![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
চিকিৎসায় কোন রুল অব থাম্ব আছে কি? চিকিৎসায় সবসময় হার্ড এন্ড ফাস্ট রুল অথবা রুল অব থাম্ব কাজ করে না। আর করেনা বলেই চিকিৎসকদের মাঝে মাঝে নিজের কথার বিড়ম্বনায় পরতে হয়। অবশ্য প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমের ব্যাখ্যাও আছে। এমন কিছু ব্যতিক্রমী গল্প বলি।
ঘটনা একঃ
HSG বলেছে উভয় ডিম্বনালী বন্ধ। ভেরিফাই করার জন্য Laparoscopy করা হোল। সেখানেও দেখা গেল উভয় ডিম্বনালী বন্ধ।স্বভাবতঃই সিদ্বান্ত হোল টেস্ট টিউব চিকিৎসা ছাড়া প্রেগন্যান্সি সম্ভব নয়। তিনমাস পরে রোগিনী প্রেগন্যান্সি টেস্ট পজিটিভ নিয়ে হাজির। সেকি বেইজ্জতি ও বিড়ম্বনার কথা!!!
ব্যাখ্যাঃ
ডিম্বনালী স্মুথ মাসল দিয়ে তৈরী। কখনও কখনও স্পাজম হয়ে ডিম্বনালীর কর্নু সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। যেটি HSG এ বেশী হয়। কদাচিত ল্যাপেরোস্কপিতেও হতে পারে। এজন্যই ডিম্বনালী দিয়ে কোন তরল পদার্থ প্রবেশ করতে পারে না। ফলে টেস্ট রেজাল্ট নেগেটিভ আসে। ডিম্বনালীগুলোর বাহ্যিক চেহারা সম্পূর্ন ভাল থাকে।উভয় ক্ষেত্রেই ইনজেকশন visceralgin, smooth muscle relaxant দিয়ে দুই তিন মিনিট গল্প করে আবার ডাই পুশ করুন, স্পাজম চলে যাবে এবং টেস্ট পজিটিভ পেতে পারেন।
ঘটনা দুইঃ
বার বার শুক্রানু পরীক্ষায় শুক্রানুর মাত্রা ও গতিশীলতা যারপরনাই কম। স্বভাবিকভাবে প্রেগন্যান্সি হবার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। অনেক মেডিকেশন এবং প্রতীক্ষার পরেও যখন হোল না তখন ডিকলার করা হোল টেস্ট টিউব চিকিৎসা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। টেস্ট টিউব চিকিৎসায় সাফল্য এল।পরবর্তীতে আর বাচ্চা হওয়া থামছেই না। তাহলে ঐ ডিকলারেশনের কি হোল?
ব্যাখ্যাঃ
শুক্রানুর কম মাত্রা এবং কম গতিশীলতার অসংখ্য কারন থাকলেও নব্বই শতাংশই ইডিওপ্যাথিক বা কারন ছাড়া। তবে stress এমন একটি কারন যা চোখে দেখা যায় না, পরীক্ষা নিরীক্ষায় ধরা পরে না। শুক্রানুর অবস্থা খারাপ শোনার পর থেকে পুরুষালী ইগোতে যে আঘাত হেনেছে তা থেকে আর বেরিয়ে আসা কঠিন হয়ে পরেছিল। সন্তান জন্মদানের পরে আত্মবিশ্বাস ফিরে আসায় stress কমে যাওয়ায় স্পারমাটোজেনেসিস স্বাভাবিক হয়ে যায়। তাই কাউন্সেলিং এ বলতে হবে এই মুহূর্তে এই সিমেন প্যারামিটার দিয়ে স্বাভাবিকভাবে প্রেগন্যান্সি হওয়া সম্ভব নয়। ভবিষ্যতে আপনা আপনি ঠিক হলেও হতে পারে তবে ততদিনে স্ত্রীর প্রোফাইল খারাপ হয়ে যেতে পারে। সুতরাং টেস্ট টিউব চেষ্টা করা বাঞ্ছনীয়।
ঘটনা তিনঃ
এজোস্পারমিয়ার পেসেন্ট, যার সিমেনে শুক্রানু অনুপস্থিত। এপিডিডাইমাল এ্যস্পিরেশনে পাওয়া গেলনা। টিস্যু বায়োপসি বলল ম্যাচিউরেশন এ্যারেস্ট। অর্থাৎ কোন শুক্রানু ম্যাচিউর হয় না। এটি একটি জেনেটিক প্রবলেম। প্রতিকারের উপায় নেই। একমাত্র ইমম্যাচিউর স্পার্ম ওভামের ভিতর ইনজেক্ট করা ছাড়া আর কোন উপায়ে হবার সম্ভাবনা নেই। যাকে বলে ROSNI (Round spermatid nucleus injection). যেহেতু ফার্টিলাইজেশনের জন্য স্পার্মের মাথার নিউক্লিক এসিডই দরকার তাই ইকসিতে ম্যাচিউর ইমম্যাচিউর কোন ফ্যাক্টর নয়। ROSNI খুব কম জায়গাতেই হয় টেকনিক্যালি খুব ডিফিকাল্ট বলে। খরচও অনেক বেশি। আমাদের দেশে এই সুবিধা নেই।
তিন মাস পরে স্বামী ফোন করে অত্যন্ত গর্বের সাথে জানালেন, “ কই বলেছিলেন না যে কোনভাবেই স্বাভাবিক ভাবে বাচ্চা হবে না। আমার স্ত্রীর প্রেগন্যান্সি টেস্ট পজিটিভ”। শুনে চক্ষু চড়কগাছ!
ব্যাখ্যাঃ
এবারের ব্যাখ্যা চিকিৎসকের নয়। এবারের ব্যাখ্যা পেসেন্টের। “বিবি মরিয়মেরতো স্বামী ছাড়াই বাচ্চা হয়েছিল। আমার ওয়াইফেরতো স্বামী আছে”।
--------
প্রফেসর ডা. রাশিদা বেগ
লেখাটি আমার লেখা নয়। লেখাটি এই পোস্ট এ প্রকাশিত
©somewhere in net ltd.