![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মাঝে মাঝে অনাকাঙ্খিতভাবে বিপদে পড়ে যেতে পারে যে কেউ। যোগ্য মানুষও খুব ঠেকে যেতে পারে। বিশেষ করে উদ্যোক্তরা বিপদে পড়ে বেশি। হচ্ছে না হচ্ছে না করে এক সময় গিয়ে দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায়। সময়টা কাটিয়ে উঠতে পারলে সব ঠিক হয়ে যায়, সবকিছু দাঁড়িয়ে যায়, তবে কাটিয়ে উঠতে না পারলে একেবারে তলানিতে গিয়ে পড়ার সম্ভাবনাও থাকে।
ধরুণ, অনেক কিছুই করছেন, হয় হয় করে সেগুলো ঠিক এখনো হচ্ছে না, আবার অনেক কিছু হয়েছেও, কিন্তু টাকার অংকে ফেরৎ আসার মত অবস্থা এখনো হয়নি। বিনিয়োগ করেছেন অনেক, তা যেমন টাকা, পাশাপাশি শ্রম এবং মেধা। সব মিলিয়ে সম্ভাবনাময় একটা অবস্থানে আপনি আছেন। কিন্তু বর্তমানের অবস্থা হয়েছে ভয়ঙ্কর। কী করবেন এই অবস্থায়? ক্লোজঅাপনিউজ আপনার জন্য দশটা উপায় বাতলেছে-
১। প্রথমে মেনটাল সেট-আপ ঠিক করুণ । অর্থাৎ, বর্তমান অবস্থাটা মেনে নিন। ধরে নিন জীবনের একটা মোড়ে আপনি অবস্থান করছেন। অন্তত কয়েকজন মানুষকে বেঁছে নিন যাদের সাথে আপনার বর্তমান অবস্থাটা শেয়ার করা যায়।
২। ধার-দেনা থাকলে তাদেরকে আপনার বর্তমান অবস্থার কথা বুঝান, দেব দিচ্ছি না বলে তাদের কাছ থেকে একটা লম্বা সময় নিন, বারে বারে সময় নেওয়ার থেকে তাদের বলুন, তাদেরকে বিশ্বাস রাখতে বলুন। বুঝান যে একটু কাটিয়ে উঠতে পারলেই তাদের টাকাটা সর্বপ্রথম দিয়ে দেবেন।
৩। বাসা ভাড়া বাকী পড়লে মালিকের সাথে কথা বলুন, চেষ্টা করে দেখেন, বাসাটা ছেড়ে না দিয়ে পারা যায় কিনা। সম্ভব না হলে তুলনামূলক অনেক কম ভাড়ায় নতুন একটা বাসা নিন। সবকিছু বন্ধ করে দিয়ে বাড়ি চলে যাওয়া বা স্ত্রী সন্তানদের অন্যত্র (বাড়ি বা শশুর বাড়ি) পাঠিয়ে দেওয়ার চেয়ে খরচ কমিয়ে নতুন করে খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা করা ভালো।
৪। নিজের শিক্ষা এবং অবস্থানের কথা ভুলে যান। এই মহূর্তে একটি চাকরি নিন। হতে পারে চাকরিটাতে আপনার বেতন যোগ্যতার তুলনায় অনেক কম। অবস্থান নিয়েও ভাববেন না। মনে রাখবেন, সাময়ীক সমস্যার কারণে আপনি চাকরি নিচ্ছেন। মূলত একটু কাটিয়ে উঠতে পারলে নিজের কাজেই আবার মনোযোগী হবেন। তাই বলে নতুন চাকরিতে আপনার দায়িত্বে অবহেলা করবেন না। ভাগ্য ভালো হলে নতুন চাকরিটা আপনার জন্য নতুন কোনো পথের সন্ধানও দিতে পারে।
৫। এই সময়ে সবকিছু ফেইস করতে না গিয়ে নিজেকে একটু আড়াল করে রাখাই ভালো। ফেইসবুক বন্ধ করে রাখতে পারেন, মোবাইল নম্বরটাও আপাতত বন্ধ করে দিতে পারেন, নতুন নম্বর ব্যবহার করতে পারেন। তবে পাওনাদার থাকলে মাঝে মাঝে ফোন করে তাদের আশ্বস্থ করতে ভুলবেন না। তাতে আপনার উপর তাদের আস্থা বেড়ে যাবে।
৬। সবকিছুর পরেও নিজের স্বপ্নটাকে বাঁচিয়ে রাখতে ভুলবেন না। ইচ্ছেটা প্রবল হলে নিজের কাজের জন্য সময় আপনি পাবেনই। নিজের প্রতি আস্থা হারাবেন না। শুধু খারাপ সময়টা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করুণ।
৭। স্ত্রী-সন্তানদের সাথে হাসি-ঠাট্টা খুঁনসুটি করতে ভুলবেন না। মনে রাখবেন, সবকিছুতে পয়শা লাগে না। পকেটে একশো টাকা নিয়েও আশেপাশের কোনো জায়গা থেকে বেড়িয়ে আসা যায়। এক কথায়, সমস্যার মধ্যে সব সময় ডুব দিয়ে থাকবেন না, বরং সম্ভাবনা নিয়ে বেশি ভাবুন।
৮। বিপদে পড়লে মনে হয় কিছুই নেই। কিছুই অর্জিত হয়নি। আসলে এতদিনে অাপনি অনেক কিছু অর্জন করেছেন। নিজের সামনে সেগুলো তুলে ধরতে চেষ্টা করুণ। এই মুহূর্তে পদক্ষেপ বাড়াবেন না। এমনকি ছোটখাটো কোনো পদক্ষেপও এড়িয়ে চলুন। নিমন্ত্রণগুলো বিনয়ের সাথে ফিরিয়ে দিন। অনেকে সন্তানদের দুরাবস্থার কথা জনাতে চায় না। এতে সমস্যা বাড়ে। সন্তানদের সাথেও বর্তমান অবস্থা শেয়ার করুণ। তাতে তাদের বাস্তব জ্ঞান বাড়বে এবং তারা সহমর্মী হতে শিখবে।
৯। এই মুহূর্তে আপনি মারাত্মক অর্থকষ্টে আছেন, এতে আপনি ইমেজ সংকটে পড়তে পারেন, অনেকের কাছে ছোট হওয়া লাগতে পারে। তাই নিজেকে একটু সীমাবদ্ধ করে রাখুন। নিজের উপার্জনধর্মী গুণগুলো কাজে লাগিয়ে অায় বাড়ান শুধু। এমনকি যদি আপনি টাইপ করতে পারেন, তাহলে অবসরে টাইপ করেও উপার্জন করুণ। পারলে অাপনার স্ত্রী বাসায় দুটো বাচ্চা পড়াক। আপনিও রাতে দুটো টিউশনি নেন। যেকোনো উপায়ে, তবে পরিশ্রম করে এবং সৎভাবে বর্তমান অবস্থার পরিবর্তন ঘটানোটাই এই মুহূর্তে আপনার একমাত্র লক্ষ্য।
১০। খরচটা একেবারে কমিয়ে নিয়ে আসুন। হিসেব করে দেখুন, যদি ধার-দেনা খুব বেশি থাকে তাহলে উপার্জন করে আপনি কুলাতে পারবেন না, সেক্ষেত্রে স্থায়ী কোনো সম্পদ আপনাকে ছাড়তে হতে পারে। সেটি জমি বা স্ত্রীর গয়না, যা-ই হোক। দেখা গেছে গয়না বন্ধক রেখে টাকা অানার থেকে সবসময় বিক্রী করা লাভজনক। হয়ত বিক্রী করলে আপনি দুই লাখ টাকা পাবেন, কিন্তু বন্ধক রেখে পেলেন দেড় লাখ টাকা। পরে ঠিকই সময়মত টাকা পরিশোধ করে গয়না আর ফেরৎ আনতে পারবেন না। ফলে পঞ্চাশ হাজার টাকা আপনার লসের উপর লস হল।
ভেবে দেখুন, আপনার বাস্তব অবস্থা আপনিই সবচে’ ভালো জানেন। আরো অনেক উপায় নিশ্চয়ই বের হবে। ভেঙ্গে না পড়লে উত্তরণ আপনার হবেই। স্বপ্ন সিঁড়ি বেয়ে একসময় কাঙ্খিত লক্ষ্যে আপনি পৌঁছেও যাবেন।
©somewhere in net ltd.