নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কথক

আমার খুব কষ্ট হয়, যখন RAJAKAR বানানটা বাংলা বর্ণমালায় লিখা হয়। এটা বর্ণমালার জন্য অপমান।

কথক পলাশ

পোশাক আর মননের গেঁয়ো ভাবটা এখনো যায়নি। তাল মেলাতে গেলেই খেই হারিয়ে ফেলি।

কথক পলাশ › বিস্তারিত পোস্টঃ

যে কবিতা পুরোনো হয়না-পর্ব ৩

২৫ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ১১:০৬

যে কবিতা পুরোনো হয়না-পর্ব ১

যে কবিতা পুরোনো হয়না-পর্ব ২



ব্লগারদের কাছে আমার কৃতজ্ঞতা বুঝিবা শেষ হবেনা। সবার উৎসাহ আমাকে এতই মগ্ন বানাচ্ছে যে ঘুমালেও এখন কবিতা শুনতে পাই। পুরোনো না হওয়া কবিতারা যেন প্রতিবেশীর মতই আপন হয়ে উঠছে। একটা স্বর্ণালী সময়ের প্রতিটি পরত আমি খুঁজে পাচ্ছি কবিতার প্রতিটি পংক্তিতে। আমার না ভোলা সময়...!

যাই হোক, কথা না বাড়িয়ে এবার কবিতায় ঢোকা যাক। এখানে আরো কিছু কবিতা দিলাম; যা আমাকে 'আমি' বানালোঃ



এ পর্বের কবিতাগুলোঃ

==============

১৭. চিরদিন-অমিয় চক্রবর্তী

১৮. অভিমানের খেয়া-রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ

১৯. মালতিবালা বালিকা বিদ্যালয়-জয় গোস্বামী

২০. মানুষ-কাজী নজরুল ইসলাম

২১. হুলিয়া-নির্মলেন্দু গুণ

২২. আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি-আবুল হাসান






১৭. চিরদিনঃ

অমিয় চক্রবর্তী পঞ্চপান্ডবের একজন। তিরিশের দশকের শেকল ভাঙ্গার কবিদের মধ্যে অন্যতম। তাঁর চিরদিন কবিতাটার মধ্যে একটা গতিশীল ছন্দ আছে-যা কবিতার রোমান্সকেও ছাড়িয়ে গেছে। বারবার আওড়ালেও যেন ফুরোয় না।



চিরদিন

(অমিয় চক্রবর্তী)



আমি যেন বলি, আর তুমি যেন শোনো

জনমে জনমে তার শেষ নেই কোনো।

দিনের কাহিনী কত, রাত চন্দ্রাবলী

মেঘ হয়, আলো হয়, কথা যাই বলি ।

ঘাস ফুটে, ধান উঠে, তারা জ্বলে রাতে,

গ্রাম থেকে পাড়ি ভাঙে নদীর আঘাতে ।

দুঃখের আবর্তে নৌকো ডোবে, ঝড় নামে,

নূতন প্রাণের বার্তা জাগে গ্রামে-গ্রামে :

নীলান্ত আকাশে শেষ পাইনি কখনো-

আমি যেন বলি, আর তুমি যেন শোনো ।।



তুমি যেন বল, আর, আমি যেন শুনি

প্রহরে-প্রহরে যায় কল্পজাল বুনি ।

কুমুদ কহ্লার ভাসে থৈ-থৈ জলে,

কোথা মাঠ ফেটে যায় মারীর অনলে ।

আঙিনায় শিশু খেলে, ফুলে ধরে মৌ,

তুলসীতলায় দীপ জ্বালে মেজো বৌ,

সানাই বাজানো রাতে হঠাৎ জনতা

বিয়ে ভেঙে মালা ছিঁড়ে ছড়ায় মত্ততা ।

মানুষের প্রাণে তবু অনন্ত ফাল্গুনী-

তুমি যেন বল, আর, আমি যেন শুনি ।।



১৮. অভিমানের খেয়াঃ

অনেক অভিমানী ছিলেন রুদ্র। তাঁর এই অভিমানের খেয়া সেই কৈশোরে আমাকেও অভিমানী করে তুলেছিল। "অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক, জ্যোৎস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই; কিছুটা তো চাই, কিছুটা তো চাই।"



অভিমানের খেয়া

(রুদ্র মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ)



‘এতোদিন কিছু একা থেকে শুধু খেলেছি একাই

পরাজিত প্রেম তনুর তিমিরে হেনেছে আঘাত

পারিজাতহীন কঠিন পাথরে



প্রাপ্য পাইনি করাল দুপুরে,

নির্মম ক্লেদে মাথা রেখে রাত কেটেছে প্রহর বেলা_

এই খেলা আর কতোকাল আর কতোটা জীবন!

কিছুটা তো চাই- হোক ভুল হোক মিথ্যে প্রবোধ,

অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক, জ্যোৎস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই

কিছুটা তো চাই, কিছুটা তো চাই।



আরো কিছুদিন, আরো কিছুদিন– আর কতোদিন?

ভাষাহীন তরু বিশ্বাসী ছায়া কতোটা বিলাবে?

কতো আর এই রক্ততিলকে তপ্ত প্রণাম!

জীবনের কাছে জন্ম কি তবে প্রতারণাময়?



এতো ক্ষয়, এতো ভুল জমে ওঠে বুকের বুননে,

এই আঁখি জানে, পাখিরাও জানে, কতোটা ক্ষরণ

কতোটা দ্বিধায় সন্ত্রাসে ফুল ফোটে না শাখায়



তুমি জানো নাই– আমি তো জানি

কতোটা গ্লানিতে এতো কথা নিয়ে, এতো গান, এতো হাসি নিয়ে বুকে

নিশ্চুপ হয়ে থাকি



বেদনার পায়ে চুমু খেয়ে বলি এই তো জীবন,

এইতো মাধুরী, এই তো অধর ছুঁয়েছে সুখের সুতনু সুনীল রাত।



তুমি জানো নাই– আমি তো জানি

মাটি খুঁড়ে কারা শষ্য তুলেছে,

মাংসের ঘরে আগুন পুষেছে

যারা কোনোদিন আকাশ চায়নি নীলিমা চেয়েছে শুধু,

করতলে তারা ধরে আছে আজ বিশ্বাসী হাতিয়ার



পরাজয় এসে কণ্ঠ ছুঁয়েছে লেলিহান শিখা,

চিতার চাবুক মর্মে হেনেছো মোহন ঘাতক

তবুও তো পাওয়ার প্রত্যাশা নিয়ে মুখর হৃদয়,

পুষ্পের প্রতি প্রসারিত এই তীব্র শোভন বাহু।



বৈশাখী মেঘ ঢেকেছে আকাশ

পালকের পাখি নীড়ে ফিরে যায়–

ভাষাহীন এই নির্বাক চোখ চোখ আর কতোদিন?

নীল অভিমানে পুড়ে একা আর কতোটা জীবন?

কতোটা জীবন?’



‘কিছুটা তো চাই– হোক ভুল হোক মিথ্যে প্রবোধ,

অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক, জ্যোৎস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই

কিছুটা তো চাই, কিছুটা তো চাই…



১৯. মালতীবালা বালিকা বিদ্যালয়ঃ

এই কবিতাটা একসময় সামাজিক আন্দোলনে রূপ নিয়েছিল। সমাজের কালো দিকগুলো যেন কালো মেয়ের অভিমানে ফুটে উঠেছিলো। খুব হৃদয় নাড়ানো কবিতা।



মালতীবালা বালিকা বিদ্যালয়

(জয় গোস্বামী)



বেণীমাধব, বেণীমাধব, তোমার বাড়ি যাবো

বেণীমাধব, তুমি কি আর আমার কথা ভাবো?

বেণীমাধব, মোহনবাঁশি তমাল তরুমূলে

বাজিয়েছিলে, আমি তখন মালতী ইস্কুলে

ডেস্কে বসে অঙ্ক করি, ছোট্ট ক্লাসঘর

বাইরে দিদিমণির পাশে দিদিমণির বর

আমি তখন নবম শ্রেণী, আমি তখন শাড়ি

আলাপ হলো, বেণীমাধব, সুলেখাদের বাড়ি



বেণীমাধব, বেণীমাধব, লেখাপড়ায় ভালো

শহর থেকে বেড়াতে এলে, আমার রঙ কালো

তোমায় দেখে এক দৌড়ে পালিয়ে গেছি ঘরে

বেণীমাধব, আমার বাবা দোকানে কাজ করে

কুঞ্জে অলি গুঞ্জে তবু, ফুটেছে মঞ্জরী

সন্ধেবেলা পড়তে বসে অঙ্কে ভুল করি

আমি তখন নবম শ্রেণী, আমি তখন ষোল

ব্রীজের ধারে, বেণীমাধব, লুকিয়ে দেখা হলো



বেণীমাধব, বেণীমাধব, এতদিনের পরে

সত্যি বলো, সে সব কথা এখনো মনে পড়ে?

সে সব কথা বলেছো তুমি তোমার প্রেমিকাকে?

আমি কেবল একটি দিন তোমার পাশে তাকে

দেখেছিলাম আলোর নীচে; অপূর্ব সে আলো!

স্বীকার করি, দুজনকেই মানিয়েছিল ভালো

জুড়িয়ে দিলো চোখ আমার, পুড়িয়ে দিলো চোখ

বাড়িতে এসে বলেছিলাম, ওদের ভালো হোক।



রাতে এখন ঘুমাতে যাই একতলার ঘরে

মেঝের উপর বিছানা পাতা, জ্যো‍‍‌ৎস্না এসে পড়ে

আমার পরে যে বোন ছিলো চোরাপথের বাঁকে

মিলিয়ে গেছে, জানি না আজ কার সঙ্গে থাকে

আজ জুটেছে, কাল কী হবে? – কালের ঘরে শনি

আমি এখন এই পাড়ায় সেলাই দিদিমণি

তবু আগুন, বেণীমাধব, আগুন জ্বলে কই?

কেমন হবে, আমিও যদি নষ্ট মেয়ে হই?



২০. মানুষঃ

কাজী নজরুল ইসলামের জীবন দেখা ছিল স্পষ্ট। দুখুমিয়ার গল্প আমরা সবাই জানি। মানুষের প্রতি তার অসীম মমতা, তাঁর মানুষ কবিতাটা কেবল মন খারাপ করিয়ে দেয়।



মানুষ

(কাজী নজরুল ইসলাম)



গাহি সাম্যের গান–

মানুষের চেয়ে কিছু নাই, নহে কিছু মহীয়ান ,

নাই দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ, অভেদ ধর্মজাতি,

সব দেশে, সব কালে, ঘরে-ঘরে তিনি মানুষের জ্ঞাতি ।

‘পুজারী, দুয়ার খোল,

ক্ষুধার ঠাকুর দাঁড়ায়ে দুয়ারে পুজার সময় হলো !’

স্বপ্ন দেখিয়া আকুল পূজারী খুলিল ভজনালয়

দেবতার বরে আজ রাজা-টাজা হয়ে যাবে নিশ্চয় !

জীর্ণ-বস্ত্র শীর্ণ-গাত্র, ক্ষুধায় কন্ঠ ক্ষীণ

ডাকিল পান্থ, ‘দ্বার খোল বাবা, খাইনা তো সাত দিন !’

সহসা বন্ধ হল মন্দির , ভুখারী ফিরিয়া চলে

তিমির রাত্রি পথ জুড়ে তার ক্ষুধার মানিক জ্বলে !

ভুখারী ফুকারি’ কয়,

‘ঐ মন্দির পুজারীর, হায় দেবতা, তোমার নয় !’

মসজিদে কাল শিরনী আছিল, অঢেল গোস্ত রুটি

বাঁচিয়া গিয়াছে, মোল্লা সাহেব হেসে তাই কুটিকুটি !

এমন সময় এলো মুসাফির গায়ে-আজারির চিন্

বলে, ‘বাবা, আমি ভুখা ফাকা আছি আজ নিয়ে সাত দিন !’

তেরিয়াঁ হইয়া হাঁকিল মোল্লা–”ভ্যালা হলো দেখি লেঠা,

ভুখা আছ মর গে-ভাগাড়ে গিয়ে ! নামাজ পড়িস বেটা ?”

ভুখারী কহিল, ‘না বাবা !’ মোল্লা হাঁকিল- ‘তা হলে শালা

সোজা পথ দেখ !’ গোস্ত-রুটি নিয়া মসজিদে দিল তালা !

ভুখারী ফিরিয়া চলে,

চলিতে চলিতে বলে–

“আশিটা বছর কেটে গেল, আমি ডাকিনি তেমায় কভু,

আমার ক্ষুধার অন্ন তা’বলে বন্ধ করোনি প্রভু !

তব মজসিদ মন্দিরে প্রভু নাই মানুষের দাবী,

মোল্লা-পুরুত লাগায়েছে তার সকল দুয়ারে চাবী !”



কোথা চেঙ্গিস, গজনী-মামুদ, কোথায় কালাপাহাড় ;

ভেঙ্গে ফেল ঐ ভজনালয়ের যত তালা-দেওয়া-দ্বার !

খোদার ঘরে কে কপাট লাগায় কে দেয় সেখানে তালা ?

সব দ্বার এর খোলা র’বে, চালা হাতুড়ি শাবল চালা !

হায় রে ভজনালয়

তোমার মিনারে চড়িয়া ভন্ড গাহে স্বার্থের জয় !

মানুষেরে ঘৃণা করি

ও’ কারা কোরান, বেদ, বাইবেল চুম্বিছে মরি মরি

ও মুখ হইতে কেতাব-গ্রন্থ নাও জোর করে কেড়ে

যাহারা আনিল গ্রন্থ-কেতাব সেই মানুষেরে মেরে ।

পুজিছে গ্রন্থ ভন্ডের দল !–মুর্খরা সব শোনো

মানুষ এনেছে গ্রন্থ,–গ্রন্থ আনেনি মানুষ কোনো ।

আদম দাউদ ঈসা মুসা ইব্রাহিম মোহাম্মদ

কৃষ্ণ বুদ্ধ নানক কবীর,-বিশ্বের সম্পদ,

আমাদেরি এরা পিতা পিতামহ, এই আমাদের মাঝে

তাঁদেরি রক্ত কম-বেশী করে প্রতি ধমনীতে বাজে !

আমরা তাঁদেরি সন্তান , জ্ঞাতি , তাঁদেরি মতন দেহ

কে জানে কখন মোরাও অমনি হয়ে যেতে পারি কেহ ।

হেস না বন্ধু ! আমার আমি সে কত অতল অসীম

আমিই কি জানি কে জানে কে আছে আমাতে মহামহিম ।

হয়ত আমাতে আসিছে কল্কি, তোমাতে মেহেদি ঈসা,

কে জানে কাহার অন্ত ও আদি, কে পায় কাহার দিশা ?

কাহারে করিছ ঘৃণা তুমি ভাই, কাহারে মারিছ লাথি ?

হয়তো উহারই বুকে ভগবান জাগিছেন দিবারাতি !

অথবা হয়ত কিছুই নহে সে, মহান উচ্চ নহে,

আছে ক্লেদাক্ত ক্ষত-বিক্ষত পড়িয়া দুঃখ – দহে,

তবু জগতের যত পবিত্র গ্রন্থ ভজানালয়

ঐ একখানি ক্ষুদ্র দেহের সম পবিত্র নয় !



হয়ত ইহারি ঔরসে ভাই ইহারই কুটীর -বাসে

জন্মিছে কেহ-জোড়া নাই যার জগতের ইতিহাসে !

যে বাণী আজিও শোনেনি জগৎ, যে মহাশক্তিধরে

আজিও বিশ্ব দেখেনি–হয়ত আসিছে সে এরই ঘরে !



ও কে ? চন্ডাল ? চমকাও কেন ? নহে ও ঘৃণ্য জীব !

ওই হতে পারে হরিশচন্দ্র, ওই শ্মশানের শিব ।

আজ চন্ডাল, কাল হতে পারে মহাযোগী-সম্রাট,

তুমি কাল তারে অর্ঘ্য দানিবে, করিবে নান্দী পাঠ ।

রাখাল বলিয়া কারে কর হেলা, ও-হেলা কাহারে বাজে !

হয়ত গোপনে ব্রজের গোপাল এসেছে রাখাল সাজে !

চাষা বলে কর ঘৃণা !

দেখো চাষা রুপে লুকায়ে জনক বলরাম এলো কি না !

যত নবী ছিল মেষের রাখাল, তারও ধরিল হাল

তারাই আনিল অমর বাণী–যা আছে র’বে চিরকাল ।

দ্বারে গালি খেয়ে ফিরে যায় নিতি ভিখারী ও ভিখারিনী,

তারি মাঝে কবে এলো ভোলা -নাথ গিরিজায়া, তা কি চিনি !

তোমার ভোগের হ্রাস হয় পাছে ভিক্ষা-মুষ্টি দিলে

দ্বার দিয়ে তাই মার দিয়ে তুমি দেবতারে খেদাইলৈ ।

সে মোর রহিল জমা -

কে জানে তোমারে লাঞ্ছিতা দেবী করিয়াছে কি না ক্ষমা !

বন্ধু, তোমার বুক-ভরা লোভ দু’চোখ স্বার্থ ঠুলি,

নতুবা দেখিতে, তোমারে সেবিতে দেবতা হয়েছে কুলী ।

মানুষের বুকে যেটুকু দেবতা, বেদনা মথিত সুধা

তাই লুটে তুমি খাবে পশু ? তুমি তা দিয়ে মিটাবে ক্ষুধা ?

তোমার ক্ষুধার আহার তোমার মন্দোদরীই জানে

তোমার মৃত্যু-বাণ আছে তব প্রাসাদের কোনখানে !

তোমারি কামনা-রাণী

যুগে যুগে পশু ফেলেছে তোমায় মৃত্যু বিবরে টানি ।



২১. হুলিয়াঃ

এই কবিতাটি পড়ে প্রথম আমার বিপ্লবী হবার সাধ জাগে। তখন আমি সপ্তম শ্রেণী। মনে প্রাণে চাইতাম-দেশে একটি বিপ্লব হোক। মনে প্রাণে চাইতাম ফেরার হতে।



হুলিয়া

(নির্মলেন্দু গুণ)



আমি যখন বাড়িতে পৌঁছলুম তখন দুপুর,

আমার চতুর্দিকে চিকচিক করছে রোদ,

শোঁ শোঁ করছে হাওয়া।

আমার শরীরের ছায়া ঘুরতে ঘুরতে ছায়াহীন

একটি রেখায় এসে দাঁড়িয়েছে৷



কেউ চিনতে পারেনি আমাকে,

ট্রেনে সিগারেট জ্বালাতে গিয়ে একজনের কাছ থেকে

আগুন চেয়ে নিয়েছিলুম, একজন মহকুমা স্টেশনে উঠেই

আমাকে জাপটে ধরতে চেয়েছিল, একজন পেছন থেকে

কাঁধে হাত রেখে চিত্কার করে উঠেছিল;- আমি সবাইকে

মানুষের সমিল চেহারার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছি৷

কেউ চিনতে পারেনি আমাকে, একজন রাজনৈতিক নেতা

তিনি কমিউনিস্ট ছিলেন, মুখোমুখি বসে দূর থেকে

বারবার চেয়ে দেখলেন-, কিন্তু চিনতে পারলেন না৷



বারহাট্টায় নেমেই রফিজের স্টলে চা খেয়েছি,

অথচ কী আশ্চর্য, পুনর্বার চিনি দিতে এসেও

রফিজ আমাকে চিনলো না৷

দীর্ঘ পাঁচ বছর পর পরিবর্তনহীন গ্রামে ফিরছি আমি৷

সেই একই ভাঙাপথ, একই কালোমাটির আল ধরে

গ্রামে ফেরা, আমি কতদিন পর গ্রামে ফিরছি৷



আমি যখন গ্রামে পৌঁছলুম তখন দুপুর,

আমার চতুর্দিকে চিকচিক করছে রোদ,

শোঁ-শোঁ করছে হাওয়া৷

অনেক বদলে গেছে বাড়িটা,

টিনের চাল থেকে শুরু করে পুকুরের জল,

ফুলের বাগান থেকে শুরু করে গরুর গোয়াল;

চিহ্নমাত্র শৈশবের স্মৃতি যেন নেই কোনখানে৷



পড়ার ঘরের বারান্দায় নুয়ে-পড়া বেলিফুলের গাছ থেকে

একটি লাউডুগী উত্তপ্ত দুপুরকে তার লক্লকে জিভ দেখালো৷

স্বতঃস্ফূর্ত মুখের দাড়ির মতো বাড়িটির চতুর্দিকে ঘাস, জঙ্গল,

গর্ত, আগাছার গাঢ় বন গড়ে উঠেছে অনায়াসে; যেন সবখানেই

সভ্যতাকে ব্যঙ্গ করে এখানে শাসন করছে গোঁয়ার প্রকৃতি৷

একটি শেয়াল একটি কুকুরের পাশে শুয়েছিল প্রায়,

আমাকে দেখেই পালালো একজন, একজন গন্ধ শুঁকে নিয়ে

আমাকে চিনতে চেষ্টা করলো- যেন পুলিশ-সমেত চেকার

তেজগাঁয় আমাকে চিনতে চেষ্টা করেছিল৷

হাঁটতে- হাঁটতে একটি গাছ দেখে থমকে দাঁড়ালাম,

অশোক গাছ, বাষট্টির ঝড়ে ভেঙ্গে যাওয়া অশোক,

একসময়ে কী ভীষন ছায়া দিতো এই গাছটা;

অনায়াসে দু’জন মানুষ মিশে থাকতে পারতো এর ছায়ায়৷

আমরা ভালোবাসার নামে একদিন সারারাত

এ-গাছের ছায়ায় লুকিয়ে ছিলুম৷

সেই বাসন্তী, আহা, সেই বাসন্তী এখন বিহারে,

ডাকাত স্বামীর ঘরে চার- সন্তানের জননী হয়েছে৷



পুকুরের জলে শব্দ উঠলো মাছের, আবার জিভ দেখালো সাপ,

শান্ত-স্থির-বোকা গ্রামকে কাঁপিয়ে দিয়ে

একটি এরোপ্লেন তখন উড়ে গেলো পশ্চিমে – -৷

আমি বাড়ির পেছন থেকে দরোজায় টোকা দিয়ে

ডাকলুম,— “মা’৷

বহুদিন যে-দরোজা খোলেনি,

বহুদিন যে দরোজায় কোন কন্ঠস্বর ছিল না,

মরচে-পরা সেই দরোজা মুহূর্তেই ক্যাঁচ ক্যাঁচ শব্দ করে খুলে গেলো।

বহুদিন চেষ্টা করেও যে গোয়েন্দা-বিভাগ আমাকে ধরতে পারেনি,

চৈত্রের উত্তপ্ত দুপুরে, অফুরন্ত হাওয়ার ভিতরে সেই আমি

কত সহজেই একটি আলিঙ্গনের কাছে বন্দী হয়ে গেলুম;

সেই আমি কত সহজেই মায়ের চোখে চোখ রেখে

একটি অবুঝ সন্তান হয়ে গেলুম৷



মা আমাকে ক্রন্দনসিক্ত একটি চুম্বনের মধ্যে

লুকিয়ে রেখে অনেক জঙ্গলের পথ অতিক্রম করে

পুকুরের জলে চাল ধুতে গেলেন; আমি ঘরের ভিতরে তাকালুম,

দেখলুম দু’ঘরের মাঝামাঝি যেখানে সিদ্ধিদাতা গণেশের ছবি ছিল,

সেখানে লেনিন, বাবার জমা- খরচের পাশে কার্ল মার্কস;

আলমিরার একটি ভাঙ্গা- কাচের অভাব পূরণ করছে

ক্রুপস্কায়ার ছেঁড়া ছবি৷



মা পুকুর থেকে ফিরছেন, সন্ধ্যায় মহকুমা শহর থেকে

ফিরবেন বাবা, তাঁর পিঠে সংসারের ব্যাগ ঝুলবে তেমনি৷

সেনবাড়ি থেকে খবর পেয়ে বৌদি আসবেন,

পুনর্বার বিয়ে করতে অনুরোধ করবেন আমাকে৷

খবর পেয়ে যশমাধব থেকে আসবে ন্যাপকর্মী ইয়াসিন,

তিন মাইল বিষ্টির পথ হেঁটে রসুলপুর থেকে আসবে আদিত্য৷

রাত্রে মারাত্মক অস্ত্র হাতে নিয়ে আমতলা থেকে আসবে আব্বাস৷

ওরা প্রত্যেকেই জিজ্ঞেস করবে ঢাকার খবর:

– আমাদের ভবিষ্যত্ কী?

– আইয়ুব খান এখন কোথায়?

– শেখ মুজিব কি ভুল করেছেন?

– আমার নামে কতদিন আর এরকম হুলিয়া ঝুলবে?



আমি কিছুই বলবো না৷

আমার মুখের দিকে চেয়ে থাকা সারি সারি চোখের ভিতরে

বাংলার বিভিন্ন ভবিষ্য়্ত্কে চেয়ে চেয়ে দেখবো৷

উৎকন্ঠিত চোখে চোখে নামবে কালো অন্ধকার, আমি চিত্কার করে

কন্ঠ থেকে অক্ষম বাসনার জ্বালা মুছে নিয়ে বলবো:

‘আমি এসবের কিছুই জানি না,

আমি এসবের কিছুই বুঝি না।’



২২. আমার হবে না, আমি বুঝে গেছিঃ

আবুল হাসানের কবিতার মধ্যে একটা নিশ্চুপ ছন্দ আছে। আমি আবুল হাসান প্রথম পড়ি ১৫-১৬ বছর বয়সে। তখন উনার কবিতা পড়ে মনে হতো একটা মসৃন একটা পথ, আর একটা মার্বেলের গড়িয়ে যাবার শব্দ শুনছি। এতো সুন্দর নরোম উপমা বুঝি একমাত্র আবুল হাসানের পক্ষেই সম্ভব।



আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি

(আবুল হাসান)



ক্লাশভর্তি উজ্জ্বল সন্তান, ওরা জুড়ে দেবে ফুলস্কেপ সমস্ত কাগজ !

আমি বাজে ছেলে, আমি লাষ্ট বেঞ্চি, আমি পারবো না !

ক্ষমা করবেন বৃক্ষ, আপনার শাখায় আমি সত্য পাখি বসাতে পারবো না !

বানান ভীষণ ভুল হবে আর প্রুফ সংশোধন করা যেহেতু শিখিনি

ভাষায় গলদঃ আমি কি সাহসে লিখবো তবে সত্য পাখি, সচ্চরিত্র ফুল ?



আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

সচ্চরিত্র ফুল আমি যত বাগানের মোড়ে লিখতে যাই, দেখি

আমার কলম খুলে পড়ে যায় বিষ পিঁপড়ে, বিষের পুতুল !



কৃতজ্ঞতাঃ বাবুই

মন্তব্য ৪৪ টি রেটিং +১৮/-০

মন্তব্য (৪৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ১১:২২

সোহরাব সুমন বলেছেন: অনেক ভাল লাগলো !

কবিতা গুলো নিয়মিত এই কবিতা ব্লগে পোস্ট দিন http://onukabbo.net/

এটি বাংলায় প্রথম কবিতার সম্পূর্ণ একটি ব্লগ !

২৫ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ১১:৩৯

কথক পলাশ বলেছেন: আপনার ব্লগটির ঠিকানা রাখলাম। বাংলা কবিতার অবস্থা নেটে খুব একটা ভালো না। অনেক কবিতাই পাওয়া যায়না। একটা স্বতন্ত্র ব্লগ খুব জরুরী।

২| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ১১:৪১

শিরীষ বলেছেন:
আর কী বলব পলাশ, 'মালতীবালা বালিকা বিদ্যালয়' এখনও গুমরে কেঁদে ওঠে মনের ভেতরে---পশম দাঁড়িয়ে যায়। একটা দারুণ কাজ করছ ভাই।

২৫ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ১১:৪৯

কথক পলাশ বলেছেন: ধন্যবাদ শিরীষ দা। এই কবিতাটা আমি প্রথম শুনেছিলাম ক্যাম্পাসে; একটা আবৃত্তির অনুষ্ঠানে।
মনে আছে, কবিতার সাথে এই কবিতারই স্লো মেলোডি, অদ্ভুত পরিবেশ। হলপ করে বলতে পারি; কেউ শুকনো চোখে বেরোয়নি অডিটরিয়াম থেকে।

৩| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ১২:৪৫

াহবুব বাবুই বলেছেন: সব কটা কবিতা অসাধারণ!! চিরদিন কবিতাটা আমি পড়ি না, মনে হয় পড়ে শুনাচ্ছি। হুলিয়া, আমি বাড়ি ফিরলেই মায়ের কাছে হয়ে যাই

২৬ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ১২:৪৯

কথক পলাশ বলেছেন: ঠিক। চিরদিন কবিতাটা এমনই।
আর হুলিয়ার কথা কি আর বলবো!
প্রতিটি লাইনে বাংলাদেশ।

৪| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ১:০৩

আদ্রিতা বলেছেন: আমি একটা দু'টো করে পড়ি। টানা পড়ে গ্যালে ক্যামন য্যানো মলিন লাগে। গল্প টানা পড়তে ভালো লাগে। কবিতা য্যানো একটু একটু করে প্রতিটা লাইন পড়তে ভীষণ আনন্দ। আমি একসাইটেড। অসাধারণ লাগছে

২৬ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ১:১৪

কথক পলাশ বলেছেন: আমিও তেমন করেই পড়ি। আর এজন্যই এই পোস্টের কবিতার সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছি। তাড়া তো নেই!

৫| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১১ ভোর ৫:১২

নাহুয়াল মিথ বলেছেন: চিত্ররুপময়তার জন্য প্রতীক্ষায় আছি।

কবিতার একটি স্বতন্ত্র ব্লগ অতীব প্রয়োজন।

২৬ শে এপ্রিল, ২০১১ সকাল ১০:৫৪

কথক পলাশ বলেছেন: বেসিক নিড। কবে হবে?

৬| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১১ সকাল ১০:৫৮

সকাল রয় বলেছেন:
পলাশ
কবিতা গুলো একসাথে পেয়ে ভালোই হলো

উপরের কবিতাটা কি আপনার লেখা

২৬ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ৯:২৪

কথক পলাশ বলেছেন: সকাল দা, অনেক ধন্যবাদ। উপরের কবিতাটা আমার বন্ধু মামুনের লিখা।

৭| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১১ সকাল ১০:৫৯

নষ্ট কবি বলেছেন: মানুষেরে ঘৃণা করি
ও’ কারা কোরান, বেদ, বাইবেল চুম্বিছে মরি মরি
ও মুখ হইতে কেতাব-গ্রন্থ নাও জোর করে কেড়ে
যাহারা আনিল গ্রন্থ-কেতাব সেই মানুষেরে মেরে ।
পুজিছে গ্রন্থ ভন্ডের দল !–মুর্খরা সব শোনো
মানুষ এনেছে গ্রন্থ,–গ্রন্থ আনেনি মানুষ কোনো ।
আদম দাউদ ঈসা মুসা ইব্রাহিম মোহাম্মদ
কৃষ্ণ বুদ্ধ নানক কবীর,-বিশ্বের সম্পদ,

২৬ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ৯:২৫

কথক পলাশ বলেছেন: আদম দাউদ ঈসা মুসা ইব্রাহিম মোহাম্মদ
কৃষ্ণ বুদ্ধ নানক কবীর,-বিশ্বের সম্পদ।

৮| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১১ সকাল ১১:০১

আবদুলার বলেছেন: অনেক ভাল লাগলো এখানেও দিতে পারেন

২৬ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ৯:৩০

কথক পলাশ বলেছেন: চেষ্টা করবো। এক কাজ করুন। কবিতা গুলো বরং আপনিই দিয়ে দিন। লিঙ্ক তো রইলই। মাঝে মাঝে ঢুঁ মারা যাবে।

৯| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১১ সকাল ১১:১০

আজম মাহমুদ বলেছেন: আপনি একটা কাজের কাজ করেছেন। অনেক দিন ভালো কবিতাগুলোকে একত্র হতে দেখিনি। আপনার তিনটা পোষ্টের কবিতাগুলোকে পিডিএফ করে করে ব্যক্তিগত সংগ্রহকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা করলাম।

ধন্যবাদ।

২৬ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ৯:৩২

কথক পলাশ বলেছেন: আমার এই পোস্টের অন্যতম উদ্দেশ্য সফল হলো। আমিও তাই চাচ্ছিলাম। ব্যক্তি বা সমষ্টিগত সংগ্রহকে কিছুটা বাড়ানো।

১০| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১১ সকাল ১১:১২

ফাইরুজ বলেছেন: সবগুলো কবিতা অসাধারন।
বেনিমাধব বেনিমাধব তোমার বাড়ী যাব।

২৬ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ৯:৩৪

কথক পলাশ বলেছেন: আসলেই অসাধারণ।

আমার বাড়িতে আসেন। স্বাগতম, তবে আমি কিন্তু বেনীমাধব নই। ;) ;) ;)

১১| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১১ সকাল ১১:৪০

সুরঞ্জনা বলেছেন: লোপামুদ্রার কন্ঠে এখনও যখন বেনীমাধব শুনি মনে হয় সেই দুঃখী মেয়েটির আর্তনাত।

"তাকে বোলো- যদি কোনো রিক্ত মাঠে দেখা হয়ে যায়--
ফিরে আসা ভুল হবে, তবে ফিরে যেন সে তাকায়"

কবি মোহিত চট্টোপাধ্যায়ের লেখা এই কবিতার পুরোটা কি আছে তোমার কাছে?

খুব সুন্দর প্রয়াস। চালিয়ে যাও পলাশ।
শুভ কামনা।

২৬ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ৯:৩৬

কথক পলাশ বলেছেন: আপু, আপনার কবিতাগুলো খুঁজছি। অন্ধবধু আর এটা পেলে আপনার কাছে পাঠাবো।

বেনীমাধব গানটা লোপামুদ্রা ছাড়া কারো কন্ঠে মানায় না।

১২| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১১ বিকাল ৫:১৫

আন্না০০৭ বলেছেন: জুড়িয়ে দিলো চোখ আমার, পুড়িয়ে দিলো চোখ
বাড়িতে এসে বলেছিলাম, ওদের ভালো হোক।

কবিতা বা গান দুটো হিসেবেই আমার অসম্ভব প্রিয়

আবুল হাসান এর আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি নিজের সাথে মিল খুঁজে পাই
মানুষ কাজী নজরুল ইসলামের এই কবিতাটার জন্যে পোস্ট প্রিয়তে

২৬ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ৯:৩৯

কথক পলাশ বলেছেন: এই কবিতা আর গান আমারও অনেক প্রিয়। অসাধারণ সৃষ্টি।

আবুল হাসানের এই কবিতাটা হাফপ্যান্ট বয়সে আমার পড়ার টেবিলের সামনে ঝুলিয়ে রেখেছিলাম। পরে আম্মার রোষানলে পড়ে নামাতে হয়েছে।

আপনার ব্লগের শ্লোগানও তো এটাই! :) :) :)

১৩| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ১০:১০

মুগ্ধ মানুষ বলেছেন: দারুন সব কবিতা!

২৬ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ১১:০১

কথক পলাশ বলেছেন: ধন্যবাদ।

১৪| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১১ বিকাল ৪:৪৬

ত্রিনিত্রি বলেছেন: মালতীবালা বালিকা বিদ্যালয় বার বার পড়ছি।
আপনার কালেকশন অপূর্ব!!!!!
হাজার খানেক প্লাস নেন! প্রিয়তে নিয়ে নিয়ে জায়গা হবে না। বরং আপনাকে অনুসরন করা যাক।

আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !
সচ্চরিত্র ফুল আমি যত বাগানের মোড়ে লিখতে যাই, দেখি
আমার কলম খুলে পড়ে যায় বিষ পিঁপড়ে, বিষের পুতুল !

২৭ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ৯:৪৩

কথক পলাশ বলেছেন: আপু, অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। আমার প্রিয় কবিতাগুলো যদি সবার ভালো লাগা হয়ে থাকে, তা তো আমারই আনন্দ। আমি সুলেখক নয়, কিন্তু সুপাঠক হবার চেষ্টায় আছি।

ভাল থাকবেন স-ব-স-ম-য়।

১৫| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১১ বিকাল ৪:৫০

ত্রিনিত্রি বলেছেন: আজ আপনার জন্মদিন নাকি???? শুভ জন্মদিন!!!!!!!!

২৭ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ৯:৪৫

কথক পলাশ বলেছেন: এত্তো সুন্দর কেক তো খাওয়া যায়না! খেতে মায়া লাগে!!!

অনেক অনেক (টু দি পাওয়ার ইনফিনিটি) ধন্যবাদ।

১৬| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১১ বিকাল ৫:৩৪

ক্রন্দসী বলেছেন: শুভ জন্ম দিন
আগামীকাল বেনসনের জন্মদিন

২৭ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ৯:৪৯

কথক পলাশ বলেছেন: ভাই, তুমি আইছ?
এপ্রিল মাস হইতাছে বছরের সবচেয়ে দামী মাস। এই মাস মুইছা দিলে পৃথিবীর ইতিহাস চেঞ্জ হইয়া যাবো।
খিকয!
বেনসনরে শুভেচ্ছা।

১৭| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ৯:৪৩

হারিয়ে যাওয়া কোন এক তারা বলেছেন: শুভ জন্মদিন!

২৭ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ৯:৫২

কথক পলাশ বলেছেন: ধন্যবাদ তারা। হারিয়ে যাবেন না। ফিরে আসেন। তারা খুব দরকার। অন্ধকারে পথ দেখায়। এমনকি অমাবস্যাতেও।

১৮| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১১ দুপুর ১২:৩১

অনিক বলেছেন: কবিতাগুলো শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। প্রিয়তে রেখে দিলাম।

২৮ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ১১:৪৩

কথক পলাশ বলেছেন: কৃতজ্ঞতা অনিক।

১৯| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১১ দুপুর ২:১৯

মেঘ বলেছে যাবো যাবো বলেছেন: চমৎকার সব কবিতা! ১৯ নাম্বারটা (বেণীমাধব) যে কবিতা তাই জানতাম না, প্রথমেই গান হিসেবে শুনেছি তো তাই।
রুদ্র'র কবিতাটা স্পেশালি ভালো লাগলো... কি ভীষণ অভিমানী উচ্চারণ!
নজরুলের তো আমি ম্যালাআগে থেকেই ফ্যান।
আর নির্মলেন্দু গুণের কবিতাটা ঠিক যেন একটা মুভির মত। :)

২৮ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ১১:৪৭

কথক পলাশ বলেছেন: থ্যাঙ্কু আপু। এই কবিতাগুলো সংগ্রহ করতে গিয়ে যেন নিজের টুকরো টুকরো অতীত খুঁজে আনছি-যার আবেদন মোটেই মলিন হবার নয়। সাথে থাকবেন সবসময়। আপনাদের সবার উৎসাহ আমার ক্লান্তি মুছে দেয়।

২০| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১১ সকাল ৯:৩০

জুন বলেছেন: কারা তোমাকে উৎসাহ দিয়ে মগ্ন বানাচ্ছে :-*
দু একটা নাম বলো দেখি পলাশ :(

আমি তোমাকে একটা কবিতা বলি, শোনোঃ

আজ অরুনের প্রথম ভোরে
শুনেছি কোন স্বপন - ঘোরে
তৃষ্ঞা কাতর
কি যেন স্বর
করুন সুরে বাজে
ডাক দিয়ে কে বলছে এসে পান্থশালার মাঝে
জাগো, জাগো, ওগো আমার তরুন সখার দল
বিলম্বে কি ফল ! জীবন সুরা শুন্য হবার আগে
পাত্রখানি নাও ভরে নাও নিবিড় অনুরাগে।

২৯ শে এপ্রিল, ২০১১ দুপুর ১২:৪৫

কথক পলাশ বলেছেন: আপু, উপরের কমেন্ট গুলো দেখলেই বুঝতে পারবেন। এছাড়া আমার বন্ধু বৃন্ত, নাহুয়াল মিথ এবং বাবুই-এই তিনজনের ফোন তো আছেই।

জীবন সুরা শুন্য হবার আগে
পাত্রখানি নাও ভরে নাও নিবিড় অনুরাগে।

এই লাইন দুটি শ্বাশ্বত।

২১| ০৩ রা মে, ২০১১ রাত ৮:৫৩

ক্রন্দসী বলেছেন: ১.শহীদ কাদরী
২.আহসান হাবীব
৩.আবুল হাসান
এরা অন্য রকম
কেমন যেনো বেশি ভালো

০৪ ঠা মে, ২০১১ ভোর ৬:৫৬

কথক পলাশ বলেছেন: শহীদ কাদরী ও আবুল হাসান আমাকে টেনেছে বেশ, কিন্তু কেন জানি আহসান হাবিব আমাকে টানেনি কখনো।

২২| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১২ বিকাল ৫:৪১

অভি৯১৭৫ বলেছেন: অনেক ভালো লাগলো, চালিয়ে যাবেন আশা করি :)

০৮ ই নভেম্বর, ২০১২ বিকাল ৪:৩৩

কথক পলাশ বলেছেন: চেষ্টা করবো ভাই।
আসলে আলস্য খুব খারাপ রোগ। আর আমি এই রোগের পুরনো রোগি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.