নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

“Peace comes from within. Do not seek it without.” ― Gautama Buddha

আলোর_পথিক

এখন সময় এসেছে না বলা কথা গুলো বলে বধীর মানুষের বধীরতা ঘোঁচানো, এখন সময় এসেছে আলোর বাঁধ ভাঙ্গার। যে আলোয় অন্ধকারগামী মানুষ চলতে শিখবে। আমি ভীতু, আমার গলার স্বরও নরম। আমি বলতে সাহস করবনা বললেও কেউ শুনতে পাবেনা। যাদের সাহস আছে, যাদের গলা উঁচু আছে তাদেরকে সমবেত স্বরে বলতে হবে। আলোর বাঁধ ভেঙ্গে দাও! অন্ধকারকে হটাও!

আলোর_পথিক › বিস্তারিত পোস্টঃ

ক্যাশলেস আইডিয়া

২১ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১১:১৩

এক
গুলশানের এই বিলাসবহুল রেস্টুরেন্টটিতে একবার খাবারের ব্যয় মেটানোর পর সাধারণত ঐ ব্যক্তিকে এখানে দ্বিতীয়বার আসার ব্যাপারে যথেষ্ঠ সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। যদিনা এইরকম হয়ে থাকে যে পরের বার তার খাবারের ব্যয় ভার অফিস বা তার সাথে আগত ব্যক্তিই তা বহন করছে।



আরিন সাহেব খাবারের মেনুকার্ড-এ খাবারের ছবি দেখেই তা অর্ডার করে দিলেন । ক্যালরি বা মূল্য বিবেচনাবোধে আনলেন না। নি¤œ-মধ্যবিত্ত বাংঙ্গালীদের আত্মমর্যাদা প্রদর্শনের একটি উপায় হলো এই ধরনের রেস্টুরেন্টে গিয়ে কোনমতে খাবারের দাম মেটানোর সামর্র্র্র্থ্যটুকু থাকলেই তিনি কোন ভাবেই বুঝতে দেবেন না যে, আজকের এই খাবারের দাম মেটানোর পর মাসের অবশিষ্ট্য দিনগুলো চলার জন্য তাকে অপেক্ষাকৃত কোন ধনী বন্ধুর কাছ থেকে টাকা ধার করে চলতে হবে। অবশ্যই আরিন সাহেবের তা করতে হবেনা। আরিন সাহেবের উদ্ভাবনী ক্ষমতা ও ব্যবসায়ীক ধারনা ও তার নেতৃত্বদানের অসচরাচর গুণবালী তিনি নিজেকে উচ্চ বেতনের একজম কর্মী হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে সমর্থ হয়েছেন। রেস্টুরেন্টে ঢুকেই আরিন সাহেব যেখানটিতে খাবার অর্ডার করতে হয় সেখান থেকে মেনুকার্ডটি হাতে নিয়ে খাবার অর্ডার করলেন।

বার কোর্ড স্ক্যানের মাধ্যমে আরিন সাহেব খাবারগুলো গ্রহণ করলেন। পে-ফাস্ট রেস্টুরেন্ট হওয়ায় পকেটের থেকে ডেবিট কার্ডটি বের করে খাবারের বিল মেটালেন। ওয়ালেটটি জিন্সের পকেটে রাখা মাত্রই মোবাইলে ক্ষুদেবার্তা আবির্ভাবের ভাইব্রেশন হলো। আরিন সাহেব সাধারণত: তার স্মার্ট ফোনটিতে যেকোন ধরনের নোটিফিকেশান এ্যালার্ট আসা মাত্রই তিনি তা পড়ে নেন কিন্তু দুই হাতে খাবারের পাত্র থাকার কারণে তিনি এখন তা করতে পারলেন না।

আরিন সাহেব সব সময় দ্রুত আহারকার্য সম্পন্ন করলেও সাধারণত উনি যখন তথাকথিত বিলাসবহুল রেস্টুরেন্টে খেতে বসেন তখন একটু বেশি সময় নিয়েই খেয়ে থাকেন। তবে এখন স্মার্টফোনের ক্ষুদ্রে বার্তা পড়ার তাগিদেই তিনি একটু দ্রুত খাচ্ছেন। খাওয়া শেষ করার ধৈর্য্যটুকু তিনি ধরতে পারলেন না। আরিন সাহেব লক্ষ্য করে দেখেছেন যখন তিনি স্মার্ট ফোন ব্যবহার করে গান বা কবিতা শুনতে শুরু করেন তখনই ফোনে কল বা ক্ষুদে বার্তা এসে তা বিঘœ ঘটায়। এখনও তিনি শেষ করলেন না দ্রুত খাওয়া শেষ করে টিস্যু দিয়ে হাত মুছে পকেট থেকে সুপারস্মার্টফোনটি বের করে তিনি ক্ষুদে বার্তা পড়তে শুরু করলেন।

‘এ মাসের খাদ্য তালিকা থেকে প্রাপ্ত ক্যালরি হিসাব করলে বিশ দিনে আপনি প্রায় বিশ হাজার উদ্বৃত্ত ক্যালরি গ্রহণ করেছেন, এই উদ্বৃত্ত ক্যালরি আপনার ওজন তিন কিলোগ্রামের মত বৃদ্ধি করতে পারে, আপনাকে আরও একটু বয়সস্ক মনে হতে পারে। আপনি প্রতিদিন গড়ে চারশত পঞ্চাশ টাকার মত খাবারে পেছনে অতিরিক্ত ব্যয় করেছেন। যা এদেশের এদেশের একটি সাধারণ পরিবারের পুরোদিনের খাবারের ব্যয়ের সমান।’

ক্ষুদে বার্তাটি পড়া শেষ করা মাত্রই আরিন সাহেবের ফোনে আবার ইনকামিং কলের ভাইব্রেশন শুরু হলো :
‘জ্বি স্যার বলুন, আমি একটু রেস্টুরেন্টে আছি’
‘আপনার আসতে কত সময় লাগবে? আরিন সাহেবের বস উত্তর দেওয়ার সুযোগ না দিয়েই বল্লেন, তবে আপনাকে সর্বোচ্চ বিশ মিনিটের মধ্যেই অফিসে এসে পৌঁছাতে হবে’

‘স্যার আমি যতটা সম্ভব দ্রুত আসার চেষ্টা করছি’ কথা শেষ করা মাত্রই আরিন সাহেবের মোবাইলে আবার ক্ষুদে বার্তা আসল।
‘রাস্তায় এই মুহূর্তে তীব্র যানজট শুরু হয়েছে, আর ঘন্টা দুইয়েক পরেই মাননীয় প্রধান মন্ত্রী বিমান বন্দর থেকে তার কার্যালয়ে যাবেন, তাই কিছু রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে; সঙ্গত কারণেই তীব্র জ্যাম শুরু হয়েছে। আপনি যদি গাড়ীতে যান আপনার রাস্তা ঘুরে অফিসে যেতে সময় লাগবে এক ঘন্টা তের মিনিট, আর হাঁটতে থাকলে আপনার সময় লাগবে সতের মিনিট’।
আরিন সাহেব দুপুররের এই তীব্র রোদে হাঁটতে শুরু করেছেন। মোবাইলে আবার ভাইব্রেশন
‘ইয়েস’
অটোমেটেড এইআই কল থেকে আরিন সাহেবকে শোনানো হলো
‘আপনি যে গতিতে হাঁটছেন তাতে আপনার অফিসে যেতে সময় লাগবে আঠার মিনিট’; রোদের তাপ ও আদ্রতা বিবেচনায় আপনাকে ত্রিশ মিনিটের মাধ্যে আঁধা লিটার পানি পান করতে হবে’।

অফিসের কোন একটা সমস্যা হওয়ার কারণে আরিন সাহেবের অফিসে পান করার যোগ্য কোন পানি নাই। সাধারণ আরিণ সাহেবের সুপার ইনটেলিজেন্ট স্মার্ট ফোনটি নিউজপোর্টাল থেকে তথ্য নিয়ে বা বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে পূর্ব থেকেই লোডশেডিং বা পানি বা গ্যাস সমস্যার কথা জানিয়ে দিয়ে থাকে কিন্তু আজকের পানির সমস্যাটি এতটাই অনির্দেশ্য ছিল যে, আরিন সাহেবের সুপার ইনটেলিজেন্ট ফোন তা জানাতে পারেনি।

‘ভাই এক লিটার পানি দেন তো’ আরিন সাহেব দোকানীর হাত থেকে পানির বোতল নিয়ে ওয়ালেট থেকে বিল পরিশোধের জন্য এক হাজার টাকার একটি নোট বের করে দিলেন।
‘স্যার এত টাকা ভাংতি হবে না’
ভাংতি টাকা না থাকার কারণে আরিন সাহেব পানি না নিয়ে আবার হাঁটতে শুরু করলেন। কয়েক মিনিট হাঁটার পর আরিন সাহেব প্রচন্ড তৃষ্ণার্ত অনুভব করতে শুরু করলেন। গলা শুকিয়ে গেছে। পানির অভাবে মাথায় তীব্র যন্ত্রণা হচ্ছে। সূর্য সামান্য পশ্চিম দিকে হেলে গেছে। এই মূহুর্তে অনুভূত তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি। আরিণ সাহেব আবার পাশে দোকানে গেলেন।
‘ভাই এক বোতল পানি দেনতো’
পানির বিল পরিশোধ করার জন্য আরিন সাহেব পকেট থেকে এক হাজার টাকার একটি নোট বের করে দিলেন।
‘স্যার ভাংতি টাকা দেন’
আরিন সাহেব বোতলের মুখ খুলে পানি পান করতে লাগলেন। পানি পান করার পর খুব আরাম বোধ করলেন। শারিরীক আরামে তিনি দোকানের সামনে রাখা চেয়ারটিতে বসে পড়লেন।
‘দেন টাকা ফেরত দেন’ আরিন সাহেব দোকানী কে বল্লেন।
‘স্যার আমার কাছে ভাংতি হবে না, আপনি ভাংতি দেন’
সুপার স্মার্ট ফোনটিতে আবার এসএমএস আসলো।
আপনাকে আর মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যে অফিসে পৌঁছাতে হবে কিন্তু জিপিএস তথ্য বলছে আপনি এখনই হাঁটতে শুরু করলে আপনাকে অফিসে যেতে এখনও ১১ মিনিট সময় ব্যয় করতে হবে।
‘ভাংতি হবে না, পানি নিচ্ছেন ৩০ টাকার, নোট দিচ্ছেন ১ হাজার টাকার, আপনার পানি নিতে হবেনা, আপনি আপনার টাকা নেন’
‘কিন্তু আমিতো পানি খেয়ে নিয়েছি, তো?
‘যান টাকা ভাংতি করে নিয়ে এনে দেন’
‘আমি কোত্থেকে টাকা ভাংতি করব?
‘সেটা আমি কি করে বলব?
‘আচ্ছা আপনি এই নোটটি রেখে দেন, বাকি টাকা আমি আপনার কাছ থেকে পরে নিয়ে যাব’
‘আমি আপনার টাকা রাখতে পারবনা’
আবারও এআই থেকে কল, ফোনটি কানে ধরা মাত্রই আরিন সাহেব শুনতে পেলেন-‘জামিল সাহেবের ভয়েস ইমোশোনাল এ্যানালাইসিস অনুযায়ী, আপনি যদি আজ দশ মিনিটের বেশি দেরী করে অফিসে পৌঁছান তাহলে আজকে আপনাকে কাঠোর শাস্তির সম্মুখীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে’।
দোকানীর কাছ থেকে টাকা ফেরত না নিয়েই আরিন সাহেব হাটতে শুরু করলেন।
‘স্যার টাকা ফেরত নিয়ে যান’
আরিন সাহেব বুঝতে পারছেন না তিনি অফিসের দিকে দ্রুত হাঁটতে শুরু করবেন নাকি টাকাগুলো ফেরত নিয়ে যাবেন। এতগুলো টাকা ফেলেও যেতে ইচ্ছে করছে না। দ্রুত দোকানীর কাছে আরিন সাহেব আবার আসলেন।
‘ভাই দেন আমার টাকাগুলো ফেরত দেন’ দোকানী আরিন সাহেবকে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য হাত বাড়াতেই একটি মেয়ে বলছে-আপনি দ্রুত আমার টাকাগুলো ফেরত দেন, আমার পরীক্ষা শুরু হয়ে যাবে।
আরিন সাহেব লক্ষ্য করলে কিশোরী বয়সের একটি মেয়ে ১০-১২ ইঞ্চির খাকি কাগজের একটি প্যাকেট হাতে দাঁড়িয়ে আছে।
‘আরিন সাহেব দোকানীকে জিজ্ঞেস করলেন মেয়েটিকে কত টাকা ফেরত দিতে হবে?’ আরিন সাহেব লক্ষ্য করলেন মেয়েটি বেশ বিব্রত বোধ করছে।
‘আচ্ছা নেন টাকাগুলো নেন, মেয়েটাকে টাকাগুলো আগে ফেরত দেন, আমার টাকাগুলো পরে ফেরত দিলেই হবে’
ধন্যবাদ আঙ্কেল-বলেই মেয়েটি দ্রুত চলে গেলো।
আরিন সাহেব মনে মনে বলেলন- আমি তোমাকে টাকাগুলো ফেরত দিলাম আর তুমি আমাকে আঙ্কেল বলে প্রতিদান দিলে?
আরিন সাহেবের সুপার স্মার্ট ফোনের আবার নোটিফিকেশান-আপনার অফিসে পৌঁছাতে বিশ মিনিট দেরী হবে।
‘স্যার দাঁড়ান, আমি আপনাকে টাকাগুলো ভাংতি করে ফেরত দিচ্ছি’ বলেই আরিন সাহেবকে কোন কিছু বলার অবকাশ না দিয়েই দোকানী টাকা ভাংতি করার জন্য দোকান ছেড়ে হাঁটতে শুরু করলো।
আরিন সাহেব বুঝতে পারছেন না যে, ৯৭০ টাকার জন্য আজ তাকে কত টাকার মুল্য চোকাতে হবে।
প্রায় পাঁচ মিনিট পরে দোকানী ফিরে এসে আরিন সাহেবকে হাজার টাকার নোট ফেরত দিয়ে বল্ল
‘সরি স্যার আপনি নোটটা নিয়ে চলে যান, আমার টাকা আপনি পরে দেবেন, আমরা লোক দেখলেই বুঝতে পারি কে কেমন মানুষ, আপনি আমার টাকাটা পরে দিয়ে দেবেন’।
আরিন সাহেব দোকানীর উপর প্রচন্ড বিরক্ত হলেন। দোকানীকে বাজে ভাষায় একটি গালি দিতেও ইচ্ছা করলো কিন্তু তারপ্রতি আস্থা রাখার কৃতজ্ঞতা বোধের কারণেই কিছু বল্লেন না।
আরিন সাহেবের সুপার স্মার্ট ফোনে আবার এইআই থেকে অটোমেটেড কল ‘জামিল সাহেবে গত ৫ বছরের ভয়েস ডেটার ইমোশনাল এ্যানালাইসি বলছে, আজকে আপনার শঙ্কার চেয়েও বড় ধরনের শাস্তির হতে হবে’।

দুই
জামিল সাহেব চেয়ারে বসে স্মার্ট ফোনটি ট্যাপ করায় ব্যস্ত আছেন। আরিন সাহেবকে তিনি মোটেই বকা-ঝকা করছেন না। আরিন সাহেবের ভয় সেখানেই। জামিল সাহেব কিছু জিজ্ঞেস করলে তাকে মিথ্যা কোন উত্তর দেওয়া যাবেনা; কারণ জামিল সাহেব প্রত্যেক এ্যাম্পøয়ির হাতের কব্জিতে Wireless Emotional Detector Sensor (WEDS) বসিয়ে দিয়েছেন। মিথ্যা কথা বলার মজা থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণে বহু কর্মী শহরের অন্যতম উচ্চতম বেতনভোগী এই চাকুরী ছেড়ে স্বল্প বেতনে অন্য প্রতিষ্ঠানের চাকুরী নিয়ে চলে গেছেন। এইতো কয়েকদিন আগের কথা’ একটি ছেলে চাকুরীতে সবে মাত্র যোগদান করার পর তার গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে ঘুরে-ফিরে অফিসে পৌঁছাতে দেরী হয়, জামিল সাহেব তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন তিনি অফিসে আসতে কেন দেরী করলেন? ছেলেটি মিথ্যা না বলতে পেরে রিতীমত মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিল, পরবর্তীতে মিথ্যা বলার ঝুঁকির চেয়েও মাত্রারিক্ত ঝুঁকি নেওয়ায় জামিল সাহেব তাকে চাকুরী থেকে অব্যাবহিত দেন।
আরিন সাহেব কেমন আছেন? অতি নমনীয় ভাবে জামিল সাহেব জিজ্ঞেস করলেন।
জিজ্ঞাসার ধরন আরিন সাহেবের ভয় বাড়িয়ে দিল। জামিল সাহেব যদি কখনও তার কোন এ্যাম্পøয়িকে তার ভুলের জন্য বকা-ঝকা করেন তাহলে বুঝতে হবে তার এই ভুলের কারণে তাকে আর কোন সমস্যায় পড়তে হবে না।
‘জ্বি স্যার ভাল আছি’
‘আপনার কি মনে হয় আপনার ভাল থাকা উচিৎ?’
‘জ্বি স্যার?’
‘আপনার কি মনে হয় আপনার ভাল থাকা উচিৎ?
আরিন সাহেব কি বলবেন বুঝতে পারছেন না, তাই চুপ করে বসে রইলেন।
‘আপনি কি জানেন আপনার জন্য প্রতিষ্ঠানের কতবড় ক্লায়েন্ট হাতছাড়া হয়ে গেছে? আপনার মূল্যবোধের সমস্যা নেই, তবে আপনার মূল্য নিয়ে বোধ হয় আপনার বোধের সমস্যা আছে’
আরিন সাহেব চুপ করে রইলেন।
‘আমি পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত আপনি ভুল করেও আমার সামনে আসবেন না’
‘স্যার তাহলে কি এখন চলে যাব?’
‘আপনার কি মনে হয়? আপনি আমার সামনে বসে থাকবেন আর আমি আপনাকে যামাই আদর করব?
‘সে সুযোগ আছে স্যার, আপনি চাইলেই তা করতে পারেন।’
আরিন সাহেবের কৌতুকরসবোধ অত্যান্ত সাহসি মানের, সাহসী রসবোধের কারণেই আরিন সাহেব প্রায়সর্বজগ্রহণযোগ্য একজন মানুষ। অবশ্যই উল্টো চিত্রও আছে, যেখানে সেখানে কৌতুক করার কারণে অনেক ক্ষেত্রে তাকে অনেক মূল্যও দিতে হয়েছে।
জামিল সাহেব অতিবিরক্তিতে হেসে ফেল্লেন।
‘আচ্ছা আমি যে আপনার উপর এখন মহা বিরক্ত সেটাও কি বোঝাতে ব্যর্থ হয়েছি?’
‘না স্যার, তবে আমি আপনার বিরক্তি কমাতে সমর্থ হয়েছি’
‘আপনার কি মনে করছেন যে, আপনার এই অতি নি¤œমানের রসিকতার কারণে আপনার প্রতি আমার বিরক্ত কমে গেছে?
‘জ্বি স্যার, শুধু রসিকতা নয়, স্যার নানান কারণে আপনি আমাকে পছন্দ করেন’
‘আপনাকে একথা কে বা কারা বল্ল যে, আমি আপনাকে পছন্দ করি?’
‘আমাকে একথা বলার জন্য আমিই যথেষ্ঠ, অন্যকোন পক্ষ বা সম্প্রদায়ের দরকার নেই, আর আপনি তো জানেন স্যার আমি খুব অসাম্প্রদায়িক, আর আপনি এটাও জানেন স্যার, Problem is the mother of invention’
‘না, তা তো জানি না, আমি তো জানি Necessity is the mother of invention’
‘এটা স্যার পুরোনো দিনের ফুরানো কথা আর আমারটা হলো নতুন দিনের নতুন কথা, নতুন ইনোভেশন, আজকে দেরীতে আসার কারণেই আমি আপনাকে ভাল কিছু আইডিয়া দিতে পারব, তবে আইডিয়াটা একদমই নতুন নয়, আপনিও সেটা জানেন, আর পৃথীবিতে নতুন বলতে কিছু নেই, তবে স্যার আইডিয়াটা পুরোনো হলেও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে নতুন করে তাগিদ অনুভব করলাম’
জামিল সাহেব রীতিমত ভুলেই গেছেন তিনি আরিন সাহেবের উপর রাগ করেছেন।

তিন
‘আমাদের দেশে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে নানান অস্থিরতা আছে! এখানকার অনেক সমস্যার অন্যতম প্রধান সমস্যা হলো আয় বৈষম্য! আর আয় বৈষম্যের কারণেই এক দল শোসক ও অন্যদল শোষিত শ্রেণীতে পরিণত হচ্ছে। আয় বৈষম্যের কারণেই মূলত: মানুষের মধ্যে এক ধরনের ধনকেন্দ্রিক শ্রেণী বৈষম্য তৈরী হচ্ছে। এই বৈষম্যে এগিয়ে থাকা শ্রেণী এতটাই এগিয়ে রয়েছে যে, তাদের একবছরের আয়ের সমান আয়, পিঁছিয়ে থাকা শ্রেণী এক হাজার বছরেও করতে পারবে না। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, এগিয়ে থাকা শ্রেণী আলোর গতিতে অন্ধকার পথে সম্পদ বৃদ্ধি করে যাচ্ছেন আর পিছিয়ে থাকা শ্রেণী কচ্ছপ গতিতে আলোর পথে সম্পদ অর্জন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা মানুষগুলো আর পিছিয়ে থাকতে চাইছে না, তারাও চাইছে যেভাবেই হোক তারাও টাকা কামাবে, তারাও আলোর গতিতে এগুবে। মানুষের মধ্যেই এই বিশ্বাস তৈরী হয়েছে যে, একমাত্র অধিক টাকার মালিক হতে পারলেই কেবল সুখি হওয়া যায়। কথাটা এক অর্থেও সত্যিও। কারণ আপনারা জানেন যে, এখানে যদি আপনি ভাল চিকিৎসা নিতে চান, যদি সন্তানকে ভাল শিক্ষা দিতে চান তাহলে আপনাকে প্রচুর পরিমাণে টাকার মালিক হতে হবে।’ আরিন সাহেব কথাগুলো বলতে বলতেই পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন ওপেন করতে শুর করলেন।

‘কিন্তু এগুলোর সাথে আপনার আইডিয়ার সম্পর্ক কি?’ জামিল সাহেব জানতে চাইলেন।

‘স্যার সম্পর্ক এই যে, উপরোক্ত যে সকল সমস্যা বল্লাম আপনাদের সবারই তা ভালমত জানা আছে এবং এগুলোর কারণও আপনাদের কাছে দিনের আলোর মত স্পষ্ট। যারা আলোর গতিতে সম্পদ অর্জন করে যাচ্ছে তারা কিন্তু তা অন্ধকার পথেই করছে এবং এই সম্পদগুলোও থেকে যাচ্ছে অন্ধকারে। এতে করে এই সম্পদ থেকে প্রতি বছর দেশ যেমন হাজার হাজার কোটি টাকা ট্যাক্স আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অন্য দিকে সম্পদগুলো পরিচালন মূলধন হিসেবে কাজে না লাগানোর ফলে সাধারণ জনগণও আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং যেগুলোর ট্র্যাক করাও সম্ভব হয়না বা হচ্ছে না। আর এই অসম্ভবের কারণেই দেশে ঘুষ-দূর্ণিতি পরিস্থিতি একধরনের অলিখিত প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি পেয়ে যাচ্ছে। আপনি যদি নগদ লেনদেন বন্ধ করে ট্র্যাকিংযোগ্য কোন লেনদেন প্রক্রিয়া চালু করতে পারেন তাহলে এইসব অন্ধকার পথগুলো রাতা-রাতি ব্লাকহোলে পাঠিয়ে দেওয়া সম্ভব।

‘নগদ অর্থ লেনদেন বন্ধ করলেই কি সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে?’

‘স্যার সব সমস্যার সমাধান হবে কি না এখনই বলা সম্ভব নয়, তবে স্যার আপনি এইটুকু ধরে নিতে পারেন যে, অবৈধভাকে হোক বা বৈধ ভাবে হোক যে সকল নগদ অর্থ লেনদেন করা হয় তার আন্ত:গমন বা বহি:গমন কোন গমনই রেকর্ড থাকে না, ফলে দূর্ণীতিবাজগণ দূর্ণীতি করে পার পেয়ে যান, অন্যদিকে এই সর্ব দুর্ণীতিবাজদের পার পাওয়া দেখে মধ্যবর্তী অবস্থানকারী মানুষগুলো দূর্ণীতি করতে উৎসাহী হয়ে উঠে’

‘তারমানে বুঝতে পারছি, আপনি এমন আইডিয়ার কথা বলছেন যেখানে অর্থ লেনদেনসমূহ ট্র্যাক করা যাবে কিন্তু আমরা সবাই জানি আপনি যদি এখনই অনলাইনে অর্থ লেনদেন করেন তাহলে সেটা তো ট্র্যাক করা যাবে।’

‘স্যার ঠিকই বলেছেন, স্যার আপনি জানেন যে, স্যার জানেন যে যারা দূর্ণীতি করে থাকে তারা অনলাইন লেনদেন করে না, স্যার আমি এমন এক ধারনার কথা বলছি যেখানে বাংলাদেশের সমস্ত লেনদেন, এমনকি ১০ টাকার বাদাম ও বিক্রি হবে ক্যাশলেস লেনদেনের মাধ্যমে’

‘সেটা কি বাস্তবে আদৌ সম্ভব? যেখানে এদেশের বিরাট একটা অংশ মানুষ পড়তেই পারেনা এমনকি তারা জানে না যে কিভাবে লিখতে হয়, তারা জানেনা যে, কিভাবে মোবাইল চালাতে হয়, সেখানে এই চিন্তা কি খুবই অমুলক না?’

‘স্যার ধরুন, আপনার শরীরে একটি কম্পিউটার বসিয়ে দেওয়া হলো, যে কম্পিউটার ব্রেইন ওয়েভ রিড করতে পারবে, যার মাধ্যমে চীপের সুপার আর্টিফিসিয়াল ইনটেলিজেন্ট আপনার চাওয়া না চাওয়া বুঝতে পারবে। কোন প্রকার শব্দ বা কোন প্রকার বাটন না চেপেই ব্রেণ ওয়েভের মাধ্যমে আপনি আপনার কাঙ্খিত পরিমাণ অর্থ লেনদেন করতে পারবেন। আপনার সমস্ত লেনদেন ক্লাউডে জমা থাকলো, আজীবনই আপনার ১০ টাকার বাদাম ক্রয় থেকেই সমস্ত দশ কোটি টাকার বাড়ী ক্রয়ের সমস্ত তথ্যই ক্লাউডে থাকবে।’

‘তার মানে সবার মাথার উপর একটি করে কম্পিউটার বসিয়ে দেওয়া হবে, এবং লোকটি টানতে থাকবে, তাইতো?’

দর্শকসারীর একজনের এই মন্তব্য শুনে সকলেই হো হো করে হাসতে লাগলেন।

আরিন সাহেব একটুও বিচলিত না হয়ে বল্লেন ‘ঠিক সেরকমটাই, তবে এই কম্পিউটারটি সবার মাথায় চড়ে থাকবে না তবে শরীরের মধ্যে প্রবেশ করানো থাকবে, যা আকারে খুবই ছোট হবে এবং মানুষ আজীবন ধরে এটি খুব সহজেই বহন করতে পারবে’

‘কিন্তু ষোল কোটি চিপ বসাতে কত খরচ হবে?’ দর্শক সারী থেকে আর একজন প্রশ্ন করলেন।
‘খরচ কত হবে সেটা ঠিক এই মূহুর্তে বলতে পারবনা, তবে এই টুকু বলতে পারি, এদেশে একটি সেতু তৈরী করা হচ্ছে যার ব্যয় প্রায় ত্রিশ হাজার কোটি টাকা, বিজ্ঞানের উন্নয়নের ফলে সেতু চালুর দশ বছর পরে এই সেতুর প্রয়োজন থাকবে কিনা সেটা সময় বলে দেবে। আমি যদি বলি এ দেশে বছরে প্রায় দূর্ণীতি হয় ৫০ হাজার কোটি; আপনি নিশ্চয় এ বিষয়েও দ্বিমত পোষণ করবে না, দ্বিমত পোষণ করলেও এই কারণে করবেন যে এই টাকা ৫০ হাজার কোটি টাকারও বেশি। স্যার জানেন, প্রতিনিয়ত টাকা ছাপাতে বছরে কোটি টাকা খরচ করা হয়ে থাকে। আমি শুধু এইটুক বলতে পারি যে, এই প্রকল্পের খরচ এসবের চেয়ে বেশ কম।’

চার (শেষ)
প্রায় দুই মাস পূর্বে আরিন সাহেবের আইডিয়া তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছিল। যেখানে বলা হয়েছিল আরিন সাহেবের কোম্পানি ইন্টেল ইন্টারন্যাশানাল থেকে চিপ সেট আমদানী করবে এবং নিজেদের প্রতিষ্ঠান দিয়ে সফ্টওয়্যার ডেভেলপ করবে এবং বাংলাদেশে সফল ভাবে বাস্তবায়ন করার পর পৃথীবির বিভিন্ন দেশে এটি ধীরে ধীরে বাস্তবায়ন করা হবে। ইন্টারন্যাশনাল পেটেন্ট নেওয়ার পর এটি বিশ্বের যে দেশেই বাস্তবায়ন হোক না কেন সেখান থেকে সেই বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান আরিন সাহেবের প্রতিষ্ঠানকে রাজস্ব শেয়ার করতে বাধ্য থাকবে। সুতরাং সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর থেকে আইডিয়াটা বাস্তবায়নের জন্য যে খরচ হবে সেটা খুব সহজে মন্ত্রণালয়কে ফেরত দেওয়া যাবে। যদিও ইনোভেটিভ আইডিয়া হিসেবে এটি বাস্তবায়ন করার জন্য মন্ত্রণালয় প্রকল্পের খরচ অনুদান হিসেবে দিতে পারে।


তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর, আরিন সাহেবের কোম্পানি ও ইন্টেল ইন্টারন্যাশনাল এর মধ্যে গড়ট স্বাক্ষরের প্রস্তুতি হিসেবে মন্ত্রণালয় কর্তৃক একটি গুরুত্বপূর্ণ মিটিং এর আয়োজন করা হয়েছে। যেখানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রালয়ের মাননীয় মন্ত্রী, সচিব, ইন্টেল ইন্টারন্যাশনাল এর সিনিয়র একজন কর্মকর্তা এবং আরিন সাহবে ও জামিল সাহেবের উপস্থিতে প্রেজেন্টশন উপস্থাপন করা হয়েছে। আরিন সাহেবের প্রেজেন্টেশনকে সকলকেই খুব প্রশংসা করলেন এবং তার সমস্ত আইডিয়া বাস্তয়নের জন্য মাননীয় মন্ত্রী নিজে দায়িত্ব নিলেন এবং সব ধরনের সহযোগতিার প্রতিশ্রুতি দিলেন এবং সকলকে জানিয়ে দেওয়া হলো এটি বাস্তবায়নের জন্য খুব শিঘ্রই সকলকে আনুষ্ঠানিক ভাবে চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে। জামিল সাহেব আরিন সাহেবের উপর প্রচন্ড খুশি হলেন এবং তাকে প্রাপ্য সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেন কিন্তু আরিন সাহেব সব সমই খুশি প্রকাশে সতর্কতা অবলম্বন করে থাকেন বলা যেতে পারে রক্ষণশীল নীতি অনুসরণ করে থাকেন এখনও তাই করলেন।


প্রায় দুই মাস পরে প্রতিষ্ঠানের সিইও হিসেবে জামিল সাহেব বরাবর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর থেকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের খাম দেখেই জামিল সাহেব প্রচন্ড উত্তেজনা অনুভব করলেন। তিনি উচুস্বরে আরিন সাহেবকে ডাকলেন। খামটি খুলতে শুরু করলেন। চিঠিটি নিয়ে জামিল সাহেব পড়তে শুরু করলেন। হঠাৎ করে জামিল সাহেবের মুখ দেখে মনে হলো এইমাত্র তার নিতম্বে কেউ আলপিন ঢুকিয়ে দিয়েছে। হাসি উধাও হয়ে গেছে। আঞ্চলিক ভাষায় একটি গালি দিয়ে তিনি চিঠিটা আরিন সাহেবকে পড়তে দিলেন।

‘মি. জামিল সাহেব আমরা আপনার প্রতিষ্ঠানের প্রোপোজালটা ভালভাবে স্টাডি করেছি। তাতে আমাদের কাছে মনে হয়েছে, দেশের আর্থিক দূর্নীতি দমনের নামে আপনাদের যে আইডিয়া তা বাস্তবায়ন হলে আমাদের দেশের সমস্ত আর্থিক লেনদেনের তথ্য অন্যের হাতে চলে যেতে পারে এবং দেশের আর্থিক নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে সুতরাং এহেন কোন প্রকল্প বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয় যে কোন প্রকার সহযোগিতা করার অপারগতা প্রকাশ করছে। শুধু অপরাগতা প্রকাশ করছে তাই নয় এহেন কোন প্রকল্প বাস্তবায়ন যদি কোন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক করার চেষ্টা করা হয় তাহলে সেই প্রতিষ্ঠানকে দেশবিরোধী হিসেবে বিবেচনা করা হবে এবং তাদের সমস্ত কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রয়োজনে সেই প্রতিষ্ঠান ও প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ’

পরের দিন---
আরিন সাহেব গতকাল সন্ধ্যায় আমার কাছে ফোন আসে, সেই ফোনের প্রেক্ষিতেই এই সিদ্ধান্ত। আমি খুবই দু:খিত, এটা বল্লে খুবই কম বলা হবে যে এই প্রতিষ্ঠানকে আপনি অনেক কিছু দিয়েছেন বরং বলব আমাদের এই প্রতিষ্ঠান যে এত বড় হয়েছে তারজন্য আপনার অবদানই প্রধান ভূমিকা রেখেছে। তাই আপনাকে খুব কষ্টের সাথেই বলতে হচ্ছে যে, আপনি আগামীকাল থেকে আর অফিসে আসবেন না। অবশ্যই আপনাকে এখান থেকে যাওয়ার সময় ছয় মাসের বেতন ও আপনার সমস্ত পাওয়না মিটিয়ে দেওয়া হবে। আশাকরি গ্রামে গিয়ে সেই টাকা দিয়ে আপনি ভালমত চলতে পারবেন।

গ্রামে গিয়ে আমি ভাল থাকব সেটা নিয়ে আমার কোন সন্দেহ নেই কিন্তু স্যার আপনি আমাকে গ্রামে চলে যাওয়ার কথা কেন বলছেন?

আমি কেন বলছি সেটা বুঝতে আপনার মত বুদ্ধিমান লোকের সেটা বুঝতে একদম সমস্যা হবার কথা নয়।

আরিন সাহেবের বুঝতে কোন সমস্যা হলো না যে, আজ তার কোন সেন্স অফ হিউমার কোন কাজে আসবে না।

--সমাপ্ত--

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১১:২৬

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: বড় লেখা...... বাট সুখপাঠ্য বলা যায়।
এত্ত টেকনিক্যাল টার্ম ব্যবহারকারী অফিসের কথা পড়ে গুগল প্লেক্স এর কথা মনে হলো B-))

২২ শে এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ১:০৩

আলোর_পথিক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া

২| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১১:২৮

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: But Bitcoins do this in a nice way.The bitcoin revolution, I wanna say B-))

২২ শে এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৪:০০

আলোর_পথিক বলেছেন: বিটকয়েনের সমস্যা হলো এটা বাদাম বিক্রেতা, পান বিক্রেতারা ব্যবহার করতে পারবে না।

৩| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ১১:১১

ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: অবশ্যপাঠ্য একটি লেখা
অসাধারণ। তবে লেখার পরিকল্পনা অংশটুকুতে আমার একটা মতামত আছে। সকল নাগরিকের গায়ে এআই বসানোর আইডিয়াটা অন্যায়। সামনে বিজ্ঞানের এই পরিমান উন্নতি হলেও আমি এর বিরোধিতা করবো
এর অনেক সাইড এফেক্ট থাকতে পারে, যেগুলা নিয়ে ভাবা দরকার। বাংলাদেশ সরকার ভুল জায়গায় বিরোধিতা করছে

২২ শে এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৩:৪২

আলোর_পথিক বলেছেন: সকল নাগরিকের গায়ে এআই বসানো হবেনা, বসানো হবে চিপ। তবে আপনার আশঙ্কা কিন্তু সত্যি, এসবের অবশ্যই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে, সেটা নিশ্চয় উদ্ভাবকগণ ভাববেন। আমি অবশ্যই বিজ্ঞানের ধারাবাহিক উন্নয়ন কোন ভাবে ব্যাহত হোক সেটা চাইনা। ধন্যবাদ প্রান্ত।

৪| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ১২:০৩

রাজীব নুর বলেছেন: সেদিন গুলশানে পরিবারের সদস্যদের (চারজন) নিয়ে খেতে গেলাম।
খাবার ওর্ডার দেওয়ার প্রায় দুই ঘন্টা পড়ে খাবার দিলো। এরা নাকি অর্ডার দেওয়ার পর খাবার রান্না করে।
বাজে খাবার। কোনো স্বাদ নেই।
বিল দিতে গিয়ে দেখি ৫ হাজার টাকা!!!! দিলাম পাঁচ হাজার টাকা। কষ্ট হলো খাবার খেয়ে আরাম পাইনি। ফালতু।
এই খাবারের দাম হওয়া উচিত ছিল। ৮০০ টাকা। কিন্তু দিতে হলো ৫ হাজার!!!!

২২ শে এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৩:৪৭

আলোর_পথিক বলেছেন: সন্দেহ নাই, আপনিও গল্পের নায়কের মত গুণী ও উচ্চ বেতন সম্পন্ন অথবা কোন উদ্যোক্তা!

৫| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ১২:৩০

মাহমুদুর রহমান বলেছেন: বেশ সাজানো গোছানো এবং অর্থবহ।

২২ শে এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৩:৪৫

আলোর_পথিক বলেছেন: অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া

৬| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ১২:৪৮

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: আহারে
আইডিয়ার ফেরে চাকুরিটাই চলে গেল!
তায় আবার গ্রামেই পাঠীয়ে দিল! অন্যায় বড্ড অন্যায়! ;)

গল্পে +++

২২ শে এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৩:৪৫

আলোর_পথিক বলেছেন: এহেন গল্প আমিও অনেক শুনেছি

৭| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৫:৪৬

ভুয়া মফিজ বলেছেন: অত্যন্ত অত্যন্ত চমৎকার একটা লেখা। পড়ে খুবই আনন্দ পেয়েছি।

এমন একটা ব্যাতিক্রমী আইডিয়া সরকারীভাবে বাতিলের প্রদর্শিত যুক্তির সাথে আমাদের দেশকে একসময়ে সাবমেরিন ক্যাবলের সাথে যুক্ত না করার যুক্তির সাথে মিল খুজে পাচ্ছি। আমাদের দেশের আমলারা অনেকটা গাধার মতো.....পানি খায়, তবে ঘোলা করে! :P

একজন আলোর_পথিক হিসাবে আপনার দায়িত্ব হচ্ছে দেশ ও জাতিকে আলোকিত দিক-নির্দেশনা দেয়া। কিছুটা দিয়েছেন। এই দেয়ার প্রক্রিয়াটা ভবিষ্যতেও চালু রাখবেন, আশাকরি। :)

০৪ ঠা মে, ২০১৯ রাত ৮:৩৭

আলোর_পথিক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া, হুমম অনেক বড় দায়িত্বের কথা বলেলন, তবে আপনাদের মত মানুষ সাথে থাকলে ভাল কিছু করার চেষ্টা করা যেতেই পারে।

৮| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ৮:৩৯

নীল আকাশ বলেছেন: এর ভাগ্য ভাল যে এই কর্মকান্ডের মধ্যে পাকি কোন কিছু চোখে পড়েনি। পড়লে আরও খবর ছিল। রাজাকার বানিয়ে উদ্দক্তাগিরি সব ছুটিয়ে দিত।
লেখায় টেকনিক্যাল টার্ম ব্যবহার করলে নীচে প্রতিটার অর্থ বলে দিবেন।
লেখা সুপাঠ্য হয়েছে।
ধন্যবাদ।

০৪ ঠা মে, ২০১৯ রাত ৮:৩৮

আলোর_পথিক বলেছেন: আপনার পরামর্শটি মাথায় রাখলাম, আর আপনার জন্য শুভকামনা রইলো।

৯| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ৮:২৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: "যারা আলোর গতিতে সম্পদ অর্জন করে যাচ্ছে তারা কিন্তু তা অন্ধকার পথেই করছে এবং এই সম্পদগুলোও থেকে যাচ্ছে অন্ধকারে" - দ্য বেস্ট লাইন অভ দ্য পোস্ট!
চমৎকার এবং অভিনব একটি পোস্ট, উপভোগ্যও বটে। পোস্টের পরতে পরতে অন্তর্নিহিত হিউমার আমার কাছে আরো বেশী উপভোগ্য মনে হয়েছে।
পোস্টে প্লাস +

০৪ ঠা মে, ২০১৯ রাত ৮:৩৯

আলোর_পথিক বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া। নিচের আপনার জন্য একটা ধার করা জোকস
একটি বিশ্বব্যাপী জরিপ জাতিসংঘ দ্বারা পরিচালিত হয়। একমাত্র প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা হল: "আপনি কি বিশ্বে বিশ্বে খাদ্যের ঘাটতির সমাধান সম্পর্কে আপনার সৎ মতামত দেবেন?" জরিপ একটি বিশাল ব্যর্থতা ছিল। আফ্রিকায় তারা "খাদ্য" বোঝানো কি ছিল না। পূর্ব ইউরোপে তারা "সৎ" মানে কি তা জানত না। পশ্চিম ইউরোপে তারা কি "অভাব" বোঝেনি তা জানত না। চীনে তারা "মতামত" মানে কি ছিল না। মধ্য প্রাচ্যে তারা "সমাধান" মানে কি না তা জানত না। দক্ষিণ আমেরিকাতে তারা "অনুগ্রহ করে" বোঝেনি। এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তারা "বিশ্রামের বাকি" অর্থ বোঝেনি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.