নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মোহাম্মদ মইন উদ্দীন। ডাক নাম মাঈনু। কিছু কিছু ফ্রেন্ডের কাছে কিশোর। বাড়ি চট্রগ্রাম। কৌতুহল একটু বেশী, হয়তো বাড়াবাড়ি ধরনের ই বেশী। দূঃসাহসী, কিন্তু সাহসী কিনা এখনো জানতে পারিনি।

কিশোর মাইনু

কিছু কিছু জিনিস জানি। সেগুলা মানুষের সাথে share করার জন্য ব্লগে প্রবেশ। তাতে দুটো সুবিধে। প্রথমত, আমার জানার ভুলভ্রান্তিগুলো দূর হবে। দ্বিতীয়ত, নতুন কিছু জানার সুযোগ সৃষ্টি হবে। দুনিয়াতে জানার কোন শেষ নেই। এবং আমার আগ্রহের ও কমতি নেই। ইনশাল্লাহ কোনদিন হবে ও না।

কিশোর মাইনু › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভিপিএন কথন

০১ লা আগস্ট, ২০২৪ রাত ১:৪৫

কোন কিছুর প্রচলিত পথ যখন বন্ধ করে দেওয়া হয় তখন স্বাভাবিক ভাবেই মানুষ বিকল্প পথ খুজে নেই। আর সেটা যখন আসে প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বন্ধ বা রুদ্ধ করার চেষ্টা করাটাই বোকামির পরিচয়। কারণ প্রযুক্তির স্বাভাবিক প্রবাহ এই যুগে রুদ্ধ করে রাখার কোন উপায় ই নেই। এই ডিজিটাল দুনিয়ায় প্রত্যেক্টা সিংগেল জিনিসের বিকল্প আছে। এবং প্রত্যেক্টা বাধা অতিক্রম করার ও পথ আছে। তেমন ই একটি পথ হলো VPN. VPN-র পুর্ণরুপ হচ্ছে Virual Private Network। ভিপিএন মানে হচ্ছে ব্লক সাইটগুলোতে প্রবেশের একটা ব্যবস্থা। বিশেষ করে আমাদের দেশে সাধারণ মানুষ এই কারণেই বেশী ব্যবহার করে ভিপিএন। যখন একটি পাবলিক নেটওয়ার্কের মাধ্যমে একাধিক কম্পিউটারকে বা আলাদা নেটওয়ার্ককে একই নেটওয়ার্কের আওতায় আনা হয়, তখন তাদের ভিপিএন বলে। নিরাপদ যোগাযোগ এবং ডাটা এনক্রিপ্ট করার একটি পদ্ধতি হিসেবে এটি কাজে লাগে। ভিপিএন আমদের ডিভাইসকে একটি ভার্চুয়াল নেটওয়ার্কের সঙ্গে সংযুক্ত করতে পারে এবং আমাদের পাঠানো সব ডাটা দ্রুততার সঙ্গে এনক্রিপ্ট করে ফেলে অর্থাৎ পাবলিক ডোমেইন থেকে লুকিয়ে রাখে এবং এটা আমাদের ব্রাউজিং হিস্টোরির যাতে কোন ফুটপ্রিন্ট না থাকে সেটা ও নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।

ভিপিএনগুলি একটি প্রাইভেট নেটওয়ার্ক তৈরি করতে ভার্চুয়াল সংযোগ ব্যবহার করে যা আমাদের ডিভাইস্কে হ্যাকার এবং ম্যালওয়্যার থেকে সুরক্ষিত রাখে এবং সংবেদনশীল তথ্যকে অননুমোদিত তধারকি থেকে রক্ষা করে। একটি VPN আমদের ডিভাইসের সংযোগকে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারের পরিবর্তে একটি ব্যক্তিগত সার্ভারের মাধ্যমে কানেক্ট করে, যার ফলে আমাদের ডেটা যখন ইন্টারনেটে পৌঁছায়, তখন এটি কোন ডিভাইস থেকে আসছে সেটা পিনপয়েন্ট করা যায় না।
এখানে এনক্রিপশন-র মাধ্যমে আমাদের তথ্যকে অপঠনযোগ্য খিচুরিতে পরিণত করে, যা শুধুমাত্র একটা বিশেষ চাবি ছাড়া ডিকোড করা যায় না। এক একটি ভিপিএন এক এক ধরণের তরীকা ব্যবহার করে এই খিচুরি আর চাবি বানানোর জন্য। তবে সাধারণত এই প্রক্রিয়ায় টানেলিং অন্তর্ভুক্ত থাকে যাত্র আমাদের ডেটা এনকোড করা হয় কারণ এটি ডিভাইস এবং সার্ভারের মধ্যে ভ্রমণ করে ডেটা ডিক্রিপ্ট করে এবং গন্তব্যে পাঠায়। আরো সহজ করে যদি বলি ভিপিএন আমাদের ইন্টারনেট সংযোগকে এনক্রিপ্ট করে ডিভাইসের আইপি অ্যাড্রেস বদলে দিয়ে অন্য আরেকটি আইপি-তে রূপান্তরিত করে। ভিপিএন আমাদের ও আমাদের গন্তব্যের মধ্যে একটি ভার্চুয়াল ‘Tunnel’ বা সুড়ঙ্গ তৈরি করে। ডিভাইস ও একটি ভিপিএন সার্ভারের মধ্যে সংযোগের পর সৃষ্টি হয় এই সুড়ঙ্গ। ভিপিএন সার্ভারের সাথে সংযুক্ত হওয়ার পর ঐ সার্ভারই তার এনক্রিপশন প্রোটোকলের মাধ্যমে তোমার গোপনীয়তা নিশ্চিত করে— ­­যার ফলে কোনো তথ্য আদান-প্রদান করলে তা সুরক্ষিত সুড়ঙ্গের মধ্য দিয়ে যায়। এই সুড়ঙ্গকে তুলনা করা যায় খামে ভরে চিঠি পাঠানোর সাথে। আপনি চিঠিতে কী লিখেছেন তা যেমন খাম না ছিঁড়ে দেখা সম্ভব নয়, তেমনি ভিপিএন ব্যবহার করে আপনি কী করছেন, কাকে মেসেজ দিয়েছেন, কোন সাইটে প্রবেশ করেছেন তা জানাও সম্ভব নয়।

এখন এই কাহিনি করার জন্য এক একটি ভিপিএন এক এক ধরণের Protocol ব্যবহার করে থাকে। প্রচলিত কয়েকটি হচ্ছে, OpenVpn, IPSec, PPTP, L2TP, Wireguard, IKEv2 & etc, etc... যদি ও সবচেয়ে দ্রুত PPTP Protocol, কিন্তু এটাতে নিরাপত্তা তুলনামূলকভাবে কম। আমার পার্সোনাল প্রেফারেন্স হচ্ছে WireGuard. কিন্তু এই মুহুর্তে সর্বাধিক পরিচিত এবং সর্বাধিক জনপ্রিয় সুরক্ষিত নেটওয়ার্ক প্রোটোকল দুটি হল Internet Protocol Security(IPSec) এবং Secure Sockets Layer(SSL)। IPSec সংযোগগুলি ক্লায়েন্ট এবং সার্ভারগুলিতে আগের কীগুলি ব্যবহার করে যাতে এনক্রিপ্ট করা যায় এবং ট্র্যাফিককে সামনে পিছনে পাঠায়। নিরাপদে এনক্রিপশন কী বিনিময় করতে SSL VPNগুলো সাধারণত পাবলিক কী ক্রিপ্টোগ্রাফি ব্যবহার করে। ইদানীং আবার নতুন নতুন ভিপিএনগুলোতে OpenVpn ব্যাবহার করতে দেখা যাচ্ছে প্রচুর। এবং সত্যি বলতে যদি শুধুমাত্র নিরাপত্তার দিকে জোর দেওয়া হয়, তাহলে এর থেকে নিরাপদ কোন কিছু হতে পারে না। আবার এর স্পিড ও যটেষ্ট ভাল।

এবার আসি ভিপিএন ব্যবহারের সুবিধা এবং অসুবিধা সম্পর্কে।
সুবিধার কথা চিন্তা করলে আমার ব্রেইন ওভারলোড হয়ে যায় VPN-র। তাই শরীফুল ভাইয়ের পোস্ট থেকে কপি পেস্ট মেরে দিলাম কয়েকটা সুবিধে।
"১. VPN ব্যবহার করলে আপনার অবস্থান অর্থাৎ আপনার Location কেউ Track করতে পারবে না।
২. VPN ব্যবহার করার ফলে আপনি ডাটা নিরাপদে লেনদেন করতে পারাবেন।
৩. IP Address (Internet Protocol Address) হাইড করে রাখে। অর্থাৎ হ্যাকারদের কবলে পড়ার আশঙ্খা নেই।
৪. আপনার Internet সেবা দানকারী IPS থেকে Net এর Full Speed পাবেন।
৫. VPN দিয়ে আপনি ISP-তে Block করা Site ভিজিট করতে পারবেন। যেমন ধরুন, যদি ইউটিউব আমাদের দেশে বন্ধ করে দেওয়া হয়, তাহলে আপনি VPN ব্যবহার করে ইউটিউবে ঢুকতে পারবেন।
৬. এটি নিরাপদ যোগাযোগ এবং Date Encrypt করার একটি পদ্ধতি হিসেবে কাজে লাগে। মানে VPN আপনার মেশিনকে একটি Virtual Network-এর সঙ্গে সংযুক্ত করতে পারে এবং আপনার পাঠানো সব ডাটা দ্রুততার সঙ্গে Encrypt করে ফেলে অর্থাৎ Public Domain লুকিয়ে রাখে এবং এটা আপনার Browsing History-এর কোন Track রাখে না। কাজেই আপনি Online-এ পুরোপুরি নিরাপদ।
৭. কিছু অঞ্চল বা দেশ থেকে নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট খুব ধীরে লোড হয় বা কোনো গেম চলাকালীন অনেক আটকে যাওয়ার ঘটনা ঘটে। ভিপিএন ব্যবহারের মাধ্যমে যে দেশ বা অঞ্চল থেকে সেই ওয়েবসাইটটি দ্রুত লোড করা সম্ভব, সেখানের সার্ভারে সংযুক্ত হওয়ায় যায় এবং সেসব ওয়েবসাইট দ্রুতগতিতে ব্যবহার করা যায় ও বাধাহীনভাবে গেম খেলা যায়।
৮. ভিপিএন বিভিন্ন Malware বা পপ আপ বিজ্ঞাপন যা ব্যবহারকারীর ইন্টারনেট ব্রাউজিং-এর তথ্যাদি নজরদারি করতে পারে তাদের আটকে দেয়। ফলে ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বজায় থাকে।"

এবার অসুবিধে কি??? এই প্রশ্নের উত্তর আপেক্ষিক। নির্ভর করে আপনি কি ভিপিএন ব্যবহার করেন তার উপর। পেইড নাকি ফ্রি? যদি পেইড ইউজ করেন, ওয়েল, এটা পেইড, সেটাই তো একটা সমস্যা। B-)) পেইড গুলো কিনলে ১-২ বছরে জন্য কিনতে হয়। এক মাসের জন্য কিনতে গেলে ১ হাজার টাকার নীচে নাই বললেই চলে। Mull bad একটা সুইডিশ ভিপিএন আছে আপনি একমাসের জন্য কিনলেও ৫ ইউরো, ১ বছরের জন্য কিনলেও ৫ ইউরো। এক দশকের জন্য কিনলেও মাসে ৫ ইউরো করেই। ৫টা ডিভাইস ব্যবহার করা যাবে। ৫ জন মিলে কিনলে প্রায় ১৪০ টাকা করে পড়বে জনপ্রতি। এর বাইরে সার্ফশার্ক, নর্ড, বিটডিফেন্ডার খুব ই ভাল। এর মধ্যে SurfShark আবার জনপ্রিয় বেশী।

এবার হচ্ছে গুরুত্বপুর্ণ যেটা। যেই কারণে মুলত এই পোস্ট টি দেওয়া। ফ্রি ভিপিএন। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানূষ এই ফ্রি ভিপিএন ই ব্যবহার করে কিনা। এখন এই ফ্রি ভিপিএন এ অসুবিধে অবশ্যই আছে। ফ্রি বলে কথা। কি অসুবিধে?
১. প্রথমেই স্লো স্পিড। ভিপিএন-র অন্যতম একটা উদ্দেশ্যই যেখানে আপনাকে প্রভাইডারের সম্পুর্ণ গতিতে এক্সেস পাইয়ে দেওয়া সেখানে ফ্রি ভিপিএন আরো গতি কমিয়ে দেয় আপনার নেটের।
2. বিজ্ঞাপন আসে প্রচুর। তারা ফ্রি ঠিক ই দেই কিন্তু তার বদলে আপনাকে বিজ্ঞাপন দেখতে হয়। যেমন: Turbo Vpn.
3. শুধুমাত্র নির্ধিষ্ট কিছু দেশের আইপি ব্যবহার করা যায়। এবং তার সংখ্যা খুব ই সীমিত।
4. ভিপিএন-এর মাধ্যমে ব্যান্ডউইথ চুরি হতে পারে। আর এই ব্যান্ডউইথ বিক্রি করে দেয় অন্য কোম্পানির কাছে। ইজরাইলের একটি ভিপিএন কোম্পানি Hola Vpn থেকে সম্প্রতি এরকম ঘটনা ঘটেছে।
5. অনেক সময় আমরা যখন কোনো সাইটে ব্রাউজ করি, ক্লিক করলেই অন্য পেজ চলে আসে, আর অনেক ব্যক্তিগত তথ্য চেয়ে বসে। এটা অনেক সময় বাজে ভিপিএন এর মাধ্যমে হয়ে থাকে। আমাদের উচিত এ-সব পেজে কোনো তথ্য না দেওয়া।
6. পেইড ভিপিএনএ আমাদের কোন ডাটাই স্টোর হয় না। কমনওয়েলথ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ অর্গানাইজেশন (সিএসআইআরও) সাম্প্রতিক এক গবেষণা করেছে। তারা ২৮৩ টি ফ্রি ভিপিএন অ্যাপ ব্যবহারকারীদের প্রাইভেসি এবং সিকিউরিটি নিয়ে গবেষণা করে। ফলাফল হচ্ছে, ৭৫% অ্যাপ থার্ড পার্টি ট্র্যাকিং টুল ব্যবহার করে— যার মাধ্যমে তথ্য চুরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
7. ৮২% অ্যাপ বিভিন্ন ব্যক্তিগত তথ্যের জন্য অনুমতি চায়, যার ফলে ইউজার নাম কিংবা পার্সওয়াড চুরি হতে পারে। সবচেয়ে খারাপ ব্যাপার হচ্ছে, তারা ৩৮% অ্যাপে ভাইরাসের উপস্থিতি পেয়েছে। কিছু জনপ্রিয় ফ্রি ভিপিএন যেমন-ভিপিএন ফ্রি, রকেট ভিপিএন, টাইগার ভিপিএন, সাইবারগোস্ট এবং ইজিওভিপিএন যেগুলো কয়েক লক্ষবার ডাউনলোড করা হয়েছে সেগুলোতেও ভাইরাস পাওয়া গেছে।

এখন তার মানে এই নয় যে, মোবাইলে কম্পিউটারে ব্যবহার করার জন্য কোন ফ্রি ভিপিএন ই নেই। আমি ১০/১২টা ভিপিএন দিব না। শুধু ২ট দিব। আমি গত ৫/৬ বছর ধরেই Proton VPN & 1.1.1.1 এই দূটো ব্যবহার করে আসছি।

Proton নিয়ে আলাদা করে কিছু বলার নেই। প্রতেক টেকপ্রেমী ই CERN & MIT Scientists & Hackers দের সমন্বয়ে ঘটিত এই Secure Business Solution সম্পর্কে জানে। তো আমি 1.1.1.1 নিয়ে হালকা করে আইডিয়া দেয়। এখন এই 1.1.1.1 কিন্তু Foolproof Vpn Product না। এর মধ্যে দুট অপশন আছে, আসলে ৩টি, একটি লুকানো থাকে। যাই হোক। একটি হল 1.1.1.1 যেটা হল DNS Server, যেটা মুলত যাস্ট স্পিডটা ফাস্ট করে, আর কিছুই না। আর আরেকটা হল Wrap। এই Wrap কে ভিপিএনের কাতারে ফেলানো যায় যেটা আপনার আইপি হাইড করে। এর থেকে ও বেটার অপশন হলো Zero Trust। এটা একটু কাহিনি করতে হয় চালু করতে। কিন্তু এটা সর্বোচ্চ সিকিউরিটি দেয় এইখানে।

আর কম্পিউটারের জন্য আমার বেশীর ভাগ বন্ধু আর সহকারী TunnelBear অথবা Express ব্যবহার করে কেন জানি। আমি Geforce Now -এ গেইম খেলার জন্য Touch Vpn, এবং অন্যান্য কাজের জন্য দরকার পড়লে Proton VPN ব্যবহার করি। তো আমার প্রথম চয়েজ Proton গত ৫/৬ বছর ধরে অল্মোস্ট সমকিছুতেই।

আশা করি এই পোস্টেই পর ভিপিএন নিয়ে অনেকের ই ভুল ধারণা কমবে। আর কোন টেকপ্রেমী বা হ্যাকার ভাই থাকলে এখানে তাদের আমার ভুল হয়ে থাকলে তথ্যে দেখিয়ে দেওয়ার জন্য অনুরোধ থাকল।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.