| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
করপোরেট
ঘুরি ফিরি, গানবাজনা শুনি। কি করব ভাবছি! একদিন কিছু করব!
তুমি অবসরে কি কর?
– ছবি আঁকি, শিখতে যাই
– গান শিখি
– নাঁচ শিখি
– তবলা, গীটার, কিবোর্ড শিখি
– ব্যান্ড করি, গানবাজনা
WHAT??? ব্যান্ড!!???
জ্বী, প্রায় ২৩ বছর আগে ব্যান্ড সংগীত করার প্রথম দিনের সাথে আজ ২০১৭ এর ২৩শে মার্চ, বৃহস্পতিবার এর অনুভূতির প্রকাশগত খুব বেশি পার্থক্য নেই।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে গানবাজনা, বা যেকোনো শিল্পচর্চা শুরু হয় মূলত শৌখিনতা থেকে। পরিবার শৌখিন, তাই সন্তান লেখাপড়ার পাশাপাশি গান-টান করে।
গীটার-কিবোর্ড-ড্রাম সমন্বয়ে ব্যান্ড করে মানে প্রথম ২-৩ বছর আসলে ছেলেমেয়ে উচ্ছন্নে গেছে (খুব অল্প ব্যতিক্রম ছাড়া)। এরপর যখন টিকেই যায়, তখন তাদের পবিত্র দায়িত্বের প্রথমেই আসে হলো বিনা পয়সায় আত্নীয়স্বজনের গায়ে হলুদ, মুসলমানি, পাড়ার অনুষ্ঠান এসবে বিনামূল্যে সেবা দেয়া।
পৃথিবীর তাবৎ গান তাদের গাইতে বাজাতে পারতে হবে। প্রথমেই পছন্দ হিন্দী গান। এইটা না পারলে ব্যান্ড করে কি হবে? যে গাইতে পারে, তার দাম যাও আছে, এরপর পিছে যারা বাজায়, এদের কখনো কখনো মানুষও ভাবা হয়না, ফার্নিচার। পারলে দৃষ্টিসীমার বাইরে পাঠিয়ে বলে ওখান থেকে বাজাও, গায়ক এখানে গাইতে থাকুক।
গায়ক গাইলেও দুঃখ থাকেনা, দুঃখ হয় যখন “আমাদের ফ্যামিলির খুব ভাল গায়ক/গায়িকা, প্রোগ্রাম করে প্রাইজ পায়” ধরনের ভাই-আপা রা গাইতে চলে আসেন এবং বেতালে বেসুরে গেয়ে “আজ একটু গলা খারাপ” বলে তারপর আবার যন্ত্রীদেরও দোষ দেয় “ওরা আসলে সব গান পারেনা, মনেহয় কমার্শিয়াল না”!
বিনাপয়সায় এনে কমার্শিয়াল খোঁজা!
সেই দেশে গানবাজনা দাঁড়ানো খুব কষ্টকর, তায় আবার পরিবার থেকেই “শখে করে” তকমা দেয়া থাকার পর।
একটা সরাসরি প্রশ্ন করি, ধরলাম একটা সিডি বের করলাম, এইটা কি কিনবেন? কিনে আসলে শুনবেন কই? তাও, কিনবেন? গাড়ীতে, ল্যাপটপে শুনবেন? ৬০ -৮০ বা ১০০ টাকায়?
একটা গানের জন্য কয় টাকা দেবেন?
যদি এমপিথ্রি দেই?
আচ্ছা টাকা কি দেবেন?
বাংলাদেশে সংগীতাঙ্গন অর্ধেকেরও বেশি শৌখিনদের দখলে। এত সংখ্যক পেশাদার নাই, সহজ কথা! হবেও না!
“লেখাপড়া করো, চাকরি করো, ওরপর নিজের টাকায় ব্যান্ড কইরো। বাপের পয়সায় না!”
আমার বাবার আমার প্রতি নির্দেশ আমি ভুলিনি জনাব, আমি এখন তাইই করছি।
আশায় দিন গুনছি, একদিন সব ছেড়ে পেশাদার হয়ে যাব। বেঁচাবিক্রির পেশায় থাকতে থাকতে কোনদিন হয়তো নিজের স্বপ্নটাকেই বিক্রি করে হাত ঝেড়ে বাড়ী ফিরে যাব।
কে জানে…
অনেক বৃহস্পতিবার অনেকের জন্য লিখি, আজ পুরোটা নিজের জন্য লেখা। না, নিজের স্বপ্নের মত নিজে সিনেমাটিকভাবে সব ছেড়েছুড়ে যেতে পারিনি। সিনেমা বানাতে পারবেনা তাই আজ সফটওয়্যার বানায়, গীটার বাজিয়ে কি হবে তাই বিজ্ঞাপন বানায়, অনেক ইচ্ছা ছিল বাঁশি বেহালার সাথে ফিউশন করবে গীটার ড্রাম নিয়ে, তা খুঁজেই পাওয়া গেলোনা ঠিকমতো।
“একদিন ঠিকই করবো” ভাবতে ভাবতে কোনদিন মরেই যাই, আল্লাহ জানে।
©somewhere in net ltd.