নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সময় অনেক কম, কাজ অনেক বেশি। সংবাদ মাধ্যমের চেয়ে উৎকৃষ্ট এই সিটিজেন জার্নালে অন্তত চটি লেখক মার্কা লোক নেই-আমি এতেই সুখ অনুভব করছি। লিখতে শুরু করেছি-লিখতে লিখতেই হয়তো একদিন ফুড়িয়ে যাবো। তারপরেও সকল মানুষের কল্যান কামনা করেই যাবো

বিভক্ত আত্মা

সাংবাদিক

বিভক্ত আত্মা › বিস্তারিত পোস্টঃ

সতীত্ব পরীক্ষা

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৩৫

সীতাকে তার সতীত্বের পরীক্ষা দিতে হয়েছিল আগুনের মধ্য দিয়ে হেটে। দূর্গাকে কোন সতীত্বের পরীক্ষা দিতে হয়নি। এমন অনেক ঐতিহাসিক বচন আমাদের প্রায় সবার জানা।
কোন এক গল্পে পড়েছিলাম, ভারতীয় এক নারী হাজার জনের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেও বলেছিলেন যে, "আমি সতী"। ভারতীয় এক চলচ্চিত্র শিল্পি পূর্বে পর্ণো স্টার থাকলেও তিনি সিনেমার পর্দাতেও স্টার হয়ে আছেন।
ধর্মে শুধু নারীদেরই সতীত্বের পরীক্ষা দিয়ে আসতে হয়েছে। এখনও নারীদেরই সতীত্বের পরীক্ষা দিতে হয়। জানিনা সতীত্বের পূর্ণাঙ্গ ব্যাখ্যাটা আসলে কি। বাস্তব জীবনে অনেক শিক্ষিত নারীও মনে করেন যে, তাদের যোনি অক্ষত রাখা অর্থাৎ অন্য কোন পুরুষের সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপন না করার অর্থই হচ্ছে সতী। ইদানিং সতীত্বের ব্যাখা নিয়ে শহরে বা শিক্ষিতদের মধ্যে মতভেদ সৃষ্টি হয়েছে। নারীরা তাদের শরীরের স্বাধীনতা চান, মর্যাদাও চান। অবশ্য এটা তাদের প্রাপ্য বিষয়। তারপরেও এখানে কিছু কথা থেকে যায়। ধরে নিলাম এই মহূর্তে আমি একজন মুসলমান। ইসলাম ধর্ম অনুযায়ি আল্লাহর ইচ্ছা ব্যাতীত একটি গাছের পাতাও নড়ে না। আবার অপরদিকে বলা হয়েছে, আল্লাহ মানুষকে বিবেক বুদ্ধি দিয়ে পৃথিবীতে ছেড়ে দিয়েছেন। কোনটা ভালো ভালো আর কোনটা মন্দ তা মানুষকেই নির্বাচন করতে হবে। ভালো বা মন্দের হিসাব রাখতে তিনি প্রতিটি মানুষের জন্য কিছু ফেরেস্তা রেখেছেন। তিনি পবিত্র কোরআন শরীফে বর্ণনা করেছেন, যারা বেহেশত পাবে, তাদের জন্য রয়েছে বিশেষ স্থান। যে স্থানের নিচ দিয়ে ঝর্ণা প্রবাহিত হবে। সেই বেহেশত বাসী পুরুষটির জন্য বরাদ্দ রয়েছে ৭০ জন হুর অর্থাৎ নারী। সেই হুরদের বর্ণনাও তিনি করেছেন। আর শরাব তো তার জন্য বরাদ্দ থাকছেই।
ধর্ম তো ধর্মই। ধর্মের এসব কথা বিশ্বাস না করলে ধর্ম থাকবে না। তারপরেও বিবেকবান মানুষের মনে যেসকল প্রশ্নের জন্ম দেয় তার উত্তর ধর্মের মধ্যে থাকা উচিত ছিল। মুসলমানদের জন্য শরাব হারাম। বিবাহ ছাড়া কোন নারীর সাথে যৌন সম্পর্ক অমার্জনীয় অপরাধ। সমকামি তো একটা মহা অপরাধ। শরীয়াহ আইনে অবৈধ যৌন সম্পর্কের কারনে নারীদের পাথর নিক্ষেপ করে হত্যা করা হয়। চুরির দায়ে হাত কেটে ফেলা হয়।
আসলে বিষয়গুলো এলোমেলো হয়ে গেলেও এবং প্রশ্নগুলো পুরোনো হলেও এখনও এসবের জবাব পায়নি মানুষ।
আল্লাহর হুকুম ছাড়া গাছের পাতাও নড়ে না। শরীরের কামভাব বা জৈব তাড়না তার ঈশারায় কি তৈরী হয়নি ? যৌন ক্ষুধা মিটাতে বা মনের ইচ্ছা পূরণ করতে নারী বা পুরুষ বিবাহ ছাড়া যে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে নিজেদের সুখ ভাগাভাগি করে নেয়, তাতে কি আল্লাহর ইশারায় হয়নি ? বেহেশত বাসীর জন্য ৭০ জন হুর অর্থাৎ নারী বরাদ্দ থাকলেও, বেহেশত বাসী নারীর জন্য কতজন পুরুষ বরাদ্দ রয়েছে ? বেহেশত বাসীকে আল্লাহ শরাব পান করার অনুমতি দিয়েছেন। তাহলে এখন এসব অবৈধ কেন ?
অনেক মানুষ গাদাগাদি করে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত থাকা, শরাব পান করা সহ ভোগ বিলাসে মত্ত থাকার স্থানের পার্থিব নাম হচ্ছে পতিতালয়। সেই হিসেবে বেহেশতকে কি পতিতালয়ের সাথে তুলনা করা যায় না ?
আমি জানি মুসলিম মাত্রই আমার এমন প্রশ্নকে উদ্ভট চিন্তা বলে মনে করবেন। হয়তো এটাও মনে করতে পারেন যে, আমি ইসলাম বিরোধী, নাস্তিক ইত্যাদি।
আল্লাহ সত্যকে স্বীকার করতে বলেছেন। আপনি প্রকৃত মুসলমান। তাই সত্যকে স্বীকার করলে সমস্যা কোথায় ? আল্লাহ মানুষকে সমানভাবে সৃষ্টি করেছেন। অপরদিকে বলেছেন যাকাত দিতে ! কেন? সকল মানুষকে তো তিনি সমপরিমান সম্পদ দিতে পারতেন। কেন তিনি বৈষম্য তৈরী করলেন ? কেন একই সৃষ্টিকর্তার কোন সৃষ্টিকে হাত পেতে দান খয়রাত সংগ্রহ করতে হবে ? কেন দান খয়রাতের মাধ্যমে বেহেশত অর্জনের সুযোগ রাখা হয়েছে ? তাহলে কি অর্থ খরচ করলেই বেহেশত পাওয়া যাবে ?
আমার দৃষ্টিতে পতিতাবৃত্তি একটি পেশা। আল্লাহ সকল ব্যবসাকে হালাল করেছেন। তাহলে পতিতাবৃত্তি হারাম কেন ? কেন তাদের নরকের বাসিন্দা বলে বিবেচনা করা হয় ? শত জন মানুষ যদি স্বাক্ষী দেয় যে, ওই মানুষটি ভালো ছিল, অথবা ওই মানুষটি অনেক মানুষের উপকার করেছে, অথবা শত জন বা হাজার জনের মনকে, শরীরকে শান্ত করেছে, তাহলে তো সেই পতিতার বেহেশতের বাসিন্দা হবার অগ্রাধিকার রয়েছে।
পেশাগত কাজের খাতিরে, কয়েকটি পতিতালয়ে প্রবেশ করার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। সেখানকার বাসিন্দাদের সাহায্য নিয়ে পতিতাদের অর্থাৎ সেই বিনোদন কর্মীদের কার্যকলাপ গোপনে দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল। জীবনের বাস্তবতায় একজন দোকানদারের কাছে যখন কোন কাষ্টমার যায় এবং দোকানদারের কাছে তার প্রয়োজনীয় জিনিসটি খরিদ করে, তারপরেই কাষ্টমার সেখান থেকে চলে যায়। দোকানদার বা কাষ্টমার কেউ কাউকে মনে রাখবার কোন প্রয়োজন মনে করেনা।
আমি মাত্র পাচ থেকে ছয় হাতের ব্যবধানে একজন পতিতা এবং পতিতার কাষ্টমারের যৌন কর্ম প্রত্যক্ষ করেছি। বিশ্বাস হয়না তাই না?
না, এটাই সত্য। আর চরম সত্য কথা হলো, সেই পতিতা তার শরীর নগ্ন করে দিয়ে কাষ্টমারের চাহিদা পূরন করে মাত্র। বিনিময়ে সে কিছু টাকা নেয়। আমি একে একে পনের জন পতিতার যৌন কার্য্য দেখেছি। এদের মধ্যে সব কজন পতিতাই ব্যবসাতে দৃষ্টি দিয়েছে। কোন একজনও পতিতা তার শরীরের কামনা পূরনের জন্য কোন কাষ্টমারের কাছে আবেদন করেনি। অর্থাৎ ওই পতিতা নিজে অতৃপ্ত থেকে, তার কাষ্টমারের মন, শরীর শান্ত করেছে। ওই কাষ্টমারের উচ্ছিষ্ট বীর্য্য ধারন করে কাষ্টমারকে সর্বোচ্চ সুখ দিয়েছে। অবশ্য অতি ভদ্র ভাষায় আমরা সেই পতিতাকে বেশ্যা বলে থাকি। বা বেশ্যা বলে গালিও দিয়ে থাকি !
হিন্দু ধর্মের দূর্গা, দ্রৌপদী তাদের বর্ণনা নাই করলাম। বর্ণনা করলাম না যারা সেবাদাসী হয়ে জীবন কাটান। খৃষ্টান ধর্মের সিস্টার, মাদার তাদের জীবন ধারন সম্পর্কে অনেক গোপন ইতিহাস আমি প্রত্যক্ষ্ করেছি।
ধর্ম রক্ষার নামে যেসকল নারী মানুষ হত্যায় প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে জড়িত, অথবা ঈশ্বরের আরাধনায় সিস্টার, মাদার বা সেবাদাসী হিসেবে জীবন নির্বাহ করছে, তাদের জীবন যাপনের ভেতরের ইতিহাসের মত কোন কলংক অন্তত: কোন পতিতা কলংকিত নয়। আমি জানিনা, আমার স্বচক্ষে দেখা এমন বিষয় হয়তো অনেকেই একমত হবেন না। তারপরেও আমি সেখানেই স্থির যে, বেহেশত বা স্বর্গে প্রবেশের প্রথম অগ্রাধিকার তথাকথিত ওইসব পতিতা বা বেশ্যার আছে।
চলমান জীবনের অনেক উদাহরনের মধ্যে একটা কথা খুব মনে পড়ছে যে, পারিবারিক জীবনের অসহনীয় দুর্দশা গ্রস্থ কোন এক নারী আমাকে তার জীবন সঙ্গী বানাতে প্রস্তুত রয়েছে বলে আমাকে প্রস্তাব দেয়। আমি তাকে বললাম যে, "আপনি তো এখনও আরো একজনের ভালোলাগার মানুষ। আপনাদের মিলন হবে নিশ্চই। এই ক্ষেত্রে আপনার ধারনা বা প্রস্তাব সম্ভবত: অযৌক্তিক। সেই নারী আমাকে অবাক করে দিয়ে বললেন যে, আমি এখনও একজন সতী। এমন কথায় আমি কিছুটা বিব্রত বোধ করলে তিনি জানান যে, তার যোনিতে সমস্যা রয়েছে। তাই তিনি কারো সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের যোগ্যতা রাখেন না। তিনি আরো বললেন যে, এ বিষয়টি স্থায়ী নয়। বিবাহের পূর্বে ছোট্র একটি অপারেশন করলেই সমস্যা দুর হয় যাবে। তাই তার বাবা-মা আপাতত, বিয়ের আগে তার সে অসুখের চিকিৎসা করাচ্ছেন না। কোন দ্বিধা ছাড়াই তাকে বললাম যে, শুধু কি যৌন সম্পর্কই সতীত্বের প্রমাণ বহন করে ? জবাবে তিনি বললেন যে, হা, সেটা প্রায় এ রকমই। কারণ, আমি যাকে ভালোবাসি সে হয়তো আমার শরীর স্পর্শ করেছে, শরীর নিয়ে মত্ত হয়ে উঠেছে, শরীর নিয়ে হয়তো সে তার কামনাকে বা জৈব তাড়নাকে কোন রকমে নিবৃত করেছে, কিন্তু আমার যোনির সমস্যার কারণে আমাদের যৌন মিলন ঘঠেনি। সেক্ষেত্রে আমি একজন সতী (?)।
আমাদের প্রায় সবার চোখেই সতীত্বের সংজ্ঞাটা ঠিক এই রকমই। তবে এ রকম বর্বর আচরন থেকে নারীদের মুক্ত করতে পুরুষদের সহনশীল হওয়া অনেক জরুরি। আপনি সেই নারীকে বেশ্যা বললে, আপনি নিজেও একজন পুরুষ বেশ্যা বটে। ধরে নিলাম যে, বেশ্যা বা পতিতাবৃত্তি ধর্মীয়ভাবে অপরাধ কাজ। তবে সেই অপরাধ কাজের জন্য সেই নারী বেশ্যা হয়তো কম অপরাধী। কারণ, সেই নারী বেশ্যা আপনাকে পূর্ণ সুখ প্রদান করেছে। আর আপনি সেই পুরুষ বেশ্যা সেই নারীটির তৃপ্তি বা সুখের কথা বিবেচনাতেও আনেন নাই। এক্ষেত্রে আপনার অপরাধই বেশি।
একজন প্রখ্যাত লেখিকা সত্য বলে যাচ্ছেন বলে তাকে নির্বাসিত করা হয়েছে। নারী অধিকার আন্দোলনের সাথে কয়েকজন মহৎ নারী কাজ করছেন। যাদের অধিকাংশকেই আমি চিনি এবং জানি। এসব নারীরা এতটাই মানবিক যে, কে কোন ধর্মের অনুসারি তা বিবেচনা না করেই অধিকারের প্রশ্ন নিয়ে লড়াই করছেন। আমি নারী নই, তবে, তাদের কাজের সাথে আমার সমর্থন অনেক বেশি। সেই সাথে শ্রদ্ধাবোধ তো আছেই।
তাই, সেই শ্রদ্ধার জায়গা থেকে আমার দাবি যে, সতীত্বের সংজ্ঞাটা পুনরায় বিবেচনা করা হউক। যৌন সম্পর্কের সাথে সতীত্ব নামের শব্দটা মোটেই তুলনা করা যাবে না। যারা সৎ, সত্য ধারন করেন, মানবতার সেবায় নিয়োজিত, সেখানেই সতীত্ব শব্দটি প্রতিস্থাপন করা হউক।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:০৬

প্রণব দেবনাথ বলেছেন: সামাজিক মানদন্ডে নয়, পাপ পুণ্য মানুষের মনের চেতনায়।

২| ১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:২৮

তানভীরএফওয়ান বলেছেন: বেহেশত বাসীকে আল্লাহ শরাব পান করার অনুমতি দিয়েছেন। তাহলে এখন এসব অবৈধ কেন ?

Did u ever question ur teacher that "why I can't read or carry a book in examination room,while carry or read book outside room?"

২৪ শে মার্চ, ২০১৭ ভোর ৬:১১

বিভক্ত আত্মা বলেছেন: তানভীর ভাই, আমারে আবার লাঠিপেটা করানোর ইচ্ছা জেগেছে আপনার তাইনা? এমনিতেই ওদের জ্বালায় দারুন পেরেসানিতে আছি। এখন একথা বললে, রক্ষা কি পাবো?
তবে ঈঙ্গিতে বলি, আসলে এখানে বা ওখানে কোথাও বাধা আছে বলে মনে হয়না। তবে, ৭০ খানার বিষয়ে আপত্তি অনেক। বলা আছে প্রথম জনের অনুমতি নিতে হবে। আমার প্রশ্ন, ওইখানে যে ৭০ জনকে দেওয়া হবে, তাতে প্রথম জনের অনুমতি মিলবে ক্যামনে?
আর দলিল অনুযায়ী ইহ সংসারের সঙ্গীনি আপনাকে আমাকে ছাড়া যতই পূন্যবাণ হউক, তিনি একা সেই রাজমহলে যেতে পারবেন না। তাতে বুঝা যায়, সেইখানেও তিনি সাথে থাকবেন।
এখন ঘটনা হইলো, কোন রকমে কারো দিকে তাকালেই চোখ রাঙানী দেখতে হয়। তাইলে ৭০ জন??? এরে বাবা, এখন কথা হইলো উনি সহ ৭০ জন, নাকি উনি বাদে ৭০।
তানভীর ভাই, আমার চান্স নাই। আপনি চেষ্টা করে দেখেন। হহহহহহহ, ভালো থাকবেন। মোল্লারা উক্তি মানেনা। তারা মুখস্ত আউড়ায়। তাতেই সকল ভয়ের বিষয় নিহীত।

৩| ২৪ শে মার্চ, ২০১৭ ভোর ৬:২৮

রিফাত হোসেন বলেছেন: পোষ্ট পড়েছি। কিছু বলার ইচ্ছা থাকলেও সময় নাই, ঘুমাতে হবে।
প্রণব দেবনাথ বলেছেন: সামাজিক মানদন্ডে নয়, পাপ পুণ্য মানুষের মনের চেতনায়। ++

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.