নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফাইটিং উইথ ক্যান্সার। আমাকে ফেসবুকে পেতে \'মহাজাগতিক ক্যান্সারযোদ্ধা\' লিখে Search করুন।অথবা -> https://facebook.com/shipon.mia.3785/about?refid=17

ক্যান্সারযোদ্ধা

ক্যান্সারযোদ্ধা › বিস্তারিত পোস্টঃ

হত্যা

১০ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৫০

-তুই নাকি ব্লগে লেখালেখি করছ?
- না দোস্ত।
-আমাদের কাছে মিথ্যা বলবি না।আমরা
সবকিছু জানি।তুই একজন ব্লগার।
- সত্যি আমি ব্লগার না।
-দেখ ব্লগে লিখ তাতে আমাদের কোনো
সমস্যা নাই কিন্তু উল্টা-পাল্টা কিছু
লিখলে তোর খবর আছে।
-ধুর শালা তোদের আর কয়বার বলব আমি
ব্লগার না।যা তোদের সাথে আর কথা নাই।
.
জুয়েল এইবার এইচএসসি পরিক্ষা দিয়েছে।
কিছুদিন পর ভার্সিটিতে এক্সাম দিবে।
স্টাডির পাশাপাশি সে অল্পবিস্তর
লেখালেখি করে বিশেষ করে ফেসবুকে।
কয়েকবার পেপারেও তার লেখা
ছাপিয়েছে। ফ্রেন্ড সার্কেলে জুয়েল
লেখক হিসেবে পরিচিত।তবে বেশ কিছুদিন
ধরে ফ্রেন্ডরা তাকে 'ব্লগার' বলে
ক্ষেপিয়ে যাচ্ছে।কিন্তু সে ব্লগে
লেখালেখি করে না।বর্তমান সময়ে
অনেকেই ব্লগার মানে উগ্রপন্থী বা
নাস্তিক মনে করে থাকে।ফ্রেন্ডরা
লোকাল বাসে এসব নিয়ে জুয়েলকে
ক্ষেপিয়ে মজা নিচ্ছিল বটেই কিন্তু
আশেপাশে যাত্রীরা এসব সিরিয়াসলি
নিচ্ছিল।সবাই বারবার ঘাড় ঘুরিয়ে
জুয়েলকে দেখছিল।পাশের যাত্রী
জিজ্ঞেস করেই বসল, ভাই আপনি কি
ব্লগার?বরাবরের মতো জুয়েল সহজভাবে
উত্তর দিল, না।
.
নির্জন নিস্তব্ধ রাস্তা।দূর থেকে শিয়াল,
কুকুরের ডাক হঠাৎ করে কানে আসলে চমকে
উঠতে হয়।অন্ধকারের রহস্য ভেদ করে কেউ
কাউকে চিনতে পারে না।রাস্তার পাশে
খোলা মাঠে আরো ভয়ংকর অবস্থা।রাতে
সেখানে যাওয়ার সাহস পায় না কেউই।
মাঠের এককোণে জমাট বাঁধা অন্ধকার।
মাঠে উপস্থিত একজন যুবকের হাতে জ্বলন্ত
সিগারেট। কিন্তু দূর থেকে সিগারেটের
আগুন বোঝা যায় না।
মাঠের অপর প্রান্ত থেকে জ্বলন্ত
সিগারেট হাতে দ্রুত কে যেন হেঁটে আসছে।
দাঁড়িয়ে থাকা যুবকটির কাছাকাছি
আসতেই সে বলল,
-স্যার আমাদের নতুন তালিকায় আরেকজন
যুক্ত হয়েছে।
-তুই নিশ্চিত সব ব্যাপারে?
- জ্বি স্যার।আমি সম্পূর্ণভাবে নিশ্চিত।
-ঠিক আছে।তোর কথা মতো ও আমাদের
পরবর্তী শিকার।এবার আমাদের প্ল্যানিং
দরকার।
.
আজকে জুয়েলের কিছুতেই পড়ায় মন বসছে
না।বারবার একজনের কথা মনে হচ্ছে।সে
শুধু কল্পনায় আসে।বাস্তবে তাকে দেখার
সৌভাগ্য হয় নি।এমনো হয়েছে সারা রাত
তাকে নিয়ে কল্পনার রাজ্যে ঘুরে
বেড়িয়েছিল। কিন্তু নেহাত মন্দভাগ্য আজ।
আগামীকাল এক্সাম আছে।তাকে অনেক বড়
হতে হবে।বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণ এবং
আদর্শ ব্যক্তির মর্যাদায় আসীন হওয়াই তার
একমাত্র লক্ষ্য।তাই অনিচ্ছা সত্ত্বেও পড়ায়
মন বসাতে হচ্ছে।
কিছুক্ষণ স্টাডি অনেকটা ঘোর লেগে
গিয়েছে।হঠাৎ মোবাইলে রিংটোনের শব্দ
শুনে জুয়েল বেশ চমকে উঠলো।অচেনা
নাম্বার তবুও কল রিসিভ করে বলল-
-হ্যালো কে বলেছেন?
-আপনি জুয়েল?
-জ্বি আমি জুয়েল।
-আপনি আমাকে চিনবেন না।আপনার
বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে।আপনি ব্লগে
উগ্রপন্থী এবং অনুভূতিতে আঘাত হানে এসব
বিষয়ে লেখালেখি করেন।সাবধান হয়ে
যান।নয়তো আপনার ক্ষতি হবে।
আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে জুয়েল কল
কেটে দেয়।সে জানে কারা তাকে
ডিস্টার্ব করছে।
.
সকাল দশটা।ভার্সিটির বাইরে সবাই
জুয়েলের জন্য অপেক্ষা করছে।কিন্তু তার
কোনো পাত্তাই নেই আর এদিকে ফোন
বন্ধ।বাসায় ফোন করে জানতে পারল যে
জুয়েল রাতে গ্রুপ স্টাডির জন্য বাসা থেকে
বের হয়ে গিয়েছে।কোনো রকমে পরিক্ষা
দিয়ে ফ্রেন্ডরা সবাই জুয়েলের বাসায় চলে
আসে।বিকালে জুয়েলের বাবা থানায়
একটি মিসিং ডায়েরি করে।রাতে জুয়েল
বাসায় আসে কিন্তু লাশ হয়ে।পুলিশ একটি
ডোবা থেকে জুয়েলের বস্তা বন্দি লাশ
উদ্ধার করে।জুয়েলের ফ্রেন্ড এবং স্বজনদের
আহাজারিতে পরিবেশ ভারি হয়ে ওঠে।
বুকে পুত্র শোকের বেদনা এবং নৃশংস
হত্যাকান্ডের প্রচন্ড ঘৃণায় তিনি স্তব্ধ হয়ে
যান।সবাই খুনিদের বিচারের দাবি করলেও
তিনি নিশ্চুপ ছিলেন।
.
রাত দুইটা।সেই মাঠ এবং মাঠের এককোণে
জমাট বাঁধা অন্ধকার। রক্তে ভেজা মাটির
ওপর জ্বলন্ত সিগারেট হাতে কয়েকজন
দাঁড়িয়ে আছে।একজনের হাতে বই খাতা
ভর্তি একটি ব্যাগ।হঠাৎ একজন বলল-
-ছেলেটাকে অহেতুক মেরে ফেললাম।সে
ব্লগার ছিল না।
-কিন্তু স্যার সেদিন বাসে ওর ফ্রেন্ডরা
ওকে ব্লগার ডেকেছিল।তাই আমি
ভাবলাম................ .
-তুই চুপ থাক।ছেলেটাকে ছেড়ে দিলে
আমাদের ক্ষতি হতো কারণ সে আমাদের
চিনে ফেলেছে।
-গতকাল রাতে ওকে ফোন করে সাবধান
করেছি কিন্তু পুরো কথা শেষ হওয়ার আগেই
সে কল কেটে দেয়।এতে আমার সন্দেহ আরো
বেড়ে যায়।সে ভেবেছিল কোনো ফ্রেন্ড
ফোন করে দুষ্টামি ফোন করেছে।
-একথা সে এখানে বলেছে।থাক ওসব নিয়ে
আর চিন্তা করে লাভ নেই।আমাদের
তালিকায় পরবর্তী ব্যক্তিকে নিয়ে চিন্তা
করতে হবে।
.
দ্রুত সিগারেট শেষ করে সবাই চলে যায়
কিন্তু এর আগে থামিয়ে দিয়ে যায় একটি
জীবন, স্বপ্ন এবং মেধা।লোকাল বাসে
বন্ধুদের দুষ্টামি আজ জুয়েলের মৃত্যুর কারণ।
কিন্তু দোষ তাদের নয় দোষ ব্যক্তি,সমাজ
এবং রাষ্ট্রের।তবে শোকাহত পরিবারের
মনে একটাই আশা, একদিন অপরাধীর বিচার
হবে।হয়তবা তা অন্য জগতে।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৩৪

বর্নিল বলেছেন: বিষয়টা সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন?

২| ১০ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৩৪

বর্নিল বলেছেন: বিষয়টা সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন।

১১ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:০১

ক্যান্সারযোদ্ধা বলেছেন: থ্যাংকস!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.