নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সময় অনেক কম, কাজ অনেক বেশি। সংবাদ মাধ্যমের চেয়ে উৎকৃষ্ট এই সিটিজেন জার্নালে অন্তত চটি লেখক মার্কা লোক নেই-আমি এতেই সুখ অনুভব করছি। লিখতে শুরু করেছি-লিখতে লিখতেই হয়তো একদিন ফুড়িয়ে যাবো। তারপরেও সকল মানুষের কল্যান কামনা করেই যাবো

বিভক্ত আত্মা

সাংবাদিক

বিভক্ত আত্মা › বিস্তারিত পোস্টঃ

তোমার ভার কি আমি সইতে পারি ?

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৬:১১


তুমি বাড়িটির নাম দিয়েছিলে রেড হাউস। নামের যথার্থতা খুজে না পেলেও, সম্ভবত বাড়িটির রঙের কারনেই রেড হাউস বলেই বাড়িটিকে সম্বোধন করতে।
হত্যা, নির্মমতা, অমানবিক আচরন, মৃত্যুর ভয়, পাবার আর না পাবার কষ্টের মাঝেও তুমি যেন আমার সাথী হয়েই আছো।
আমি বুঝতেই পারছি না যে, তোমার স্বভাব অক্টোপাসের মত কেন? তুমি তো ছুড়ে ফেলে দিয়েছ, আবার কখনো কখনো একা একাই হেসে উঠ, কেদেও উঠছ বারবার। আমি তো চেষ্টা করেই যাচ্ছি, তোমাকে সম্পূর্ণভাবে আড়াল করে দেবার।
খুব হাসি পায় জানো, আমার এসব হযবরল লেখা প্রথিতযশা লেখক, পাঠকরাতো পড়ছেই, সেই সাথে আমার মেয়েও পড়ছে। সে তো একদিন বলেই ফেললো, আবার বাবার মত ভালোবাসতে পারে এমন মানুষ চারপাশে থাকলে যুদ্ধ বিগ্রহ থাকতো না। তবে, তোমার না পাবার বিষয়গুলো তোমাকে বিদ্রোহী করে তুলেছে। আমারো ভাবতে ভালো লাগছে, আমি একজন বিদ্রোহী মানুষের সন্তান !

ভাবতে পারো, এইটুকুন বয়সে সে কত শক্ত কথা বলে ফেলেছে। তবে খুব মনে লেগেছে, অস্ফুট স্বরে যখন বলে উঠেছে, আমার বাবা পৃথিবীতে অযত্নই পেলো।

তুমি যদি আমাকে বলো যে, এক এক করে সব ঘটনা, সময়ের কথা বর্ণনা করতে, হয়তো আমি তা পারবো। তুমি মুক্তির আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠেছিলে। ঘটনা আর যাই হউক, নির্মম কিছু অপমানের হাত থেকে তোমাকে আলাদা করতে পারছো, এ কারাণে আমার প্রতি অনেক যত্নশীল হয়ে উঠেছিলে তুমি। যদিও শরীরের স্বাধীনতায় আমার দৌরাত্ব আমি নিয়ন্ত্রন করতে চাইলেও তুমি তা করোনি। তারপরেও বছর, মাস, দিন সব মিলিয়ে তুমি মৌলিকত্ব অর্জন করতে পারোনি। এত কিছুর পরেও তোমার ভরসা আমায় জীবনের আশার পথ দেখিয়েছিল। নিশ্চই নিজের মুখটা দেখার সময়ই আমার কথা মনে পনছে হয়তো।

মাকে বলেছিলে, নির্মমতা থেকে বাচতে তুমি রাস্তা খুজে পেয়েছ। আমরা তখন অনেক গভীরে। মাকে আহ্লাদ করে বলেছিলে, "দেখতো মা, এ কোন ধরনের পাগল, সে কিনা বলেছে, সে ভাত খাবার সময় নিজের হাত পানিতে ভিজাবে না। আমাকেই খাইয়ে দিতে হবে"। অবাক করা বিষয় কি জানো, আমার এমন আবদারকে তুমি খুব সাদরে গ্রহণ করেছিলে। মাঝে মাঝে তো, মার সামনেই আমায় খাইয়ে দিতে, ঠিক আমি যেন তোমার সন্তান হয়ে উঠেছিলাম। একদিন বললাম, এভাবে মায়ের সামনে তোমার লজ্জা করছে না ? তুমি উত্তরে বললে, আমার মা আমার সুখ দেখতে চেয়েছে। তোমাকে খাইয়ে দেবার মধ্যে আমি যে সুখ পাই, তাতে আমার মা অনেক খুসি হয়।
একদিন খুব ক্ষুধা লেগেছিল। তোমারও অফিসের তাড়া ছিল। আমি রীতিমত খেতে বসলাম। আমি হাত ধুয়ে আসিনি, তাতে তুমি বললে, "দুমি ভাত খাবে না?"। তারপর মাত্র কয়েক সেকেন্ড, বিষয়টি বুঝে ফেলতেই, তুমি ভাতের থালা এগিয়ে নিয়ে বললে, বিষয়টি মনে ছিলনা। আর মনে না থাকাটা আমার অপরাধ হয়েছে।

যত্ন করে মাছের কাটা ছাড়িয়ে নিয়ে আমার মুখে তুলে দিতে। আমি ঠিক যেভাবে খেতে পছন্দ করতাম, ঠিক সেই ভাবেই একের পর এক খাইয়ে দিতে। পেটে আর জায়গা নেই, তাইরপরেও বারবার বলতে, এই আর একটু। আর একটু খেলেই আমি খাওয়া শুরু করবো।
তুমি ছিলে অনেক স্বাধীন, অনেক আধুনিক আবার স্বামীর অনুরক্ত। হা, স্বামী বটে। শুধু মন্ত্র পড়লেই স্বামী হওয়া যায়না। এসব আনুষ্ঠানিকতা একটা সামাজিক প্রথা ছাড়া অন্য কিছু নয়।
আমি বসেই থাকতাম, তোমার খাওয়া দেখতাম। আমার চোখ এড়ায়নি যে, তুমি আমাকে খাইয়ে দেবার সময় প্রায়ই তোমার চোখের কোন ভিজে উঠতো।

হা, তোমার অনেক মিথ্যা আমায় দারুন কষ্ট দিয়েছে। আমি বলেছি যে, নিষ্প্রান একটা মানুষ মাটিতে পরে আছে। শকুনরা সেই মানুষটাকে মৃত মনে করে মানুষটির চোখ দুটো ঠোকরে ঠোকরে খেয়ে চলেছে। মানুষটি এতটা অসহায় ছিল যে, শকুনদের বাধঘা দেবার ক্ষমতা ছিল না। তীব্র যন্ত্রনায় কাতর হলেও সেই নির্মমমতা সহ্য করতে হয়েছে।
তারপরেও, তারপরেও আমি বলেছিলাম, এসো আমরা ভালো থাকি। ভালো থাকাটা হয়তো শুরু হয়েছিল। হয়তো নিজেকে কিছুটা নিয়ন্ত্রন করতে পারলে, আমরাই পৃথিবীর সর্বোচ্চ সুখি মানুষ বলে ঘোষনা দিতে পারতাম।
মানুষের স্বভাবই হলো, খুব সহজে, সহজ ভাবে পাওয়া কোন সুখকে হারাতে চায়না। তাইতো বিদায় বেলায়, সেই মানুষটি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিল, তোমাতে আর আমাতে স্থায়ী অমিল ঘটানোর। সফল হয়েছিল বটে। কিন্তু আমিতো বারবারই বলেছিলাম, শরীরকে ইচ্ছা করলেই নিয়ন্ত্রন করা যায়। সামান্যতম কঠোর হলেই ভালোবাসাটা অনেক স্থায়ী হয়ে যায়। যেখানে শয়তানের অনুপ্রবেশ বন্ধ হয়ে যায়।
দেশ, রাজনীতি বা সমাজ সব কিছুরই টপ সিক্রেট বলে কিছু কথা থাকে। তুমি অতি স্বাধীনতায় বিশ্বাসী হয়ে কিছু চরম দূর্বলতা প্রকাশ ফেলেছ। যার পরিনাম, এখন আমাকে মাছের কাটা ছাড়িয়ে সাবধানে খেতে হয়। অনেক চিন্তা হয়, কখন যে মাছের কাটাটা গলায় আটকে যায়। খাবার শেষ দিকে এখন আর ভাবা হয় না যে, ভাতের সাথে একটু ডাল হলে খাবারটা মন্দগ হতো না।
বলেছিলে, আমি অনেক জেদি। হয়তো এটাই সত্য। তাই এখন এই অন্ধকার সীমান্ত এলাকায় আমার বসবাস। আমাকে ছেড়ে সবাই চলে গেছে। এইতো সেদিন, মা চোখের অশ্রু বিসর্জন দিয়ে বললো, আর কিভাবে দোয়া করবো, তোর জীবনটাতে যেন সুখ আসে।
আমি মাকে সান্তনা দিয়ে বলেছিলাম, এইতো বেশ আছি। যখন যা ইচ্ছা, তাই করছি, তাই ভাবছি। মায়ের মন বলে কথা। তিনি আমার এমন কথায় আশ্বস্ত হতে পারেননি।
বিশ্বাস কর, আমি বিখ্যাত হতে চাইনি, এখনও চাইনা। সব কিছুর পরেও আমি বারবারই বলেছিলাম, আর ভুল করোনা।
এখনও ওই একটাই কথা বলবো, আর ভুল করোনা। তবে তখনকার বলাটা ছিল এক প্রকার স্বার্থের। আর এখনকার বলাটা হলো, মানুষের ভালো থাকবার একটি ইচ্ছার কথা।
শরীরের যা অবস্থা,তাতে হয়তো শেষ হতে খুব বেশিদিন সময় নিবেনা।
একদিন বলেছিলে এত ডেসপারেড হয়োনা। পুলিশ, রাজনীতিবীদ প্রায় সবাই তোমার শত্রু হয়ে উঠছে। আমাকে পুলিশে পেটাচ্ছিল, রাজনীতিবীদরা পুলিশকে সহায়তা করছিল। তোমাকে তখন বলতে পারিনি, তারপরেও তুমি বিষয়টা অনুমান করেছিলে এবং বিশ্বাস করেছিলে। যা ছিল টেলিপেথি।
আমাকে এখন ইসলামী জঙ্গীরা খুজছে। হয়তো এটাও জেনেছ। তবে, সেবার তুমি আমার জন্যে অনেক উৎতণ্ঠিত থাকলেও এবার তোমার নিরবতা ভাঙছে না।

রাস্তাটা ছিল ইটের। রিক্সাটা উচু নিচু দিয়ে ধাক্কা খেতে খেতে চলছিল। হঠাৎ করেই রিক্সার একটা চাকা গর্তে পরে গেলো। ব্যাস, তুমি রিক্সা থেকে পরে গেলে। আমি তোমাকে ধরে আটকাবার চেষ্টা করলাম। পারলাম না, আর এতেও তুমি হেসে উঠে বললে, আমার ওজন তুমি সামলাবে কিভাবে ? সত্যিই সেদিন তোমার ওজন আমি সামলাতে পারিনি। তবে, ঘটে যাওয়া জীবনের আরো অনেক বড় বড় ওজন আমি সামাল দিয়েই অপেক্ষা করছি, যদি দেখা পাই। যদি ঠাই হয়। যদি একবার শুনতে পাই, অধিকারের সীমারেখা তুমি ছিন্ন করে ফেল নাই।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:৩১

শামচুল হক বলেছেন: ব্যপারটা কি? কেউ মন্তব্য করে নাই।

২| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ২:০৪

বিভক্ত আত্মা বলেছেন: শামচুল হক ভাই, বিষয়টা যাই হউক, মন্তব্য করুক আর নাই করুক, আমি যে লিখতেই থাকবো। এই তো আপনি কিছু লিখেছেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.