটি, যে তোমাকে কখনো পূজা করেনি, এই মানুষটিই একটি কালো মেয়ের মধ্যে এমন কি সুখ খুজে পেয়েছে যে, আমাদের সকল ইবাদতের বিনিময়ে পাওয়া সুখের চেয়েও বেশি সুখ অনুভব করেছে ? হাঁ বন্ধু, তোমাদের বিধাতা তোমাদের এমন প্রশ্নে নিশ্চই দ্বিধাগ্রস্থ হয়ে পরেছেন। তিনিও হয়তো অবাক হয়েছেন যে, আমি স্বর্গ বানিয়ে যে সকল সুখের কথা বলেছি, তার চেয়েও এরা অধিক সুখ পেলো কিভাবে ? তোমাদের বিধাতাও এমন প্রশ্নের কোন জবাব হয়তো কোনদিনই দিতে পারবে না।
" কোথায় স্বর্গ, কোথায় নরক
কে বলে তা বহুদুর।
মানুষের মাঝে স্বর্গ নরক
মানুষেতে সুরা সুর।"
ধার্মিক বন্ধু তোমাকে গাধা না বলে পারছি না। তুমি আর কোন স্বর্গের নেশায় পাগল হয়েছ ? এবার দৃষ্টি দাও, দেখ আমার সঙ্গীর কপালে একটা লালটিপ, শরীরের রঙ শ্যামলা। আমাদের দু-জনের চাহনী পরস্পরের দিকে। আমাদের এ চাহনীর মাঝখানে তোমাদের সৃষ্টিকর্তার স্থান কোথায় ?
আমি মনে প্রানে কামনা করি, তুমি কথিত সেই স্বর্গ অর্জন করো। সেই স্বর্গের মাঝেই তোমার ভেতর লোভ কাজ করবে, কারণ তোমাদের দৃষ্টি থাকবে বহু জনের দিকে। তুমি উত্তপ্ত নি:শ্বাস ভক্ষন করতে শিখ নাই, তুমি দৃষ্টি বিনিময় করতে শিখ নাই, তুমি প্রাণ খুলে হাসতে শিখ নাই। আমি বিশ্বাস করি, সেই স্বর্গের মধ্যেই তুমি চিৎকার করে বলবে, এই নারী তুমি আমার সেবা দাসী।
হাঁ, বন্ধু, আমার মত অধম একজন মানুষ আমার সঙ্গীকে শুধুই বলেছি, আমার উত্তপ্ত নি:শ্বাস ভক্ষন কর, হাসতে থাকো, এখানে বাতাসের এলোমেলো হাওয়ায় চুল খুলে দাও, ভিজে যাক তোমার কপালের টিপ, তোমর শরীর মিশে যাক আমার শরীরের সাথে। ভিজা চুল আর তোমার উগ্রতা সবমিলে আমরা সৃষ্টির সেরা স্বর্গে বাস করছি। আমি, আমার সঙ্গীনি, আমরা দু'জনই দেখেছি স্বর্গের রুপ। তোমাদের কথাকথিত স্বর্গ এর চেয়ে বেশি মনোরম হবে বলে মনে হয়না। হাঁ, তুমি তোমার স্বর্গের মধ্যে শরাব পাবে। তুমি হয়তো সেই শরাবের সাহায্যে নিজেকে অনেক সুখি মনে করবে। কিন্তু বাস্তবতা করি জানো, শরাব আমাদের দু-জনকে আরো অনেক বেশি সুখি হতে সাহায্য করেনি। তবে হ্যা, গয়তো ঘুমানোর কাজটি করেছে। আমরা শরাব পান করে বিকৃত বা সাজানো অথবা ম্যাকি কোন স্বর্গের সুখ ভোগ করতে আগ্রহী ছিলাম না বা আমাদের সৃষ্টি করা সুখের মধ্যে শরাব কোন ভূমিকাই রাখতে পারেনি-কারণ আমরা প্রকৃত স্বর্গের অধিবাসি ছিলাম।
স্বর্গ থেকে সামান্য দুরে গিয়ে তোমাদের মাটির পৃথিবীতে আমরা বেমানান হয়ে গেছি। তোমাদের ষড়যন্ত্রে হয়তো আমরা কিছুটা দুরত্বে বসবাস করছি। তারপরেও আমরা আমিদের সৃষ্টি সেই স্বর্গ থেকে কোন ভাবেই বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়নি। হয়তো আমরা স্বর্গের সমূদ্রের এপাড় আর ওপাড়ের বাসিন্দা হয়েছি মাত্র। তারপরেওতো ওই একজনের মুখ মণ্ডলে, তোমাদের ভাষায় যা শ্যামলা, সেই মুখ মন্ডলেই আমি দেখেছি হাজারো, লাখো সুন্দর প্রতিচ্ছবি। সেই প্রতিচ্ছবিই হয়তো আমাদের বানানো স্বর্গটাকে আগলে রেখেছে। যা তোমরা কখনই পারতে না বা পারবে না। কিন্তু আমরা পেরেছি।
আমার দেখা স্বর্গ থেকে আমি কখনই বিচ্যুত হতে পারিনা। তোমাদের সেই স্বপ্নের স্বর্গের আমি বিরোধিতা করছি না, তবে আমার স্বর্গের সাথে কোন স্বর্গেরই তুলনা করতে চাইনা।
নিচের ছবিটা দেখ, আর বল, এই ছবিটার মধ্যে কোথায় কোন কষ্টের ছায়া কি আছে, কোন অমানবিক আচরন কি আছে, নাকি তোমাদের মত অতি ধার্মিকতার নিষেধাজ্ঞা আছে ?
আমার দেখা স্বর্গের বর্ণনা আমি করছি। মিলিয়ে দেখতো তোমাদের সেই স্বপ্নের স্বর্গের সাথে কোন অংশে কম।
সময়টা ছিল রাস পূর্ণিমার রাত। বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা অনুযায়ি এই রাস পূর্ণিমার আগে এবং কদিন পরেও সকল মানুষের মধ্যে উদ্দীপনা কাজ করে। মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হয় চরম আবেগ। অবশ্য এ উদ্দীপনা যে শুধু মানুষের জন্যই বরাদ্দ তা কিন্তু নয়। সকল পশু, এমনকি জলজ প্রাণীর মধ্যেও উদ্দীপনা চরম আকার ধারন করে। বাংলা আর্শ্বিন মাসের এই সময়টাতে কাশফুল সবার মনকেই দোলা দেয়। উজ্জ্বল জোৎস্না শরীর শিহরিত হয়। শরীরে সৃষ্টি হয় কামনা, ভালোবাসা।
হাঁ, আমি এ সময়টায় স্বর্গের ভেতরেই ছিলাম। গাছে গাছে সবুজ পাতা, চারদিকে সবুজ ধানক্ষেত। নদীর পানিতে কুয়াশা আর রৌদ্রের আনাগোনা। আকাশে কখনো ঘন নীল, আবার কখনো অনেকগুলো মেঘ মাথার ওপর দিয়ে উড়ে উড়ে যায়। সেই রাস পূর্ণিমার রাতে তোমার মনের মানুষটিকে নিয়ে বের হয়ে যাও কোন বনে, অথবা কোন নদীর তীরে, অথবা সমূদ্র সৈকতে।
আমার মনেই ছিলনা যে, আমাদের চারপাশে আরো অনেক অনেক মানুষ রয়েছে। আমরা হেসেছি, খেলেছি, দৌড় দিয়েছি, জড়িয়ে ধরেছি, পাগলামি করেছি, আমরা আমাদের বয়সের কথা ভুলেই গিয়েছিলাম। রাতের জোৎস্নায় আমার শরীরে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। আমার কাছে মনে হয়েছিল, স্বয়ং কৃষ্ণ আমাদের দেখে হিংসা করেছিল।
আমার বিশ্বাস, তোমরা যারা স্বর্গের আশায় মানুষ খুন করেছ, মানবতাকে খুন করেছ, তোমরা নিশ্চই পরপার থেকে আমাদের এই স্বর্গ সূখ দেখে হিংসা করেছ। আমি নিশ্চিত যে, তোমাদের ভাষায়, চোখের পাপ কথাটি তোমরা করেছ। আমার বিশ্বাস তোমাদের বিধাতার সাথে যদি দেখা হয়েই থাকে তবে তোমরাও হয়তো তোমাদের বিধাতাকে বলেছ, "হে প্রভু, এই মানুষটি, যে তোমাকে কখনো পূজা করেনি, এই মানুষটিই একটি কালো মেয়ের মধ্যে এমন কি সুখ খুজে পেয়েছে যে, আমাদের সকল ইবাদতের বিনিময়ে পাওয়া সুখের চেয়েও বেশি সুখ অনুভব করেছে ? হাঁ বন্ধু, তোমাদের বিধাতা তোমাদের এমন প্রশ্নে নিশ্চই দ্বিধাগ্রস্থ হয়ে পরেছেন। তিনিও হয়তো অবাক হয়েছেন যে, আমি স্বর্গ বানিয়ে যে সকল সুখের কথা বলেছি, তার চেয়েও এরা অধিক সুখ পেলো কিভাবে ? তোমাদের বিধাতাও এমন প্রশ্নের কোন জবাব হয়তো কোনদিনই দিতে পারবে না।
" কোথায় স্বর্গ, কোথায় নরক
কে বলে তা বহুদুর।
মানুষের মাঝে স্বর্গ নরক
মানুষেতে সুরা সুর।"
ধার্মিক বন্ধু তোমাকে গাধা না বলে পারছি না। তুমি আর কোন স্বর্গের নেশায় পাগল হয়েছ ? এবার দৃষ্টি দাও, দেখ আমার সঙ্গীর কপালে একটা লালটিপ, শরীরের রঙ শ্যামলা। আমাদের দু-জনের চাহনী পরস্পরের দিকে। আমাদের এ চাহনীর মাঝখানে তোমাদের সৃষ্টিকর্তার স্থান কোথায় ?
আমি মনে প্রানে কামনা করি, তুমি কথিত সেই স্বর্গ অর্জন করো। সেই স্বর্গের মাঝেই তোমার ভেতর লোভ কাজ করবে, কারণ তোমাদের দৃষ্টি থাকবে বহু জনের দিকে। তুমি উত্তপ্ত নি:শ্বাস ভক্ষন করতে শিখ নাই, তুমি দৃষ্টি বিনিময় করতে শিখ নাই, তুমি প্রাণ খুলে হাসতে শিখ নাই। আমি বিশ্বাস করি, সেই স্বর্গের মধ্যেই তুমি চিৎকার করে বলবে, এই নারী তুমি আমার সেবা দাসী।
হাঁ, বন্ধু, আমার মত অধম একজন মানুষ আমার সঙ্গীকে শুধুই বলেছি, আমার উত্তপ্ত নি:শ্বাস ভক্ষন কর, হাসতে থাকো, এখানে বাতাসের এলোমেলো হাওয়ায় চুল খুলে দাও, ভিজে যাক তোমার কপালের টিপ, তোমর শরীর মিশে যাক আমার শরীরের সাথে। ভিজা চুল আর তোমার উগ্রতা সবমিলে আমরা সৃষ্টির সেরা স্বর্গে বাস করছি। আমি, আমার সঙ্গীনি, আমরা দু'জনই দেখেছি স্বর্গের রুপ। তোমাদের কথাকথিত স্বর্গ এর চেয়ে বেশি মনোরম হবে বলে মনে হয়না। হাঁ, তুমি তোমার স্বর্গের মধ্যে শরাব পাবে। তুমি হয়তো সেই শরাবের সাহায্যে নিজেকে অনেক সুখি মনে করবে। কিন্তু বাস্তবতা করি জানো, শরাব আমাদের দু-জনকে আরো অনেক বেশি সুখি হতে সাহায্য করেনি। তবে হ্যা, গয়তো ঘুমানোর কাজটি করেছে। আমরা শরাব পান করে বিকৃত বা সাজানো অথবা ম্যাকি কোন স্বর্গের সুখ ভোগ করতে আগ্রহী ছিলাম না বা আমাদের সৃষ্টি করা সুখের মধ্যে শরাব কোন ভূমিকাই রাখতে পারেনি-কারণ আমরা প্রকৃত স্বর্গের অধিবাসি ছিলাম।
স্বর্গ থেকে সামান্য দুরে গিয়ে তোমাদের মাটির পৃথিবীতে আমরা বেমানান হয়ে গেছি। তোমাদের ষড়যন্ত্রে হয়তো আমরা কিছুটা দুরত্বে বসবাস করছি। তারপরেও আমরা আমিদের সৃষ্টি সেই স্বর্গ থেকে কোন ভাবেই বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়নি। হয়তো আমরা স্বর্গের সমূদ্রের এপাড় আর ওপাড়ের বাসিন্দা হয়েছি মাত্র। তারপরেওতো ওই একজনের মুখ মণ্ডলে, তোমাদের ভাষায় যা শ্যামলা, সেই মুখ মন্ডলেই আমি দেখেছি হাজারো, লাখো সুন্দর প্রতিচ্ছবি। সেই প্রতিচ্ছবিই হয়তো আমাদের বানানো স্বর্গটাকে আগলে রেখেছে। যা তোমরা কখনই পারতে না বা পারবে না। কিন্তু আমরা পেরেছি।
আমার দেখা স্বর্গ থেকে আমি কখনই বিচ্যুত হতে পারিনা। তোমাদের সেই স্বপ্নের স্বর্গের আমি বিরোধিতা করছি না, তবে আমার স্বর্গের সাথে কোন স্বর্গেরই তুলনা করতে চাইনা।
০৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ১:০৯
বিভক্ত আত্মা বলেছেন: কেউ কিছু বলে নাই দেইখ্যা আমি বাইচ্যা গেছি...
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ৩:৪৪
শেয়াল বলেছেন: কেউ কিছু কয় না কেন ?