![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রিয় অপরাজিতা,
কেমন আছো এই প্রশ্নটা এ চিঠিতে অবান্তর। কারন তোমার সাথেতো রোজই কথা হয়। তুমি করে বলছি বলে রেগে যাচ্ছোনা তো? রাগ কোরোনা শুধুমাত্র এই চিঠিতেই তোমাকে তুমি করে বলছি এরপর থেকে আবার আপনি করে বলবো। আসলে আজ তোমাকে যে কথা গুলো বলবো তা আপনি সম্বোধনে বলা কষ্টসাধ্য। যাই হোক চলো মূল কথায় যাই-
আমি তোমাকে ভালবাসি অপরাজিতা। যদি জিজ্ঞেস করো কতটা তা বলতে পারবো না। কারন বিজ্ঞান এখন পর্যন্ত ভালবাসা পরিমাপক কোন যন্ত্র আবিষ্কার করতে পারেনি, বোধহয় পারবে না কোনদিন। যদি পারত তবে হয়ত ইঞ্চি, লিটার, কেজি বা অন্যকোন পরিমাপের এককে ভালবাসাকে মাপতে পারতাম। যাই হোক আমার কথা শুনে মেজাজ বিগড়ে গেছে নিশ্চয়ই? হয়ত ভাবছো চিঠিটা আর পরবেই না? হয়ত ভাবছো এখনই ব্লক করে দেবে আমাকে? আবার হয়ত হাসছো আর মনে মনে ভাবছো এটাতো আমি জানতাম? কারন সরাসরি না হলেও পরোক্ষভাবে তোমার প্রতি আমার ভালবাসা জানান দিয়েছি বারবার। কষ্ট করে এবং সময় নষ্ট করে হলেও চিঠিটা পরো প্লীজ।
আমি তোমাকে ভালবাসি অপরাজিতা কিন্তু আমি চাইনা যে তুমিও আমাকে ভালবাসবে। কারন একটা অনিশ্চিত ভবিষৎ আমার। একটা নির্দিষ্ট আয়সীমায় পৌছাতে না পারলে কাউকেই আমার জীবনের সাথে জড়িয়ে তার জীবনটা জটিল করবো না কিছুতেই। তুমি অনেক ভালো মনের একটা মানুষ। কেবলমাত্র অর্থের মাপকাঠিতে তুমি তোমার জীবন সঙ্গী নির্বাচন করবে না তা আমি জানি। কিন্তু বাস্তব জীবনটা তো বাস্তবই। সেখানে ভালভাবে বাঁচতে নূন্যতম আর্থিক স্বচ্ছলতা জরুরী। সেটা আমার কবে হবে বা আদৌ হবে কিনা আমি জানিনা। আমাদের মধ্যে অনেক মিল তবে সবটাই মানসিক যা দিয়ে বাস্তব চলেনা। বাস্তবে আমাদের মধ্যে আকাশ পাতাল ফারাক। আমাদের মধ্যে বাস্তবিক মিল থাকলেও আমাদের দুজনের মিলিত হওয়া অনেক বড় সিদ্ধান্ত হতো। কারন আমাদের বিভক্ত করে রেখেছে হাজার হাজার মাইলের কাঁটাতার। কি অদ্ভুত ভাবে আমি সেই দেশে জন্ম নিলাম যে দেশে তোমার জন্ম নয়।
আমি জানি তুমি অন্যকাউকে ভালবাসো যদিও সেটা একতরফা। আমি এটাও জানি তোমার পক্ষে হয়ত কখনওই আমাকে ভালবাসা সম্ভব নয়। তবুও ভালবাসি তোমাকে। এখানেও তোমার সাথে আশ্চর্যভাবে আমার মানসিক মিল। আমাদের দুজনের ভালবাসাই একতরফা। আমাকে যদি তুমি ভালবাসতে তবে হয়ত রাশি রাশি কষ্টই পেতে কেবল। কবি বলেছেন "ভালো না বাসলেই ভালো, বড় কষ্ট ভালবাসায়" আমি চাইনা তুমি সেই কষ্টটা পাও কখনওই। যদিও তুমি সে কষ্টটা ইতিমধ্যেই অনুভব করেছো হয়ত। তবে সেটা অন্য কারও জন্য।
তোমার ২৫৯ টি ছবি, ১৩ টি ভয়েস নোট আর ১ টি গান আছে আমার সংগ্রহে। ভাগ্যিস সেগুলো আগে থেকেই ফোন মেমোরি থেকে সরিয়ে মেমোরি কার্ডে সংরক্ষন করেছিলাম। নাহলে তো সেগুলোও হারিয়ে ফেলতাম। যখন খুব ক্লান্ত লাগে তখনই গ্যালারিতে গিয়ে নানা রঙে ------ নামক যে ফোল্ডার আমার মেমোরি কার্ডে আছে সেটা খুলে তোমার মুখশ্রী দেখি ক্লান্তির অবসাদ মুছে ফেলার জন্য। যখন অনেক দুঃখী থাকে আমার মন তখন তোমার মুখটা দেখি সব দুঃখ ভুলে গিয়ে একটু হাসার জন্য। যখন অনেক আনন্দে থাকি তখন তোমার মুখটা সেই আনন্দকে অনেক গুন বাড়িয়ে দেয়। তোমার যে গানটি আছে আমার সংগ্রহে সেটা যে খুব চমৎকার গাওয়া হয়েছে তা নয়। ৭৩৮ টি গান আছে আমার সংগ্রহে প্রতিটিই আমার প্রিয় শিল্পীর প্রিয় গান। তবুও তোমার গাওয়া গানটি আমার ফোনের রিং টোন হিসেবে সেট করা। যখনই আমাকে ঐ সিমে কেউ ফোন দেয় তখনই গেয়ে ওঠো তুমি। আর আমার মন ভালো হয়ে যায়। তোমাকে যেদিন আমি বরিশালের ভাষা বলে ভয়েস নোট পাঠিয়েছিলাম সেদিন তুমিও আমাকে একটা ভয়েস নোট পাঠিয়ে ছিলে মনে আছে? হাসিতে মুখরিত ছিল তোমার সেই ভয়েস নোট। সেটা আমার আরেকটা সিমের রিংটোন হিসেবে সেভ করা। ঐ সিমে যখনই আমাকে কেউ ফোন করে তখনই খিল খিল করে হেসে ওঠো তুমি। আমি মোহিত হয়ে যাই তোমার হাসি আর গান শুনতে শুনতে। মাঝে মাঝে তোমার গান আর হাসি শোনায় এতই মোহিত থাকি যে ফোন কেটে যায় রিং হতে হতে রিসিভ করা আর হয়না। একদিন CO স্যারের সাথে একটা গুরুত্বপূর্ন মিটিংয়ের সময় ফোনটা সাইলেন্ট করতে মনে ছিল না। উনি যখন কথা বলছিলেন তখন হঠাৎ করেই হেসে উঠলে তুমি। স্যার তাতে কিছু মনে করেননি তবে মৃদু হেসে বললেন " অন্তর সাহেব আপনার রিংটোন টা অন্যরকম।" অনেক লজ্জা পেয়েছিলাম সেদিন। প্রতিদিন রাতে যখন তুমি অনলাইনে থাকো আর সারাদিন অনলাইনে তোমার অপেক্ষায় থেকে যখন রাতে তোমার থেকে বিদায় নিয়ে আসি তখন কিছুতেই ঘুম আসতে চায়না। তখন কানে ইয়ার ফোন লাগিয়ে তোমার কথাগুলো শুনতে শুনতে প্রবেশ করি ঘুমের রাজ্যে। আগে যখন রাতে ঘুম আসতে চাইতো না তখন গান শুনতাম। যে গানগুলো আগে প্রতিদিন আমাকে ঘুম পাড়াতো তা এখন আর আমাকে ঘুমের রাজ্যে নিয়ে যেতে পারেনা অনেক সময়। সত্যিই বড্ড স্বার্থপর আমি। দিনভর তোমাকে আশ্রয় করে সুখ অনুসন্ধান করি। ভালো থাকার জন্য এই স্বার্থপরতা কি অপরাধ? তুমি নিশ্চয়ই অনেক বিরক্ত। অনেক প্রেম পত্র বা প্রস্তাব পেয়েছো তুমি। এখন এটায় বিরক্তি লাগাটা স্বাভাবিক। তুমিই একদিন আমাকে বলেছিলে "সবাই শুধু প্রেম চাইতেই আমার কাছে আসে।" আমি কিন্তু তোমার কাছে আমার ভালবাসার বদলে ভালবাসা চাইনা। আমি জানি সেটা হয়ত কখনওই সম্ভব নয়। আমি শুধু চাই আমৃত্যু তোমাকে পাওয়ার অপেক্ষায় থাকতে। সেই সুযোগটা আমাকে দিও। এই চিঠির উত্তর রিজেক্ট হবে তা আমি জানি। যদি তাই হয় তবে প্লীজ উত্তর দিওনা এ চিঠির। আমি তোমাকে পাওয়ার অপেক্ষায় থাকতে পারবো কিন্তু তোমাকে হারাতে পারবো না। প্লীজ হারিয়ে যেওনা। তোমাকে আমার মনের কথা গুলো, আমার ভালবাসার কথাগুলো জানানোর জন্যই এই চিঠি। আর কখনওই এই কথাগুলো বলে তোমার বিরক্তির কারন হবো না। আমাকে তোমার অনেক বন্ধুর মধ্যে একজন হয়ে অন্তত থাকতে দিও।
তুমিতো জানই আমি একটু পাগল টাইপের। আজকাল পাগলামিটা আরও বেড়েছে। আমি নিজেই অবাক হয়ে যাচ্ছি আমার পাগলামি দেখে। এর মধ্যে যে পাগলামি করেছি তা শুনলে হয়ত তুমিও পাগল হয়ে যাবে। কয়েকদিন আগে পাবলিক বাসে একা উঠে দুটো ছিট বুক করে নিলাম। তারপর জানালার পাশের ছিটটা তোমার জন্য ছেড়ে পাশের ছিটে বসলাম। কল্পনায় তোমার সাথে ঘুরলাম পাবলিক বাসে চেপে। কিছুক্ষণ পরে যখন দেখলাম যে বাসে আর তিল ধারনেরও জায়গা নেই, মানুষ ঝুলছে বাসের গেটের হ্যান্ডেল ধরে তখন আর অমানুষের মতো কল্পনায় বিভোর থাকতে পারিনি। সরে গিয়ে জায়গা করে দিয়েছি একজনকে বসতে। মনে মনে হাসছিলাম তখন নিজের পাগলামো দেখে। এরপরেও তোমাকে নিয়ে বাসে চেপে ঘুরেছি নিজের কল্পনায়। তবে তা সিটিং বাসে। তখন নিজেকে অমানবিক মনে হয়নি। অমানবিকতা আমার সহ্য হয়না। তোমাকে নিয়ে রিক্সা করেও ঘুরেছি। গত মাসের শেষের দিকে একদম টাকা ছিলনা হাতে। কোন মাসের শেষেই টাকা থাকেনা। তখন অফিস থেকে ফেরার পথে অনেকটা পথ হাটতাম। কারন গাড়িতে যাওয়ারও টাকা থাকতো না। তখন কত হেটেছি তোমার হাত ধরে। তাছাড়াও ফুটপাত ধরে শহরটা দেখতে দেখতে হাটতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি আমি।রাতে নিয়ন আলোয় সেজে থাকে ঢাকা নগরী।বাসে করে গেলে বেশ মায়ায় আচ্ছন্ন হতে হয়। ফুটপাত ধরে হাটলে বাস্তবটা চোখে পড়ে। যখন দেখি রাস্তার যে অংশটা অন্ধকার সেখানে একটা মরা ইঁদুর বা কুকুরের পাশেই কালো কম্বল জড়িয়ে শুয়ে আছে একটা জ্যান্ত মানুষ তখন বুঝতে পারি নিয়ন আলোর কারসাজি। তখন উপলব্ধি করতে পারি সৌন্দর্য কত ভয়ংকর রকমের কুৎসিত হতে পারে। আবোলতাবোল কি সব লিখছি। নজরুলের একটা কবিতা মনে পড়ছে। কবি আমার কৈফিয়ত কবিতায় লিখেছিলেন-
" কি যে লিখি ছাই মাথা ও মুন্ডু
আমিই কি বুঝি তার কিছু?
হাত উচু আর হোলো নারে ভাই
তাই লিখি করে ঘাড় নিচু।"
এই লাইন দুটোর সাথে আমার বর্তমান অবস্থা মিলে যাচ্ছে অনেকটা।
নিজের মনকে বহুবার জিজ্ঞেস করেছি কেন তোমাকে এমন পাগলের মতো ভালবাসলো? কিন্তু মনটাও নাছোড়বান্দা কিছুতেই উত্তর দেয়না। মনে আছে অপরাজিতা তুমি একদিন আমাকে বলেছিলে "আমাকে এমন করে ভালবাসা দেবেন না। আমি এর মূল্য দিতে পারবো না।" এই একটা কথাই ভুল বলেছিলে তুমি। ভালবাসার মূল্য কে কবে দিতে পেরেছে? ভালবাসাতো আর কাঁচাবাজের আলু, পটল নয় যে তার মূল্য দেওয়া যাবে। তোমার ভয় নেই আমার ভালবাসার বদলে তোমার থেকে ভালবাসা কখনওই চাইবো না। ভালবাসা যে চেয়ে পাওয়ার বস্তু নয়। ভালবাসা হয়ে যায় নিজের অজান্তেই। তোমাকে কত বলেছি গান পাঠাতে, ভয়েস নোট পাঠাতে তুমি পাঠাও না। আজকাল তো অনলাইনে থাকলেও আগের মতো রিপ্লাই দাও না। আমি জানি তোমার প্রতি আমার যে ভালবাসা তৈরি হয়েছে সেটা বুঝতে পেরেই আমাকে এড়িয়ে যাওয়ার জন্য এমন করো তুমি। আমি জানি তুমি হয়ত কোনদিনই আমাকে ভালবাসতে পারবে না। তাছাড়াও তোমার আমাকে ভালবাসা বাস্তবসম্মত নয়। কিন্তু তাই বলে আমি তোমাকে ভালবাসতে পারবো না তা নয় নিশ্চয়ই। কারও অনুমতি নিয়ে ভালবাসা হয়না। আমার ভালবাসার নিষিদ্ধ ইস্তেহার লিখছি তোমাকে। আমার জীবনের সবথেকে করুন পাতাটির লেখা, সবথেকে প্রেমময় পাতাটির লেখা, সবথেকে আনন্দের পাতাটির লেখা আজ তোমাকে লিখে গেলাম অপরাজিতা । যদি বলি তোমাকে হারিয়ে বাঁচতে পারবো না তবে ভুল বলা হবে। তুমি হারিয়ে গেলেও বেঁচে থাকবো। তবে সেটা হবে মরার মতো বেঁচে থাকা। প্লীজ অপরাজিতা হারিয়ে যেওনা অন্তত। যদিও তুমি হারিয়ে যেতে চাইলেও এখন আর সে উপায় নেই। যখন তখন যেখানে সেখানে তোমার সঙ্গে থাকি আমি। ------ আমি (এখানে সে যে দেশে থাকে সেই দেশের নাম হবে) যাবোই। আমি একবার তোমাকে সামনে থেকে দেখতে চাই। তোমাকে ছুয়ে দেখতে চাই। অনেকটা পথ না হোক অন্তত একটি পা হাটতে চাই তোমার হাতটি ধরে।
হয়ত ভাবছো তোমার ভালবাসা পাওয়ার প্রত্যাশাই যদি না থাকে তবে কেন এই চিঠি? প্রত্যাশা তো আছেই অপরাজিতা । প্রবল প্রত্যাশা আছে তোমাকে পাওয়ার। তোমাকে পেলে ধন্য হয়ে যেত এ জীবন। কিন্তু আমি বুঝি সেটা সম্ভব নয়। আজকাল প্রচন্ড রাগ হয় নিজের উপর। কেন নাস্তিক হতে গেলাম? যদি আস্থা রাখতে পারতাম অস্তিত্বহীন ভগবানে তবে ভাল হতো। যদি নির্বোধের মতো ভাবতে পারতাম মৃত্যুর পর আবার ফিরে আসবো তবে বড় শান্তি পেতাম। তাহলে পরবর্তী জন্মে তোমাকে পাওয়ার চিন্তায় বিভোর থাকতে পারতাম। পরবর্তী জন্মে তোমার হওয়ার চিন্তায় আনন্দিত হতে পারতাম। কিন্তু অবস্থাটা তেমন নয়। আমি জানি পরবর্তী জীবন বলে কিছু নেই। যা পাওয়ার তা এই জীবনেই পেতে হবে। যা হারানোর তাও হারাতে হবে এ জীবনেই। জীবনের ২৬ টা বছর তো কাটিয়েই ফেলেছিলাম। হঠাৎ ২৭ বছরে এসে কারও জন্য এমন পাগল হবো ভাবিনি। আমি তো আগেও প্রপোজ করেছি তা তো তুমি জানোই। কিন্তু আর কাউকে প্রপোজ করার সময় এভাবে হাত কাপেনি আমার। আর কাউকে প্রপোজ করার সময় চোখ ঝাপসা হয়ে আসেনি এভাবে। আর কাউকে চিঠি লেখার সময় এভাবে প্যাকেটের পর প্যাকেট সিগারেট খেতে হয়নি। কষ্ট, ভালবাসা, আনন্দ এই তিনটি অনুভূতি মিলে একটা অজানা অনুভূতি তৈরি হল মনে। এমন আগে কখনওই হয়নি।
সেদিন তুমি বললে "ঠুকে কথা বলা খুব অপছন্দ করি। কথা এই জন্যই হয়ত আরো কমিয়ে দেব। খুব খারাপ অভ্যেস এটা আপনার।" আসলে হয়েছে কি জানো? তোমাকে প্রচন্ড ভালবাসিতো তাই প্রবল প্রত্যাশা জন্ম নিয়েছে। তুমিতো কখনও ভালবাসোনি আমাকে তাই তুমি হয়ত সেটা বুঝবে না। এই চিঠির পর যদি তোমার বন্ধু হয়ে থাকার সুযোগ দাও তখন চেষ্টা করবো নিজের মনকষ্ট কে আড়াল করে রাখার। চেষ্টা করবো যাতে তোমার সাথে ঠুকে কথা বলতে না হয়। মনে আছে অপরাজিতা তুমিই একদিন বলেছিলে " প্রত্যাশা তৈরি হলেই কষ্ট পাবো।" তুমি আসলে ঠিকই বলেছিলে। কষ্ট তো পাবোই। তবে সেই কষ্টের মধ্যেও একটা গভীরতম আনন্দ আছে। মান্না দের গানের ভাষায় বলছি-
"ধন্য আমি ধন্য হে পাগোল তোমার জন্য যে।
ধন্য আমি ধন্য হে মাতাল তোমার জন্য যে।
ধন্য আমি ধন্য হে পুড়ি তোমার জন্য যে।
ধন্য আমি ধন্য হে ফকির তোমার জন্য যে।"
তোমার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা থাকলো অপরাজিতা । ভালবাসায় ভরে উঠুক তোমার জীবন। তোমাকে আমার মতো ভালবাসবে এমন মানুষের হয়ত অভাব হবেনা। কিন্তু আমার থেকে বেশি কেউ ভালবাসতে পারবে না। আমার হৃদয়ের সমস্ত প্রেম আজ তোমাকে সমর্পণ করলাম। আগে অনেককেই ভালো লাগতো। সৌন্দর্য দেখে তাৎক্ষণিক প্রেমে পড়ে যেতাম। কিন্তু কিছু বলতাম না তাদের। কারন শুধু বাহ্যিক চেহারা দেখেতো আর প্রেম নিবেদন করা যায়না। মনের সৌন্দর্যটাই তো মূল। আজকাল আর কারও চেহারা দেখে প্রেমে পড়িনা। সবার মধ্যে শুধু তোমাকেই খুঁজে ফিরি। কিন্তু পাই না। কি করে পাবো? তুমি তো যেখানে সেখানে নেই। তোমাকে এই এলোমেলো শব্দে সাজানো চিঠিটা না পাঠালেও পারতাম হয়ত। কিন্তু বড় জ্বালাতন করছিল শব্দগুলো অবমুক্ত হবে বলে। তোমাকে পাওয়া হয়ত হবেনা এ জীবনে কিন্তু এই চিঠির ফলে তোমার বন্ধুত্ব হারানোর সঙ্কা তৈরি হয়েছে মনে।কারন আমার জন্য তোমার মনে কোন আবেগ হয়ত নেই। প্লীজ অপরাজিতা আমাকে তোমার বন্ধু হয়ে অন্তত থাকতে দিও।যদি তোমার মনে আমার জন্য তোমার অজান্তে বিন্দুমাত্র ভালবাসা থাকে তবে হয়ত তুমি কাঁদবে। যদি কান্নায় তোমার চোখ ভড়ে ওঠে তবে সেই মুক্ত বিন্দুগুলো কোন একটা কাপড় বা টিস্যু পেপার দিয়ে মুছে সেটা সংগ্রহে রেখো। আমি পরে কখনও তোমার থেকে সেটা সংগ্রহ করে নেবো। আর যদি না থাকে তবে রেগে আগুন হয়ে যাবে। নিজেকে আজ বড্ড বেশি ব্যক্তিত্বহীন মনে হচ্ছে। এ কদিনের পরিচয়ে তোমাকে এমন চিঠি দেওয়া বোধহয় ব্যক্তিত্বের পরিচয় নয়। কিন্তু আজ আমি বুঝতে পারছি ভালবাসাকে সময়ের গন্ডিতে বাধা যায়না। কত বিবাহিত দম্পতি তো সারাজীবন একসাথে কাটিয়েও ভালবাসতে পারেনা একে অপরকে।
আমার দুনিয়া আমি তোমাকে দিয়ে সাজিয়ে রেখেছি। আমার ফোনের লক স্ক্রীন থেকে শুরু করে প্যাটার্ন লক, হোয়াটস এ্যাপ ওয়ালপেপার সব জায়গাতেই তুমি। আমার ব্যক্তিগত জীবনের সর্বত্র রয়েছো তুমি। পাবলিক করিনি সেটা হয়ত কোনদিন করাও হবেনা। যদি কোনদিন তোমাকে পেতাম তবে সারা পৃথিবীর সামনে চিৎকার করে বলতাম " অপরাজিতা আমি তোমাকে ভালবাসি।" কিন্তু সেই দিনটা কখনও হয়ত আসবে না বা আসা সম্ভবও নয় তা আমি জানি। তোমার ভয় পাওয়ার কোন কারন নেই। আমি কখনওই কারও বিরক্তির কারন হইনি। যাকে ভালবাসি তার বিরক্তির কারন হওয়ার তো প্রশ্নই আসেনা। তুমি সেদিন বললে আমার আবদারগুলো নাকি অযৌক্তিক। আসলে হয়েছে কি জানো? তুমিতো আমাকে ভালবাসোনি কোনদিন ভালবাসবেও না। আমার ভালবাসাটা সম্পূর্ণ একতরফা তাই ওগুলো তোমার কাছে ভিত্তিহীন মনে হয়েছে। আমার মনে হচ্ছে আমি ইদানীং তোমার রাগের কারন হচ্ছি বারবার। যেটা আমি কখনওই হতে চাইনা। তাই ভাবছি আমি ঐ ভিত্তিহীন আবদার গুলো নিয়ে যাতে তোমার সামনে আর না দাড়াতে হয় সে চেষ্টাটা করবো। তবে কিছু কিছু কথা হৃদয় থেকে উঠে আসেতো তাই হয়ত মাঝে মাঝে দু একটা অযৌক্তিক আবদার উঠে আসবে। তুমি তোমার গতিতেই চলো আমার অযৌক্তিক আবদার পাত্তা দিতে হবেনা। তুমি ইদানীং অনলাইনে থাকলেও আমার এসএমএস এর জবাব দিতে বড্ড দেরী করো। তোমার বন্ধু ও শুভাকাঙ্ক্ষী প্রচুর। তাই ব্যস্ত থাকাটাই স্বাভাবিক। আমার হয়েছে যত ঝামেলা অনেক বন্ধুর মাঝেও অপেক্ষা করে থাকি তোমার জন্য। প্রচন্ড ভালবাসি যে তোমাকে অপেক্ষায় তো থাকবোই। প্রায় সারাদিনই নেট অন করে রাখি আজকাল। ফোনটায় চার্জ থাকেনা বলে অফলাইনে যেতে হয় মাঝেমাঝে। আমাকে বা আমার অনুভূতিকে পাত্তা দেওয়া তোমার পক্ষে সম্ভব নয় তা আমি জানি। এই পাগলামিকে পাত্তা দেওয়ার কোন মানেও হয়না। শুধু মাঝে মাঝে ডেকো। দেরী করে হলেও রিপ্লাই অন্তত দিও এতেই আমি খুশি। সারাদিন অপেক্ষা করে থাকি তোমার ডাক পাবার। তোমার জন্য অপেক্ষা করেও শান্তি। একথা বলার পর তুমি একদিন বলেছিলে "যদি আর না ডাকি? " না ডাকলেও তোমার অপেক্ষায় থাকবো অপরাজিতা । যদি কখনও ডাকো সেই আশায়।
তুমি সেদিন বললে "কিছু কিছু ছেলে বেহায়া টাইপের হয়। একটু ভালভাবে কথা বললেই ভাবে বুঝি প্রেমে পড়েছি।" আমিও হয়ত বেহায়া তবে অতটাও নয়। তুমি একসময় আমার সাথে ভালভাবে কথা বলতে তখনও আমার মনে হয়নি যে তুমি আমার প্রেমে পড়েছো। আমি জানি তুমি কখনওই আমাকে ভালবাসনি। আমাকে ভালবাসার কথাও না। কিন্তু তুমি আমাকে ভালবাসনি বলে আমি তোমাকে ভালবাসতে পারবো না এটা নয় নিশ্চয়ই। ভালবাসাতো কোন চুক্তি নয় যে তাতে উভয় পক্ষের সম্মতি লাগবে। তোমার সাথে আমার কোন চুক্তি নেই হবেনা কোনদিনই। কারন চুক্তি করে আর যাই হোক ভালবাসা হতে পারেনা।
১৪ই ফেব্রুয়ারি কে কখনই ভালবাসা দিবস হিসেবে দেখিনি। ১৯৮৩ সালের এই দিনে স্বৈরশাসক এরশাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে প্রান দিয়েছিল এদেশের ছাত্ররা। তাই ঐ দিনটিকে স্বৈরাচার প্রতিরোধ দিবস হিসেবেই পালন করতাম। ২৬ টি ১৪ই ফেব্রুয়ারি পার হয়ে গেছে জীবন থেকে এই ২৭ তম ১৪ই ফেব্রুয়ারিতে এসে দিনটিকে আলাদা মনে হচ্ছে। আসলে আমার জীবনে এতদিন এমন কেউ ছিলনা যার প্রেমে পাগল হতে পারি। এবার থেকে তুমি আছো। বিশ্ব ভালবাসার এই দিনে তাই তোমাকে নিজের ভালবাসার কথা জানালাম। তাই বলে ভেবোনা শহীদদের ভুলে যাবো। সকালে তোমার হাত ধরেই শহীদ বেদীতে ফুল দিতে যাবো। তারপর তোমাকে নিয়ে ঘুরবো সারাদিন। তোমাকে নিয়ে বাসে চড়বো, রিক্সায় ঘুরবো, তোমার হাত ধরে হাটবো কিলোমিটারের পর কিলোমিটার। তোমার কপালে, গাল, ঠোটে চুমু খাবো। সবই আমার কল্পনায়।
আমার হৃদয় থেকে উচ্চারিত প্রতিটি সত্য শব্দ লিখে গেলাম এখানে। কবি বলেছেন "হৃদয় থেকে উচ্চারিত প্রতিটি সত্য শব্দ কবিতা।" কিন্তু আমিতো আর কবি নই তাই এটা আর কবিতা হয়ে উঠলো না। এলোমেলো কিছু শব্দ হয়েই থেকে গেলো। তোমার অনেকটা সময় নষ্ট করে ফেললাম এলোমেলো শব্দগুলো দিয়ে। আবারও বলছি এই চিঠিটার উত্তর দেওয়ার কোন দরকার নেই। শুধু না বোলো না অপরাজিতা । আমাকে অন্তত তোমাকে পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে দাও প্লীজ।
ভালো থেকো। অনেক অনেক সুন্দর হোক তোমার আগামি।
ইতি,
তোমার পাগল প্রেমিক
অন্তর
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:২৬
অরুণাভ বিলে বলেছেন: আপনি বাংলা চিঠি সাহিত্যের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারবেন বলে আমি মনে প্রাণে বিশ্বাস করি ।