নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি হব সকাল বেলার পাখি

দিব্যেন্দু দ্বীপ

সংশয়ে সংকল্প সদা টলে

দিব্যেন্দু দ্বীপ › বিস্তারিত পোস্টঃ

খুন করার আনন্দ, খুন দেখার আনন্দ

২০ শে মে, ২০১৫ সকাল ১১:৪১

“There are many things worth living for, a few things worth dying for, and nothing worth killing for.” অর্থা্ৎ বাঁচার হাজারটা কারণ আছে, জীবন দেওয়ারও কিছু কারণ আছে, কিন্তু হত্যা করার কোন কারণ থাকতে পারে না। -আমিরিকান অথর টম রবিনের বক্তব্য এটি।
কারো বক্তব্য নিজের ভাবনার সাথে মিলে গেলে সেটি নিজের বক্তব্য হয়ে ওঠে। কাউকে হত্যা করার ছোট্ট একটি অজুহাতও আমি কল্পনা করতে পারিনি কোনদিন।
‘দ্যা ওল্ড ম্যান এন্ড দি সি’ উপন্যাসে হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে চমৎকার একটি উক্তি আছে। হেমিংওয়ে সেখানে বলেছেন, “এই মুহূর্তে মাছটিও আমার বন্ধু … আমি কখনো এরকম একটি মাছ দেখিনি, শুনিনি। কিন্তু অবশ্যই এটাকে আমি হত্যা করব। তবে আমি গর্বিত যে, আমাকে নক্ষত্র হত্যা করার চেষ্টা করতে হয় না। ভাবতো, যদি প্রতিদিন আমাদের চাঁদটাকে হত্যা করার চেষ্ট করতে হত! যদি আমাদের প্রতিদিন সূর্যটা হত্যা করার চেষ্টা করতে হত! আমরা সৌভাগ্যবান যে, আমাদের তা করতে হয় না”।

কয়েকজন ব্লগার হত্যাকাণ্ডের পর থেকে উক্তিটি আমার মাথার মধ্যে ঘুরছে। ঐ জায়গাটি বারে বারে পড়ছি। লেখক বোঝাতে চেয়েছেন, বাঁচার জন্য মাছটিকে আমি হত্যা করছি, যদিও এই মাছটিকেও আমি ভালবাসি। উনি বোঝাতে চেয়েছেন, বাঁচার জন্য চন্দ্র সূর্যও যদি হত্যা করতে হত! উনি আমাদের সৌভাগ্যবান বলেছেন, কারণ, আমাদের তা করতে হয় না।

কই, আর্নেস্ট তো সঠিক বলতে পারেননি। আমাদের হত্যা করতে হয়। ধর্ম বাঁচাতে আমাদের হত্যা করতে হয় রাজীব, অভিজিৎ, ওয়াশিকুর, অনন্তদের। কিসের জন্য এই হত্যা?
“ফর হুম দ্যা বেলস্ টোলস” উপন্যাসেও হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে আর্নেস্ট হেমিংওয়ের ভাবার্থক একটি উক্তি আছে। আমার ধারণা অভিজিৎ রায় সম্ভবত ওরকম কোন বিশ্বাসে দেশে এসেছিলেন, না হলে এত হুমকি পাওয়ার পরও দেশে আসবেন কেন? অনন্ত, ওয়াশিকুররাই বা কীভাবে নিশ্চিন্তে চলাফেরা করতেন! হেমিংওয়ে সেখানে বলেছেন, “যুদ্ধক্ষেত্রে তুমি যাকে হত্যা করতে চেয়েছিলে যুদ্ধ শেষে তাকে হত্যা করতে পারো না”। তাই হয়ত ওরা তর্কযুদ্ধের সময় করা হুমকির মূল্য দিতে চাননি। ওনারা হয়ত ভুলে গিয়েছেলেন ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলে এখন গুপ্ত ঘাতকের চাষাবাদ হয়, মহত্মের ছিটেফোটাও আর অবশিষ্ট নেই এখানে। মুক্তযোদ্ধাসকল, আপনারা ভুল ভেবেছিলেন।

হত্যাকাণ্ডগুলো যেভাবে মঞ্চস্থ হয়েছে, তা হুবহু মার্ক টোয়েনের একটি বক্তব্যের সাথে মিলে যায়। ‘ফলোয়িং দ্যা একুয়েটর : এ জার্নি এরাউন্ড দ্যা ওয়াল্র্ড’ এ টোয়েন লিখেছেন- “খুনের আনন্দ উপভোগ করা হয়েছে। খুন দেখার আনন্দও উপভোগ করা হয়েছে। এবং এটাই এখন পর্যন্ত মানব জাতির সাধারণ চরিত্র।”
হত্যাকাণ্ডের পর দেশের মানুষগুলো চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিল যে, মার্ক টোয়েন ভুল বলেননি। ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলে এখন খুনের মহোৎসব হয়, এখানে এখন খুন করার আনন্দ, খুন দেখার আনন্দ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.