![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সম্ভবত ইংরেজী মাস ও দিন ধরেই হয়তো স্থির হয়েছে সুপ্রীতি দিদির আজ জন্মদিন। তাঁর জন্মদিনে শ্রদ্ধা, শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। তবে, আজ আমার মন খুব ভারাক্রান্ত। কারণটা দিদির জন্মদিন বিষয়ে নয়। ঠিক এই দিনটিতেই একটি তারকার জন্ম হয়েছিল, আর আজ এই দিনটিতেই তিনি নিজেকে আড়াল করে ফেলতে চাইছেন।
আমি তাঁকে আড়াল হতে দিতে বাধাও দিতে পারছি না, আবার বলতেও পারছি না যে, "দিদি এই স্বেচ্ছাশ্রম দিয়ে যাও"। কারণ, আমি উপলব্ধি করতে পারছি কি হচ্ছে এই তারকার জীবনে। কত ঝড় বয়ে যাচ্ছে তার জীবনের ওপর দিয়ে। জীবন, সংসার, মায়া, আবেগ সবকিছুই নিয়ন্ত্রনে রেখে তিনি শুধু বলেই যাচ্ছেন, "মঙ্গল হউক সবার, আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যে, আমি একটি গোষ্ঠির স্বাধীকারের আন্দোলনের মাঠের সৈনিক। লাভ লোকসান বুঝিনা, বুঝিনা আমি কি জীবিত আছি নাকি লড়াই করতে করতে।.."
আজ সুপ্রীতি দিদির জন্মদিন। তাঁকে একটা গোলাপ সহ শুভেচ্ছা বাণী পাঠানোর কথা। অথচ, এই জন্মদিনকে ঘিরে আমি চরম আতংকিত। কারণ, তিনি আক্ষেপ করে বলেছেন, "কাল (অর্থাৎ আজ)'র পর থেকে তারই সৃষ্টি "উইমেন চ্যাপ্টার" এর সাথে হয়তো তিনি থাকবেন না !
আমার দৃষ্টি সেদিনই থমকে গিয়েছিল-তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছিলেন, "শেষ রাতেও তাকিয়ে থাকি, ভালো একটা লেখার দিকে। এই লেখাটি এক্ষুনি আপলোড না করলে হয়তো বড়- বেশি ক্ষতি হয়ে যাবে।" অপর একটি স্টাটাসে লিখেছেন, " একজন লেখিকার লেখার হেড লাইন পরিবর্তন করেছেন তিনি, তারপর থেকে তাকে বলা হয়েছে, সে লেখার হেড লাইন পরিবর্তন করার ক্ষমতা তাঁর নাকি নেই!-অথচ দিদি উইমেন চ্যাপ্টারের সম্পাদক।"
আমি বাস্তব উপলব্ধির কারণে, হয়তো সব অভিজ্ঞতাগুলো গুছিয়ে লিখতে পারবোনা, তবে, আমার শঙ্কার কারণগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করবো।
না, আমি আবেগি হয়ে সুপ্রীতি দিদিকে "স্টার" বলছি না। তিনি সত্যিই একজন স্টার বটে। কারণ,
উইমেন চ্যাপ্টার প্রকাশিত হবার আগ পর্যন্ত নারী স্বাধীকারের আন্দোলন কি জিনিস তা আমার বোধগম্য ছিল না। হ্যা, আমি বিশিষ্ট লেখিকা তাসলিমা নাসরিনের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভক্তি রেখেই বলছি, আমি তাসলিমা নাসরিন দিদির চরম ভক্ত। তবে, কোন কোন সময় হয়তো কোন কোন লেখা নিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে যাই। তাসলিমা দিদি যতটা পারেন, সে বিতর্ক বা এই রকম বিতর্ক এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করেন। সুপ্রীতি দিদি এটা করেন না। না, আমি মুর্খ বা নির্বোধ নই। কেউ হয়তো ভাববেন যে, কোথায় তাসলিমা আর কোথায় সুপ্রীতি। এমনটি ভাববার কোন কারণ নাই। আমি সম্পূর্ণ দায় নিয়েই এই লেখা লিখছি।
আমাকে ক্ষমা করবেন, হয়তো এভাবে লেখা আমার উচিত নয়, তারপরেও সত্য তো সত্যই। তাসলিমা নাসরিন দিদি আত্মকেন্দ্রীক। তিনি বিষয় বস্তু নির্বাচন করার পরে তার জীবনের ঘটনাই বর্ণনা করতে থাকেন, যা মূল লেখার সাথে অমিল বটে। তাসলিমা দিদিকে স্যালুট যে, তিনি নারী স্বাধিকারের আন্দোলনে অগ্রনী ভূমিকায় রয়েছেন। তবে, মনটা খাটো হয়ে যায়, তিনি যখন বেগম রোকায়া শাখাওয়াৎ হোসেনকে কটাক্ষ করে লিখেন। মনটা আরো খাটো হয়ে যায়, তার ব্যক্তি জীবনের কিছু অংশ অকাল প্রায় দ্রোহী কবি রুদ্র মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর সাথে জীবন কাটাতে চাননি। তিনি তার একটি কবিতার (চিঠি) এর মধ্যে রুদ্র'র চরিত্র হণনের চেষ্টা করেছেন, সেখানে অকাট্যভাবে ইনিয়ে বিনিয়ে বলেই চলেছেন কখন কার সাথে রুদ্রের প্রমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। আর সেসব সম্পর্কের কথা রুদ্র নাকি তাসলিমা দিদিকে শোনাতেন। তাসলিমা দিদি এতে ঈর্ষান্বিত হতেন, কষ্ট পেতেন- এমন সব কথা সে চিঠিতে তিনি লিখেছেন। তিনি প্রমান করতে চাইছেন যে, রুদ্রের এসব প্রেম যেন অনৈতিক কর্মকাণ্ড ! অথচ রুদ্র তার স্ত্রীর কাছে সব কথাই বলতেন। তাহলে বিষয়টির নৈতিক আর অনৈতিক জায়গাটায় প্রশ্নবোধক হয়ে আছে আজও। গত কয়েকদিন আগে বাংলা ট্রিবিউনে এক লেখার মধ্যে তাসলিমা দিদি বেশ পরিষ্কার করেই লিখেছেন, ৩০ বছর আগে নোটারি পাবলিকের ঘোষনা মতে লোকটিকে তিনি বিয়ে করেছিলেন। বিয়ের পরে যখন জানতে পারলেন যে, লোকটি বহুগামী ছিল, তিনি নির্দ্বিধায় সে লোকটিকে ডিভোর্স দিয়ে চলে গিয়েছিলেন।
আমার কাছে মনে হয়েছে, তিনি তার জীবনের সাথেই সবকিছুর মিল আর অমিল খুজছেন। এই কারণে হয়তো কোন কোন সময় স্ববিরোধী কথা আমরা জানতে পারি। বহুগামীতার কারণে রুদ্রকে ছেড়ে গিয়েছিলেন, অথচ রুদ্রের সেই বিখ্যাত কবিতা-- তুমি কুকুর পোষ, না না, তুমি শুকর পোষ.....। অনেক ঈঙ্গিত বহন করে। যদিও এসব বিষয় তাদের একান্ত জীবনের। আমার মনে প্রশ্ন আসে যখনই তিনি, কোন নারী স্বাধীনতা বা কোন নারীর বিষয়ে বা গোষ্ঠির বিষয়ে কিছু লিখেন, তখনই তার জীবনের ঘটনাই তিনি বেশি লিখতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন। একারণে হয়তো মূল লেখা থেকে অনেকটাই সরে আসেন তিনি। তবে, এটা অনস্বীকার্য্য যে, বিশেষ করে বাংলার মুখ লুকিয়ে নিপিড়ন সহ্য করা নারীরা তাসলিমা দিদির সাহস দেখে ঘোমটা ফেলে দিয়ে কথা বলার সাহস পান। এটা স্বীকার করি যে, তিনি নারী মুক্তির আন্দোলনে অনেক সক্রীয়। তবে, খটকা লাগে, তিনি কি নিজের মত করে একটি গোষ্ঠির প্রতিষ্ঠা চান বলেই আমার মনে হয়। তাসলিমা দিদির লেখার সমালোচনা করার যোগ্যতা আমার নাই। তারপরেও যা মনে হয়েছে, তাই লিখলাম।
প্রশ্ন আসে, এমন উদারন দেবার সাথে সুপ্রীতি দিদির সম্পর্ক কি ? সম্পর্ক অবশ্যই আছে। তাসলিমা দিদি খুচিয়ে খুচিয়ে, আহত রক্তাক্ত করে আন্দোলনে বিশ্বাসী। অপরদিকে সুপ্রীতি দি, ভালোবাসা দিয়ে, কঠিন যত্ন করে আর সমগ্র গোষ্ঠিকে সামনে রেখে নারীদের জাগিয়ে তুলছেন। সুপ্রীতি দিদির একটি লেখার মধ্যেও আত্মকেন্দ্রীক কিছু বা নিজের জীবনের সাথে মিলিয়ে দিয়ে একটা সামগ্রীক আন্দোলনকে রুপ দেননি। এমন মানসিকতার অধিকারী, সুপ্রীতি দিদিকে তাই আন্দোলনের সর্বাগ্রে চিন্তা করি। তিনি হাসতে হাসতে খুব নরম করে অর্থাৎ সময়োপযোগি ভাবে কঠিন বিষয়টাকে সুকৌশলে উপস্থাপন করছেন। এতে আমার মনে হয়েছে, প্রায় অধিকাংশ শিক্ষিত দ্রোহী নারীরা প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। যার বহি:প্রকাশ উইমেন চ্যাপ্টার।
তাসলিমা দিদি জঘন্য কোন কর্পোরেট মিডিয়াতেও লেখা ছাপান, সুপ্রীতি দিদি এটা করেন না বলেই তিনি একক প্রচেষ্টায় উইমেন চ্যাপ্টার সৃষ্টি করেছেন। অতি কৌশলী তাসলিমা নাসরিন দিদির পক্ষে আরো বড় করে উইমেন চ্যাপ্টারের মত কিছু করতে পারতেন।
যাহোক-আমার দৃষ্টিকোন থেকে সুপ্রীতি দিদি একজন স্টার। আমার এই স্টার আজ বড়ই ক্লান্ত। "তিনি আমাকেই প্রশ্ন করে প্রতিউত্তর লিখেছেন (হুবুহু তুলে ধরলাম)-"Supriti ধার : আমি যদি আর এই স্বেচ্ছাশ্রম দিতে রাজী না হই হাবিব? আমার যদি টায়ার্ড লাগে? আমার যদি কাজই করতে ইচ্ছা না করে, তখন?"
আমার নির্বাক ছিলাম। দিদির এমন প্রশ্নের কোন উত্তর আমার কাছে ছিলনা, তা নয়, কিন্তু আমি বলতে পারছিলাম না। তারপরেও লিখেছিলাম (হুবুহু)-"Ali Ahasan Habib এর কোন সঠিক জবাব আমার কাঝে নাই দিদি। তবে, এটা ঠিক যে, মনের ভেতরে কঠিন যন্ত্রনা নিয়ে একাকিত্ব জীবন নির্বাহ করতে হবে হয়তো। তারপরেও উপলব্ধি করবেন হয়তো মানুষের জন্য আপনার দায় অনেক। অথচ, যারা আজকে আমরা আপনার স্বেচ্ছাশ্রমকে একটা প্লাটফরম বানিয়ে ভোগ করছি, চর্চা করছি, বিনিময়ের ক্ষেত্র হিসেবে দেখছি আর আপনাকে বাহবা বাহবা দিচ্ছি, এই আমরাই কিন্তু আপনার শ্রমটাকে কিছুটা হালকা করার কোন প্রয়াস চালাচ্ছি না। আপনি ব্যক্তি "সুপ্রীতি" এটা অর্গানাইজেশন হয়ে উঠেছেন। যেকোন সুশৃঙ্খল গনমাধ্যমকে চ্যালেঞ্জ করার ক্ষমতা অর্জন করেছেন এই "উইমেন চ্যাপ্টার" দিয়ে। অথচ আমিও বাকরুদ্ধ ওই এক প্রশ্নে "আমার যদি কাজই করতে ইচ্ছা না করে?" না দিদি আমার কাছে এর কোন জবাব নাই। আমি অতিক্ষুদ্র মানুষ। মিডিয়া থেকে নিজেকে আড়াল করে ফেলেছি, কারণ সত্য বলার সম্পূর্ণ প্লাটফরম বাংলাদেশের গনমাধ্যমে নাই। আপনার কাজ করার অনিচ্ছাটাকে হয়তো ইচ্ছায় রুপদান করা সম্ভব হতো। কিন্তু এই সম্ভবটাই (প্রতিকী) আপনার কণ্ঠরোধ করে ধরতো বা ধরবে। তখন হয়তো অদৃশ্য একটি ছায়ার কারণে আপনি অব্যাহত রাখতেই পারবেন না যে এটাই স্বাধীকার চর্চার উন্মুক্ত ক্ষেত্র। তখন অলিখিত বিধি নিষেধের বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে পরবেন। তাই, সত্যিকার অর্থেই আপনার প্রশ্নের জবাব আমার জানা নাই। তারপরেও বলবো, সম্ভব হলে অব্যাহত রাখুন। আমার মত নিরস্ত্র মানুষদের জন্যই।"
------
আমার জীবনের একাংশে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা না লিখলেই নয়। তবে, বিষয়টা প্রাসঙ্গিক।
শুরুতেই ৫শ টাকা সম্মানীতে শীর্ষস্থানীয় পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কাজ শুরু করি। ৩ মাসের মাথায় সম্মানী বাড়িয়ে ১ হাজার, আবার ২ মাস পরে ১ হাজার ৫শ, তার এক বছর পরে ৩ হাজার। বাড়িয়ে বলছি না। ১ টাকা লাইনেজ আর ছবির জন্য ১শ টাকা হিসেবে এবাবদেই উপার্জনের খাতায় আলাদাভাবে ২ হাজার লাইনেজ প্রায় মাসেই হতো। সেই সাথে হয়তো কমপক্ষে ১৫টা ছবি।
টাকার অংক কম হলেও বিধি মোতাবেক আমাকে যদি প্রদান করতো তবে হয়তো ঢাকায় কর্মরতদের চেয়ে অনেক বেশি টাকা প্রদান করতে হতো।
লেখার কারণেই জামায়াত-শিবির, আওয়ামীলীগ-যুবলীগ-ছাত্রলীগ, বিএনপি, পুলিশ, প্রশাসন প্রায় সবার কাছে আমার নামটি আতংক হিসেবে পরিচিত লাভ করে। মাইরও খাইছিলাম কয়েকবার। যার চিহ্ন আর যন্ত্রনা এখনো বয়ে বেড়াই। জেলায় এসে মিডিয়া ক্রুসেড এর শিকার হলাম। তবে, লেখার ওজনের কারণে মিত্রের অভাব হলোনা। তবে সম্মানী বাড়ানো হয়নি কয়েক বছরেও। অত:পর একদিন ৭ম ওয়েজ এর ৭ম গ্রেডে অন্তর্ভুক্ত হলাম। তখন কিছুটা আশার মুখ দেখলাম। তবে, সংসার আর সন্তানের পড়াশোনার খরচের কাছে আয় খুব সামান্যই। মাস শেষে চরম টানাটানির মধ্যে চলেছি। অন্যদিকে প্রধান অফিস থেকে এলাকা ইজমের শিকার হয়ে মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। প্রতিদিন সব যুদ্ধের পাশাপাশি শুনতে হয়েছে, "তোমাকে চাকরিচ্যুত আমি করবোই" যাহোক সেটা পারেনি। আমি নিজেই ছেড়েছি। অত:পর বিগ হাউজে যোগদান। অনেক টাকা। অভাব পূর্ণ হয়ে গেলো। এখানে ৭ম ওয়েজ এর ৩য় গ্রেডে স্টাফ রিপোর্টারের মর্যাদা দেওয়া হলো। আর এই মর্যাদাই আমার জন্য কাল হয়ে গেল। ঈর্ষায় নিপতিত হলাম। রোষানল কাকে বলে, আমি দেখেছি। আভ্যন্তরিন অশুভ আর অসুস্থ মানসিকতার দ্বারা আমি নির্যাতিত হতে থাকলাম। এ যেন নিজ গৃহেই পরবাসী। অত:পর ষড়যন্ত্র সফল হলো তাদের। ইতোমধ্যে যুক্ত হয়েছে ইসলামী মিলিট্যান্ট দের দ্বারা মৃত্যুর হুমকি, মেরে ফেলার জন্য হামলা। বেচে গেছি। অত:পর বিষিশ্ট (ভুল বানান লিখলাম) এদের সংখ্যা আধিক্যের কারনে আরো বেশি রোষানলে পতিত হলাম। দেখার সৌভাগ্য হলো, বিশিষ্ট (?) জনদের জঘন্য রক্তচক্ষু। হঠাৎ করেই কারণ উল্লেখ ছাড়াই মাত্র ৭ দিনের মধ্যে অব্যাহতির নোটিশ। আমার ন্যায্য পাওনাগুলোর হদিস আজো পাইনি। সম্ভবত: স্বৈরাচারী খেতাব প্রাপ্ত জনের কবি হবার যে বাসনা এবং আর এক বাবা-মায়ের কোল খালি করে সন্তান ক্রয়-ঠিক এমনই হয়তো ঘটনা ঘটেছে যে, আমার পাওনা আত্মসাৎ করে একটি ছেলে সন্তান ক্রয় করা হয়েছে সম্ভবত:।
চোখে মুখে অন্ধকার। অনিশ্চয়তার পথ। সেদিন আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত নিলাম। সব কাজ শেষ করে, অবশেষে শেষ কর্ম সম্পাদনের আগে একটা স্টাটাস দিলাম, যে কারণে আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। পরের মিনিটেই ফোন আর ফোন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেই রাতের লক্ষ্যই ছিল, আমাকে ফেরানো। দেশ বিদেশ, অজানা, জানা সবাই যুক্ত হলেন ফাইট ব্যাক নামে একটি গ্রুপে। আমার অনড় সিদ্ধান্তে আমার সেদিনের স্বজনরা ব্যার্থ প্রায়। শরিফুল হাসান ভাই এর সুচতুর কর্মে পুলিশ এসে আমার আত্মঘাতি সিদ্ধান্তে বিপত্তি হয়ে দাড়ালো।
সেদিন, পরেরদিন, পরবর্তী সময়ে বিখ্যাত অনেকেই আমাকে আশ্বস্ত করা হয়েছিল যে, অমুক দেশ থেকে আমার জন্য যা প্রয়োজন সব করা হবে, দেশ থেকেও এরকম অনেক প্রতিশ্রুতি। যাহোক ফিরে এসেছিলাম। আদালতে গিয়ে আজো কোন লাভ করতে পারিনি।
সব জানার পরেও একটি টেলিভিশন আর বিখ্যাত অনলাইন কাজে গাফিলাতির অভিযোগ আনলো। আমাকে জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন মনে করলেন না। আমি যে, পান খাওয়া মাওলানাদের চাপাতির ভয়ে আজ এগ্রাম তো কাল সে গ্রাম-এভাবে ছুটে বেড়িয়েছি। স্রেশ জীবনটাকে বাচাবো বলে। শেষ রক্ষা হয়নি। আমার জীবন বাচলো বটে। তবে নিপতিত হলাম, আর এক অজানা আশংকায়। আমি এখন ফেরার জীবন যাপন করছি।
হ্যা, সুপ্রীতি দিদি, আপনার ঘোষনার পরপরই, সব রকম আশ্বস্ত করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, পাশে থাকবে সবাই। আমিও বলেছি, পাশে আছি দিদি। তারপরেও কি আমি আপনার প্রশ্নের জবাব দিতে পেরেছি? না পারিনাই। কারণ, জীবনের বাস্তবতায় অর্থের গুরুত্ব অনেক। অনেকেই এমনকি আমি নিজেও বলতাম, "অর্থ উপার্জনের মানসিকতা সাংবাদিকতা পেশায় বেমানান"। অর্থ উপার্জন হয়নি দেখে, আমি ইলিশ বা কাটারীভোগ পাঠাতে পারিনি। এই স্বল্প পরিধিতে আমি কখনো লিখতে দেখিনি, কিন্তু এসবের বদৌলতে তারা বছরে ৩ টি মোটর সাইকেল বদলিয়েছেন। অথচ বেতন পাননা তিনি, সামান্য সম্মানী হয়তো পান।
যাহোক, ক্ষমতা হাতে পেয়ে হজ্ব করতে যাবার বিষয়টি যেমন অপ্রাসঙ্গীক, তার চেয়েও কঠিন হলো, নীতি বিসর্জন। অত:পর......।
হা, দিদি, আমার বলবার সাহস নাই যে, আপনার স্বেচ্ছা শ্রমে প্রতিষ্ঠিত উইমেন চ্যাপ্টারের পাশে থাকবো। আমার বলবার সাহস নাই, আপনি জীবন যাপন করার ন্যুন্যতম কোন আয় করতে পারবেন। না, আমি মিথ্যা বলবো না। আমার সত্যিই সাহস নাই।
হ্যা, পাশে আছি, হয়তো এটাই দেখতে যে, একজন তারকা স্বেচ্ছাশ্রমে যুদ্ধ করছেন, আমরা বাহবা বাহবা দিচ্ছি, কিন্তু যুদ্ধের রসদের কথা কেউ ভাবছি না।
না দিদি, পাশে থাকবো না। আপনি একজন তারকা। আর তারকার পতন কোনভাবেই কাম্য নয়।
একটা ছোট আর বাস্তব অভিজ্ঞতার উদাহরন দিয়ে শেষ করছি-
আমার জীবনে এখন কেউ নাই। আমি একেবারে একা। পাবলিকলি স্থানটা বলছি না। তবে এখানে আমিও মোল্লাদের মত দাড়ি, টুপি আর পাঞ্জাবি পরিধান করছি। মানুষের মঙ্গল কামনার অংশ হিসেবে, রাসায়নিক মুক্ত মৎস্যচাষ প্রকল্প করছি। এখানেও ধারদেনা হয়ে গেছে অনেক। সম্ভ্রান্ত অনেকেই বাহবা বাহবা বলে আমাকে উৎসাহ দিচ্ছেন, প্রশংসায় পঞ্চমুখ হচ্ছেন। অত:পর বাজারজাত করনের সময় বেশ দম্ভ করেই বললাম, এসব মাছ কিন্তু কেমিক্যাল ফ্রী। আড়তদারদের বিষয়টাতে অনেক আগ্রহ। ক্রেতারা তাদের ভাষায় যা বললেন " আরে ভাই, কেমিক্যাল ফ্রী, আর মুরগির লিটার যাই দিয়েই চাষ করেন, দাম ওই একটাই। কারণ, এখনো বৃহত্তমভাবে সেই বাজার হয়নি। তাই আলাদা কোন দাম নাই। লোকসানেই বিক্রি করেছি। সামনে আরো লোকসান আসছে।
জানেন দিদি, আমার সাথে সবাই আছেন। বাস্তব অভিজ্ঞতায়, আসলেই কেউ নাই। তাই আমাকেই ভাবতেই হচ্ছে। নীতি বিসর্জন দিয়ে পাবলিকরে লিটার খাওয়াবো নাকি আমি লোকসানের গহীনে তলিয়ে যাবো।
তাই, সিদ্ধান্ত আপনাকেই নিতে হবে দিদি, আপনি কি করবেন। তারপরেও বলবো, বেচে যেহেতু আছি, মানবতা আমাদের প্রধান ধর্ম।
©somewhere in net ltd.
১|
০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৮:৫০
সজীব মোহন্ত বলেছেন: জন্মদিনের শুভেচ্ছা।