নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইসলামের পক্ষে কথা বললেই হালাল লেখক সাহিত্যি উপন্যাসিক এর উপাধি পাওয়া যায়

কাজী ফাতেমা ছবি

সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। লেখকের অনুমতি ব্যতীত যে কোন কবিতা, গল্প, ছড়া, ছবি পোস্ট করা হতে বিরত থাকবেন।

কাজী ফাতেমা ছবি › বিস্তারিত পোস্টঃ

হালকা ঈদ ভ্রমণ........(২)

০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১:০১

শ্যামপুর যাওয়ার রাস্তাটা বেসম্ভব খারাপ। সারা রাস্তাজুড়ে ইট পাথর সুড়কি খানাকন্দ। ঝাঁকুনি খেতে খেতে জীবনটা বের হয়ে যাওয়ার জোগাড়। গিয়ে পৌঁছলাম ইকো পার্কে । সেখানে গিয়ে দেখি এলাহি কান্ড। পুরান ঢাকার মানুষ আর কেউ বুঝি ঘরে বসে নেই। সেখানে তো কোন রাইড নেই, দোলনা নেই। পার্কের বিনোদনমূলক কিছুই করা হয়নি। শুধু কয়েকটা গোল ঘর। বসার জন্য পাকা বেঞ্চি এখানে সেখানে ছড়ানো ছিটানো। এত ভীড় কি আর বলবো । ঠ্যালা ধাক্কা খেয়ে ভিতরে প্রবেশ করি। কোথাও বসারও জায়গা নেই। ইয়া মাবুদ সেখানে গিয়ে দেখি এলাহি কান্ড। মানুষের মাথা মানুষ খায়। পুরান ঢাকার সব মানুষ ঘর ছেড়ে পালিয়েছে বুঝি ইকো পার্কের হিমেল বাতাসের কাছে। আকাশটা তখন বেশ মেঘাচ্ছন্ন ছিল।



মানুষের এখানে আসার একটাই কারণ। কারণ এই পার্কে সবুজ বেশী গাছপালা বেশী সাথে বুড়িগঙ্গা নদী। বর্ষার মৌসুম হওয়াতে নদীটাকে চিনতেই পারিনি। থই থই পানি আর সেই পানি কালো ছিল না মোটেও । হালকা সবুজ। ঢেউয়ে ঢেউয়ে সাদা বকের মত দেখাচ্ছিল নদীর মাঝটা। সুন্দর মিষ্টি বাতাসে মনটা ভরে গিয়েছিল।



১। সাইনবোর্ড গুলো দেখলে গা রি রি দিয়ে উঠে..... কোন কিছুই রাজনীতির উর্ধ্বে নয় মনে হয়।





টিকেট কেটে ধাক্কাধাক্কি করে কোনমতে বাচ্চাদের নিয়ে ঢুকলাম পার্কের ভিতরে কিন্তু কোথাও ঠাঁই নেই বসার বা দাঁড়ানোর। এদিক সেদিক বাচ্চাদের নিয়ে হেঁটে হেঁটে ঘুরে বেড়ালাম। আসলে ইকোপার্কটা বাচ্চাদের জন্য নয় । এখানে কোন ধরণের বাচ্চাদের বিনোদন দেয়ার মতো কোন রাইড নেই। শুধু নৌকা ভ্রমণ ছাড়া।



বড়দের জন্য এটা আড্ডা দেয়ার একটা উপযুক্ত স্থান । সব বন্ধুরা মিলে স্থানে স্থানে বসে আড্ডা দিতে পারলে বেশ মজাই হতো । মাঝখানে থাকতো খবরের কাগজের উপর বাদামের পর্বত। পুটুস পুটুস বাদাম খেয়ে, গান অথবা গল্পে সল্পে কেটে যেতো বেশ কয়েকট মুহুর্ত। আর নদীর পাশে বসে থাকলে তো এমনিতেই মন ভাল হয়ে যাওয়ার কথা । এলোমেলো বাতাসে চুল উড়বে, উড়না ওড়বে, ওড়বে শাড়ীর আছল......... স্নিগ্ধ বাতাসে দাঁড়িয়ে দুর থেকে ভেসে আসা ছোট ডিঙি অথবা লঞ্চ দুপাশে ঢেউ খেলতে খেলতে চোখে আসবে আবার চলে যাবে দৃষ্টির সীমানা ছেড়ে ।



২। ভিতরে ঢুকতেই......





৩। ছোটখাট মেলাও বসেছিল সেখানে । যেমন খেলনা বেলুন এসবের.........





৪। বাচ্চারা মনের আনন্দে বেলুন কিনছে.....





আগেই বলেছিলাম আকাশটা ছিল মেঘাচ্ছন্ন তবে বেশ স্বচ্চ। কালো মেঘ আর সাদা মেঘরা মিলে মিতালি পেতেছিল। কেউ কাউকে ছাড়তে রাজী ছিলনা । জড়াজড়ি করে ধরে রেখেছিল মেঘেরা মেঘদের নীলের মাঝে ফাঁকে ফাঁকে। উপরে যেমন সুন্দর দৃশ্য তেমনি নিচে ছিল সবুজে আচ্ছাদিত সবুজ গালিচা । সেখানে মানুষরা হয়ে উঠেছিল একে অপরের আত্মীয়। চেনা নেই জানা নেই তবুও কি সুন্দর বন্ধন সবার মধ্যে । সবার মুখের হাসি, উচ্ছলতা দেখে নিজেরই ভাল লাগতে শুরু করেছিল।



৫। হাসিখুশি বন্ধুরা........





৬। দৃশ্যটি দেখে কি আপনারও এমন আনন্দে শরীক হতে ইচ্ছে করছে না?





৭। কাঁটাতারের ফাঁক দিয়ে বুড়িগঙ্গা





৮। বাচ্চাটি ফাঁক দিয়ে নরম ঠান্ডা বাতাস উপভোগ করছে,,,,,,





৯। একটু বসার স্থান পাওয়া গেল অবশেষে। চিপস খাচ্ছে তিন ভাই (দুইটা আমার বড়জন ভাসুরের ছেলে)





বুড়িগঙ্গার পানি কিন্তু এখন কালো নয় । সাদা থই থই পানি........ বাতাসে কোন বিশ্রিরি ঘ্রাণ নেই।

১০। এক ফাঁকে কাটাতার ঘেষে দাঁড়ালাম আমরা সবাই





১১। সূর্যের তীক্ষ্ণতা পানিতে পড়েছে...... তখন ছিল মেঘ রোদ্দুরের লুকোচুরি খেলা......

[img|



১২। থই থই সাদা পানি.......





কি পাইনি সেদিন। সবুজ পেয়েছি, নীল পেয়েছি, সাদা মেঘ, কালো মেঘ, রঙধনু, নদী, নৌকা, লঞ্চ....... সবই সুন্দর দৃষ্টি দিয়ে দেখা..... আল্লাহর কাছে লাখ শুকরিয়া তিনি আমাকে সুন্দর দেখার সুযোগ দিয়েছেন।



১০। হঠাৎ নজর কাড়লো দৃষ্টিদন্দন......... আমার অনেক প্রিয় রঙধনু........।





বেশীক্ষণ আর থাকতে পারিনি। বৃষ্টি পড়া শুরু করেছে......



১১। বৃষ্টির মাঝেই একটা ক্লিক.......





হুড়মুড় করে বেড়িয়ে আসতে হয় বৃষ্টির জন্য। বাচ্চাদের জন্যই আর থাকা হয়নি । কারণ ওরা কখনো বৃষ্টিতে ভিজে নাই। যদি ঠান্ডা লেগে যায় তাই বের হয়ে আসি। যদিও নৌকায় উঠার বায়না ধরেছিল বাচ্চারা শেষ পর্যন্ত বৃষ্টি বাধ সাধলো। বের হতে হতে এমন ঝুম বৃষ্টি শুরু হলো কি আর বলবো । কোথাও তিল ঠাঁই নেই মাথা গুজার। বের হয়ে দেখি বাজারে আশে পাশে কোথাও মাথার উপরে রাখার কিছুই নেই। অগত্যা না চাইলেও ভিজতে হলো সবাইকেই । টম জেরীর বাপে কোনদিনই বৃষ্টিতে ভিজে না বা তার কোন উৎসাহ নেই এ ব্যাপারে। ভিজার সময় সে আমার দিকে তাকায়ে তাকায়ে মিচকি হাসতাছে। মানে হলো শেষ পর্যন্ত বৃষ্টিতেও ভিজতে হলো তাকে। আমি হাসি সামলাতে না পেরে বললাম কি মজা বৃষ্টিতে ভিজে তাই না?



তবে বাচ্চারা বৃষ্টি বেশ উপভোগ করেছে। দুইজনেই প্রায়ই বৃষ্টি এলে ভিজতে চায় কিন্তু তাদের বাবা বের হতে দেয়না ঘর থেকে। শেষে তাদের এ আশাও পূর্ণ হলো। আল্লাহর রহমতে কোন ক্ষতিই হয়নি ভেজার কারণে।

--------------------------

গত বৃহস্পতিবারে অফিস খোলা ছিল। বেড়ানোর পার্ট প্রায় শেষই ছিল। কারণ অফিস খোলা রাস্তাঘাট আবার জ্যাম, গরম আর বুঝি সহসাই বের হওয়া যাবে না মনে করেছিলাম । কিন্তু সেদিন অফিস থেকে বিকেল তিনটায় বের হয়ে দেখি রাস্তা পুরাই ফাঁকা। যেমনটা হরতালের সময় দেখা যায় ।



১২। অফিসের বারান্দা থেকে তোলা মতিঝিলের ছবি......। দেখুন কেমন ফাঁকা ছিল........





আমি আর আমার বর রিক্সা করে বাসায় ফিরার পথে আবার প্ল্যান করলাম যে আজকেও একটু বাচ্চাদের নিয়ে ঘুরি। কারণ এমন সুন্দর ফাঁকা রাস্তা সহজে পাওয়া যাবে না । শেষ পর্যন্ত বাসায় গিয়ে বাচ্চাদের রেডি করে বের হলাম উদ্দেশ্যবিহীনভাবে। কোথায় যাব তখনো ঠিক করা হয়ে উঠেনি। রিক্সায় বসেই টম জেরীর বাপে বলল আচ্ছা শিশু পার্কেই যাই। কারণ কোথায় যাব টিক করতে না পেরে ওখানেই যেতে হলো।



১৩। শিশু পার্কের গেইট। এমনিতেই তো শিশু পার্কে ছুটির দিনগুলায় ভীড় লেগেই থাকে। তার উপর আবার ঈদের ছুটি বলে কথা।





গিয়ে তো চোখ ছানাবড়া.......... আজও সব মানুষ শিশু পার্কেই চলে গেছে বুঝি.......



১৪। বেলুন





ঘুরতে ঘুরতে বটগাছের উপরের জায়গায় উঠলাম সেখান থেকে দেখলাম মানুষের সমাহার........

১৫।





১৬। বাচ্চারা কিছু খেতে চায় শেষে চটপটি আর পুচকা খেলাম সবাই বসে.....





১৭। রংবঙের গলার হারের সমাহার





বাচ্চারা বলল বাবা, আমরা কি একটা রাইডেও উঠতে পারব না। তখন আমি দেখালাম ওদের দেখ বাবারা ট্রেনের লাইন এটি। কোথা হতে দাড়িয়ে কোথায় শেষ হয়েছে একটু নজর বুলিয়ে দেখ । ট্রেনে উঠতে গেলেও রাত হবে...... ।



কোথাও কোন চাঞ্চ নেই রাইডে উঠার। আশ্চর্য্য হলেও সত্যি প্রতিটা রাইডেই বড় বাচ্চাকাচ্চা। ছোটরা দাঁড়িয়ে এটাই উপভোগ করতেছে.........

এ বিষয়ে একটা লিমেরিক........



লিমেরিক-৪৩ (শিশু পার্কে শিশু কম)

---------------------------------------------

শিশু পার্কে শিশু কম, শিশু ছাড়া ঘুরছে হাজার বুড়াবুড়ি

সব রাইড দখল করে তারা, করছে আকাশে উড়াউড়ি

জড়িয়ে, হাত ধরে হাঁটছে কপোত-কপোতি

নাই, অন্তরে শুদ্ধতা চোখে লাজ এক রত্তি;

বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে হায়! নির্লজ্জ শহরে কেমনে করি ঘুরাঘুরি।



এই হল আমাদের শিশু পার্কের অবস্থা



সেখান থেকে বের হয়ে সবাই গেলাম সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে। সেখানেও অনেক ভীড় । এর আগে বাচ্চারা সেখানে যায়নি তাই এক সুযোগে দেখিয়ে আনার জন্য আসলে যাওয়া । তখন সন্ধ্যা ছুঁই ছুঁই........ ভিতরে ঢুকার পরই মাগরিবের আযান পড়ে গিয়েছিল।



১৮। অগ্নিশিখা,,,,,,,,





বসে সময় পার করার মতো সময় ছিলনা কারণ রাত হয়ে যাবে বাসায় ফিরতে ফিরতে। বাসাও অনেক দুরে আমাদের।

হাটার মাঝেই বাচ্চাদের জায়গাগুলো দেখিয়ে চলে আসি



১৯। এটা কি ? আমি ঠিক জানি না। স্মৃতি স্তম্ভ হতে পারে





২০। সন্ধ্যার আলো আধারীতে দুই বন্ধু আড্ডারত অবস্থায়





হালকা পাতলা ভ্রমণ শেষে রাত আটটায় বাসায় পৌঁছি।............

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১:১৭

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


আমি কিন্তু আপনার অফিস চিনে ফেলসি :P

০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১:৫০

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: বলেন তো কোন অফিস?

থ্যাংকু........

২| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১:২১

বনসাই বলেছেন: ঊনিশে এসে থমকে গেলাম! এটা কি লিখলেন?

০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১:৫৩

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আসলেই মনে করতে পারছি না নামটি। ভাইরে আমি এত ঘুরাঘুরি করিনা। ঢাকার রাস্তায় একা বেরুলেই মনে হয় এই হারিয়ে গেলাম
ধন্যবাদ

৩| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১:৩৫

মৃদুল শ্রাবন বলেছেন: পুরান ঢাকার সব মানুষ ঘর ছেড়ে পালিয়েছে বুঝি ইকো পার্কের হিমেল বাতাসের কাছে

ঘটনাটা সত্যি। পুরান ঢাকার মানুষের মাঝে কিন্তু আসলেই একটা অন্য ধরনের রঙ আছে।


চটপটিটা বেশ সুস্বাদু মনে হইলো। :-P :-P

০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১:৫২

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আসলেই। কিন্তু সুস্বাধু কিন্তু ছিল না। আমার সামনে থেকে একজন না খেয়ে চলে গেছে । আমি খেয়েই তবে উঠেছি।
অনেক ধন্যবাদ .....

৪| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১:৩৭

সুমন কর বলেছেন: বর্ণনা আর ছবি মিলে চমৎকার একটি পোস্ট।
আমরাও একটু ঘুরে আসলাম।

৫| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৪ দুপুর ১:৫৩

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ সুমন দা। ভাল থাকুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.