নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

চরন বিল

চরন বিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

কক্কুরি সাং : অনুবাদ গল্প

১৯ শে জুন, ২০১৫ সকাল ৯:৫১

স্কুলে আমার সবথেকে প্রিয় বন্ধু ছিল শ্রীয়া। ভুত-প্রেত নিয়ে ওর অসীম আগ্রহ। যত রাজ্যের ভুতের গল্প, সব যেন ওর জানা। ব্রেক টাইমে শ্রীয়ার মুখে গল্প শুনতে শুনতে আমাদের টিফিন পড়েই থাকত। বাবা কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। তাই কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ইন্টারনেট সবেতে ভরপুর বাড়ি। শ্রীয়া ফাঁক পেলেই দেশবিদেশের ভুতের গল্পওয়ালা ওয়েবসাইট ঘাঁটত আর অদ্ভুত অদ্ভুত ভয়ঙ্কর সব গল্প পড়ত। ‘দ্য স্লিট মাউথ উওম্যান’, ‘কাশিকো রেইকো’র মতো জাপানি ভয়ের গল্প আমাদের খুব প্রিয় ছিল। চার বন্ধুর গ্রুপে ও এই কারণে একদম স্টার ছিল।


তখন আমরা সবে সপ্তম শ্রেণিতে উঠেছি। গরমের ছুটি পড়েছে। যে যার বাড়িতে বসে বেজার হয়ে যাচ্ছি। হঠাৎ একদিন তনিমার ফোন এল। সামনের শনিবার শ্রীয়ার বাড়িতে রাতে থাকার প্ল্যান হয়েছে। ওর মা-বাবা একটু দরকারে বাইরে যাচ্ছেন। কাকু-কাকিমাই আমাদের তিনজন, মানে তনিমা, প্রচেতা আর আমার বাড়িতে ফোন করে এক রাতের জন্য ওঁদের বাড়িতে থাকার বন্দোবস্ত করে দিলেন। এর আগে আমরা কখনও এরকম একসঙ্গে রাত কাটাইনি। স্বাভাবিকভাবেই প্রচন্ড উত্তেজনায় শনিবার অব্দি কাটালাম। অবশেষে এল সেই বহুকাঙ্খিত শনিবার। বিকেল হতেই সবাই গিয়ে হাজির ওর বাড়িতে। আধঘণ্টার মধ্যে কাকু-কাকিমা বেরিয়ে গেলেন। শ্রীয়া দরজা বন্ধ করে গলায় রহস্য ফুটিয়ে ফিসফিসিয়ে বলল, ‘আজ একটা নতুন খেলা খেলব।’ আমরা উৎসাহী গলায় জিজ্ঞাসা করলাম, ‘কী খেলা?’
‘ওউজা বোর্ড কী জানিস?’
আমরা সবাই মাথা নেড়ে জানালাম এরকম কিছুর নাম আমরা কখনও শুনিনি। এরপর শ্রীয়া ল্যাপটপ এনে আমাদের ওউজা বোর্ডের ছবি দেখাল। এই জিনিসের ছবি আমি আগেও দেখেছি। কিন্তু এর নাম ওউজা বোর্ড, তা জানতাম না। এও জানি কী কারণে এই বোর্ড ব্যবহার হয়। তাই শ্রীয়ার প্রস্তাবে আমি সাফ জানিয়ে দিলাম এই খেলা খেলার কোনও ইচ্ছে আমার নেই। কিন্তু তনিমা আর প্রচেতা শ্রীয়ার তালেই তাল মেলাতে শুরু করল। ওদের জোরাজুরিতে অবশেষে আমিও রাজি হয়ে গেলাম। আমাদের কাছে ওই বোর্ড নেই। আমরা এমনি মেঝেতে হাতে এঁকে ওউজা বানাব। তাই নিশ্চিত ছিলাম কোনও সমস্যার সম্ভাবনা নেই। শ্রীয়ার মা অসাধারণ ছবি আঁকেন। ওঁর সরঞ্জাম থেকে দু’টো চারকোলের টুকরো বের করা হল। তারপর সবাই গোল হয়ে বসলাম। শ্রীয়া আর প্রচেতা ওউজা বোর্ড আঁকা শুরু করল।


প্রথমে একটা বড় আয়তক্ষেত্র। তার ভিতরে বাঁদিকের কোণায় একটা সূর্য, ডানদিকের কোণায় একটা চাঁদ। সূর্যের নীচে বড় করে লেখা ‘ইয়েস’ অর্থাৎ হ্যাঁ। একইভাবে চাঁদের নীচে লেখা ‘নো’ অর্থাৎ না। সূর্য আর চাঁদের মাঝখানের জায়গায় লেখা হল ‘আত্মাকে জিজ্ঞাসা করো’। এবার নীচের দুই কোণায় চাঁদ-সূর্যের আকারে দু’টো তারা আঁকা হল। তারা দু’টোর মাঝখানে বড় করে লেখা হল ‘বিদায়’। সবশেষে আয়তক্ষেত্রটার মাঝামাঝি জায়গায় দু’টো সারিতে ইংরাজি অক্ষর এ,বি,সি,ডি করে জেড এবং তার নীচের সারিতে ০ থেকে ৯ অব্দি লিখে বোর্ড আঁকা শেষ করল শ্রীয়া। কথিত আছে, এই বোর্ডের মাধ্যমে অশরীরী আত্মাদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা যায়। এখন আধুনিক ওউজা বোর্ডে অনেকরকম পরিবর্তন এসেছে। যেমন অক্ষর পড়ার জন্য একটা কাঠ বা প্লাস্টিকের চাবি মতো ব্যবহার করা হয়। ওই চাবিটি ঘুরে ঘুরে অক্ষরের দিকে নির্দেশ করে শব্দ তৈরি করে। কিন্তু সনাতনী ওউজার নিয়ম হল ধাতুর পয়সা ব্যবহার করা। সব ধাতু চলে, রুপো বাদ দিয়ে। রুপো নাকি প্রেতাত্মাদের বিশেষ অপছন্দের। যদিও বোর্ডটা হাতে আঁকা, তাই বিপদের সম্ভাবনা নেই, তবু আরও নিরাপত্তা রাখতে আমরা রুপোর মুদ্রাই ব্যবহার করব বলে ঠিক করলাম। শ্রীয়া ওদের আলমারির লকার থেকে একটা ধনতেরাসে পাওয়া একটা রুপোর মুদ্রা বের করে আনল। ওতে আবার লক্ষ্ণী-গনেশ আঁকা। আমরা আরও নিশ্চিন্ত হলাম।


এত কাণ্ড করতে করতে ঘড়িতে দেখি আটটা বেজে গেছে। তাড়াতাড়ি ঘরের সব জানলা আর দরজাটা বন্ধ করে পর্দা টেনে দেওয়া হল। ছ’টা মোমবাতি আনা হয়েছিল। মাথার উপর ঘুরতে থাকা পাখাটা বন্ধ করে সেগুলো জ্বালিয়ে লাইটও নিভিয়ে দেওয়া হল। মুহূর্তে গুমোট হয়ে গেল ঘরের ভিতরটা। ওউজার চারপাশে মোমবাতিগুলো জ্বলছে। গোটা ব্যাপারটাই ভুতুড়ে অনুভব হতে শুরু করল। আমরা আবার ওউজার চারপাশে গোল হয়ে বসলাম। রুপোর মুদ্রাটা মাঝখানে রাখা হল। ওউজার নিয়মকানুন আমরা কিছুই জানি না।শ্রীয়া বলল, ও একটা জাপানি গল্পে সব নিয়ম ভাল করে পড়ে রেখেছে। ওর নির্দেশে আমরা চারজন মুদ্রার উপর তর্জনী রাখলাম। এরপর শ্রীয়া নীচু গলায় বলতে শুরু করল, ‘কক্কুরি সাং কক্কুরি সাং, আমাদের বন্ধু হবে এস।’ একই কথা বারবার বলতে থাকল ও।
‘কক্কুরি সাং কক্কুরি সাং, আমাদের বন্ধু হবে এস।’
‘কক্কুরি সাং কক্কুরি সাং, আমাদের বন্ধু হবে এস।’
‘কক্কুরি সাং কক্কুরি সাং, আমাদের বন্ধু হবে এস।’


বেশ কয়েকবার বলার পর হঠাৎ ঘরের গুমোট ভাবটা যেন কেটে গেল। হালকা হালকা হাওয়া বইতে শুরু করল। আমরা অবাক হলাম, কারণ ঘরের সব জানলা-দরজা বন্ধ। পাখাও চলছে না। আমরা একটু আগে পর্যন্তও ঘেমে নেয়ে একশা হচ্ছিলাম।এরকম বদ্ধ জায়গায় ঝিরঝিরে হাওয়া গায়ে লাগতে চারজনেই শিউরে উঠলাম। এভাবে দু-তিন মিনিট কাটার পর ঘরে রীতিমতো ঝড় বইতে শুরু করল। শনশন সাঁইসাঁই শব্দে ঝোড়ো হাওয়া ঘুরপাক খেতে থাকল ঘরে। কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার, একটা মোমবাতিরও শিখা এক চুল নড়ল না। আমি ভয়ে তখনই উঠে দাঁড়াতে গেলাম, কিন্তু পাশে বসে শ্রীয়া। ও শক্ত হাতে বাঁহাত দিয়ে মুদ্রায় রাখা ডানহাতের তর্জনী চেপে ধরে মাথা নেড়ে ইশারায় উঠতে মানা করছে। আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছি কিছু যেন অমঙ্গল ঘটতে চলেছে। আর ঠিক তখনই সব থেমে গেল। জানলার পর্দা আবার শান্ত হয়ে পড়ে গেল। আমরা এর ওর মুখ চাওয়াচাওয়ি করছি। আচমকা আমাদের আঙুলে ছুঁয়ে রাখা মুদ্রাটা আসতে আসতে নড়তে শুরু করল। বোর্ডের উপর খুব ধীরেসুস্থে আমাদের আঙুলগুলো নিয়েই মুদ্রাটা চলতে চলতে পৌঁছে গেল ‘আত্মাকে জিজ্ঞাসা করো’ লেখাটার উপর। শ্রীয়া উত্তেজিত হয়ে চাপা স্বরে বলে উঠল ‘ওমা এটা তো কাজ করছে!’ সঙ্গে সঙ্গে শ্রীয়া বাতাসে প্রশ্ন ছুড়ে দিল, ‘আমাদের নতুন বন্ধু কি এসে গেছে?’ মুদ্রাটা আগের তুলনায় একটু দ্রুত সরে গেল বাঁদিকের কোণায় আঁকা সূর্যের নীচে লেখা ‘ইয়েস’-এর উপর। এরপর শ্রীয়ার নির্দেশে আমরা প্রশ্ন করা শুরু করলাম।


বেশিরভাগ প্রশ্নেই হ্যাঁ বা না-এ উত্তর আসছিল। আমরা বেশ মজা পেয়ে গেলাম। আমার ভয়ও একদম কেটে গেল। মনে হল যেন একজন সত্যিকারের নতুন বন্ধু পেয়ে গেছি। আমি মজা দেখতে ওউজাকে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘অমিত কাকে বেশি পছন্দ করে?’ অমিত আমাদের বন্ধু। আমার বেস্ট ফ্রেণ্ড আর শ্রীয়ার ওর প্রতি অন্যরকম ভাল লাগা রয়েছে খেয়াল করেছি। বোর্ডের উপর মুদ্রাটা নেমে এল ইংরাজী অক্ষরগুলোর উপর। তারপর প্রথমে গেল ‘আর’-এর উপর। এরপর যথাক্রমে ‘আই’ আর ‘এ’-র উপর গিয়ে থামল। আমি শ্রীয়ার দিকে তাকিয়ে ফিকফিক করে হেসে উঠলাম। কারণ ওউজা বলছে, রিয়া অর্থাৎ আমাকেই বেশি পছন্দ করে অমিত। শ্রীয়া একটু দমে গেল বেচারি। তবে খেলা চলতে থাকল। আমরা জেনে নিলাম আগামী পরীক্ষায় আমরা ভাল ফল করব। প্রচেতা নাচের প্রতিযোগীতায় দ্বিতীয় স্থানাধিকারি হবে। ভবিষ্যৎবাণী শোনার মতো নেশা ধরে গেল আমাদের। শুধু একটা বিষয় খেয়াল করলাম। আগে ‘হ্যাঁ’ বোঝাতে মুদ্রাটা ‘ইয়েস’ লেখার উপর যাচ্ছিল। বেশ কিছুক্ষণ ধরে লক্ষ্য করছি, হ্যাঁবাচক উত্তরে মুদ্রা প্রথমে ‘ও’, তারপর ‘কে’ অক্ষরের উপর যাচ্ছে। অর্থাৎ ‘ওকে’ লিখে সম্মতি জানাচ্ছে।


এভাবে রীতিমতো কয়েকঘণ্টা কেটে যাওয়ার পর হুঁশ ফিরল আমাদের। অনেক রাত হয়েছে নিশ্চয়। এই আলোআঁধারিতে ঘড়ির দিকে তাকিয়েও কিছু বুঝলাম না। সম্ভবত দশটা পেরিয়েছে। অবাক হলাম, এতক্ষণেও একটু ক্লান্ত হলাম না আমরা! মুদ্রা ধরা হাতেও কোনও ব্যাথাযন্ত্রণা নেই। আরও খেলতে ইচ্ছে করছিল, কিন্তু সময়ের কথা ভেবে আমরা ইতি টানতে চাইলাম। শ্রীয়া হাসিমুখে বলে উঠল, ‘কক্কুরি সাং কক্কুরি সাং, তুমি তোমার জগতে ফিরে যাও।’
মুদ্রা উত্তর দিল, ‘ওকে’।
শ্রীয়ার ভ্রূ কুঁচকে গেল। চিন্তিত মুখে অস্ফুটে বলল, “এরকম তো হওয়ার কথা নয়। আমি ফিরে যেতে বললে মুদ্রা প্রথমে ‘ইয়েস’-এ যাবে। তারপর ‘বিদায়’-এ গিয়ে থেমে যাবে।”
আমি বললাম, ‘বেশ তো, আরেকবার বল।’
শ্রীয়া আবার বলল, ‘কক্কুরি সাং কক্কুরি সাং, দয়া করে তুমি তোমার জগতে ফিরে যাও।’
উত্তর এল, ‘ওকে’।
এবার আমরা একে একে সবাই চেষ্টা করতে লাগলাম, ‘কক্কুরি সাং কক্কুরি সাং, তুমি তোমার জগতে ফিরে যাও।’
‘কক্কুরি সাং কক্কুরি সাং, তুমি তোমার জগতে ফিরে যাও।’
‘কক্কুরি সাং কক্কুরি সাং, তুমি তোমার জগতে ফিরে যাও।’
প্রতিবারই উত্তর এল, ‘ওকে’।


আমরা ভয়ে কুঁকড়ে গেছি ততক্ষণে। শেষবারের মতো সবাই সমস্বরে বলে উঠলাম ‘কক্কুরি সাং কক্কুরি সাং, তুমি দয়া করে তোমার জগতে ফিরে যাও।’
এবার মুদ্রা নড়ল না। আমরা হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম। এর ওর দিকে তাকিয়ে হেসে মুদ্রা থেকে আঙুল তুলতেই যাব, এমন সময় আবার নড়ে উঠল মুদ্রা। খুব ধীরে ধীরে লিখল, ‘ওকে’।
এবার আমরা ঠিক করলাম এই খেলা শেষ হোক না হোক, আমরা মুদ্রার উপর থেকে আঙুল তুলে নেব। গুনতে শুরু করলাম, এক দুই তিন... এক ঝটকায় প্রচেতা, শ্রীয়া আর তনিমা আঙুল তুলে নিল। আর সবাই বিস্ফারিত চোখে তাকিয়ে দেখলাম, আমি আঙুল তুলতে পারিনি। শ্রীয়া চিৎকার করে উঠল, ‘এটা তুই কী করলি?’ আমি ঘামতে শুরু করলাম। বারবার চেষ্টা করেও আঙুল তুলতে পারছি না। এই হাতের উপর যেন আমার আর কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। আবার চলতে শুরু করল মুদ্রা, ‘ওকে’... আমি গলা ফাটিয়ে চেঁচিয়ে বলেল উঠলাম, ‘কক্কুরি সাং কক্কুরি সাং, তুমি তোমার জগতে ফিরে যাও।’ উত্তর সেই একই... ‘ওকে’, ‘ওকে’, ‘ওকে’। এবার কোনও প্রশ্ন-উত্তর, অনুনয়-বিনয় ছাড়াই মুদ্রা লিখে গেল ‘ওকে’, ‘ওকে’, ‘ওকে’। আসতে আসতে ‘ওকে’ লেখার গতি বাড়ছে। শ্রীয়ারা আমার হাত চেপে ধরার চেষ্টা করছে। কিন্তু আমার আঙুল আর মুদ্রা অবিরাম লিখে চলেছে ‘ওকে’, ‘ওকে’,‘ওকে’।




এরপরে আমার আর কিছুই মনে নেই। শুধু অনেকগুলো বছর আমি ডাক্তার-নার্সদের মাঝে কাটিয়েছি। আজ আমি নিজে একজন সফল কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার। ভাগ্যিস! কারণ খাতায় কলমে লেখা আজও আমার কাছে বিভীষিকা। বহু মানুষের সহযোগিতা ছাড়া স্কুল-কলেজের গণ্ডিও আমি পেরোতে পারতাম না। ডাক্তার বলে, কোনও মানসিক ধাক্কায় খাতা-পেনের প্রতি আমার ফোবিয়া জন্মে গেছে। কিন্তু আমি তো জানি, আসল কারণ কী... আর জানে শ্রীয়া, তনিমা এবং প্রওকেওকেওকেওকেওকেওকেওকেওকেওকেওকেওকেওকেওকেওকেওকেওকেওকে...







*** গল্প অনুবাদের প্রথম প্রচেষ্টা। এটি 'সিলভার কয়েন' নামক একটি গল্প থেকে নেওয়া হল, মানে নেওয়ার চেষ্টা করা হল

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.