নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইসলামের পক্ষে কথা বললেই হালাল লেখক সাহিত্যি উপন্যাসিক এর উপাধি পাওয়া যায়

কাজী ফাতেমা ছবি

সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। লেখকের অনুমতি ব্যতীত যে কোন কবিতা, গল্প, ছড়া, ছবি পোস্ট করা হতে বিরত থাকবেন।

কাজী ফাতেমা ছবি › বিস্তারিত পোস্টঃ

=তানিয়ার জীবন গল্প=

০২ রা মে, ২০২৩ বিকাল ৩:৩৩


আমাদের তানিয়ারা

তানিয়া বর্তমানে আমার বাসার কাজের হেল্পার। দুই কাজ দিয়েছি তানিয়াকে। তবে দুই কাজের মাঝে আবার এক্সট্রাও রেখেছি। একদিন কাপড় ধোয়া বন্ধ রেখে ওয়াশরুম পরিষ্কার করাই। আবার কখনো আলমারির কাপড় গুছিয়ে দেয়। তানিয়া ছোট খাটো হালকা গড়নের শ্যামলা মেয়ে। চুল অনেক লম্বা। চোখ দুটো বড় বড়, এক কথায় তানিয়াকে আমার খুব ভালো লাগে । খুব সুন্দর তানিয়ার হাসি।

যে কোন কাজ সে হাসি মুখে করে। রোজ সকালে তার সাথে আমার অনেক গল্প হয়। তানিয়া এসেই আমার বিছানা গুছিয়ে ঝাড়ু দিয়ে ঘর ঝাড়ু দেয়। তাকে আমি কখনো বলিনি এই কাজটি করে দিতে। সে সানন্দে করে। আমার ভালো লাগে। সকালে তাকে এক কাপ চা অথবা চায়ের সাথে রুটি কিংবা বিস্কিট দেই খেতে। তানিয়া তখন সিঙ্কের সব ধুয়ে মুছে রাখে ঝুড়িতে। আমি বলি তুমি চা খেয়ে চলে যাও দেরী হয়ে যাবে। তবুও সে টুকটাক অন্য কাজ করে দেয়।

যদিও কাজে ফাঁকিবাজ আছে। সব হেল্পারই এমন ফাঁকিবাজ থাকে আমার দেখা মতে। চোখের সামনে থাকলে কাজগুলো ভালোভাবে করবে। চিপাচাপা সুন্দর করে ঝাড়ু দিবে। যদি সামনে না থাকি তবে হইছে, সোফার নিচেও হাত যায় না। তানিয়াকে ভাত খেতে দিলে এত্ত খুশি হয়। তার খুশি দেখে ইচ্ছে হয় রোজ ভাত খাওয়াই কিন্তু তা আর হয় না। তানিয়ার হাতে সময় থাকে না।

তানিয়ার বাড়ি ময়মনসিংহে। তানিয়ার বয়স মনে হয় খুব একটা হয়নি। বিশ থেকে বাইশ হবে আমার ধারণা। তার দুইটা মেয়ে, বড় জনের বয়স ৪ আর ছোটজনের বয়স দেড় বছর। দুটো মেয়েকে ময়মনসিংহে রেখে সে ঢাকায় মান্ডা থেকে মতিঝিলে বাসাবাড়ীতে কাজ করে। দুধের বাচ্চাটাকে রেখে এসেছে শুনে প্রথম থেকেই আমার মনটা খারাপ হয়ে গিয়েছিল।

তাও দুই বোন দুই জায়গায় রাখতে হয়েছে। দুইজনের খরচ তার শাশুরী নিতে চায় না। তাই একজন থাকে দাদীর কাছে একজন নানীর কাছে। যাই হোক সে অনেকগুলো বাসায় কাজ করে ১০/১২ হাজার টাকা ইনকাম করে। সে মান্ডাতে স্বামীর সঙ্গে থাকে। কাহিনী হল, তানিয়ার জামাই নাকি একটু লম্বা আর একটু ফর্সা সুন্দর (আমি দেখি নাই) । তানিয়ার কাছে শুনেছি। তানিয়া বলে আফা কত সিস্টেম করে চলতে হয়, নইলে ত্যাড়া হয়ে যায়। বাসায় ফিরে আসে না। আসল কথা হলো তানিয়ার ছেলে নাই দুইটাই মেয়ে। আর তানিয়া ছোটখাটো। চঞ্চল মেয়ে দেখলেই বুঝা যায়। কোনদিনও মুখ বেজার করে কাজ করেনি আমার বাসায়।

তানিয়ার জামাই আস্ত একটা বদ লোক (যদিও একজনের বক্তব্য হতে ধারণা)। তানিয়া বলে আফা সে একদিন কাজে গেলে ছয়দিনই বাসায় হুইত্তা থাকে। কাম করে না। মাস শেষে তানিয়ার সব টাকা নিয়ে নেয়। তানিয়ার হাতে ৫০০ কিংবা এক হাজার টাকাও দেয় না। বেতন পেলে তার মানিব্যাগ হতে সব টাকা হাতিয়ে নিয়ে যায়। বাসার ভাড়া দেয় আর রঙ ঢং করে টাকা উড়ায়।

যেই না তানিয়া বলে সব টাকা দেব না। সেই শুরু তানিয়ার উপর অত্যাচার, বুকের মাঝে লাত্থি সহ সারা শরীরে মারের দাগ। দুই মাস আগে সে বাড়িতে গিয়েছিল। সেখানে তানিয়ার মায়ের বাড়ীতে মায়ের সামনে বুকে লাত্থি মেরে ফেলে দিয়েছে। আরেকটা বিয়ে করবে বলে হুমকি দিয়ে সে নাই হয়ে যায়। তানিয়া ঢাকা ফিরে এসে অনেক কষ্টে তার ফোন নাম্বার যোগাড় করে টাকা পাঠায় মোবাইলে। তারপর আবার ফিরে আসে।

এখন ঈদের আগে আবার টাকা পয়সার জন্য মারধোর করেছে। তানিয়া ঈদে বাড়ী গিয়ে ফেরত আসেনি এখনো। ফোন করে জানতে পারি সে মেয়েসহ বাপের বাড়ী । দেন দরবার চলতেছে। তানিয়ার জামাই তানিয়াকে ছেড়েও দিতে পারে। তানিয়া একটা সুন্দর মেয়ে। শুধু তার নিজের দুটো মেয়ের জন্য জামাইরে কতই না তোয়াজ কতই না যত্ন আত্মি করতেছে। মেয়েরা এখানেই ধরা খায়। সন্তানের দিকে তাকিয়ে অন্য দিকে যাওয়ার চিন্তাও করে না।

তানিয়ার মেয়ে দুটোকে আমি দেখেছি। মাশাআল্লহ এত সুন্দর। বড় মেয়েটা পুতুলের মতন। আরেকটা কথা তানিয়ার ছোট বোন তানিয়ার চেয়ে একটু লম্বা। মোটামুটি সেও সুন্দর। সে উত্তরা বাসায় থাকে। জামাইর সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। এই বোনটাই নষ্টের মূল আমার ধারণা। তানিয়ার জামাইর সাথে দিনে রাতে ফোনে আলাপ করে। অই বাসা থেকে তানিয়ার কাছে বিচার আসছে। তানিয়া কথায় কথায় বলতেছিল আফা আমার বোন আমার সংসারটা নষ্ট করে দিবে মনে হয়।

এতসব লিখার কারণ হল, এই তানিয়াদের কাহিনী আমাকে খুব কষ্ট দেয়। দুইটা বাচ্চা ছোট । রেখে কাজে আসে ঢাকা। সে যে সময় বাড়ীতে যায় এসেই হাউমাউ করে কান্ধে। বলে আফা মেয়েরা রাতে জোরে ধইরা ঘুমায় যাতে আমি ঢাকা না আসি। সে রাতে ঘুম পাড়িয়ে ঢাকায় রওয়ানা হয় প্রতিবার।

চোখ দিয়ে যখন ঝরঝর করে পানি পড়ে তখন ভেতরটা কেঁপে উঠে। সন্তানদের জন্য মায়ের মমতা দেখে ভাবি আমাদেরকে আল্লাহ অনেক ভালো রেখেছেন। ছোট মেয়েটা কথা বলতে শিখেছে। সেই নিয়ে প্রতিদিনই বলে আফা ছোট মেয়েটা কী সুন্দর কথা বলে যদি শুনতেন। বড় মেয়েটার নাম সোহানী, ছোটটার নাম মনে নাই।

মায়ের মমতা আর বাবার স্বার্থপরতায় কত সংসার যে এমনেই ভেঙ্গে যায়। তানিয়াদের জন্য কেউ এগিয়ে আসে না। বেটাদের কী, মেয়েদেরকে মায়ের কাছে দিয়ে সে আরেকটা বিয়ে করবে। আর এদিকে তানিয়া না পারবে বিয়ে করতে আবার না পারবে সন্তানদের ছেড়ে অন্য কোথাও থাকতে।

তানিয়াকে নিয়ে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম ফেসবুকে। এক বিদেশী ভাই তানিয়াকে সাহায্য করতে চেয়েছিল। আমিও ভেবেছিলাম আমিও সাহায্য করবো যদি সে তার সন্তানদেরকে ঢাকায় নিয়ে আসতে পারে। তানিয়াকে কত বুদ্ধি দিয়েছি। বলেছি মতিঝিলে আসো, এখানে কত রকম ব্যবসা আছে, আমি টাকা দেব তোমার জামাইকে বলো সে যেন কিছু একটা ব্যবসাতে লেগে যায়। তানিয়ার জামাই কোনোভাবেই রাজী না। তার মেয়েদেরকে সে ঢাকায় আনবে না। তাই আর কথা বাড়াইনি। আর বিদেশী ভাইটাকে বলেছি, যদি প্রয়োজন হয় আমি তাকে পরে জানাবো। এরকম বেকার বেটা যে বসে বসে খায় তাকে টাকা দিলে সে টাকা উড়াবে আর রঙ ঢঙে চলবে। তাই তাকে সাহায্য করতে আর আগাইনি। সেদিন তানিয়াকে ফোন করেছিলাম কবে আসবে, সে বলল আফা সে মাইর মারছে তার জন্য ঔষধ খাচ্ছি, ভালো হলে চলে আসবো। আসলে এই সমাজে এমন তানিয়াদের অভাব নেই। আল্লাহ তানিয়াদের সহায় হোন।

মন্তব্য ২৬ টি রেটিং +৬/-০

মন্তব্য (২৬) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা মে, ২০২৩ বিকাল ৩:৫৮

শাওন আহমাদ বলেছেন: মেনে নেয়, মানিয়ে নেয়, সবকিছু বিসর্জন দেয় তবুও কখনো কখনো যার জন্য এতোকিছু তাই ই আর টিকে থাকেনা!

০২ রা মে, ২০২৩ বিকাল ৪:০০

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আসলেই। মানুষ বড় স্বার্থপর। আল্লাহ যেন তানিয়ার সংসারটা টিকিয়ে দেন। দুটো মেয়ে নিয়ে বিপাকে পড়বে মেয়েটা।

২| ০২ রা মে, ২০২৩ বিকাল ৪:১১

শাওন আহমাদ বলেছেন: কি আর বিপদে পড়বে? সেতো আর তার স্বামীর উপর নির্ভশীল না বরং তার স্বামীই তার উপর নির্ভরশীল। তবুও আল্লাহ যেনো তার স্বামীকে মানুষ বানায় অমানুষ থেকে।

০৩ রা মে, ২০২৩ বিকাল ৩:৫৬

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: তার দুটো মেয়ে আর ডিভোর্সী মেয়েদের সমাজে চলা বড় কষ্টকর। কী জানি কী হয় । অমানুষটাকে আল্লাহ মানুষ বানিয়ে দিন

৩| ০২ রা মে, ২০২৩ বিকাল ৫:১৭

শায়মা বলেছেন: বেচারা কিছুই করার নেই হয়ত তার।

০৩ রা মে, ২০২৩ বিকাল ৩:৫৭

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: গরীবদের করার কিছুই থাকে না আপু। ধন্যবাদ পোস্টটি পড়ার জন্য

৪| ০২ রা মে, ২০২৩ রাত ১০:৪৬

রুদ্র আতিক বলেছেন: কিসের দোয়া? দোয়া-দয়া কিচ্ছু নাই । তানিয়ার স্বামীরে বাইন্ধ্যা আচ্ছা করে আগে পিটানো দরকার । তারপর অন্য হিসেব ।

০৩ রা মে, ২০২৩ বিকাল ৩:৫৮

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আসলেই উচিত শিক্ষা দিতে পারলে ঘাড়ত্যাড়ামি হয়তো ছাড়তো। তবে এরা পরিবর্তন হবে না। রক্তে বদমাইশি ঢুকে গেছে।

৫| ০৩ রা মে, ২০২৩ ভোর ৪:৫৮

জটিল ভাই বলেছেন:
আভী,
আপনার এই লিখার ধরনটায় অন্য এক ব্লগারের ছায়া পাচ্ছি। যদিও তারসঙ্গে আপনার সুসম্পর্ক বিদ্যমান নেই বলেই জানি =p~

০৩ রা মে, ২০২৩ বিকাল ৩:৫৯

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: কারো ধরণের কথা চিন্তা বা তারটা দেখে দেখে কিছু লিখা আমার পক্ষে সম্ভব না। এটা বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে লিখা। এখন জ্বালয় আছি তানিয়া আসতেছে না। আরেকটা মানুষ রাখা লাগবে। কষ্ট হচ্ছে খুব কাজ কর্মে। তাসীনের বাপও অসুস্থ। একা ঘরের কাজ সম্ভব হয় না। তাছাড়া বয়স হইছে । বেশী কিছু করা যায় না।

৬| ০৩ রা মে, ২০২৩ সকাল ৭:৫৮

সোহানী বলেছেন: তানিয়ারা ঘরে ঘরে আপুনি। কয়জন তানিয়াকে পথ দেখাবেন...। এদের কি করা উচিত তাই তারা জানে না। আর এ কারনেই এ বদগুলো এদের মাথার উপর চড়ে বসে।

ভালো থাকুকক তানিয়ারা।

০৩ রা মে, ২০২৩ বিকাল ৪:০০

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: আপু শুধু কী তানিয়া। আমাদের সমাজে অনেক সফল মেয়েরাও তানিয়ার মতই মুখ বুজে সব সহ্য করে সন্তানের জন্য।

হ্যাঁ ভালো থাকুক তানিয়ারা।

৭| ০৩ রা মে, ২০২৩ দুপুর ২:২৩

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



গুরুত্বপুর্ণ বিষয়ে একটি বাস্তব অবস্থার সকরুন বিবরনী মুলক পোষ্ট । গৃহ পরিচারিকারা ক্ষেত্র বিশেষে ( অবশ্য আপনার
বাসা যে এর মধ্যে পড়েনা তা বলাই বাহুল্য) কর্মস্থানে নির্যাতনের শিকাড়ের পাশাপাশি তার নীজ পরিবারেই অনেক পাষন্ড সদস্যের বিশেষ করে বিবাহিতরা নীজ স্বামী দেবতার কাছ হতেই কি নিদারুনভাবে নির্যাতিত হয় তার লোমহর্ষক কাহিনী
ফুটে উঠেছে লেখাটিতে ।

তানিয়াদের দুরাবস্থার সহজ কোন সমাধান নেই , তবে তাদের দুরাবস্থার কথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলে ধরে
সকলের মাঝে একটি সচেতনতা সৃস্টি করা যায় । এ লক্ষ্যে আপনার মহতি প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানাই । আপনার বাসার
কাজের হেলপারের কষ্টের জন্য সহমর্মীতা প্রকাশ করছি আর তার পাষন্ড স্বামী দেবতার জন্য নিন্দা -সেতু তার প্রাপ্যই ।

আমাদের দেশে গৃহকর্মীর সংখ্যা কত, তার কোনো সঠিক পরিসংখ্যান নেই। তবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো পরিচালিত
লেবার ফোর্স সার্ভে ২০১৬/১৭ অনুযায়ী, সংখ্যাটি প্রায় ৭০ লাখ। গৃহকর্মীদের অধিকাংশই নারী, উল্লেখযোগ্যসংখ্যক
গৃহকর্মী শিশু।সুত্র Employed population by Status in employment, BBS 2016/17 Report , Page 53 (রিপোর্টে গৃহপরিচারিকাদেরকে contributing family workers হিসাবে অভিহিত করা হয়েছে )

পরিসংখ্যানের বিচারে দেশ জুড়ে তাঁদের সংখ্যা প্রায় কোটির কাছাকাছি ৷ তবে দেশে গৃহপরিচারিকাদের প্রকৃত সংখ্যা
কত তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে । যাহোক দেশের অগণিত পরিবার তাঁদের ছাড়া অচল৷ অথচ গৃহপরিচারিকাদের না
আছে শ্রমের স্বীকৃতি, না আছে উপযুক্ত সম্মান৷

সংখ্যা নিয়ে ধোঁয়াশাই হয়তো সরকারকে উদ্যোগী করে না এঁদের কাজের শর্ত সম্বন্ধে সুস্পষ্ট নীতিমালা গ্রহণ করতে
ও তা বাস্তবায়নে উদ্যোগী হতে। এত প্রয়োজনীয় একটি পরিষেবা হয়েও এঁরা দেশের অন্যান্য শ্রমিক শ্রেণীর মত শ্রমিকের অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকেন, যেমন বাদ পড়েন ন্যূনতম মজুরির মতো নিয়ম থেকেও৷ ‘গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি,
২০১৫’ থাকা সত্ত্বেও কিছু কিছু বিষয়ে এখনও বাস্তবায়নের পর্যাপ্ত উদ্যোগ লক্ষ্য করা যায়নি। ২০১৫ সালে প্রণিত
নীতিমালাটি আইন হওয়ার পথেও হাঁটেনি৷

এক জন নির্মাণ শ্রমিক গর্বের সঙ্গে কাজে যান, কিন্তু এক জন গৃহপরিচারিকা লজ্জায় মাথা নিচু করে কাজে যান কেন?
এই কাজ তার প্রাপ্য সম্মান পাক- মেয়েদের গৃহপরিচারিকার কাজের জন্য প্রশিক্ষণ চালু হোক , তাদের কায়িক পরিশ্রম
লাঘবের জন্য দেয়া হোক সহায়ক সরঞ্জাম ,পারসনাল প্রটেকটিভ ইকুইপমেন্ট দেয়া হোক ।

যাহোক, চাহিদা আর জোগান: দু’দিক থেকেই বহু পরিবারে এটি একটি অপরিহার্য শ্রম৷ জীবন জীবীকার তাগিদে
ঘরের মেয়ে বৌঝিরা অফিস/কর্মক্ষত্রের উদ্দেশ্যে কাজে বেরোবেন, সন্তানরা দূরে চলে যাবে, প্রৌঢ়-প্রৌঢ়া আর
বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের জন্য সহায়ক প্রতিষ্ঠান তৈরি না হলে, এই সব কায়িক শ্রম আর যত্নআত্তির পরিষেবার জন্য গৃহপরিচারক-
পরিচারিকা ছাড়া এই বিস্তৃত, ক্রমবর্ধমান ‘কেয়ার ইকনমি’র কোনও সস্তা বিকল্প তৈরি হয়নি৷

তাই আপনার মতই বলি তাঁদেরকে তার নীজ পরিবার সহ তাদের কর্মক্ষেত্রে সম্মানের ক্ষেত্রটি তৈরী করা প্রয়োজন ,
তাঁদের কাজে যোগদানের প্রক্রিয়াটাকে নিরাপদ করে তুলা আবশ্যক ৷ যেখান থেকে তারা যাচ্ছেন সেখানে সহ
( নীজ পরিবার ) যেখানে কাজ করছেন সেখানে নিরাপদ কর্ম পরিবেশ সহ তাদের কাজের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য
প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, যেখানে তারা পৌঁছচ্ছেন, সেখানে তাদের অধিকার আর সহায়তা সুনিশ্চিত করা৷

তাদের জন্য সরকার প্রণীত নীতিমালার সুচারু বাস্তবায়ন সহ তাদের মজুরী/পারিশ্রমিকটা যদি তাদের হাতে নগদ ক্যশ
আকারে না দিয়ে ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে দেয়া যায় তাহলে তাদের জন্য বহুবিধ সুযোগ সুবিধার দ্বার খুলে যেতে
পারে বলে মনে করি ।
উল্লেখ্য সরকারের সাফল্যের দশ বছরে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভুমিকা প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি প্রকাশনায়
বলা হয়েছে -

সুত্র Click This Link প্রকাশনাটির ৭ নং পৃষ্ঠা

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান হতে দেখা যায় প্রান্তিক কৃষক সহ দরিদ্র জনগুষ্ঠির প্রায় ১ কোটি ( যা দেশের প্রাপ্ত
বয়স্ক একটিভ জনসংখার প্রায় এক দশমাংশ) মানুষের ব্যাংক একাউন্ট থাকার কথা , সে হিসাবে তানিয়ারো একটি
ব্যাংক একাউন্ট থাকলেও থাকতে পারে । আর তার যদি কোন ব্যাংক একাউন্ট না থাকে তাহলে ‘একজন অভিজ্ঞ
ব্যাংকার হিসাবে তাকে একটি ব্যাংক একাউন্ট খুলে তার কাজের পারিশ্রমিক তার ব্যাংক একাউন্টে পরিশোধ করে দিন।
এখনতো ঘরে বসেই অনলাইনে একাউন্ট- টু -একাউন্ট টাকা ট্রান্সফার করা সম্ভব। এমনটি করা গেলে কাজের পারিশ্রমিক
হিসাবে অর্জিত অর্থের উপর তানিয়ার অনেকটা নিয়ন্ত্রন থাকবে । তার স্বামী দেবতা যখন তখন জোর করে তার কষ্টার্জীত
সকল টাকা নিয়ে যেতে পারবেনা । এ ছাড়াও ব্যাংক একাউন্টে সে যদি একটু কষ্ট সয্যকরে কিছু সেভিংশ করতে পারে
তাহলে সে প্রয়োজনে তার সামর্থ অনুযায়ী উপার্জনক্ষম কোন ছোট খাট কর্সুচী যথা হাস মুরগী পালন , সেলাই মেশিন
কিংবা ক্ষুদ্র কোন ব্যবসার জন্য ব্যাংকিং খাত হতে ক্ষুদ্র সহায়তা পেতে পারে । ৮/১০টি বাসা বাড়ীতে ঘুরে ঘুরে কাজ
না করে নীজেই তার স্বকর্মসংস্থানের সুযোগ করে নিতে পাববে।এটাই হবে তাদের অর্থৈতিক মুক্তির জন্য অন্যতম
সোপান। ব্লগার সহ দেশের সকল প্রকার সচেতন নাগরিক তাদের জন্য উপযুক্তমানের সাসটেইনেবল সন্মানজনক
স্বকর্ম সংস্থানে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে এগিয়ে আসলে তানিয়ার মত মেয়েরা তাদের অধম অকর্মন্ন স্বামীদের অত্যাচার
নির্যাচনের হাত হতে মুক্তি পাওয়া সহ তাদের ক্ষমতায়নের পথ তারা নিজেরাই করে নিতে পারবেন ।

ভাল মনে করলে উপযুক্ত পারিশ্রমিকে তারা গৃহ পরিচারিকা /হেলপার হিসাবে কাজে নিয়োজিতও থাকতে পারেন ,
তাতে করে নিয়োগকারী ও নিয়োজিত উভয়েই হবেন লাভবান নীজ নীজ সুবিধা অনুযায়ী ।

শুভেচ্ছা রইল

০৩ রা মে, ২০২৩ বিকাল ৪:২৫

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: এই কমেন্টটি একটি পোস্ট আকারে দিলে ভালো হতো।

কমেন্টটি পড়েছি কয়েকবারে। কারণ অফিসে কাজের ঝামেলায় সময়ই পাই না।
মন্তব্যের উপযুক্ত জবাব না দেয়ার জন্য দুঃখিত

ধন্যবাদ আপনাকে এই মূল্যবান মন্তব্যের জন্য

৮| ০৩ রা মে, ২০২৩ দুপুর ২:৩৫

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: তানিয়ার জন্য সমবেদনা। তানিয়ারার কপালে আর কখন সুখ আসবে কি না আল্লাহই ভালো জানেন। তবে আল্লাহ তাকে সুখী করুন।

০৩ রা মে, ২০২৩ রাত ৯:২৪

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: তানিয়া ভালো থাকুক সেটা আমিও চাই। জামাইটারে আল্লাহ হেদায়েত দিন
ধন্যবাদ ভাই

৯| ০৩ রা মে, ২০২৩ দুপুর ২:৩৯

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: তানিয়ার জন্য সমবেদনা। তানিয়ারার কপালে আর কখন সুখ আসবে কি না আল্লাহই ভালো জানেন। তবে আল্লাহ তাকে সুখী করুন।

০৩ রা মে, ২০২৩ রাত ৯:২৫

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: মন্তব্য দুইবার হয়ে গেল

১০| ০৩ রা মে, ২০২৩ দুপুর ২:৪৮

রাজীব নুর বলেছেন: দরিদ্রদের কোথাও শান্তি নেই। বিশেষ করে দরিদ্র মেয়েদের।

০৩ রা মে, ২০২৩ রাত ৯:২৫

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: একদম ঠিক। তানিয়ারা ভালো থাকুক

ধন্যবাদ

১১| ০৩ রা মে, ২০২৩ দুপুর ২:৫৯

ডার্ক ম্যান বলেছেন: তানিয়া নিজেকে নিজে সাহায্য না করলে কেউ পারবে না

০৩ রা মে, ২০২৩ রাত ৯:২৭

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: তানিয়ার মত অনেক মেয়ে আছে নিজের অধিকার আদায়ে লড়তে জানে না, চুপ করে সয়ে যায়। শুধু গরীব ঘরে ধনী ঘরেও অনেক মেয়ে মুখ বুজে সহ্য করে।

অনেক ধন্যবাদ, ভালো থাকুন

১২| ০৩ রা মে, ২০২৩ বিকাল ৩:১৩

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
আহারে, তানিয়ার জন্য খারাপ লাগছে। মায়েদের অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়। তার স্বামীটাকে আল্লাহ হেদায়েত দান করুন।

০৩ রা মে, ২০২৩ রাত ৯:২৮

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: তানিয়ার জন্য আমিও দোয়া করি। কারণ তার ফুটফুটে সুন্দর দুইটা মেয়ে। আল্কাহ ভালো রকাখুন আমি
ধন্যবাদ ভাইয়া

১৩| ০৩ রা মে, ২০২৩ রাত ৮:৪৮

মেহবুবা বলেছেন: নতুন নয়, কত প্রকারের তানিয়া কতভাবে নিষ্পেষিত ! প্রায় ২৫ বছর আগে একজন মহিলা আমার সংসারে সাহায্যকারী এবং তার নিজের পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী মহিলা যখন শারীরিক মানসিক ভাবে লাঞ্চিত হোল স্বামীর দ্বারা, আমার খুব রাগ হয়েছিল। বলেছিলাম কেন তালাক দিচ্ছে না এমন স্বামীকে? জবাব ছিল, " রাখছি সবাই জানুক যে স্বামী আছে, বাচ্চাদের বাবা আছে, নাইলে ছিড়া খাইবো"। তখন বিরক্ত হয়েছিলাম। এত বছর ধরে অনেক জানা শোনা এবং দেখার পরে মনে হয় সে মহিলা হয়তো সঠিক ছিল; সমাজের সব শ্রেনীতে একই বিষয় চোখে পড়ে ভিন্ন আঙ্গিকে।

০৭ ই মে, ২০২৩ সকাল ১০:২৪

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: এমন মেয়েদের স্বামীগুলা একটার পর একটা বিয়ে করে। এদের লজ্জা শরম অথবা সমাজে হেয় হওয়ার ভয় নেই। বউয়ের সাথে তাই যা ইচ্ছে করে বেড়ায়।

হ্যা আপু ডিভোর্স হয়ে গেলে জামাই মরে গেলে এই সমাজে মেয়েদের চলা অনেক কষ্টকর।

ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্য করার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.