![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রযুক্তিবিদ এবং প্রযুক্তি-উদ্যোক্তা ।মূলত কাজ করি অনলাইনে,পাশাপাশি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং ও অনলাইনভিত্তিক উদ্যোক্তা হিসেবে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।চাইলেই ইঞ্জিনিয়ারিংকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন পার করে দিতে পারতাম। কিন্তু যাযাবরের জীবন আমাকে টানে খুব। তাই সব ছেড়ে যাযাবরের মতো চষে বেড়াচিছ এক দেশ থেকে আরেক দেশ। আমি যখন যেদেশে আমার স্যুটকেস রাখি সেটাই তখন আমার দেশ,আমার ঘর-বাড়ি।আমি একজন বিশ্ব নাগরিক।এবং কোনো নির্দিষ্ট এলাকায় বেশিদিন থাকি না।।
একটা বাংলা শব্দ বলে তো দুইটা ইংরেজি,তিনটে হিন্দী ।আর বানানের কথা না বলাই ভালো।বই পড়ার বালাই নেই । উলটো বলে কিনা-বাংলা ভাষার ধ্বনিবৈচিত্র্য নাই।
রেডিও জকি'রা যেমন বাংলা ভাষাকে আবর্জনায় পরিণত করছে, তেমনই কিছু 'ডিজিটাল আবর্জনা' আমাদের চারপাশে নিক্ষিপ্ত হচ্ছে ! 'ডিজুস' থেকে সংক্রমিত হয়ে এখন তা- বিক্ষিপ্তভাবে স্থান-কাল-পাত্র নির্বিশেষে সর্বত্রই যেন ছড়িয়ে পড়ছে। 'অল্প বিদ্যা' থেকে যার শুরু, তার শেষ কোথায়, জানিনা । মাতৃভাষার প্রতি অন্ধ ভালোবাসা থেকে বলছি না, সামান্য খোঁজ-খবর নিয়ে বলছি, বাংলা ভাষার মতো এত ধ্বনি-বৈচিত্র্য পৃথিবীর আর কোন ভাষায় আছে বলে আমার জানা নেই। ধ্বনিরূপের এই বিপুল রূপ বৈচিত্র্যের কারণেই বাংলা ধ্বনিতে অল্পপ্রাণ, মহাপ্রাণ, ঘোষ, অঘোষ, নাসিক্য—এমন নানা প্রকৃতির ধ্বনি-সমন্বয় ঘটেছে।বাঙালির মাতৃভাষা তার জিভ, ঠোঁট, দাঁত, তালু, মুর্ধাকে এমন সব ধ্বনি উচ্চারণে অভ্যস্ত করে তুলেছে, যা থেকে বঞ্চিত পৃথিবীর অধিকাংশ ভাষাগোষ্ঠীর মানুষ।
উদাহরণস্বরূপ ইংরেজি ভাষার কথা বলা যায়। যার বর্ণের সংখ্যা ছাব্বিশটি। ইংরেজি ভাষায় ধ্বনি স্বল্পতার কারণেই তাদের বাচনভঙ্গিতে অঙ্গভঙ্গির দরকার পড়ে, যাকে তারা Body Language বা শারীরিক ভাষা বলেন। বাংলা ভাষায় এই শারীরিক ভাষা ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে না। বস্তুত, এই ধ্বনিবৈচিত্র্য এবং লিখিতরূপের সৌকর্য ও সৌন্দর্যের জন্যই বাংলা বর্ণমালার এত আয়োজন।বিশ্বের সব ভাষার মধ্যে বাংলা ভাষারই বর্ণমালা বেশী ৷ ইংরেজীর প্রায় দ্বিগুণ ৷ বর্ণমালা বেশী হওয়ায় বাংলা ভাষার উচ্চারণও বৈচিত্রময় ৷ আমরা হার্ড ও সফট দুই ধরনের কনসোনেন্টই উচ্চারণ করতে পারি: ত, ট, দ, ড, ঠ, থ এই ব্যঞ্জনধ্বনিগুলি আমরা উচ্চারণ করি অবলীলায়। কিন্তু ইংরেজরা (দৃষ্টান্তস্বরূপ) ত, দ, ধ উচ্চারণ করতে পারে না, কারণ তাদের ব্যঞ্জনধ্বনির ভাণ্ডারে এগুলোর অস্তিত্ব নেই। আবার উল্টো দিকে ফরাসি, রুশ, ইতালীয়,স্প্যানিশসহ অনেক ভাষাভাষী মানুষ ট, ড, ঠ এসব হার্ড কনসোনেন্ট উচ্চারণ করতে পারে না। আমরা যে ভাষাগতভাবে কতটা ঐশ্বর্য্যের অধিকারী সেই সম্পর্কে আমাদের কোন ধারণাই নাই।
আমি অনেক বাঙালিকে দেখেছি পৃথিবীর বিভিন্ন ভাষায় সাবলীলভাবে কথা বলতে কিন্তু আজ পর্যন্ত একজন বিদেশীকেও দেখিনি বিকৃত উচ্চারণ ছাড়া সাবলীলভাবে বাংলায় কথা বলতে! আর সেটা সম্ভব হয়েছে বাংলা ভাষার সমৃদ্ধি ও ঐশর্য্যের কারনে। সুতরাং বাংলা ভাষা নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে আমার অহংকারের সীমা নেই। তাছাড়া আমরাই পৃথিবীতে একমাত্র জাতি যারা ‘ভাষার জন্য জীবন দিয়েছি’ । বাংলা ভাষা বাঙালির শুধু ভাব প্রকাশের মাধ্যম নয়। এটি একটি চেতনা, একটি বিশ্বাস, একটি সত্তা। বাংলা ভাষা বাঙালির হূদয়ের রঙে রঞ্জিত। পৃথিবীর অন্য কোনো ভাষার সাথে সেই ভাষাগোষ্ঠীর এতটা আবেগ বা প্রাণের সংযোগ নেই।
ইংরেজরা দু'শো বছর বাংলায় থেকে এক লাইন শুদ্ধ বাংলাও উচ্চারণ করতে পারেনি এবং তার জন্য তাদের কোন লজ্জাও ছিলনা। অথচ একটু খানি শুদ্ধ করে দুটা ইংরেজি লিখতে পারলে, আর মোটামুটি বোধগম্য করে ইংরেজিতে কথা বলতে পারলে গর্বে আমাদের বুক ফুলে ওঠে। এই ভাষা আমরা গভীর সমীহর সঙ্গে শেখার চেষ্টা করি। কিন্তু বাংলা ভাষা শিখতে আমরা কষ্ট করতে রাজি নই।বরং আমরা ইংরেজদের মত আমাদের সঠিক বাংলা না জানা বা শুদ্ধ ভাবে বাংলা বলার অক্ষমতাকে, মূর্খতাকে আড়াল করতে সমস্ত দায়দায়িত্ব বাংলা ভাষার উপর চাপিয়ে দিয়ে বলি “বাংলা ভাষার ধ্বনিবৈচিত্র্য নাই।“
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ ভোর ৪:৫৭
নিরপেক্ষ মতামত বলেছেন: http://blog.monju.me/শারীরিক-ভাষা-প্রকাশ/[শারিরিক ভাষা] অনেক আলোচনা পাবেন এই ব্লগে