![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার পরিচয় আমি মানুষ এর বেশি এখনও অর্জন করা হয়ে ওঠেনি। যদিও মানুষ পরিচয়টাও অর্জন করা নয় জন্মসুত্রে পাওয়া
এক
এই যে শুনছেন.......
এই যে শুনছেন।
মেয়েটি এমনভাবে ডাকল যেন আমায় চেনে!! কিন্তু আমিতো তাকে চিনিনি,তাই আমি ডানে বামে মুখ ঘুরিয়ে তাকে সাঁয় দিলাম যে আমি তাকে এই জন্মে তো দূরে থাক পূর্বের জন্মেও চিনি বলে মনে হয়না। আমি আবার অন্যমনস্ক হয়ে গেলাম।
এইযে আপনাকেই ডাকছি!!
আমি নিতান্তই হকচকিয়ে এবার তার দিকে তাকালাম,ভাবলাম তার মুখটা বোধ হয় এবার চিনতে পারি!কারন মানুষ তার মুখভঙ্গি বিভিন্ন সময় বিভিন্নরকম করে থাকে কিনা, কিন্তু মনকে ঘুষ দিয়েও মেয়েটিকে চিনাতে পারলামনা। তাই একান্তই হতাশ হয়ে জিজ্ঞেস করলাম
‘আপনি আমায় ডাকছেন’?
অপ্রস্তুতভাবে উত্তর পেলাম “হ্যাঁ”। আরে হ্যাঁ সে তো আমাকেই ডাকছে, কিন্তু কেন! এবার তার সমাধান হল, সে বলে উঠল
“এখানে দাড়িয়ে কি দেখছেন”?
ঠিক যেন এলাকার থানার নতুন দারোগার মতই কঠোরভাবে জিজ্ঞেস করল!!আমিও আসামীর মত করে জবাব দিলাম,
‘প্রকৃতি দেখছি’।
আপনার কি মনে হয় পৃথিবীর সকল প্রকৃতি কি এই বাড়ির বারান্দায় দেখা যাচ্ছে?
না ঠিক তা নয়;এই বারান্দার “মাধবীলতা” গাছটি খুব সুন্দর তো,তাই দাড়িয়ে দেখছিলাম।
কিন্তু এতক্ষণ? প্রায় আধঘণ্টা যাবৎ লক্ষ্য করছি আপনি ঠায় দাড়িয়ে ল্যাম্পপোস্টের মত একদিকে আলো দিয়ে যাচ্ছেন।
হ্যাঁ হতে পারে, প্রকৃতির সাথে দেখা হলে আমি যেন হারিয়ে যাই,পৌঁছে যাই অন্য জগতে,আর এই মরুশহরে তো তা হবার কথাই।
এতো কিছু বুঝিনা, এ বাড়ির মালিক, আমার বাবা, আর্মির মেজর তিনি আপনাকে দেখলে সত্যিই আপনি হারিয়ে যাবেন,সে বেজায় স্ট্রিক্ট। ভালোয় ভালোয় কেটে পড়ুন।
ও আচ্ছা!! সাবধান বাণী দেবার জন্য ধন্যবাদ;
অপ্রস্তুতভাবেই, যদিও চাইনি তবুও চলে যেতে হল। সে যেন ভুত তাড়ানোর মতোই ওঝা হয়ে আমার পেছনে লেগেছে।
‘’তবে হ্যাঁ মাধবীলতা গাছটি কিন্তু সত্যিই সুন্দর!!’
বলেই আমি অনতিবিলম্বে প্রস্থান করলাম। সে যেন পিছন থেকে বলল
“ধন্যবাদ”।
একবার ফিরে তাকাতে ইচ্ছে হচ্ছিলো, জানতে চেয়েছিলাম কেন এই ‘ধন্যবাদ’ কিন্তু কেন জানি মন সাঁয় দিলো না। মুখটাকে যুদ্ধে নিযুক্ত সৈন্যের মতোই এক দিকে অর্থাৎ; সোজা স্থির করে হাঁটা ধরলাম।
কিন্তু বেশিক্ষণ এভাবে হাঁটা গেলো না হাতে লাগানো ক্যাসিও ব্রান্ডের নকল ঘড়িটা, যেটা গত বছর একশ কুড়ি টাকা দিয়ে গুলিস্তানের ফুটপাত থেকে কিনেছিলাম সেটাতে চোখ পড়তেই লক্ষ্য করলাম নয়টা বাজে,সাথে সাথে হাতের খামটার দিকেও নজর পড়লো।
আজ দশটায় আমার চাকরীর ইন্টার্ভিউ দিতে যাওয়ার কথা,হঠাৎ পাদুকাদ্বয় ভীষণ বেগ পেয়ে গেলো। ঠিক কত কিঃমিঃ বেগে হাঁটা শুরু হল তা বলতে পারবোনা, তবে এটা নিশ্চিত যে অলিম্পিকে দ্রুত দৌড় প্রতিযোগিতার পাশাপাশি দ্রুত হাঁটার প্রতিযোগিতা থাকলে হয়তো তাতে বিজয়ী হতে পারতাম। তাই সে ব্যবস্থা না থাকায়; অতি দ্রুততার জন্যে প্রথম পুরস্কার সরূপ ‘হাঁপিয়ে উঠলাম’। আর পারছিনা, রিক্সা ছাড়া উপায় নেই,
এ্যাই রিক্সা যাবে?
©somewhere in net ltd.