নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সকলের চেয়ে বড় মানে বড় নয়, নিজে যা ছিলাম তার চেয়ে বড় হতে পেরেছি কি? এভাবেই আত্নবিশ্লেষন হোক নিজেদের মাঝে।

চৌধুরী আসিফ

আমি লিখতে, পড়তে, গাইতে এবং আকতে খুব ভালবাসি। আমি একজন বিবাহিত পুরুষ এবং পরিবারের অভিভাবকও বটে।

চৌধুরী আসিফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সুলতান মুরাদ; আমার বিশ্বাস, পাঠকের মন ছুঁয়ে যাবেই

২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:৫৯

সুলতান মুরাদ,

উসমানি সাম্রাজ্যের সুলতান তিনি। সুলতান মুরাদ প্রায়শয়ই ছদ্মবেশে তার রাজ্যের লোকেদের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে বের হতেন। এক সন্ধ্যায় তিনি নিজে বিশেষ ভালো বোধ করছিলেন না বিধায় নিরাপত্তাবাহিনীর প্রধানকে তলব করলেন তার সঙ্গী হতে। ঘুরতে ঘুরতে তারা এক জনবহুল জায়গায় এসে দেখলেন, এক লোক রাস্তায় পড়ে আছে। সুলতান লাঠি দিয়ে খোঁচা মেরে বুঝতে পারলেন লোকটি মৃত, অথচ চারপাশে মানুষে গিজগিজ করলেও কারও কোনো ভ্রুক্ষেপ ছিল না বিষয়টি নিয়ে। সুলতান আশেপাশের লোকজনদের ডাকলেন। তারা এগিয়ে এলো। কিন্তু ছদ্মবেশে থাকায় কেউই চিনতে পারল না নিজেদের শাসককে। তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, ‘লোকটা মরে পড়ে আছে, তবুও কেউ এগিয়ে আসছে না কেন? লোকটির পরিবারের কেউ নেই?’ ‘আরে এ তো একজন ব্যাভিচারী, মদ্যপ কুলাঙ্গার!’ লোকগুলো বলে উঠল। ‘যাই হোক, সে তো আমাদের নবি (সাঃ)-এর উম্মাতেরই একজন, নাকি? এখন আমাকে তার বাড়ি পর্যন্ত নিয়ে যেতে সাহায্য করুন’- সুলতান বললেন। লোকেরা সুলতানের সাথে মৃত লোকটিকে তার বাড়ি পর্যন্ত নিয়ে আসল, এরপর চলে গেল। সুলতান আর তার সহযোগী সেই প্রধান থেকে গেলেন। লোকটির স্ত্রী মৃতদেহকে দেখা মাত্র কান্নায় ভেঙে পড়লেন। তিনি বলতে লাগলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ আপনার প্রতি সদয় থাকবেন! ও আল্লাহর বান্দা, হে আমার প্রিয়তম স্বামী, আমি তো দেখেছি আপনি সবসময় কতটা নিষ্ঠাবান ছিলেন!’

সুলতান মহিলাটির কথা শুনে আশ্চর্য হয়ে গেলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, ‘সবার থেকে যা কিছু শুনলাম, এরপরও সে নিষ্ঠাবান কীভাবে হয়? যেখানে দুশ্চরিত্রের জন্য সে এতটাই ঘৃণিত যে ,তার মৃত্যু নিয়েও কারো মাথাব্যথা ছিল না?’ লোকটির স্ত্রী জবাব দিলেন, ‘আমি জানতাম এমনই হবে। তিনি প্রতি রাতে সরাইখানায় যেতেন ও পয়সায় যতটকু সম্ভব হতো, ততটুকু শরাব কিনে ঘরে নিয়ে আসতেন। এনেই সেগুলো নর্দমায় ফেলে দিতেন। তিনি বলতেন, ‘আমি আজ মুসলিমদের অল্পখানি বাঁচিয়ে দিলাম।’ তারপর তিনি কোনো পতিতাকে কিছু টাকা দিয়ে ঘরে নিয়ে আসতেন এবং ভোর পর্যন্ত তাকে কুরআন পাঠ করে শুনাতেন। তিনি বলতেন, ‘আজ আমি এক তরুণীকে এবং ঈমানদার কোনো যুবককে পাপ কাজে জড়িয়ে পড়া থেকে বাঁচালাম।’ লোকেরা তাকে শরাব কিনতে ও পতিতালয়ে যেতে দেখত এবং এই কারণেই তারা তাকে নিয়ে নানা ধরনের কথা বলতে শুরু করে। আমি একদিন তাকে বললাম, ‘আপনি মারা গেলে না কেউ গোসল করানোর থাকবে, না কেউ জানাজা পড়তে আসবে। কবর দেওয়ার জন্যও তো কেউ থাকবে না।’ তিনি হেসে বলেছিলেন, ‘ভয় পেয়ো না, ঈমানদারদের সুলতান আর সকল ধর্মনিষ্ঠ ব্যক্তিরাই আমার জানাজায় উপস্থিত থাকবেন।’

সুলতান এই কথা শুনে আর চোখের পানি ধরে রাখতে পারলেন না। তিনি বললেন, ‘আল্লাহর কসম! তিনি ঠিকই বলেছিলেন। কারণ আমিই সুলতান মুরাদ। আগামীকাল আমরা তাকে গোসল করিয়ে, জানাজা পড়ে সম্মানের সাথে কবর দিয়ে আসব।’এমনই হলো। স্বয়ং সুলতান মুরাদ, রাজ্যের বিশিষ্ট চিন্তাবিদ, সকল ধর্মপ্রাণ ও এলাকার জনসাধারণ সবাইই তার জানাজায় অংশগ্রহণ করল। আমরা যা দেখি আর লোকমুখে যা শুনি, তা থেকেই মানুষকে বিচার করার চেষ্টা করি। অথচ আমরা জানিও না তাদের মনের অন্তস্থলে কী চলে, যার কথা কেবলমাত্র বান্দা আর তার রবই জানেন।

‘হে মুমিনগণ, তোমরা অধিক অনুমান থেকে দূরে থাকো। নিশ্চয়ই কোনো কোনো অনুমান তো পাপ। আর তোমরা গোপন বিষয় অনুসন্ধান করো না এবং একে অপরের গীবত করো না। তোমাদের মধ্যে কি কেউ তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করবে? তোমরা তো তা অপছন্দই করে থাকো। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চয় আল্লাহ অধিক তাওবা কবুলকারী, অসীম দয়ালু।’ (কুরআন ৪৯ঃ১২)

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৯:১৩

রানার ব্লগ বলেছেন: সুলতান মুরাদ যদি এতোটাই ধর্ম পরায়ণ হতেন তবে অবশ্যই তার সাম্রাজ্যে মদ ও পতিতাবৃত্তি বন্ধ রাখতেন।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৮:২৩

চৌধুরী আসিফ বলেছেন: ধর্ম পরায়ণ হলেই যে সব করে ফেলা সম্ভব এটা কোন কথা নয়।

২| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:০০

কামাল১৮ বলেছেন: তৎকালিন রাজা বাদশারা ছিলো স্বৈরাচারী।তাদের বিরোধিতা করে কেই বেচে থাকতে পারতো না।তারা ভালো ভালো লেখক রাখতো তাদের প্রসংশা করে লেখার জন্য।তেমনই লেখা একটা গল্প।গল্পটা ভালো।আমাদের ফুলের মতো পবিত্র এরশাদ সাহেবের এমন গল্প আছে।ছেড়া গেঞ্জিও এমন একটা গল্প।জিয়ার গেঞ্জিগায়ে অনেক ছবি আছে,সেগুলি কিন্তু ছেড়া না।বিচিত্র এই দুনিয়া।

৩| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১০:০৬

কামাল১৮ বলেছেন: মানুষ পাগল না হলে এতো বড় একটা বোঝা মাথায় নিয়া হাটে।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৮:২১

চৌধুরী আসিফ বলেছেন: প্রিয় কামাল, এরকম টা কেন মনে হলো আপনার?

৪| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১১:৫৩

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টে যে ছবিটা দিয়েছেন, লোকটা বিশাল এক টুপি/পাগড়ি পড়ে আছে। এগুলো ঢাকায় কোথায় পেতে পারি? একটা পড়ার শখ হয়েছে।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৮:২৫

চৌধুরী আসিফ বলেছেন: ভালমানের টেইলরের কাছে যান তিনি আপনার শখ পুরন করে দিবে

৫| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১১:৫৮

অনল চৌধুরী বলেছেন: রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টে যে ছবিটা দিয়েছেন, লোকটা বিশাল এক টুপি/পাগড়ি পড়ে আছে। এগুলো ঢাকায় কোথায় পেতে পারি? একটা পড়ার শখ হয়েছে। - আলিবাবায় বাবায় পাবেন।

৬| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:০৩

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ছবির মত দাড়ি ছাড়া শুধু টুপিতে/পাগড়িতে রাজীব নুরকে ভালো লাগবে না।

৭| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১০:১৩

রানার ব্লগ বলেছেন: তাইলে তিনি কিসের সাম্রাজ্যপতি। যদি তিনি তার রাজ্যের মদ ও পতিতাবৃত্তি নিষিদ্ধ না করতে পারলেন।

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৩:০৩

চৌধুরী আসিফ বলেছেন: লেখকদের ভাবনার পরিধি বিশাল হওয়া উচিৎ।
ততকালীন একজন সাম্রাজ্য পতির দায়িত্ব ও বাস্তবায়ন সম্পর্কে আপনার কতদূর জানা?

৮| ২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৮:২১

রানার ব্লগ বলেছেন: সাম্রাজ্য পতি তার হেরেমের কয়জন সুন্দরী আয়তো নয়না উন্নত বক্ষা আছেন তার খোজ রাখতে পারেন কিন্তু তার রাজ্যে দিনে দুপুরে মদ আর পতিতাবৃত্তি হচ্ছে যা তার ধর্ম মোতাবেক অপরাধ তার খোজ রাখতে পারেন না বাহ কেয়া বাত?!! সাম্রাজ্য পতির একটাই দায়িত্ব তা হলো নিক সাম্রাজ্যে তার অনুশাসন ঠিক মতো পরিচালিত হচ্ছে কি না তা দেখা। বিনোদন আর বাচ্চা পয়দা করার জন্য হেরেমে পতিতা পালা না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.