নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শিরোনাম দেখে কি লাভ,ভেতরের খবর যদি ভালো না হয়!

চিলেকোঠার বাসিন্দা

আমার পরিচয় আমি মানুষ এর বেশি এখনও অর্জন করা হয়ে ওঠেনি। যদিও মানুষ পরিচয়টাও অর্জন করা নয় জন্মসুত্রে পাওয়া

চিলেকোঠার বাসিন্দা › বিস্তারিত পোস্টঃ

ক্যানলার শুশ্রূষা -২

১৭ ই জুন, ২০১৫ রাত ১২:৩৩

কই যাইবেন?
সাইন্সল্যাবঃ ।
ভাই এতদূর যামুনা।
দূর কোথায় শাহবাগ থেকে যেতে বড়জোর পাঁচ মিনিট।
স্যার তা যাই লাগুক,ঐ পর্যন্ত তো রিক্সা যাইতে দেয়না।
কেন?
ঐ পথে ভি.আই.পি রা আহে যায়,রিক্সা যাইতে দেয়না।
মানে?
তা কইতে পারিনা তয় বড়লোকেরা গাড়ি কইরা আইলে ঐ পথ দিয়া যাইতে দেয়।
আচ্ছা ঠিক আছে, কতদূর যাবে?
বাটা সিগন্যাল পর্যন্ত।
আচ্ছা চলবে কত নে.........বে?
চল্লিশ টাকা।
একে তো হাঁপাচ্ছি,তার উপর রিকশাওয়ালার অলৌকিক দাবিতে প্রায় হার্ট এট্যাক হওয়ার উপক্রম, হার্ট প্রায় মুখে চলে এসেছিলো মুখ বড় হলে হয়ত বের হয়েই পড়ত!!!!
ঐ মিয়া ফাজলামো কর এখান থেকে এখানে চল্লিশ টাকা ভাড়া হয় নাকি?
ভাই কমে পাইলে অন্যডা দিয়া যান।
শালারা...............ডাকাত!!!!! সময় বুঝে!!
আচ্ছা চল্।
দশটা বাজার পাঁচ মিনিট পূর্বেই অফিসের সুন্দরী রিসিপ্সনিষ্ঠ এর সাথে সাক্ষাৎ।
আমি ইন্টার্ভিউ.................. দিতে এসেছি...............আমার সিরিয়াল কখন?
আপনার নাম?
সিরাজুল ইসলাম।
হ্যাঁ পেয়েছি , আপনার এপয়েন্ট ২৮ নম্বর, আপনি ওয়েটিংরুমে গিয়ে বসুন আপনাকে ডাকছি।
বসেই যেহেতু আছি আমার সম্পর্কে বলি- আমি ঢাঃবিঃ ‘র’ প্রাক্তন ছাত্র, ইংরেজিতে অনার্স করেছি, এবং......... !!!!।হঠাৎ কে যেন ডাকল!
“ভাই! আপনি কি প্রথম?”
অবাক হয়ে পাশ-ফিরে দেখি অদ্ভুত চেহারার এক লোক পাশে বসা,আমায় বারবার জিজ্ঞেস করছে আপনি কি প্রথম!!!! “আমি কি প্রথম”—কি জিজ্ঞেস করছিলো প্রথম বুঝতে পারিনি। কিছুক্ষণ মাথা খাটানোর চেষ্টা করছিলাম, কিন্তু তার আর দরকার হল না!!! সে নিজেই বলে উঠল
‘আপনি কি এই প্রথম ইন্টার্ভিউ দিতে এসেছেন’?
(মনে হল প্রথম প্রশ্নটাই ভাল ছিল! ভেঙ্গে বলার পর কেমন জানি বিরক্তিকর ভাব আসলো।)
কেন?

না এমনি, যদি বলতেন তাহলে অভিজ্ঞতা হত।
কেমন অভিজ্ঞতা?
এই ধরুন আপনার পায়ের স্যান্ডেলজোড়া নতুনাবস্থায় প্রায় আধা ইঞ্চি পুরু ছিলো, যা এখন তার চার ভাগের এক ভাগে এসে দাঁড়িয়েছে। যদি আপনি প্রথম হয়ে থাকেন তাহলে এই স্যান্ডেল দিয়ে আপনার হচ্ছেনা, পূর্ণরূপে একটি চাকরী পেতে আপনাকে আরও ডজনখানেক ইন্টার্ভিউ দিতে হবে, তাই আপনার নতুন স্যান্ডেল চাই। আর যদি আপনি আরও কয়েকবার ইন্টার্ভিউ দিয়ে থাকেন তবে জানতে চাচ্ছিলাম ঠিক কতগুলো ইন্টার্ভিউ দেয়ার পর আপনার স্যান্ডেলের এই দশা?
কেন...... আপনি এতো বড় মাপের বিশেষজ্ঞ এটা হিসেব করে বের করে নিন।
না তা ঠিক!!! কিন্তু আপনি যদি না বলেন আমি কি করে বের করবো যে ঠিক কয়টা ইন্টার্ভিউ দিতে একজোড়া স্যান্ডেল প্রয়োজন।
কেন... আপনার তো এটা জানা থাকার কথা।
না তা কি করে সম্ভব, আমিই তো প্রথম!!!!
এবার আর তার “প্রথম” শব্দটি বুঝতে অসুবিধে হলনা এবং সাথে এটাও বুঝলাম বড় মাপের ত্যাঁদড়ের পাল্লায় পরেছি।তার হাত থেকে রেহাই পেতে তাকে বললাম
“ ভাই আপনি রিসিপ্সনিষ্ঠের কাছে যান উনি আপনাকে একটি ফর্দ দিয়ে দেবেন।
কিসের ফর্দ?
এই ধরুন এক জোড়া স্যান্ডেল দিয়ে কয়টা ইন্টার্ভিউ দেয়া যায়, কত কিলো পথ হাঁটা যায়, পূর্ণরূপে একটি চাকরী পেতে কতজোড়া স্যান্ডেল প্রয়োজন ইত্যাদি ইত্যাদি।
তাই, এই ব্যবস্থাও আছে?
হ্যাঁ এটা ডিজিটাল বাংলাদেশ, এই সুবিধাতো আমাদের মতো বেকারদের কাছে অতি প্রয়োজনীয়।
আমি জানতাম বাচাল ব্যক্তিরা একটু বোকা হয়ে থাকে,তাই এই প্রচেষ্টা।কিন্তু গবেষণা চালানোর পর বুঝতে পারলাম যে একটু না পুরো গাধার আত্মীয় হয়ে থাকে।আমি বলার সাথে সাথেই সে রিসিপ্সনিষ্ঠের কাছে গিয়ে তার ফর্দ চাওয়া শুরু করল।
হঠাৎ আমায় ডাকা হল, আমায় ভেতরে যেতে হবে। তবে সেই বাচালকে আর দেখা যাবেনা,রিসিপ্সনিষ্ঠ তার হাত থেকে বাচার জন্য তাকে বলে দিয়েছেন যারা ফর্দ পায়নি তারা কাল এসে ফর্দ নিয়ে ইন্টার্ভিউ দিয়ে যাবেন। তার প্রস্থান দেখে আমি হাফ ছেড়ে বাচলাম,কারন এক বিরাট মহাপ্যাঁচালের হাত থেকে ছাড় পেলাম এবং আমি মহাখুশি যে আমার এক প্রতিদন্ধি কমেছে,যে নিশ্চিত চাকরীর অধিকারী ছিল। কারন সে যেই ,মাপের বাচাল ছিল একসময় বিচারকরা তার কথায় বিরক্ত হয়ে তাকে চাকরীটা দিতে বাধ্য হতেন। তাই আমার চাকরী পাওয়ার সম্ভাবনার আয়ু বৃদ্ধি পেলো।
স্যার, “মে আই কাম ইন”।
হ্যাঁ আসুন,বসুন।
বড়সড় একটা রুমে একটি টেবিলকে ঘিরে ছয়টি চেয়ার যার একটি মাত্র এইপাশে যা আমাদের মতো বেকুবদের জন্যে এবং বাকি পাঁচটি চেয়ার ওপাশে যা তাদের মতো মহাবেকুবদের জন্যে। পাঁচ মহাবেকুবের দুজন জাঁদরেলি গোঁফের অধিকারী,ভয়ংকর!!!! মনে হয় ইতিপূর্বে; তারা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পার্টটাইম জল্লাদের পদে নিযুক্ত ছিলেন। একজন ম্যাডাম ও ছিলেন প্রায় বিশ্বসুন্দরী, বয়স একেবারেই অল্প এই, ষাট হবে। ভ্রু-প্লাক, হেয়ার-শ্যাডো ও হেয়ার কালারের বদৌলতে তার ষাট বছরের বয়সটা যুবতীর রূপ ধারণ করেছে এবং তার পাশে বসা আরেকজন বিচারক তার সৌন্দর্য বিচার করার লক্ষেই হয়ত বারবার তার দিকে আড়ে আড়ে দৃষ্টি নিদর্শন করছে। বাকি একজনের কথা না বললেই নয়, আমি কক্ষে ঢোকার পর থেকেই ফাইল ঘাঁটছেন, মনে হচ্ছে তার ইন্টার্ভিউ নেয়া হচ্ছে এবং সে তার সার্টিফিকেটটি খুঁজছে। যাই হোক একমাত্র চেয়ারের অধিকারী আমি বসলাম, যথারীতি তারা আমার প্রতি মনোনিবেশ করতে উঠেপড়ে লাগলো। ফাইল ঘাটা স্যার নিরাশ হয়ে তার কার্য বন্ধ করে দিলো, হয়ত সে তার সার্টিফিকেটটি খুঁজে পাননি!!
আপনার নাম কি?
স্যার কোনটা বলবো সার্টিফিকেটের টা না আসলটা।
মানে!!!!
না মানে সার্টিফিকেটে নামটা ভুল, যেমন আমার আসল নাম মোঃ সিরাজুল ইসলাম, আর সার্টিফিকেটে আছে সিরাজুল ইসলাম।


http://www.somewhereinblog.net/blog/ChilekotharBashinda/30046420 ---- ১ম

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.