নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি হব সকাল বেলার পাখি

দিব্যেন্দু দ্বীপ

সংশয়ে সংকল্প সদা টলে

দিব্যেন্দু দ্বীপ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সাহিত্যকর্মের বিচার করবে কে, লেখক নিজে নাকি পাঠক?

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:৫১



কবিতার বিচার, কবিতা শুধু নয়, যেকোনো সাহিত্য কর্মের বিচার কোনোভাবেই কি পরিচিত মহলে বা সমসাময়িক কালের মানুষের কাছে ছেড়া দেওয়া যায়? অবশ্যই যায় না। প্রথম কথা হচ্ছে, সাহিত্যের বিচারভার কোনোভাবেই পাঠকের উপর নয়, সাহিত্যকর্মের বিচার করবে সাহিত্যিক নিজে, সেটি টিকবে কিনা, পাঠক পড়বে কিনা, সে চিন্তা থেকে সাহিত্যকর্মের বিচার হবে না। সাহিত্যিক যদি নিজে তার লেখা তিনি গুরুত্বপূর্ন মনে করেন, তাহলে তিনি লিখে যাবেন। লিখে যাওয়া উচিৎ।

কবিতার বিষয়টি আরো দুর্বোদ্ধ। কবিতার পাঠক খুব কম হওয়াটা অলৌকিক নয়, কবিতাই হচ্ছে একমাত্র মৌলিক সাহিত্য যদি কবিতার লেখক অকবি না হন। মৌলিক সাহিত্য পড়বে এবং বুঝবে এমন পাঠক খুব বেশি আশা করা যায় না। কেউ যদি বিশ্বসাহিত্যের ইতিহাসটা একটু ঘেটে দেখেন তাহলে দেখবেন পৃথিবীর নামজাদা সাহিত্যেকেরা প্রত্যেকেই একটা লম্বা সময় জনবিচ্ছিন্ন ছিলেন। পারিপার্শ্বিকতা বুঝতে হবে, জনগণের সাথে থাকতে হবে, কিন্তু পাঠকের সাথে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক লেখকের জন্য ভালো নয়।

বর্তমানে অকবিরা কবিতার সর্বনাশ করছে, একথা মিথ্যা নয়, তবে সৃষ্টিছাড়া পাঠকও সর্বনাশ কম করছে না। সবচে’ বেশি সর্বনাশ করছে ফেসবুক। ফেসবুকের ভোট যদি আপনি আপনার লেখার মানদণ্ড বলে মানেন তাহলে কোনোদিনই আপনি লেখক নন। যে ফেসবুক ব্যবহার করে শুধু ক্রেতা-বিক্রেতা খুঁজতে চায় সেও চলতি পথে আপনার লেখায় একটি লাইক নিক্ষেপ করতে পারে, তাতে আপনি আনন্দিত হলেও সেটি তো লেখার মানদণ্ড হতে পারে না, পারে কি? ফেসবুকের ‘লাইকের’ বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে একথাও মিথ্যে নয়।

তবে ফেসবুক মূলত বাজারের চায়ের দোকানেরই প্রতিচ্ছবি, এখানে কোনো গাম্ভীর্য বা সিদ্ধান্ত আশা করা বোকামী। হুজুগ তৈরি করাতে ফেসবুকের বিশাল ভূমিকা আছে। আমাদের পছন্দ তৈরি হয় মূলত সংখ্যাগরিষ্টের পছন্দ দ্বারা, একটু বিশ্লেষণ করলেই বুঝবেন বেশিরভাগ মানুষের নিজস্ব কোনো সিদ্ধান্ত থাকে না, তাদের সিদ্ধান্ত তৈরিতে মূল ভূমিকা রাখে ট্রেন্ড। ফেসবুক মূলত এই ট্রেন্ডই।

হুমায়ূন অাহমেদ নিজেকে ট্রেন্ডে পরিণত করে ফেলেছিলেন, এজন্য তার কাছ থেকে মূল্যবান তেমন কোনো সাহিত্যকর্ম জাতি পেয়েছে কিনা সেটি একেবারে অবিতর্কিত বিষয় নয়, তারপরেও তিনি ছিলেন জনপ্রিয়তার শীর্ষে।

ট্রেন্ড তৈরি করা এত সহজও নয়, এটা করতে হলে স্বকীয়তা বিসর্জন দিতে হবেই, সমকালের মানুষের চিন্তা-চেতনা প্রাধান্য দিয়ে সাহিত্য চর্চা করতে গেলে সে সাহিত্য মূলত ‘বাজারের গসিপের লিখিত রূপ’ বৈ কিছু নয়।

সাহিত্য মানে বর্তমান এবং ভবিষ্যতের মধ্যে অন্তত একশো বছর দূরত্বের একটি সেতুবন্ধন তৈরি করা। সেখানে কে উঠবে কে উঠবে না সেটি বিচার করার দায়িত্ব সাহিত্যিকের হতে পারে না। সাহিত্যিকের কাজ লিখে যাওয়া, এবং গল্প-কবিতা-উপন্যাস যাই হোক সেটি শুধুমাত্র কিছু শব্দ বা বাক্য হতে পারে না, সেখানে জীবনদর্শন থাকতে হবে।

মন্তব্য ১৫ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:০৩

ঋতো আহমেদ বলেছেন: সাহিত্যকর্মের বিচার' কেন মশাই ! সাহিত্য চর্চা কি কোনও অপরাধ (!?) যে কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছেন ।

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:২৯

দিব্যেন্দু দ্বীপ বলেছেন: লেখাটি বোঝেননি আপনি। ধন্যবাদ।

২| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:৪৬

জাহিদ অনিক বলেছেন: সাহিত্যের মান লেখকেরই করা উচিত । সহমত ।

৩| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:০৫

আহা রুবন বলেছেন: লেখাটি খুব ভাল লাগল। লেখকের প্রায় সব মতের সঙ্গেই সহমত পোষণ করি। আমি মনে করি লেখকই লেখার সব থেকে বড় বিচারক। যে লেখকের সব লেখাই জনপ্রিয় হয় সে লেখক নয়। তার পাঠকেরাও পাঠক নয় চামচ বিশেষ।

৪| ০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:১৩

মহাসিন মহী বলেছেন: বিষয়টি নিয়ে আরেকটু বলতে পারতেন।

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:২৮

দিব্যেন্দু দ্বীপ বলেছেন: ঠিকই বলেছেন, লেখাটি আচমকা শেষ হয়েছে।

৫| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১:১২

ভ্রমরের ডানা বলেছেন:
কিছু কবিতা দিন। পাঠক পিয়াসি হয়ে আছি!

১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:২৭

দিব্যেন্দু দ্বীপ বলেছেন: ধন্যবাদ। দিব নিশ্চয়ই আপনার জন্য।

৬| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:১২

রাজীব নুর বলেছেন: সত্য বলেছেন।

৭| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৯:১৭

ঋতো আহমেদ বলেছেন: আমি কি বলেছি সেটা বুঝেছেন?

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৭:৫৬

দিব্যেন্দু দ্বীপ বলেছেন: অত বুদ্ধি নেই। অন্যরা বুঝেছে কিনা জিজ্ঞেস করে দেখতে পারেন।

৮| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০০

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: খুব সুন্দর করে লিখেছেন । আপনার বক্তব্যের সাথে সহমত । তবে একথা ঠিক যে সাহিত্যের লিখক ও পাঠক বিশেষ করে বস্তুনিস্ট সমালোচক পাঠক এ দু’জাতের সাহিত্যসেবীর ভাবনা ও সাধনার ফলেই সাহিত্য-শিল্পটা বিকশিত হয়। উভয়ের চিন্তনশৈলী ও সাধনক্ষেত্র ভিন্ন হলেও উদ্দেশ্য কিন্তু প্রায়ক্ষেত্রে এক ও অভিন্ন। বিশেষ করে সাহিত্যের সমালোচক পাঠক ( সেই সমস্ত পাঠক বাদে যারা পাঠ না করেই সাহিত্য কর্মটি ভাল , খুব ভাল , অসাধারণ ধরনের কথা বলে যান ) যদি একজন সৃষ্টিশীল লেখক- সমালোচকও হন, তখন তো মনজিল একই হয় এবং তা সাহিত্যের জন্য খুবই কল্যাণকর।মানুষের ভেতর নিহিত সাহিত্যমানস, সাহিত্যরুচি, সাহিত্যমেধা ও সৃষ্টিপ্রতিভা মানুষকে অবিকশিত থাকতেই দেয় না কোনোদিন। প্রতিভার জগতে মৌলিক স্বভাব সাহিত্য প্রতিভার খেলাই ভিন্ন রকম। তাই এটাও ঠিক যে প্রতিভাবান লিখক সাহিত্যিকদের কর্ম নীজ গুনেই স্থায়ীত্ব পেয়ে যাবে কালের প্রবাহে, । কোন লিখার পাঠক সংখ্যা কিংবা মন্তব্য সংখ্যা দিয়ে সাহিত্য কর্মের মান নির্নয় করা যায়না ।
শুভেচ্ছা রইল

৯| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২২

ক্লে ডল বলেছেন: একমত।

পাঠককে সন্তুষ্ট করতে স্বকীয়তা বিসর্জনের পক্ষপাতী নই। তবে যারা পেশাদার লেখক তাদের ত পাঠকের কথা মাথায় রাখতেই হয়।

১০| ১১ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ১১:১৭

আখেনাটেন বলেছেন:

আপনার প্রথম দিকের কিছু কথার সাথে একমত হওয়া যেতেই পারে।

তবে ''ট্রেন্ড তৈরি করা এত সহজও নয়, এটা করতে হলে স্বকীয়তা বিসর্জন দিতে হবেই''--তার মানে কি সব জনপ্রিয় (আপনার কথা অনুসারে পাঠকপ্রিয়) সাহিত্যিকই ট্রেন্ড তৈরি করতে গিয়ে তাদের স্বকীয়তা বিসর্জন দিয়েছেন। এবং আপনার ভাষ্য মতে তারা সাহিত্যিক হতে পারেন নি। তাহলে কি ধরে নেব বর্তমান সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় ট্রেন্ড তৈরিকারী সাহিত্যিক জাপানের হারুকি মুরাকামি, অালবেনিয়ার ইসমাইল কাদারে, অামেরিকার ফিলিপ রথ কিংবা মিলান কুন্ডেরো, তুরস্কের ওরহান পামুক প্রমুখ জীবিত এই সকল যারা কিনা কেউ নোবেল পেয়েছেন ও কেউ কেউ সামনের বছরগুলোতে পেতে পারেন----আপনার কথা অনুসারে উনারা উনাদের স্বকীয়তা বিসর্জন দিয়ে আজকের বিশ্বে অন্যতম জনপ্রিয় হয়েছেন। উনারা কেউ তাহলে সাহিত্যিক নয়।

প্রত্যেকটি সাহিত্যিকের নিজস্ব একটা ঘরানা থাকে যা ঐ সাহিত্যিককে উনার নির্দিষ্ট ঘরানার কারণে অন্যদের কাছে ট্রেন্ডে পরিণত করে এবং সাহিত্য পাঠকপ্রিয় হয় যা সাহিত্যিককে জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছে দেয়। এতে সাহিত্যের মান কম বা বেশি হয় না।

''সমকালের মানুষের চিন্তা-চেতনা প্রাধান্য দিয়ে সাহিত্য চর্চা করতে গেলে সে সাহিত্য মূলত ‘বাজারের গসিপের লিখিত রূপ’ বৈ কিছু নয়।''--- এই লেখার দ্বারা লেখক কি সেক্সপিয়ারকে সাহিত্যিকের খাতা থেকে নাম কেটে দিলেন। এই ভদ্রলোক কিন্তু পাঠকের কথা চিন্তা করেই একটার পর একটা জনপ্রিয় ড্রামা লিখে গেছেন। দর্শকের প্রতিক্রিয়া লক্ষ করে নতুন করে কাহিনী সাজিয়েছেন। উনার এই সব কি তাহলে ফেলনা? তাহলে সাহিত্য কোনগুলো?

দুর্বোধ্য ভাষায়, প্যাঁচালো কথায়, উপদেশের কচকচানিতে, বর্জ্রনাদের মতো বাক্যে, নীতিকথার বাহুল্যে রচিত সাহিত্যই কি আসল সাহিত্য????? এখনকার পাঠক কি বলে? পাঠক বিচারক না হলে সাহিত্যের বিচার করবে কে?

১৩ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ৮:০২

দিব্যেন্দু দ্বীপ বলেছেন: আপনি যে বৈপরিত্যের কথা বলেছেন তাতে একমত, তবে যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন সেখানে একমত নই। শেকসপিয়ার সেই মানের সাহিত্যিক যিনি কিনা প্রত্যেকটি বাক্যের আড়ালে বাক্যরচনা করেছেন। সমকালের মধ্য দিয়ে পরকাল দেখার ক্ষমতা তার ছিল। অন্য যাদের নাম বললেন তাদেরও সেই ক্ষমতা আছে হয়ত। আসলে আমার লেখাটিকে আপনি সম্প্রসারিত করেছেন। স্বীকার করছি আমার লেখাটিতে কিছু মাত্রার ঘাটতি রয়েছে। বিশ্লেষণে সীমাবদ্ধা কিছু আছে। লেখাটি লম্বা করলে সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠা যেত। আপনি সাহায্য করেছেন, ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.