![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিপা বই পড়ছে,তার বন্ধু বান্ধবের ধারণা সে মরার সময় বই নিয়ে মরবে ,
তার বান্ধবী মৌনি তাকে এসে বললো আমি মনে হয় নীল ভাইকে ভালবাসি!!
:o নিপা শুনে পুরো অবাক,
কী?মানছি তিনি খুব ভাল মানুষ,এই ক দিনে তার কোন খারাপ অভ্যাস আমরা দেখি নি..
তাই বলে কোন খোজ খবর না নিয়ে.......
নিপা ও মৌনি খুব ভাল বান্ধবী, তারা খুব ছোট বেলার বান্ধবী,
নিপা শান্তশিষ্ট, চুপচাপ, এক কথায় খুব ভদ্র একটা মেয়ে,
সে কখনো উচু কন্ঠে কথাও বলে না।
আর মৌনি .....
পুরোই নিপা উল্টো,সব সময় কিছু না কিছু করেই থাকে,
সে বাকপটুও বটে
কিন্তু পড়ালেখায় খুব ভাল
তারা দুইজনেই ঢাকা মেডিকেলের ছাএী।
তাদের পাশের বাড়িতে তাদের এক বান্ধবীর বড় বোনের বিয়ে হচ্ছে,
বান্ধবীর নাম স্নেহা।
স্নেহার্ত বড় ভাইয়ের (প্রসান্ত) বন্ধুর নাম হল নীল।
নীল ছেলেটি হাসিখুশী প্রকৃতির ছেলে, সে সফ্টওয়্যার ইন্জিনিয়ার,
সে সর্বদা অন্যকে সাহায্য করার চেষ্টা করে, সবার সাথে বন্ধুত্ব সুলভ আচরণ করে,
স্নেহা বড় বোনের বিয়েতে সে এসেছে,
প্রশান্তের বাসার সবার অনুরোধে সে এসেছে,
প্রশান্ত সব সময় তার প্রসংশা করে,
কেউ বিশ্বাস করে না,তাই তার সাথে পরিচিত হওয়ার জন্য সবার অনুরোধ।
নীল তাদের অনুরোধেই আসে বিয়েতে!
কিন্তু দু একদিন পর তারা বুঝতে পারে যে প্রশান্ত ওর নামে যা বলেছে সবই তার জন্য কম পরে যাচ্ছে,এত ভাল একটা ছেলে কেমন করে হয়,
সে বলতে গেলে সব কাজ একা হাতেই সামলাচ্ছে, কাউকে কিছুই করতে দিচ্ছে না।
যেন এটা তার বেসনের বিয়ে স সেখানে কাজ করছে....
প্রশান্তির মা তো বলেই দিয়েছে এই আমার ছেলে প্রশান্ত নয়।
বিয়ে থেকে শুরু করে সব কাজ প্রায় স একাই করলো,
মেয়েকে বিদায় দিয়ে সবাই ক্লান্ত।
সবাই রেস্ট নিচ্ছে!
রাতে খাওয়ার সময় প্রশান্তির মা নীলাকে তার সমন্ধে বলতে বললো।
সে বললো নাম নিলয় আহমেদ।
সফ্টওয়্যার ইন্জিনিয়ার, একটা কোম্পানির সাথে চুক্তিতে একটা প্রজেক্ট করছে।
প্রশান্তির মা বললো তোমার মা বাবা সম্পর্কে কিছু বল!!
সে বললো থাক না আন্টি এসব বাদ দেন,পুরোনো স্মৃতি মনে করতে চাচ্ছি না!
সবার জোরাজুরিতে বলতে সম্মত হল।
আমার যখন জন্ম হয় তখন পরিবারের সবাই খুব খুশি হন,
একমাসের মধ্যেই আমার চাচা চাকরি পেয়ে বিদেশে চলে যান,
তিনি মনে করতেন তার চাকরি আমার জন্যই পেয়েছে,
আমায় খুব আদর করতেন!!
তিনি যখন বিদেশ থেকে ফিরে আসছেন তখন আমরা যাই তাকে রিসিভ করার জন্য,
আমার জন্য তিনি অনেক কিছু কিনে এনেছিলেন,
আমার দর সইছিলো না কখন বাসায় গিয়ে এসব দেখবো!!!
কিন্তু ভাগ্য সহায় হল না
হয়তো দেখতে পেয়েছি
কিন্তু যখন আমরা বসায় ফিরছিলাম তখন আমাদের গাড়ি এক্সিডেন্ট করে,
এতে আমার মা বাবা মারা যায় ,চাচা কোন রকমে বেচেঁ যান।
প্রায় ৫ মাস পরে আমি কোরমা থেকে বের হই,
যখন শুনতে পাই মা বাবা আর নেই তখন আর বেচেঁ থাকার ইচ্ছা চলে যায়।
কিন্তু আমার চাচা আমাকে বোঝান।
এর কিছুদিনের মধ্যেই তিনি বিয়ে করেন,তার স্ত্রীও আমাকে খুব স্নেহ করতেন,
চাচা তখন চাকরি ছেড়ে ব্যবসা করা শুরু করলেন,এবং সফল হলেন খুব কম দিনেই।
কিছুদিন পর তাদের একটা মেয়ে হয়,
খুব আদর করতাম,সেও সবসময় আমার কাছাকাছি থাকতো, খেলা করতো ইত্যাদি।
ওর বয়স যখন চার তখন আমাকে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয় পড়ালেখার জন্য।
কারণ আমি এখানে পড়তে পারছিলাম না,সবসময় মা বাবার কথা মনে আসতো,
খুব কান্না করতাম,তাই এসব থেকে দূরে রাখার জন্য আমাকে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
বিদেশ থেকে আসার পর আমার সাথে চাচার মেয়ের কথা বার্তা বেড়ে যায়,
তখন চাচী বলে আমাদের বিয়ে দিয়ে দিতে,
আমি বলি এত তাড়াতাড়ির কী আছে!!!
কিন্তু চাচীর কথা শুনে আমাদের বিয়ে হয়ে যায়।
বিয়ের পর হানিমুনে যাওয়ার জন্য বলে সব ঠিক,আর চাচা চাচীদের সাথে নিয়ে যাব বলে ঠিক করি, তারা ঘোর আপওি জানালেও যেতে বাধ্য করি।
চাচা বলছিল আমরা গিয়ে কী করবো,
আমি বলেছিলাম আমরা করবো প্রথমবার তোমরা দ্বিতীয় বার করো,
যাওয়ার দিনও তারা ঘোর আপওি জানালেও জোর করে তাদের নিয়ে যাই।
কিন্তু রাস্তায় আবার গারি এক্সিডেন্ট হয়,
তিন মাস পর আমি দেখছি ব্যাডে শুয়ে আছি,
আর সবাই মারা গেছে চাচা যাওয়ার সময় সব কিছু আমার নামে লিখে দিয়ে গেছে।
সবার চোখ দিয়ে তখন পানি পারছিলো,
কেউ আর খেতে পারলো না,
নীল উঠে চলে গেছে,
মৌনিও কাঁদছে,
কোন মানুষ পূর্ন থাকতে পারে না,
এতদিন সে পূর্ণ ছিল,কিন্তু আজ থেকে সে অপূর্ণ
সৃষ্টিকর্তা মানুষকে অপূর্ণ রাখে,
নয়তো সে তাকে ভুলে যাবে
তার অপূর্ণতা সে নীলাকে তার মনের কথা বলতে পারে নি।
©somewhere in net ltd.