নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। লেখকের অনুমতি ব্যতীত যে কোন কবিতা, গল্প, ছড়া, ছবি পোস্ট করা হতে বিরত থাকবেন।
চিঠি লিখার স্থান: ঘরের কোণের পিসির সামনে থেকে
তারিখ : ২৬-০১-২০১৫
প্রিয় প্রজাপতি,
দুই যুগ ধরে কোন চিঠি লেখা হয়নি কারো কাছে। চিঠির শুরু কিভাবে করতে হয় তাও যে গেলাম ভুলে। কি বলে সম্বোধন করবো চিঠির শিরোনামে! সব গুলিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আজ চিঠি লিখতে বড্ড ইচ্ছে করছে। মনের কথাগুলো অকপটে বলার জন্য অই একটাই পথ খোলা, যা হলো চিঠি।
তুমি হচ্ছো আমার কিছু ক্ষয়িঞ্চু প্রজাপতি প্রহর। তোমার কাছে আমি আজ লিখবই। চিঠি পড়বে কিনা আদৌ বলতে পারছি না। আর কিইবা লিখবো তাও বুঝতে পারছি না। তবুও তোমার নামে চিঠি পোষ্ট করে দিবো। চিঠির উত্তর দিতে হবে না। কারণ আমি তোমাকে কোন প্রশ্নের সম্মুখীন করছি না বা প্রশ্নবানে জর্জরিতও করছিনা অথবা কিছু জানতেও চাচ্ছি না। শুধু কিছু কথা আমার বুকের ভিতর হতে আকুলি বিকুলি হয়ে ঝরে পড়ছে আজ চিঠির পাতায়।
কোন এক মুহুর্তে হঠাৎই উড়ে এসে বসেছিলে আমার খানিক বিষন্ন প্রহরে। তখন তোমার ডানা হতে ঝরে পড়ছিলো রঙধনু সাত রঙের আলোকচ্ছটা। সেই আলোকচ্ছটায় আমি আমাকে দেখতে পেয়েছিলাম। নিজেকে শান্ত রাখতে তুমিই তখন শিখিয়েছিলে। অন্তরের প্রতিটি কোণায় কোণায় রঙ ছড়াতে ছড়াতে তুমি আমাকে করে দিয়েছিলে উচ্ছ্ল। বিষন্নতা থেকে মুক্তি পেয়েছিলাম, যা তুমি দিয়েছো।
প্রজাপতি তোমার মূল্যবান অনেক সময় আমাকে দিয়েছো সেজন্য আমি অনেক কৃতজ্ঞ। দিনের মূল্যবান সময়টুকুতে তুমি আমার সাথে থাকতে। আমার পাশেই উড়ে উড়ে এডালে ওডালে বসতে। কত কথাই তো বলতে, শিখাতে, বুঝাতে। আচ্ছা! তুমি ছোট একটা প্রজাপতি হয়ে এতসব কাব্যগাঁথা বাস্তব সত্য কথাগুলো শিখলে কিভাবে? কই আমি তো কিছুই শিখতে পারলাম না আজো। মানুষকে কাছে টানার, হাসানোর অনেক ক্ষমতা তোমার।
কত প্রহর কেটেছে প্রজাপতি তোমার গান শুনে। তোমার ডানায় ভর করে উড়েছি নির্ঝঞ্ঝাট বাঁধাহীন অন্তহীন নীলে। কত আবোল তাবোল কথার লেনদেন হতো তোমার মনে আছে প্রজাপতি? হালকা ঠাট্টা, খুঁনসুঁটি দুষ্টামিতে ভরা ছিল সে পলগুলো। তোমার অনুভূতিতে কি সে মুহুর্তগুলো দাগ কাটে আজো? না ভুলে গেছো?
বাস্তবে দেখা হয়নি তোমার সাথে আজো, আর দেখাও হবে না কখনো। তুমি তো প্রজাপতি উড়তে পারো, ঘুরতে পারো, ভুলে কখনো কি উড়ে এসে বসবে আমার মনের আঙ্গিনায়? শুধু তোমাকে এক নজর দেখবো বলে আমার চোখে এখনো পরিনি চশমা। স্বচ্চ কাঁচে তোমার ডানার রঙগুলো প্রতিফলিত হয়ে আমার চোখকে করে দিবে ভষ্ম। এজন্যই চোখে লাগাইনি রঙ্গিন স্বচ্চ কাঁচের চশমা।
কি জানি কেন তোমার সাথে আজ আমার আর কথা হয় না। কি অভিমানে দূরে গেছো চলে। আচ্ছা! তুমি কি আমাকে ভয় পাও বা পেতে? তুমি ভালবেসে ফেলেছিলে? আমি কিন্তু ভালবাসিনি। প্রশ্নই উঠেনা ভালবাসার। বন্ধুত্বের মাঝে ভালবাসা না আসাই ভাল, নয়কি? আমি এমন বন্ধুই পেতে চাই, যে শুনবে আমার সুখ দু:খের ক্ষয়ে যাওয়া সময়ের কথা। অথবা বন্ধু শুনাবে তার উচ্ছ্বাস ভরা সময়ের কিছু সুখের স্মৃতি অথবা দু:খের কিছু মূহুর্ত। তবে হ্যাঁ ভালবাসতেই পারো, মানুষই মানুষকে ভালবাসবে তাই নয়কি? ভালবাসা ছাড়া বন্ধুত্বের সম্পর্ক হয়না অথবা সহমর্মিতাই হচ্ছে ভালবাসা, মায়া কিন্তু মোহ নয়। মোহকে ধারে ঘেষতে দিবে না কখনো। মোহ খুব খারাপ জিনিস। মোহ শুধু মানুষকে কষ্টই দেয়। বন্ধু হিসাবে ভালবাসি অনেক ভালবাসি। কি সব লিখে যাচ্ছি। ক্ষমা করো বন্ধু!
যে কারণে চিঠি লিখতে বসছিলাম সেটাই তো লিখিনি। এই মূহুর্তে তোমাকে আমার খুব দরকার। আমার সময়গুলোতে ঘুন পোকা এসে বসেছে আবারও। কেটে দিচ্ছে সব বন্ধন। বিষন্নতায় ছেঁয়ে গেছে আমার মনের আকাশ। যেদিক তাকাই শুধু অন্ধকার দেখি। তোমাকে আমার খুব প্রয়োজন এই মূহুর্তে। প্লিজ যেখানেই থাকো চিঠি পেয়ে তুমি আবার এসে বসো আমার জানালার শার্শিতে। সব অন্ধকার দূরে ঠেলে দিয়ে একশ দুই রঙের আলো নিয়ে আসো আমার পৃথিবীতে। তোমার ডানায় করে সব বিষন্নতা উড়িয়ে নিয়ে ফেলে দাও সমুদ্রের অথৈ নীলে। প্রজাপতি আবার এসো আমার মন আঙিনার বাগানে। তোমার ডানার হাজারো রঙ ছড়িয়ে দাও, রঙ্গীন হোক আমার ফুল বাগান। কি আসবে তো! অনেক লিখে ফেলেছি। ডিজিটাল যুগে কালির কলমে লিখতে হয়নি বলে তেমন কষ্ট হয়নি। কীবোর্ডে আঙ্গুলের ছোঁয়ায় চিঠির পাতা ভরে দিয়েছি একশ দুই রাশ বিষন্নতার ছাপ। মনে কিছু করো না বা ভুল বুঝোনা । আজ আর লিখলাম না কিছু। কিন্তু আবারো লিখবো তোমাকে। তুমি হচ্ছো আমার প্রজাপতি প্রহর।
ইতি
তোমার নীল ফড়িং
পুনশ্চ: চিঠির প্রথমে বলেছিলাম চিঠির উত্তর দিতে হবে না। এর কারণ উত্তর তোমাকে লিখতে হবে না । তবে চিঠি পড়ে যেনো তুমি আবার উড়ে এসে জুড়ে বসো আমার ভার্চূয়াল ফুল বাগানে সেই আশাই করছি।
সর্বাবস্থায় ভালো থেকো, নিরাপদে থেকো। শুভকামনা সব সময়ের জন্য। আল্লাহ হাফেজ।
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা মার্চ, ২০১৫ দুপুর ২:৪২
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: (