![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সুপ্রীতি ধর: না, কোনো ক্ষোভ হচ্ছে না, রাগও হচ্ছে না, অন্য সময়ের মতোন বিক্ষোভে ফেটে পড়তেও ইচ্ছে করছে না, কেবলই কষ্ট হচ্ছে। ছবিটা দেখুন, আমি নিশ্চিত, আপনাদেরও কষ্ট হবে। বুকের ভেতরে দলা পাকিয়ে উঠবে সেই কষ্ট। নাড়ির টানে টান পড়বে ছবিটা দেখে।
একটা বাচ্চা ছেলে আর তার বন্ধুরা এখানে যা করছে, তা নিয়ে কিছুই বলার নেই। নিজেকে ধিক্কার দিচ্ছি দেখার পর থেকেই। ছেলেটার প্রোফাইলে গিয়ে দেখলাম, সে যা লিখেছে ছবিটা শেয়ার করে, তা বলার মতোন ভাষা বা পড়ার মতোন কান আমার নেই। বন্ধু আতিকা রোমা ছবিটি শেয়ার করার পর থেকে কী এক বিষন্নতায় ছেয়ে গেছে পুরো মন। ভয়ে ভয়ে ছেলের বন্ধুদের চেহারাগুলো দেখলাম, আমার পরিচিত কেউ নেই তো এখানে? কী হতো পরিচিত থাকলেই? আর এই যে ছেলেটা, ও কী আমার পরিচিত না? ও কী আমার ছেলে না? ও তো কোনো মা-বাবারই সন্তান। ও এই সময়ের, এই সমাজেরই সন্তান, এই রাষ্ট্রের সন্তান। তাহলে এই প্রজন্মকে আমরা কীভাবে বড় করছি?
প্রোফাইল থেকেই জানলাম, সে জাগো ফাউন্ডেশনের সাথে যুক্ত, তার মানে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে সমাজের কাজ করছে সে। তাহলে এই ছবিটা? এই বাচ্চাটার নৈতিক জায়গাটা কোথায় তৈরি হচ্ছে? সে পড়ে মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট কলেজে। স্কুল-কলেজগুলোতে এখন আর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। আসলে সমাজের উপর থেকে নিচ পর্যন্ত যখন অবক্ষয় ঘটে, তখন তার থেকে রেহাই পায় না কোনোকিছুই। এর মধ্য দিয়েই কাঁটা বেছে বেছে পথ চলতে হচ্ছে আমাদের। সন্তান মানুষ করা এক্ষেত্রে আরও কঠিন। বড় করা যায়, মানবিক ক্ষুধাগুলো তো আমরা মেটাতে পারছি না, তাই তাদের দোষ দিয়েও লাভ নেই।
এ নিয়ে জাগো ফাউন্ডেশনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাৎক্ষণিক সাড়া পাওয়া গেছে। এটা আশা জাগায়। কিন্তু ছেলেটিকে ডেকে তাকে অপমান করে ফাউন্ডেশন থেকে বের করে দিলে এর সুরাহা হবে না। আমরা তো তা চাইও না। বরং এতে হিতে-বিপরীত হবে।
ও তো একা না, ওর মতো এক বিশাল প্রজন্ম আজ এভাবেই বেড়ে উঠছে। এরাই হয়তো বাসায় লক্ষ্মী ছেলেটি হয়ে থাকে, হয়তো জুম্মার দিনে জায়নামাজ নিয়ে নামাজেও যায়। মা-বাবা ভাবেন, আহা, আমাদের ছেলেটা সহি পথেই আছে। তারা হয়তো জানেও না, তাদের ছেলে বা ছেলেরা কী করছে!
আমাদেরই এক বন্ধু ছেলেটির প্রোফাইলে গিয়ে ‘নোংরা’ কভার পিকটা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় সে উত্তর দিয়েছে, ‘নোংরামি আর ফান এর মধ্যে পার্থক্য বোঝার চেষ্টা করুন, যদি পারেন’। আমি ওর ঔদ্ধত্য দেখেও থ হয়ে গেছি। আমি জানি, এই বয়সটা কোনকিছু না মানারই বয়স। তাই বলে সে ‘ফান’ হিসেবে নারীর শরীরকে বেছে নেবে, তা মাটিরই হোক বা প্লাস্টিকেরই হোক। তাহলে তো রক্তমাংসের নারীর শরীর ছুঁতেও সে পিছপা হবে না।
তবে কী এভাবেই জন্ম নেয় গণধর্ষক? গণধর্ষণের খবর পড়ে আমার তো বার বারই মনে হয়, এ কী করে সম্ভব? একজনের না হয় মাথা খারাপ হয়েছে, একজন হয়তো খারাপ, তাই বলে সবাই মিলে একই সময়ে খারাপ হয় কী করে? ‘ফান’ করে? নারীকে নিয়ে যা ইচ্ছা তাই করা যায় ফান হিসেবে? এই বয়সেই ও শিখে গেছে তা? তাহলে বাকি জীবনটা কীভাবে যাবে ওর?
একজন এই লেখার নিচে কমেন্ট করেছেন এই বলে যে, এই সেক্সুয়ালিটি আগেও ছিল, এখনও আছে। আমার লজ্জা পাওয়ার কোনো কারণ নেই বলেও ঊনি মন্তব্য করেছেন। হয়তো বা। আমি ভাবছি ঊনার মন্তব্যটা নিয়ে। হ্যাঁ ছিল। আমাদের সময়েও এরকম ছিল, তার আগেও ছিল, হয়তো পৃথিবী সৃষ্টির সময়ও ছিল, যুগে যুগেই ছিল। হয়তো তার প্রকাশটা এরকম ছিল না বা প্রকাশ হলেও আমরা রিঅ্যাক্ট করতে জানতাম না। জানি না।
যৌনতা আমাদের জীবনেরই অংশ। একে অস্বীকার করে তো আর জীবন এগোবে না। বরং একে সঠিক চর্চার মাধ্যমেই সমাজ বিকশিত হবে। এখন কথা হচ্ছে, এই যে ছেলেরা ‘ফান’ হিসেবে একটা স্ট্যাচুর নারী শরীর বেছে নিল এবং অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করলো, আর বন্ধুত্বকে নারীর স্তন আর স্তনের বোঁটার সাথে তুলনা করলো, এটা কেমন হলো? এটা কী ও শুধুমাত্র বিনোদনের অভাব থেকেই করেছে? বন্ধুত্বের তুলনা দিতে হলো নারীর শরীর দিয়ে? এ কেমন শিক্ষা ওর? কেউ কী বলবেন আমাকে? একজন সাংবাদিক হিসেবে না, স্রেফ একজন ‘মা’ হিসেবে আমি জানতে চাইছি।
আসলে সামাজিক এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা আর আমাদের আত্মকেন্দ্রিকতাই এর মূল কারণ। দেশে কোনো সুস্থ শিল্প-সংস্কৃতি চর্চা নেই।আমাদের সময়ে কত ধরনের সংগঠন ছিল, আজ এর একটিও বেঁচে নেই, মধ্যবিত্ত সমাজ, যারা এসব সংগঠন আগলে রেখেছিল নিজেদের চর্চা দিয়ে, তারা এখন এসবের ঊর্ধ্বে উঠে গেছে। তারাও এখন করপোরেট কালচারে প্রবেশ করেছে শ্রেণী বিন্যাসটা ঠিক রাখতে। এতে করে হারিয়ে যাচ্ছি আমরা, মানে আমাদের সুস্থধারাটি। আর এর অন্যতম শিকার হচ্ছে এসব প্রজন্ম। তাই ওরা এসব ছবি তুলেই ক্ষান্ত হয় না, তা আবার পাবলিকের কাছেও তুলে ধরে। যেমন গণধর্ষণের ভিডিও চিত্র ওরা ইউটিউবে দিয়ে দেয়, তেমনি। কোথায় পার্থক্য?
তারপরও বলছি, আমরা চাই এই ছেলেটি এবং তার বন্ধুদের কাউন্সেলিং হোক। এদেরকে মানবিক শিক্ষা দেয়া হোক, সম্মান করতে শেখানো হোক, নারীকে শ্রদ্ধা করতে শেখানো হোক। কিন্তু কে করবে? কে দেবে? কে নেবে সেই উদ্যোগ?
তথ্যসূত্র: এখানে।
২| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:০৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
কিশোর বয়ষে বাচ্ছারা নিজকে জাহির করার জন্য এটাসেটা করে; ওসব বালছাল নিয়ে এত মাথা ব্যাথা কেন? আপনি কি পয়গম্বর ছিলেন কৈশোরে?
৩| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:০৪
প্রামানিক বলেছেন: আপনিই বলেন এমন উলঙ্গ স্ট্যাচুর সামনে দিয়ে ছেলে মেয়ে সাথে নিয়ে হেঁটে যাওয়া যায়?
৪| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:২১
আহমেদ ফিরোজ- বলেছেন: প্রামানিক বলেছেন: বাংলাদেশের সামাজিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে ছেলেগুলোর কাজ অশ্লীলতাই বটে, কিন্তু জনসম্মুখে এমন স্ট্যাচু রাখার জন্য যিনি পরিকল্পনা করেছেন এবং যিনি তৈরী করেছেন তাদের রুচি নিয়ে কাকে প্রশ্ন করবো?
জনাব, এসব অশ্লীল নোংরা স্ট্যাচুই যে বর্তমানে চেতনার ধারক ও বাহক। এসব বলে চেতনায় আঘাত দেন কেনো??
আর চাঁদগাজী বলেছেন: কিশোর বয়ষে বাচ্ছারা নিজকে জাহির করার জন্য এটাসেটা করে; ওসব বালছাল নিয়ে এত মাথা ব্যাথা কেন? আপনি কি পয়গম্বর ছিলেন কৈশোরে?
কৈশোরদের এমন নৈতিকতা বিবর্জিত কাজকেও আপনার কাছে সিম্পল বাল ছাল মনে হলো?? আপনার এই মনমানসিকতা সমাজকে কেবল নর্দমাই বানাবে। কৈশোরদের এমন কাজকারবারই একসময় ইভটিজিং আর ধর্ষনে রুপ নেয় জনাব। তবে কৈশোরদের এমন অবস্থার জন্য দায়ী আপনার মত মনমানসিকতার লোকেরা। এমনসব উলঙ্গ স্ট্যাচু নির্মানে যাদের বিবেকে একটুও বাধেনা।
৫| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:২৪
প্রবাসী ভাবুক বলেছেন: "তবে কী এভাবেই জন্ম নেয় গণধর্ষক? গণধর্ষণের খবর পড়ে আমার তো বার বারই মনে হয়, এ কী করে সম্ভব? একজনের না হয় মাথা খারাপ হয়েছে, একজন হয়তো খারাপ, তাই বলে সবাই মিলে একই সময়ে খারাপ হয় কী করে? ‘ফান’ করে? নারীকে নিয়ে যা ইচ্ছা তাই করা যায় ফান হিসেবে? এই বয়সেই ও শিখে গেছে তা? তাহলে বাকি জীবনটা কীভাবে যাবে ওর?"- এভাবেই বিকৃত মানসিকতা তৈরি হয়৷ ক্ষুদ্র অপরাধ থেকে বড় ধরণের অপরাধ করতে দ্বিধা থাকে না৷
৬| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৩২
রোদেলা বলেছেন: নিররবাক
৭| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৩৬
দেলোয়ার হোসেন আকাশ বলেছেন: খুবই লজ্জাজনক!!
আসলে পুরা দোষটা ছেলেগুলার দিব না। দোষটা আমাদের সমাজের এবং তাদের পরিবারের। সমাজের দোষ এই জন্য বলছি, কারণ আমাদের সমাজ ব্যবস্থা আজ এমন পর্যায়ে যেখানে নিজেদের সাংস্কৃতি/রুচি/আচার বাদ দিয়ে আমরা তাকিয়ে থাকি বহিরাগত কিছু নোংরা অপসংস্কৃতির উপর। যার প্রভাব আমাদের যুব সমাজের মধ্যে বিরাজমান। হ্যা অবশ্যই আমাদের রুচি/আচার এগুলার পরিবর্তন দরকার তারমানে এটা নয় যে সেটাকে নোংরামি দিয়ে অ্যাখ্যায়িত করা যায়।
এবং তাদের পরিবার ঠিক থাকলে কখনই ছেলেগুলা এমন করতো না। আরেকটি বিষয় সেটা হল বন্ধু নির্বাচন। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ । অনকে ভালো ফ্যামিলির ছেলে-মেয়ে বন্ধুত্বের দ্বারাও প্রভাবিত হয়।
সব ফ্রেন্ড সার্কেলে একটু আকটু এসব নিয়ে ঠাট্টা, হাসাহাসি হয় থাকে। তবে এটা ক্ষণীকের এবং সেটা শুধুমাত্র ফ্রেন্ড সার্কেলের মধ্যে সীমাবদ্ধ। আমারও একটা ফ্রেন্ড সার্কেল আছে, আমরাও সবার মতই ঐসব বিষয় নিয়ে হাসি ঠাট্টা করি, তারমানে এটা নয় যে সেটাকে নোংরামির পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে।
আসলে আমাদের পরিবর্তন হতে হবে, নিজেদের ছেলেমেয়েকে এসব বিষয়ে পুরাপুরি শিক্ষা দিতে হবে। শেষে একটা কথা না বললেই নয়, আমাদের সমাজে/পরিবারে মেয়েরা তার মায়ের থেকেই তার শারিরীক/মানসিক ও অন্যান্য শিক্ষা পেয়ে থেকে, যেটা এটা ছেলে তার বাবার থেকে পায় না। একটি ছেলে যতটা ম্যাচিউরিটি লাভ করে সেটা পুরাটাই তার ফ্রেন্ড সার্কেলের জন্য। সুতরাং বাবারা যদি তার ছেলে সন্তানদের তার শারিরীক সমস্যা/গঠনের শিক্ষা দেয়, তাহলে আমি মনে করি এই ধরণের সমস্যা গুলা একটু কমে যাবে।
ধন্যবাদ।।
৮| ০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:৪৬
চাঁদগাজী বলেছেন:
দেশের ১১ কোটী মানুষ পর্ণ দেখে, তার মাঝে ৯/১০ বছরের কিশার কিশোরী প্রচুর
৯| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১২:৫৪
রক্তিম দিগন্ত বলেছেন: ছেলেটি ক্ষমা চেয়েছে মনে হয় সবগুলো ছেলের পক্ষ থেকে। গতকালকে একটা আর্টিকেলে পড়েছিলাম।
১০| ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:০৫
রানার ব্লগ বলেছেন: বেয়াদোপ সব গুলা
১১| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৩:২৪
এমডি এআর মুবিন বলেছেন: নূন্যতম নৈতিকতা না থাকলে যা হতে পারে সেটাই চাক্ষুষ হলো। আরও আতঙ্কের ব্যাপার হলো- যে প্রজন্মের উপর দেশের ভবিষ্যত নির্ভর করছে সেই প্রজন্ম যদি এইভাবে অনৈতিকতায় অধঃপতিত হয় তাহলে আগামীতে আমরা জাতি হিসেবে নিজেকে কোথায় জাহির করবো তা ভাবতেই গা শিওরে ওঠে।
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ১১:০২
প্রামানিক বলেছেন: বাংলাদেশের সামাজিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে ছেলেগুলোর কাজ অশ্লীলতাই বটে, কিন্তু জনসম্মুখে এমন স্ট্যাচু রাখার জন্য যিনি পরিকল্পনা করেছেন এবং যিনি তৈরী করেছেন তাদের রুচি নিয়ে কাকে প্রশ্ন করবো?