![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ছেলেটা বেওরিশ একটা কুকুরকে অফিশ থেকে ফেরার পথে দশ টাকা দিয়ে একটা পাউরুটি কিনে দিত রোজ। বইয়ের মলাট চোর একটা ইঁদুরকে হাতেনাতে ধরেও পালাতে দিয়েছিল একদিন, মায়া হয়েছিল! রিক্সা থামিয়ে দুটো ডাব কিনেছিল সে, দোকানদার ভেবেছিল আগেপিছে কেউ বুঝি আছে, একটু অপেক্ষায় থেকে গোপনে ডাবটি তুলে দিয়েছিল রিক্সাচালক ছেলেটিকে। অফিশে একঘণ্টা বেশি কাজ করলে তিনশো টাকা বেশি আয় হয়, না, সে তা করে না; বরং বিশটাকা দিয়ে চকলেট কিনে কিছু সময় কাটায় পথশিশুদের সাথে। বাসায় ফিরে আছে মায়ের ভালবাসার ভার, অসুস্থ পিতার চিকিৎসার ভার। টাকার হিসেব মেলাতে হয় প্রতি মুহূর্তে, মেলে না, খরচের পাল্লা মহাজনের ভুড়ির মত নিচু হয়ে ঝুলে থাকে প্রতি মাসে। স্ত্রী চুপি চুপি এক ফাঁকে বলে যায়- চাল নেই; না, তবু মাথায় হাত পড়ে না, রাত দশটায় রূপম ভাইয়ের দোকান থেকে দশ কেজি চাল নিয়ে ফিরতে হয়। মনে জমে আছে কত কথা, কত গান, কত কবিতা, কত আক্ষেপ -একটু যে না লিখলে চলে না। কোথায় লিখবে সে? অনলাইন হচ্ছে নিজের ঘরের খোলা জানালা, প্রাণ খুলে ঘণ্টাখানেক নিঃশ্বাস ছাড়ে ছেলেটা। নিজের ডায়েরিতে কত কী যে লেখে সে, কে পড়ে কে পড়ে না- তার তোয়াক্কা করে না কখনো। বিবিধ বিষয়ে লেখে, ধর্ম নিয়েও লেখে। মাঝে মাঝে অন্যের সাথে তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে যায়। কেউ গালি দেয়, কেউ হুমকি দেয়, গায়ে মাখে না ও। তর্কযুদ্ধে মানুষ কত কী বলে, পরক্ষণেই তো ভুলে যায়, ও ভুলে যায়; ভোলে না ওরা, ভোলে না অন্ধকারের হায়েনারা। ওরা আসে, চাপাতি হাতে চুপি চুপি পিছন থেকে, কুপিয়ে চলে যায় ‘ঈশ্বরের’ নির্দেশে।
বেওয়ারিশ কুকুরটা রোজ পথ চেয়ে থাকে, আসে না কেউ অার একটি পাউরুটি নিয়ে। পথের সেই শিশুগুলি পথ চেয়ে থাকে, আসে না কেউ আর একটি করে চকলেট নিয়ে। ইঁদুরটা মাঝে মাঝে বইয়ের মলাটে এসে খুঁজে ফেরে কিছু, ছোট্ট রুমের চার কোণায় চরকি কেটে ফিরে যায়।
©somewhere in net ltd.