![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এখন সময় এসেছে না বলা কথা গুলো বলে বধীর মানুষের বধীরতা ঘোঁচানো, এখন সময় এসেছে আলোর বাঁধ ভাঙ্গার। যে আলোয় অন্ধকারগামী মানুষ চলতে শিখবে। আমি ভীতু, আমার গলার স্বরও নরম। আমি বলতে সাহস করবনা বললেও কেউ শুনতে পাবেনা। যাদের সাহস আছে, যাদের গলা উঁচু আছে তাদেরকে সমবেত স্বরে বলতে হবে। আলোর বাঁধ ভেঙ্গে দাও! অন্ধকারকে হটাও!
সাফল্য এমনি একটি ব্যর্থ শব্দ যার বাংলায় বা ইংরেজীতে ভাল কোন সংজ্ঞা আপনি কোথাও খুঁজে পাবেন না। এমনকি গুগলও আপনাকে সন্তোষজনক কোন সংজ্ঞা দিতে পারবে না। যার নিজের সংজ্ঞাতেই এত গলদ রয়েছে তার পেঁছনে এত দৌঁড়া-দৌঁড়ী কেন?
প্রতিযোগিতার সংসার সমাজে ‘সাফল্য’ মাউন্ট এ্যাভারেস্টের চূড়ায় স্থাপিত এক সিংহাসন। যে সিংহাসনের আশায় হাজারো প্রতিযোগী পথ পাড়ি দেয়; পৌঁছায় মাত্র একজন। যে সকল মানুষ সেখানে পৌঁছাবে বলে যাত্রা শুরু করে তারমধ্যে প্রায় সকলেই আহত হয়, যারা আহত হয় না, প্রকৃতপক্ষে তারা হয় নিহত। তাই বলা যেতেই পারে সাফল্য এক ছদ্মবেশী অভিঘাতী। এ তো গেলো আহত নিহতের পরিসংখ্যান। যন্ত্রনা তারও কম নয়, যে হাজার জনের একজন হয়ে সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হলো।
যেহেতু সাফল্যর পথ গোলাপ বিছানো কোন পথ নয় সেহেতু সাফল্যগামী পথের অলিতে গলিতে কাঁটা বিছানো থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। স্বভাবতই যারা সাফল্যের মাউন্ট এ্যাভারেস্টে উঠতে পেরেছেন তাঁদের রক্তমাখা পদচিহ্ন পথের বুকে দেখতে পাওয়া যাবে তাতে কোন সন্দেহ নেই।
আবার অধুনা সাফল্যকে যে মানদন্ডকে পরিমাপ করা হয় তার অর্থ এইরকম যে, একজন সফল মানেই তার অন্য সকল প্রতিযোগী ব্যর্থ। আগেই বলা হয়েছে সাফল্য একটি মাত্র সিংহাসন যা মাউন্ট এ্যাভারেস্টের চূড়ায় অবস্থিত। সুতরাং আপনি সফল মানেই অন্যরা ব্যর্থ!
এত চড়ায় উতরায়, এত রক্তদানের পরে যে সাফল্য পাওয়া গেলো তা যে, অনেক শান্তির হবে সেটা ধরে নেওয়া যেতেই পারে। আবার তা যদি শান্তির নাই হবে তাহলে মানুষ এত কষ্ট করে সেখানে যেতেই বা চাইবে কেন? তাহলে ধরেই নেওয়া হয় যে সাফল্য মানেই শান্তির এক স্থায়ী অবস্থান; সুখের স্থায়িত্ব বাসস্থান।
কিন্তু! সত্যিই কি তাই? আচ্ছা বিষয়টি এইভাবে ভাবা যাক, লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে মানুষটা সাফল্যের চরম শেখরে পৌঁছে গেছেন তিনি কিন্তু একা। অসফল মানুষের সঙ্গী অনেক কিন্তু সফল মানুষের সঙ্গী তিনি নিজেই। তার অর্থ কি দাঁড়াচ্ছে? সফল মানুষ মানেই একাকি, সফল মানুষ মানেই একাকিত্ত্ব। তার এই একাকিত্ত্ব ঘোচানোর তেমন কোন সঙ্গ, অনুসঙ্গ কিছুই নেই। যদি তিনি কোন কারণে আত্মতুষ্টির এই অংশটুকু বাদ দিয়ে ফেলেন যে, ’তিনি অন্য সবার উপরে’, তাহলে তো তার জন্য তার সাফল্যই একটা বড় ব্যর্থতা হয়ে দাঁড়াবে।
ব্যাপারটা যদি মেটাফোর হিসেবে ধরে নেই যে, যিনি সফল ব্যক্তি এবং যেহেতু তিনি সবার উপরে অবস্থান করছেন এবং তার উপরে আর কোন জায়গায় নেই এবং যেখানে তিনি যাওয়ার নতুন স্বপ্ন দেখতে পারেন। সেহেতু তার জন্য এটা খুব শঙ্কার ব্যাপার যে, তিনি যে কোন সময় নানান ঝড় ঝাঁপটায় কেবল নিচের দিকেই নেমে যেতে পারেন, উপরের দিকে উঠার কোন সুযোগ নেই। সুতরাং তার আর সুখি হাবার সুযোগ নেই বরং সুখ হারানো আশঙ্কা আছে।
আমার উপরের লেখার অংশের সাথে দ্বীমত পোষণ করার যথেষ্ঠ সুযোগ আছে। বিশেষ করে সবার উপরে অবস্থান করে সুখের পরিতৃপ্তি পাওয়া এবং সফল শুধু একজনই হতে পারেনা একাধিক জন হতে পারে; এই দুইটা যুক্তিতে। এবং দ্বিতীয়তটি হলো; লেখাটিকে এই যুক্তিতে ছুড়ে ফেলে দেওয়া যায় যে, এটি একটি নেতীবাচক নিরুৎসাহজনক লেখা।
এই তর্ককে পাশ কাটিয়ে বিষয়ট আমি একটু ভিন্নভাবে দেখতে চায় তবে সেটা কোন ভাবেই ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা নয়। ভিন্ন ভাবটা এইরকম যে, সফল হওয়ার চেয়ে সুখি হওয়াটাই আমার কাছে জরুরী বিষয়। কারণ মানুষের শেষ লক্ষ্যস্থল কিন্তু সফলতার মাধ্যমে সুখী হওয়া। তাহলে আমি যে ঘটনার পাশ কাটিয়ে যাচ্ছিনা সে প্রমাণ পাওয়া গেলো।
প্রথম অভিযোগটি বিষয়ে আমি বলব; সফল একাধিক জন হতে পারলেও অভিন্ন সুড়ঙ্গ পথ দিয়ে মাত্র একজনই সাফল্যের চূড়ায় উঠতে পারে।
দ্বিতীয় অভিযোগ হলো এটি একটি নেতীবাচক নিরুৎসাহজনক লেখা। আমার উপর আমি ভরসা রেখে বলছি যে, এটা কোন ভাবেই নেতীবাচক কোন লেখা নয়। আপনার সফলতা কিন্তু শুধুমাত্র আপনার সফলতাই নয় অন্যদিকে এটি একটি হাজার মানুষে ব্যর্থতাও বটে। সাফল্যকে ইতিবাচক লক্ষ্য ধরে নিয়ে সবাই এমন ভাবে প্রতিযোগিতায় নামছে যে, প্রতিযোগীর সুবিধাভোগীদের মধ্যে সুখী হওয়ার লক্ষ্যর পরিবর্তে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে সফল হওয়ার এক অসম যুদ্ধে নামছে।
‘যুক্তরাজ্যে ৪ জনের মধ্যে ১জন তরুণী মানুষীকভাবে অসুস্থ। প্রথম-আলো ২৩ নভেম্বর ২০১৮। নিবন্ধটি পড়লে দেখবেন এই অসুস্থতার মূল কারণ পরীক্ষার চাপ ও অন্যান্য। বুঝতে সমস্যা নেই যে, পরীক্ষার চাপ মানেই প্রতিযোগিতা। এছাড়া বর্তমান সময়েও বিভিন্ন মাধ্যমে প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী আমাদের দেশের বহু মানুষ পরীক্ষায় প্রত্যাশিত ফলাফল করতে না পারার কারণে আত্মহত্যা করেছে। উপরোক্ত দু’টি ঘটনায় ঘটেছে তথাকথিত সাফল্যে লোভে।
আপতত দৃষ্টিতে না হলেও প্রকৃতপক্ষে এই অপ্রয়োজনীয় শব্দটি সফল ও অসফল উভয় মানুষকেই অসুখি করছে। যেহেতু সাফল্য শব্দটি হলো স্বপ্নযাত্রার চূড়ান্ত গন্তব্যস্থল সেহেতু মনে হতেই পারে সাফল্য’ ব্যতিত জীবন স্বপ্নহীন হয়ে যেতে পারে।
প্রকৃতপক্ষে উপরে যে সাফল্যর কথা আলোচনা করা হয়েছে মূলত: তার সাথে জড়িয়ে আছে অন্যকে ছাড়িয়ে যাওয়ার এক প্রতিহিংসা সেটা কোন ভাবেই নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার আত্মতুষ্টির পরিতৃপ্তি নয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে কোন স্কুলের প্রথম স্থান অধিকারী ঐ ছাত্র যে ৮০% নাম্বার পেয়েছে। অন্যদিকে অন্যকোন স্কুলের অন্য একজন ছাত্র যে ৯০% নাম্বার পেয়েও ২০তম হয়েছে। এ দুই জনের মধ্যে অবশ্যই ৮০% প্রাপ্ত নাম্বার ছাত্রটিই সাফল্যে পরিতৃপ্তিতে সুখি মনে করবে কারণ সে অন্য সকলের চেয়ে বেশি নাম্বার পেয়েছে। অন্যদিকে ৯০% নাম্বার পাওয়া ছাত্র ১৯ জনের চেয়ে কম নাম্বার পেয়েছে, তাহলে এই ছাত্রটি খুব বেশি সফল নয়। যতক্ষণ না পর্যন্ত এই দুই ছাত্রে মধ্যে তুলনামুলক বিচারে যাওয়া হচ্ছে। তাহলে সাফল্যের মাধ্যমে সুখি হওয়ার একমাত্র মানদন্ডই হচ্ছে অন্যকে লজ্জায় ফেলে নিজেকে এগিয়ে নেওয়া।
উপরের আলোচনা থেকে আমরা বলতেই পারি, সাফল্য কোন প্রত্যাশা নয়; প্রলোভন।
তাহলে বেঁচের থাকার উপায় ’স্বপ্নকে’ বাঁচিয়ে রাখবো কিসের স্বপ্নে? বিষয়টি ভাবতে থাকি, অত:পর আসব!
26নভেম্বর 2018
২| ২৬ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১১:০৫
স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: আর সুখি হাবার সুযোগ নেই বরং সুখ হারানো আশঙ্কা আছে।
................................... সকল মানুষের জীবন ভাঙ্গা গড়ায় চলমান,
নদীর যেমন জোয়ার ভাটা থাকে, যেমন দিনের পর রাত আসে তেমনি সবই
ঘুর্ণমান ।
৩| ২৭ শে নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ৮:২৭
রাজীব নুর বলেছেন: আপনার সাথে আমি একমত নই।
সাফল্য অনেক বড় ব্যাপার। সবাই সাফল্য পায় না। সাফল্যের জন্য মানুষ সংগ্রাম করে।
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১০:৪৫
ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: তাদের জন্য সুসংবাদ পার্থিব জীবনে ও পরকালীন জীবনে। আল্লাহর কথার কখনো হের-ফের হয় না। এটাই হল মহা সফলতা। (10,64)
পক্ষান্তরে তোমাদের প্রতি আল্লাহর পক্ষ থেকে কোন অনুগ্রহ আসলে তারা এমন ভাবে বলতে শুরু করবে যেন তোমাদের মধ্যে এবং তাদের মধ্যে কোন মিত্রতাই ছিল না। (বলবে) হায়, আমি যদি তাদের সাথে থাকতাম, তাহলে আমি ও যে সফলতা লাভ করতাম। (4,73)
আল্লাহ বললেনঃ আজকের দিনে সত্যবাদীদের সত্যবাদিতা তাদের উপকারে আসবে। তাদের জন্যে উদ্যান রয়েছে, যার তলদেশে নির্ঝরিনী প্রবাহিত হবে; তারা তাতেই চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট। এটিই মহান সফলতা। (5,119)
সেসমস্ত লোক, যারা আনুগত্য অবলম্বন করে এ রসূলের, যিনি উম্মী নবী, যাঁর সম্পর্কে তারা নিজেদের কাছে রক্ষিত তওরাত ও ইঞ্জিলে লেখা দেখতে পায়, তিনি তাদেরকে নির্দেশ দেন সৎকর্মের, বারণ করেন অসৎকর্ম থেকে; তাদের জন্য যাবতীয় পবিত্র বস্তু হালাল ঘোষনা করেন ও নিষিদ্ধ করেন হারাম বস্তুসমূহ এবং তাদের উপর থেকে সে বোঝা নামিয়ে দেন এবং বন্দীত্ব অপসারণ করেন যা তাদের উপর বিদ্যমান ছিল। সুতরাং যেসব লোক তাঁর উপর ঈমান এনেছে, তাঁর সাহচর্য অবলম্বন করেছে, তাঁকে সাহায্য করেছে এবং সে নূরের অনুসরণ করেছে যা তার সাথে অবতীর্ণ করা হয়েছে, শুধুমাত্র তারাই নিজেদের উদ্দেশ্য সফলতা অর্জন করতে পেরেছে। (7,157)
এই সফলতার না আছে প্রতিযোগীতা, না আছে হতাশা। এটা প্রলোভনও নয়, বরং আত্মোউপলব্ধী।