অন্তকথন

১০ ই জুন, ২০১৬ দুপুর ২:৩৭

আজকাল বাইরে বের হলে অযথাই মানুষের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকি।অদ্ভুত মানুষজনের অদ্ভূত সব কাজ-কারবার লক্ষ করার মাঝেও অন্যরকম ফিলিংস।
শুধু মানুষজন না।ধূলো বালি,গাছের ঝড়া পাতা,ইউনিফর্ম পড়া ছোট্ট বাচ্চাটার হাত থেকে মাত্র ফেলে দেয়া ঝালমুড়ির ঠোঙাটা,খুব সকালে বাড়ির গাড়ি বারান্দায় শুয়ে থাকা বিড়াল কিংবা বাজারের কোনার দিকে যেখানে অল্প ছাই পড়ে আছে,তার উপর মুড়িয়ে ঘুমিয়ে থাকা কোনো কুকুর পরিবার।সব কিছুই দেখতে ভালো লাগে।
সবকিছুর মধ্যেই আলাদা আলাদা দর্শন বিদ্যমান।
এদের মধ্যে মানুষের ফিলোসফিটা পুরোই অনন্য।সবাই নিজ নিজ পরিবৃত্তের মাঝে আবদ্ধ।সবাই একই চক্রের অধীন।জন্মাচ্ছে,চক্র পূরোন করছে,চলে যাচ্ছে।মাঝের সময়টুকুতে লেখা হচ্ছে বিরাট এক মহা জীবন গ্রন্থ।তার কাহিনীতেও বৈচিত্র আছে।
সুখের কাহিনী আছে,দুঃখের কাহিনী আছে,মজার কিংবা ভয়কর সব অভিজ্ঞতা আছে।ছোট্ট ছেলের রঙ পেন্সিলের গল্প আছে,পুতুল খেলা পুতুল বিয়ের গল্প আছে,ভাই-বোনের খুনসুটির গল্প আছে,প্রথম পরশ-মিষ্টি প্রেমের গল্প আছে,একলা রাতের বালিশ ভেজা কান্না আছে,চাইছি ভীষন-পাইনি এমন গল্প আছে,প্রথম সন্তান,তার প্রথম বোলের গল্প আছে,অনেক গুলো ইচ্ছে মারার গল্প আছে।
৯টা-৫টা অফিস করার গল্প,রাত বিরাতের ঝগড়া হওয়ার গল্প,মাঝ বয়সের হিসেবের খাতার গল্প,শেষ বয়সের স্মৃতিচারণ গল্প।
এছাড়াও চরম বৈরাগ্যের গল্প আছে,টগবগে যুবকের অকালে চলে যাওয়ার গল্প আছে,ভীষন চঞ্চল মেয়েটার মরনব্যাধি রোগের গল্প আছে,তাদের দুঃখী মা-বাবার ব্যর্থ দীর্ঘশ্বাসের গল্প আছে।
.
কত গল্প,কত রকমারি গল্প,না?এত গল্পের বোঝা নিয়েও মানুষগুলো পথে হাটে,শেষ সন্ধ্যায় বাড়ির জন্য খাবার কেনে,বাসে ঝুলে,হঠাৎ ঝড়ো হাওয়ায় পুলকিত হয়,বৃষ্টি এলে তো পুরোই উদাস।
.
বস্তু জগতের ফিলোসফিগুলো আবার এরাই তৈরী করে।বৃষ্টি পড়লো,গায়ে হালকা পানির ফোঁটা।বৃষ্টিতো পড়েই খালাস।কিনতু হতভাগা মানুষ ভাবতে বসবে।
পানিচক্রের অধীন এই বৃষ্টির ফোটাটা এর আগে কাকে স্পর্শ করেছিলো?সেকি তার প্রিয় জন?এখন কোথায়?
.
এরা সবকিছুকেই গল্পে রূপ দেবে।হাওয়া-বাতাস,ধূলো-বালি,পথের কুকুর,আকাশ ফালি।কারও রেহাই নেই।
.
অদ্ভুত মানুষ।তার চেয়েও অদ্ভুত তার জীবন।একেকটা জীবন,এককটা দর্শন পত্রিকা,বিরাট এক গ্রন্থ।প্রত্যেকই নিহিত,প্রত্যেকের মাঝে।
ম্যান'স লাইফ ইজ নাথিং বাট আ ফিলোসফি।ট্রাই টু আন্ডার্ট্যান্ড ইট।ইউ উইল সিউরলি আন্ডারস্ট্যান্ড ইওরশেল্ফ।
ভালো থাকুক মানুষগুলো।