নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এভো

এভো › বিস্তারিত পোস্টঃ

যে ১২টা কাজ সব ছাত্র ছাত্রীদের অবশ্যই করনিয় .।

০৬ ই জুন, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৭

স্টুডেন্ট লাইফে যে বারোটা কাজ করতেই হবে

১. নিজস্ব ইনকাম: তুমি কোটিপতির সন্তান হলেও- স্টুডেন্ট লাইফে তোমাকে কিছু না, কিছু ইনকাম করতেই হবে। তাতে রেস্পন্সিবিলি কিভাবে নিতে হয়। কিভাবে অন্যকে সার্ভ করতে হয়। কাজ দিয়ে হ্যাপি রাখতে হয় সেটা শিখতে পারবে। এই ইনকাম টিউশনি দিয়ে, কোচিং সেন্টারে ক্লাস নিয়ে, পার্টটাইম চাকরি দিয়ে হতে পারো। বন্ধুদের কাছে বা আশেপাশের মানুষের কাছে কিছু বিক্রি করে (হালের বিশ্বকাপ জার্সি) যেটাই হোক না কেন, বেশ কয়েকবার ইনকাম করার চেষ্টা তোমাকে করতেই হবে।

২. MS Excel: তুমি ইঞ্জিনিয়ারিং/মেডিকেল/কিংবা হিস্ট্রি যে সাবজেক্টেই পড়ো না কেন। বেসিক Excel তোমাকে শিখতেই হবে। কিভাবে excel এ যোগ করে, এভারেজ বের করে। চার্ট বানায়, ফর্মুলা এপ্লাই করে, ডাটা ফিল্টার করে, ফর্মুলা বাদে ভ্যালু কপি-পেস্ট করে। একাধিক ওয়ার্কশীট থেকে ডাটার সামারি করে। সেটা তোমাকে জানতেই হবে। জাস্ট এক সপ্তাহ সময় দাও। নিজের কম্পিউটারে এক্সেল না থাকলে, গুগল ড্রাইভের গুগল শিট (sheet) এ কিভাবে করে শিখে ফেল।

.

৩. ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট: বন্ধুদের ঘুরতে যাওয়া হোক কিংবা ক্যাম্পসে কোন ইভেন্ট হোক- সেটা ইফতার পার্টি, বৈশাখী মেলা, rag পার্টি, জব ফেয়ার, এলামনাই রিউনিয়ন। যেটাই হোক তোমাকে ইভেন্টের একজন মেইন অর্গানাইজার হতেই হবে। তাহলে তুমি বুঝতে পারবে কিভাবে বিভিন্ন ধরনের মানুষ হ্যাডেল করতে হয়। কিভাবে বাজেট করতে হয়। প্লানিং করতে হয়। মানুষের কাজ থেকে হেল্প আদায় করতে হয়। ১৫-২০ টা জিনিস একসাথে কম্বাইন করার প্রাকটিক্যাল ট্রেনিং ফ্রি ফ্রি আর কোথাও পাবা না।


৪. বেসিক ইংলিশ: তুমি দেশের সেরা ভার্সিটি বা সবচেয়ে খারাপ কলেজের ডিগ্রি কোর্স পড়ো না কেন। ইংরেজি নরমাল কথা বার্তা চালিয়ে যাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতেই হবে। কোন একটা ইংরেজি পত্রিকা ধরে সেখানে কি নিয়ে নিউজ করছে সেটা বুঝার যোগ্যতা অর্জন করতেই হবে। নিজের সম্পর্কে বা দেশের সম্পর্কে এক বসায় দুই তিন পাতা ইংরেজিতে লেখার যোগ্যতা তৈরি করতে হবে। ইংরেজি শিখার জন্য ইউটিউবে প্রচুর ভিডিও আছে। ২ মাস ইংরেজি ভিডিও দেখে দেখে রুম বন্ধ করে ওদের কথার সাথে নিজে নিজে উচ্চারণ প্রাকটিস কর। দেখো তোমার ইংরেজি লেভেল কই থেকে কই চলে গেছে।

.

৫. এরিয়া অফ ইন্টারেস্ট: তুমি যে সাবজেক্টেই পড়ো না কোন। যে ফিল্ডেই পড়ো না কেন। তোমাকে সেই ফিল্ডের যেকোন একটা এরিয়াতে তোমার টেক্সট বইয়ের/ ক্লাসের পড়ার বাইরে বেশি জানতে হবে। সেটার জন্য তুমি এক্সট্রা বই পড়তে পারো। গুগলে সার্চ দিয়ে আর্টিকেল বের করে পড়তে পারো। সেই ফিল্ডের ব্লগ বা রিসার্চ পেপার থাকলে সেগুলা জানতে হবে। নিজের ভিতরে কিউরিসিটি গ্রো করতেই হবে। তারপর যা যা শিখছো সেগুলা একটা একটা করে সামারি লিখতে হবে। সেই সামারি কোথাও না কোথাও পাবলিশ করার চেষ্টা করবা। ডিপার্টমেন্টের ম্যাগাজিন। সেটাও না পারলে বিশ্বের সেরা পাবলিশার ফেইসবুকে পাবলিশ করে দিবা। দুই একজন বন্ধু টিটকারি মারলেও তুমি কী কী শিখছো সেটা ফেইসবুকে পোস্ট করে দিবা।

৬. বেস্ট ফ্রেন্ড: তোমার একজন বেস্ট ফ্রেন্ড বানাতেই হবে। একটা ফ্রেন্ড সার্কেল থাকবে। তবে ফ্রেন্ড সার্কেলের মধ্যে বা বাইরে তোমার একজন বেস্ট ফ্রেন্ড থাকবেই। যার সাথে মিলে তুমি অনেক কিছু করবে। অনেক জায়গায় যাবে। দুজনের ইন্টারেস্ট লেভেল কাছাকাছি থাকবে। একজন আরেকজনকে হেল্প করবে। এই ক্লোজনেস তোমাকে ডাউন টাইমে হেল্প করবে। ফিউচার ঠিক করতে হেল্প করবে। কারণ সব বন্ধুর সাথে সব শেয়ার করা যায় না। বেস্ট বাডি না থাকলে- ইয়াং লাইফে নিজের ভিতরের ইমোশনাল অত্যাচারটা বড্ড রকমের বেশি হবে।

.

৭. নেটওয়ার্কিং: তুমি যে ফিল্ডে কাজ করতে চাও। সেই ফিল্ডের কমপক্ষে দশজনের সাথে তোমার কানেকশন থাকতে হবে। তারা হতে পারে তোমার সিনিয়র। অন্য ভার্সিটির সিনিয়র বা অন্য কোথাও থেকে পাশ করা প্রফেশনাল হতে পারে। দেশের বাইরের কেউ হতে পারে। হয়তো কোন ওয়ার্কশপ বা সেমিনারে এ গিয়ে তাদের সাথে পরিচয় হইছে। তাদের সাথে তোমার যোগাযোগ থাকবে। তারা জানবে তুমি কোন কোন জিনিসে ভালো। তোমার প্যাশন কি। ফিউচার প্ল্যান নিয়ে তাদের সাথে ডিসকাস করবা।

.

৮. বিল্ড ইউর রেজুমি: চার বছর ভার্সিটি পড়ার পর যদি দেড় পাতা রেজুমি লেখার মেটেরিয়াল তোমার লাইফে না থাকে তাইলে তুমি কি করলা, নাবিলা? তোমাকে এক্সট্রা কারিকুলার এর সাথে জড়িত থাকতেই হবে। যেকোন একটা অর্গানাইজেশনের সাথে। সেরকম কোন অর্গানাইজেশন না থাকলে তুমি এবং তোমার বন্ধুরা মিলে একটা দিয়ে ফেলবে। সিনিয়র ভাইদের কাছ থেকে তাদের সিভি/রেজুমি জোগাড় করে ফেলবা। দরকার না থাকলেও সেকেন্ড ইয়ারে/থার্ড ইয়ারে তোমার একটা রেজুমি বানিয়ে ফেলবে। bdjobs এ গিয়ে দুই একটা জব সার্কুলার দেখে ঠিক করবে তারা কী কী চায়। তাহলে বুঝতে পারবে কোন কোন জায়গায় গ্যাপ আছে। তখন সেই গ্যাপগুলার এরিয়াতে ইমপ্রুভ করে ফেলবে।

.

৯. MS Word/Powerpoint: তুমি যেই লাইনেই পড়ো কেন। MS word এ কিভাবে রিপোর্ট ফরম্যাট দিতে হয় , অটোমেটিক টেবিল অফ কন্টেন্ট কিভাবে বানাতে হয়। ট্রেকিং চেইঞ্জ, রেফারেন্স এড করার বিষয়গুলো জানতে হবে। একইসাথে ভালো পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন বানানোর চেষ্টা করবে। তোমার ক্লাসে প্রেজেন্টেশন না থাকলে নিজেই নিজের জন্য বানিয়ে ফেলবে। how to make good powepoint presentation লিখে গুগলে সার্চ দিয়ে শিখার জন্য চেষ্টা করতে হবে।

১০. স্ট্রেজে উঠতে হবে: স্টুডেন্ট লাইফে একবার না একবার তোমাকে স্টেজে উঠতেই হবে। মিনিমাম ৫০জন মানুষের সামনে। সেটা বক্তৃতা দিতে হোক। উপস্থাপনা দিতে হোক। বা নাচ, গান/নাটক কিছু পারফর্ম করতে হোক। তোমাকে পাবলিকের সামনে দাঁড়ানোর ভয় কাটানোর এর চেয়ে ভালো সুযোগ স্টুডেন্ট লাইফের বাইরে কোথাও পাবা না।

.

১১. এক্সটা নলেজ: পাঠ্য বইয়ের বাইরের জগতে তোমাকে হানা দিতেই হবে। সেটা হতে পারে কিছু বিখ্যাত বই পড়ে (বাংলায় বা ইংরেজিতে)। উপন্যাস বা আত্ন উন্নয়নমূলক বা অন্য কোন ক্যাটাগরির বই। হতে পারে কিছু অস্কার বিজয়ী সিনেমা। মোস্ট পপুলার TED talks গুলা দেখলে। অন্য ডিপার্টমেন্টের ছেলেপুলেরা কী কী নিয়ে পড়তেছে সেটা নিয়ে মাঝে মধ্যে গল্প করলা। তাইলে তুমি তোমার জগতের বাইরের কিছু জিনিস সম্পর্কে অবগত হলে। আর তার পাশাপাশি প্রোগ্রামিং ল্যাংগুজে কি জিনিস। কোন একটা প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ এর প্রাথমিক ধারণাগুলো নিয়ে রাখতে হবে।

১২: ব্যক্তিগত প্রিপারেশন: তোমার একটা ব্যাংক একাউন্ট থাকতে হবে। টিউশনি করে হোক বা যেভাবেই হোক পাশ করার পর তিন-চার মাস চলার মতো টাকা তোমার ব্যাংকে থাকতে হবে। কারণ পাশ করার পরের দিনই সবাই চাকরি পেয়ে যাবে না। তোমাকে দুই জোড়া ফর্মাল ড্রেস কিনে রাখতে হবে। ইন্টারভিউ দিতে যাওয়ার সময় কাজে লাগবে।
(দশটা বলছিলাম, দুইটা অগ্রিম ঈদ বোনাস হিসেবে দিয়া দিলাম )

.
মনে রাখবে- তোমার নিজেকেই নিজে গড়ে নিতে হবে। তোমার ভার্সিটি তোমাকে গড়ে দিবে না। শুধু একটা প্লাটফর্ম দিবে। সেই প্লাটফর্ম কাজে লাগানোর দায়িত্ব তোমার।

এই চেকলিস্ট ধরে ধরে এখন চেক করো- ১২ টা পয়েন্টের কোন কোন জায়গায় তোমার ঘাটতি আছে। সেগুলা ঠিক করার জন্য আজকে থেকেই কাজে নেমে পড়ো। তাহলে ছয় মাস বা এক বছর পরের তুমি, আজকের তুমির চাইতে অনেক বেশি আত্মপ্রত্যয়ী এবং যোগ্য হবে। সেটা দেখার অপেক্ষায় থাকলাম।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৯:৪২

নজসু বলেছেন: এটা তো সুন্দর গঠনমূলক পোষ্ট।

অনেক ধন্যবাদ সুন্দর একটি পোষ্ট করার জন্য।

২| ২৩ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:১৮

সোনালি কাবিন বলেছেন: অপ্রাসংগিক হলেও বলি, এক্টু ভাবুন তো, জাকিরের বহু আগে থেকেই বহুত তরজমা, টিরান্সলেশন হইসে। অকে? জাকির বহুত পরে আইয়া এক্কেরে গুপ্তার্থ বাইর কইরালছে!!

৩| ২৩ শে এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:২৩

সোনালি কাবিন বলেছেন: কুরআনের আয়াতকে নিয়ে জাকির নায়েক মনগড়া ব্যাখ্যা এবং জাহিলিয়াতিতে নাম্বার ১
.
======== =======
.
# ডাঃ_জাকিরের_কুরআনের_অর্থ_বিকৃতির
রহস্য কি..... ?
.
যেখানে দাহাহা(ﺩﺣﺎﻫﺎ ) শব্দের অর্থ সকল হাদীস,তাফসীর ও আরবী অভিধানে "তিনি তাকে বিস্তৃত করেছেন" করা হয়েছে,কোথাও "উটপাখীর ডিম" করা হয়নি, সেখানে ডাঃজাকির "দাহাহা( ﺩﺣﺎﻫﺎ "( অর্থ "উটপাখীর ডিম" কোত্থেকে আমদানি করল?
.
# প্রকৃত_পক্ষে_ﺩﺡﺍﻫﺎ _শব্দের_অর্থ_কি ?
.
দাহাহা(ﺩﺣﺎﻫﺎ ) শব্দে ﺩﺣﺎ হচ্ছে ক্রিয়া,ক্রিয়ামূল ﺩﺣﻮ অভিধানসমূহে এর অর্থ লেখা হয়েছে : ﺑﺴﻂ،ﻭﺳﻊ،ﻣﺪ তিনি বিস্তৃত করেছেন, বিচিয়েছেন, প্রলম্বিত করেছেন।
.
(দ্রষ্টব্যঃ লিসানুল আরব, ২২৭ পৃষ্টা/ আল ক্বামুসুল মুহীত, ৩৩২ পৃষ্ঠা/ লুগাতুল কোরআন ২৭৬ পৃষ্টা প্রভৃতি)
.
আর ﻫﺎ হচ্ছে ﺿﻤﻴﺮ ﻣﻨﺼﻮﺏ ﻣﺘﺼﻞ বা যুক্ত কর্মবাচক সর্বনাম।
.
অর্থঃ "তাকে" সব মিলিয়ে শব্দটির অর্থ প্রসঙ্গে প্রখ্যাত আরবী বিশারদ আল্লামা আবু হাইয়্যান (রহ) বলে_____________
.
” ﺩﺣﺎﻫﺎ “ ﺑﺴﻄﻬﺎ ﻭﻣﻬﺪﻫﺎ ﻟﻠﺴﻜﻨﻲ ﻭﺍﻻﺳﺘﻘﺮﺍﺭ ﻋﻠﻴﻬﺎ
.
দাহাহা(ﺩﺣﺎﻫﺎ ) অর্থ --আল্লাহতা'লা পৃথিবীকে বসবাস ও অবস্থানের জন্য বিস্তৃত করেছেন এবং বিচিয়েছেন।
.
(আজওয়াউল বায়ান, ৩য় খন্ড,৪২২ পৃষ্টা)
.
এ আয়াতের তাফসীর প্রসঙ্গে বিখ্যাত মুফাসসীর ইমাম আবুল ফিদা ইসমাঈল ইবনে উমর কাসীর (রহ.) বলেন____________
.
ﺗﻔﺴﻴﺮﻩ ﻣﺎ ﺑﻌﺪﻩ : ” ﺍﺧﺮﺝ ﻣﻨﻬﺎ ﻣﺎ ﺀﻫﺎ ﻭﻣﺮﻋﻬﺎ ﻭﺍﻟﺠﺒﺎﻝ ﺍﺭﺳﻬﺎ “
.
এ আয়াতের তাফসীর হচ্ছে পরবর্তি আয়াতদ্বয়: তিনি এর মধ্য থেকে নির্গত করেছেন তার পানি ও তার চারনস্থল এবং পাহাড়কে দৃঢ়ভাবে স্থাপন করেছেন।
.
(তাফসীর ইবনে কাসীর, ৮ম খন্ড, পৃষ্ঠা ৩১৬)
.
এ কথার ব্যাখ্যা করে রঈসূল মুফাসসীরিন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন________
.
” ﺩﺣﺎﻫﺎ ﻭﺩﺣﻴﻬﺎ ﺍﻥ ﺍﺧﺮﺝ ﻣﻨﻬﺎ ﺍﻟﻤﺎﺀ ﻭﺍﻟﻤﺮﻋﻲ ﻭﺷﻘﻖ ﻓﻴﻬﺎﺍﻻﻧﻬﺎﺭ ﻭﺟﻌﻞ ﻓﻴﻬﺎ ﺍﻟﺠﺒﺎﻝ ﻭﺍﻟﺮﻣﺎﻝ ﻭﺍﻟﺴﺒﻞ ﻭﺍﻻﻛﺎﻡ ﻓﺬﻟﻚ ﻗﻮﻟﻪ “ ”_____ ﻭﺍﻻﺭﺽ ﺑﻌﺪ ﺫﻟﻚ ﺩﺣﺎﻫﺎ “
.
দাহাহা (ﺩﺣﺎﻫﺎ ) অর্থ__আল্লাহ পৃথিবীকে বিস্তৃত করেছেন এর ব্যাখ্যা হলোঃ_____তিনি যমিনে পানি ও চারণক্ষেত্র নির্গম করেছেন এবং সেখানে নদী-নালা তৈরী করেছেন আর সেখানে পাহাড়সমূহ, উপত্যকাসমূহ, রাস্তাঘাট এবং তরিতরকারি ও ফল-ফলাদি সৃষ্টি করেছেন। পবিত্র কুরআনের বাণী__ “ ﻭﺍﻻﺭﺽ ﺑﻌﺪ ﺫﻟﻚ ﺩﺣﺎﻫﺎ ” দ্বারা এটাই বুঝানো হয়েছে।
.
(দ্রষ্টব্যঃ তাফসীর ইবনে কাসীর,৮ম খন্ড, ৩১৫ পৃষ্ঠা)
.
এভাবে হাদীস ও তাফসীরে (ﺩﺣﺎﻫﺎ ) দাহাহা শব্দের অর্থ "আল্লাহ পৃথিবীকে বিস্তৃত করেছেন" করা হয়েছে। কোথাও "উটপাখীর ডিম" করা হয়নি।
.
(প্রমানের জন্য আরো দেখুনঃ তাফসীরে তাবারী,১৪ খন্ড, ২০৮ পৃষ্ঠা/ তাফসীরে বাগাবী, ৮ম খন্ড, ৩২৯পৃষ্ঠা/ তাফসীরে কাবীর, ৮ম খন্ড, ৪১৮ পৃষ্ঠা/ তাফসীরে ঈযাহুল কোরআন, ৯ম খন্ড, ৪২৪ পৃষ্টা প্রভৃতি)
.
কিন্তু কোথাও একথার উল্লেখ নাই যে,( ﺩﺣﺎﻫﺎ ) এর অর্থ "উটপাখীর ডিম"।
.
কিন্তু জাকির সাহেব নিজের থিউরি প্রমান করতে গিয়ে পবিত্র কোরআনকে বিকৃত করে মনগড়া অর্থ ও ব্যাখ্যা করে। এটা ডাঃ জাকিরের মূর্খামী ছাড়া নয়তো কি...?
.
জাকির নায়েক তাঁর বইতে বলেন, ১৫৯৭ সালে “স্যার ফ্রান্সিস ডেইকই”
.
প্রথম পৃথিবীর চারপাশে ভ্রমণের পর প্রমাণ করেন যে, পৃথিবী গোলাকার। আমি ফ্রান্সিস ডেইকই বলে কাউকে খুঁজে পাইনি।
তবে যিনি এই ইতিহাসখ্যাত নৌকাভ্রমণটি সম্পন্ন করেন, তিনি “ফ্রান্সিস ড্রেক”; সেটিও আবার ১৫৯৭ সালে নয়, ১৫৫৭ সালে। অনেকে ভাবতে পারেন, এটা ছোটখাটো ভুল। না, যে-ব্যক্তি কোরআন, গীতা, বাইবেলের কোথায় কোন কথা লেখা আছে, গরগর করে বলে দিতে পারে, তার পক্ষে এই ভুল কোনো ছোট ভুল নয়।
.
যাই হোক, এখানে তিনি এই আয়াতটি তুলে ধরেন:
.
"তুমি কি দেখ না যে, আল্লাহ রাত্রিকে দিবসে প্রবিষ্ট করেন এবং দিবসকে রাত্রিতে প্রবিষ্ট করেন? তিনি চন্দ্র ও সূর্যকে কাজে নিয়োজিত করেছেন।
.
প্রত্যেকেই নির্দিষ্টকাল পর্যন্ত পরিভ্রমণ করে। তুমি কি আরও দেখ না যে, তোমরা যা কর, আল্লাহ তার খবর রাখেন?" (কোরআন ৩১:২৯)
.
‘আল্লাহ রাত্রিকে দিবসে প্রবিষ্ট করেন এবং দিবসকে রাত্রিতে প্রবিষ্ট করেন’ - এ থেকে বোঝা গেলো পৃথিবী গোলাকার। বড়োই হাস্যকর! ঠিক যেমন, ব্রাজিলে এক প্রজাপতি পাখা ঝাপটালো আর টর্নেডো তৈরি হল টেক্সাসে। জাকির নায়েক এখানে যে-যুক্তিটি তুলে ধরেন, তা হলো - রাত ধীরে ধীরে এবং ক্রমশ দিনে রূপান্তরিত হয়।
.
এ ঘটনা কেবল পৃথিবী গোলাকার হলেই সম্ভব। পৃথিবী চ্যাপ্টা হলে নাকি রাত দিনের এই পরিবর্তন আকস্মিক হয়ে যেত। জিনিসটা ক্লিয়ারলি বোঝা গেলো না। পৃথিবী চ্যাপ্টা হলে এই পরিবর্তন কেন আকস্মিক ঘটতো, তার ব্যাখ্যা জাকির নায়েকের কাছে জানতে চাই। তিনি এর পর এই আয়াতটি তুলে ধরেন:
.
"তিনি আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন যথাযথভাবে। তিনি রাত্রিকে দিবস দ্বারা আচ্ছাদিত করেন এবং দিবসকে রাত্রি দ্বারা আচ্ছাদিত করেন এবং তিনি সুর্য ও চন্দ্রকে কাজে নিযুক্ত করেছেন প্রত্যেকেই বিচরণ করে নির্দিষ্ট সময়কাল পর্যন্ত। জেনে রাখুন, তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল।" (কোরআন ৩৯:৫)
.
এখানেও সেই একই যুক্তি, পৃথিবী গোলাকার না হলে নাকি রাতকে দিন দ্বারা ও দিনকে রাত দ্বারা আচ্ছাদিত করা সম্ভব নয়।
.
আমি জাকির নায়েককে Gods of Egypt মুভিটা দেখার অনুরোধ জানাবো। যেখানো পৃথিবী চ্যাপ্টা হওয়া সত্ত্বেও দিন রাতের পরিবর্তন সুষমভাবে (যেমনটা এখন হয়) হয়। এবং সম্পূর্ণ যৌক্তিক পদ্ধতিতেই। এখানে সেই কল্পিত দেবতা আর কোরআনের আয়াতের মধ্যে পার্থক্য নেই। এর পরের যে-আয়াত জাকির নায়েক উল্লেখ করেন, সেটি হলো:
.
"পৃথিবীকে এর পরে বিস্তৃত করেছেন।" (কোরআন ৭৯:৩০)
.
জাকির নায়েক এখানে বলেছেন, এই আয়াতে ব্যবহৃত আরবি শব্দ "দাহাহা" (ﺩَﺣَﺎﻫَﺎ ) অর্থ উটপাখির ডিম, যা দ্বারা কোরআনে পৃথিবীর আকার বোঝানো হয়েছে। অর্থটি এমন হলে ঠিকই ছিলো, কিন্তু দাহাহা নিয়ে ডাহা মিথ্যাচার করেছেন তিনি।
.
দাহাহা অর্থ উটপাখির ডিম নয়। দাহাহা অর্থ হলো বিস্তৃত করা বা ছড়িয়ে দেয়া।
.
ডাক্তার জাকির নায়েকের থিউরি “যদি তা বিজ্ঞানের সাথে মিলে, তাহলে বুঝে নিন–তা আল্লাহর বাণী”–এ থিউরি অনুযায়ী তো যে কেউ বিজ্ঞানের থিউরি অনুযায়ী কথা বানিয়ে তাকে ‘আল্লাহর বাণী’ বলে দাবী করতে পারে! কেননা, ডাক্তার জাকির নায়েকের থিউরি মতে তা আল্লাহর বাণী হওয়ার তো প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে যে, তা বিজ্ঞানের সাথে মিলেছে! তখন তার বানানো কথাকে আল্লাহর বাণী নয় বলবেন কী করে? (নাউযুবিল্লাহ)
.
আর বাস্তবেও ডাক্তার জাকির নায়েক এমন অপকীর্তিই করেছেন। তিনি (কুরআনের আয়াতের অর্থ বর্ণনায়) নিজের পক্ষ থেকে কথা বানিয়ে তাকে ‘আল্লাহর বাণী’ বলে দাবী করেছেন এবং তাকে আল্লাহর বাণী বলে প্রমাণ করতে তিনি তাকে তার কথিত বিজ্ঞানের সাথে মিল করে দেখিয়েছেন (নাউযুবিল্লাহ)।
.
উদাহরণ স্বরূপ, পবিত্র কুরআনে সূরাহ নাযি‘আত-এর ৩০ নং আয়াতে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন– ﻭَﺍﻟْﺄَﺭْﺽَ ﺑَﻌْﺪَ ﺫَٰﻟِﻚَ ﺩَﺣَﺎﻫَﺎ অর্থ–“আসমান সৃষ্টির পর আল্লাহ পৃথিবীকে বিস্তৃত করেছেন”। কিন্তু ডাক্তার জাকির নায়েক মনে করেছেন–কুরআনের এ আয়াত দ্বারা পৃথিবী সমতল হওয়া বুঝা যাচ্ছে–যা তার ধারণানুযায়ী বিজ্ঞানের সাথে মিলতেছে না। বিজ্ঞানের থিউরির সাথে মিলতে হলে এ আয়াতে পৃথিবীকে গোল বুঝাতে হবে।
.
তাই ডাক্তার জাকির নায়েক এ আয়াতের অর্থকে পরিবর্তন করে নিজের পক্ষ থেকে এ আয়াতের অর্থ বানিয়ে বলেন যে, এ আয়াতের অর্থ হলো–“He made the earth egg-shaped (আল্লাহ পৃথিবীকে ডিম্বাকৃতি করে সৃষ্টি করেছেন)।” এরপর মনগড়া তথ্য দিয়ে ডাক্তার জাকির নায়েক টিকা টেনে বলেন,
.
“The Arabic word ‘dahhaahaa’ is derived from ‘Dahhyah’ which means ‘egg’ ”
.
(এখানে আরবী ﺩَﺣَﺎﻫَﺎ (দাহাহা) শব্দ ‘দাহইয়া’ থেকে এসেছে যা ডিম বুঝায়)।” এভাবে ডাক্তার জাকির নায়েক বলেন যে, “ ﺩَﺣَﺎﻫَﺎ শব্দের অর্থ উটপাখির ডিম।
.
এখানে কুরআন বলছে, উটপাখির ডিমের আকৃতি হচ্ছে পৃথিবীর ভূ-গোলকীয় আকৃতির ন্যায়।”
.
(দ্রষ্টব্য : ডা. জাকির নায়েক লেকচার সমগ্র, ভলিয়াম নং ১, পৃষ্ঠা নং ৭৭ ॥ প্রকাশনায় : পিস পাবলিকেশন–ঢাকা)
.
ডাক্তার জাকির নায়েকের উক্ত বক্তব্যের ভিডিও-স্ক্রিপ্ট ইন্টারনেটের ইউটিউবে “Quran & Modern Science Conflict or Conciliation | Dr Zakir Naik” নামে রয়েছে।
.
এ ছাড়াও ডাক্তার জাকির নায়েকের উক্ত বক্তব্যের বাংলা ডাবিংকৃত ভিডিও ইউটিউবে “Bangla! Qur’an and Modern Science-Conflict Or Conciliation By Dr.Zakir Naik” নামে রয়েছে।
.
আসতাগফিরুল্লাহ, ডাক্তার জাকির নায়েক পবিত্র কুরআনের আয়াতের অর্থকে কীভাবে পরিবর্তন করে বিকৃত করে দিলেন! যেখানে আয়াতে বলা হয়েছে, পৃথিবীকে (বিছানার ন্যায়) বিস্তৃত বা সমতল বানানো হয়েছে, ডাক্তার জাকির নায়েক তাকে উল্টিয়ে বললেন, আয়াতে বলা হয়েছে, পৃথিবীকে ডিমের মতো গোল বানানো হয়েছে। (নাউযুবিল্লাহ)
.
এক্ষেত্রে মজার ব্যাপার হলো, ডাক্তার জাকির নায়েক যে কুরআনের আরবী কিছুই বুঝেন না, এখানে তিনি তার সেই জাহালাতের পরিচয় দিয়েছেন যে, এ আয়াতে যেখানে ﺩَﺣَﺎﻫَﺎ (দাহাহা) শব্দটি হচ্ছে কর্মপদের সর্বনাম যুক্ত অতীতকালের ক্রিয়াপদ–যার অর্থ–“তিনি তাকে বিস্তৃত করেছেন”, অথচ ডাক্তার জাকির নায়েক ﺩَﺣَﺎﻫَﺎ শব্দের অর্থ করেছেন–“উটপাখির ডিম”–যার কারণে এ ক্রিয়াপদটি বিশেষ্যপদ হয়ে যায় । বলা বাহুল্য, পৃথিবীর কোন অভিধানে এ শব্দের এ অর্থ নেই এবং আরবী ব্যাকরণ অনুযায়ী এ শব্দের এ অর্থ কখনো হতে পারে না।
.
তা ছাড়া এরপরের তিনটি আয়াতে পৃথিবীর বিস্তৃতির স্বরূপ ব্যাখ্যা করা হয়েছে–যার সাথে ﺩَﺣٰﻯﮩَﺎ (দাহাহা) অর্থ–“তিনি তাকে বিস্তৃত করেছেন”-এর মিল রয়েছে, কিন্তু এর সাথে উটপাখির ডিমের কোন সম্পর্ক নেই। সুতরাং ডাক্তার জাকির নায়েকের অর্থ এ্খানে কোনভাবেই খাটে না।
.
অথচ ডাক্তার জাকির নায়েক শুধুমাত্র তার ধারণা মতে কথিত বৈজ্ঞানিক থিউরির সাথে কুরআনের তথ্যকে মিলানোর নামে কুরআনের উপর এমন মারাত্মক হস্তক্ষেপ করে তার অর্থকে পরিবর্তন করে দিয়েছেন। যা কুরআনকে বিকৃত করার শামিল।
.
কিন্তু আাসল ব্যাপার হলো, এভাবে অর্থ বিকৃতি করার কারণে ডাক্তার জাকির নায়েকের উক্ত তথ্য বিজ্ঞানের সাথে মিলার পরিবর্তে তা বিজ্ঞানের থিউরির বাইরে চলে গিয়েছে। কারণ, বিজ্ঞান পৃথিবীকে কমলালেবুর মতো গোলাকার বলেছে–যা উত্তরমেরু ও দক্ষিণ মেরুর দিকে কিছুটা চাপা এবং মধ্যভাগ স্ফীত। বিজ্ঞান পৃথিবীকে উটপাখির ডিমের মতো বলেনি–যা কিছুটা লম্বাকৃতির মসৃণ গোলাকার হয়ে থাকে।
.
অপরদিকে বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে পৃথিবীর গোলাকার হওয়া সাব্যস্ত হয় পৃথিবীর সামগ্রিক আয়তন বা বৃহৎ দুরত্বের বিবেচনায়। কিন্তু মানুষের দৃষ্টিসীমার মধ্যকার পৃথিবীর ছোট দুরত্বের অংশ বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে গোলাকার নয়, বরং তা বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে সমতল বলেই গণ্য হয়েছে। এ আপেক্ষিত তত্ত্বে মানুষের দৃষ্টিসীমার পৃথিবীকে বিজ্ঞান কুরআনের বর্ণনার মতোই বিছানার ন্যায় সমান্তরালে বিস্তৃত বলে উল্লেখ করেছে। অর্থাৎ বৃহাদাকার পৃথিবীর গোলাকারের সুদূর পরিধি ক্ষুদ্র দৃষ্টিসীমার ছোট দুরত্বে প্রকাশ পায় না। যে কারণে তখন তা সমান্তরাল বলেই গণ্য হয়।
.
এ ব্যাপারে বিজ্ঞানের বিস্তারিত তথ্য উইকিপিডিয়ার নিম্নোক্ত লিঙ্কে দেখুন–
.
https://bn.wikipedia.org/wiki/সমতল_পৃথিবী
.
বলা বাহুল্য, মানুষ সাধারণত খালি চোখে পৃথিবীকে বিস্তৃত ও সমতলই দেখে থাকে। আর আধুনিক বিজ্ঞানও মানুষের সাধারণ দৃষ্টিসীমার দেখা পৃথিবীকে সমতলই বলেছে। পবিত্র কুরআনের উক্ত আয়াতে মানুষের এ দৃষ্টিসীমার পৃথিবীর কথাই বলা হয়েছে যে, আল্লাহ পৃথিবীকে (বিছানার ন্যায়) বিস্তৃত করেছেন।
.
(দেখুন : তাফসীরে ইবনে কাসীর, ৮ম খণ্ড, ৩১৬ পৃষ্ঠা)
.
সুতরাং এক্ষেত্রে কুরআনের সাথে বিজ্ঞানের কোন বিরোধ নেই। বিজ্ঞানের কথা কুরআনের মতোই রয়েছে। তাই এ নিয়ে মাথা নষ্ট করার কিছু নেই।
.
কিন্তু ডাক্তার জাকির নায়েক বিজ্ঞানের সাথে মিলানোর নামে মনগড়াভাবে কুরআনের অর্থকে পরিবর্তন করে কুরআনের সেই সঠিক তথ্যকে ভুল বানিয়ে দিয়েছেন এবং তাকে বিজ্ঞানেরও বিরোধী বানিয়ে ফেলেছেন।
.
এভাবে তিনি কুরআনের আয়াতকে উল্টিয়ে জাল কুরআন বানিয়ে মারাত্মক ফিতনার জন্ম দিয়ে মানুষকে গোমরাহ করার ব্যবস্থা করেছেন এবং বিজ্ঞান গবেষকদেরও হাসির খোরাক যুগিয়েছেন (নাউযুবিল্লাহ)।
.
অধিকন্তু শিউরে ওঠার মতো ব্যাপার হলো, ডাক্তার জাকির নায়েক উক্ত সূরাহ নাযি‘আত-এর ৩০ নং আয়াতের সেই অর্থ অর্থাৎ “He made the earth egg-shaped” এবং সেই সাথে তার বর্ণনাকৃত টিকা
.
“The Arabic word ‘dahhaahaa’ is derived from ‘Dahhyah’ which means ‘egg’
.
” এসব কালেক্ট করেছেন মিথ্যুক ভণ্ড নবী দাবীদার কুখ্যাত রাশেদ খলীফার কাছ থেকে–যিনি মূল কুরআন থেকে অনেক আয়াত ছাটকাট করে বাদ দিয়ে মনগড়া নতুন কুরআন তৈরী করেছেন এবং আল্লাহর থেকে ওহী পাওয়ার নামে বিভিন্ন আয়াতের মনগড়া অর্থ করেছেন (নাউযুবিল্লাহ)। উল্লিখিত অর্থটিও সেই ধরনেরই তার ভণ্ডামিপ্রসূত অর্থ। এভাবে জাকির নায়েকের বর্ণনাকৃত উক্ত অর্থ টিকাসহ হুবহু ভণ্ড নবী দাবীদার রাশেদ খলীফার বানানো অনুবাদে রয়েছে।
.
প্রমাণের জন্য রাশেদ খলীফার বানানো কুরআন সাইট থেকে তার উক্ত সূরাহ নাযি‘আত-এর ৩০ নং আয়াত
ﻭَﺍﻟۡﺎَﺭۡﺽَ ﺑَﻌۡﺪَ ﺫٰﻟِﮏَ ﺩَﺣٰﻯﮩَﺎ
-এর অর্থ দেখুন নিম্নবর্ণিত লিঙ্কে (৬ষ্ঠ লাইনে ডানে আরবী ও বামে তার অর্থ ও টিকা দেখতে পাবেন) :
.
http://submission.org/QI#79:25-46
.
দুঃখজনক যে, নির্ভরযোগ্য মুফাসসিরগণের শত শত সহীহ অনুবাদ ও তাফসীর থাকতে সেগুলো বাদ দিয়ে ডাক্তার জাকির নায়েক পবিত্র কুরআনের অর্থ করতে পথভ্রষ্ট ভণ্ড নবী দাবীদার কাফির রাশেদ খলিফার দারস্থ হয়েছেন এবং তার পথ ধরে কুরআনকে বিকৃত করে ফেলেছেন। এভাবে তিনি নিজেও পথভ্রষ্ট হয়েছেন এবং মানুষকেও পথভ্রষ্ট করেছেন।
.
এভাবে নানারূপ বিপথগামিতার মধ্য দিয়ে নানারূপ ভ্রান্ত মতবাদ সৃষ্টির ন্যায় ডাক্তার জাকির নায়েক বিজ্ঞানের দ্বারা কুরআনের সত্যতা যাচাইয়ের মনগড়া মতবাদ দ্বারা মহাফিতনার জন্ম দিয়েছেন। যা মানুষের ঈমানধ্বংসের মারাত্মক ফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
.
ডাক্তার সাহেবের তাফসীর সংশ্লিষ্ট হাদীসের ব্যাপারে অজ্ঞতা এতটাই সীমাহীন যে, হাদীস ভান্ডার ও তাফসীরের মৌলিকত্ব পর্যন্ত পৌছার চেষ্টার বদলে মনগড়া ব্যাখ্যা করতে শুরু করেছেন।
.
ডাক্তার জাকির নায়েক
.
ﻭَﺍﻟْﺄَﺭْﺽَ ﺑَﻌْﺪَ ﺫَﻟِﻚَ ﺩَﺣَﺎﻫَﺎ ﺍﻟﻨﺎﺯﻋﺎﺕ 30 - )
.
এ আয়াতে কারীমা সম্পর্কে বলেন-এখানে ডিমের জন্য ব্যবহৃত শব্দ ‘দাহা ’। এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল উটপাখির ডিম। উটপাখির ডিম জমিনের সাথে সাদৃশ্য রাখে।
.
তাই পবিত্র কুরআন বিশুদ্ধভাবে পৃথিবীর আকৃতির ব্যাখ্যা করছে। অথচ কুরআন নাযিলের সময় পৃথিবীকে (Flat) সমতল মনে করা হতো।
.
{ খুতুবাতে জাকির নায়েক , কুরআন আওর জাদিদ সায়েন্স-৭৩-৭৪ }
.
এখানে ডাক্তার সাহেব বিজ্ঞানের দৃষ্টিভঙ্গিতে প্রভাবিত হয়ে , সেই সাথে পবিত্র কুরআনের মূল আলোচ্য বিষয় (তথা তাওহীদ ও রিসালত , আর বাকি প্রাকৃতিক বিষয়াদির আলোচনা প্রাসঙ্গিক মাত্র) না বুঝার কারণে পৃথিবীর আকৃতির বিশ্লেষণ করার জন্য আয়াতে কারীমা দিয়ে ভুল দলিল দিতে আয়াতের মনগড়া তাফসীর করেছেন।
.
কেননা , আরবী ভাষায়- ﺩﺣـــﻮ শব্দটি এবং তার মূল উৎস বিস্তৃত ও বিস্তীর্ণ করার অর্থ প্রদান করে। এই অর্থ হিসেবে ‘দাহাহা’- এর অনুবাদ ও তাফসীর হল
‘ পৃথিবীকে বিস্তৃত করা ও তাতে বিদ্ধমান বস্তু সমূহকে সৃষ্টি করা ’।
.
(দ্রষ্টব্য: তাফসীরে ইবনে কাসীর) এই শব্দটি ও তার মূল উৎস ‘ডিমের’ অর্থে আসে না।
.
বাংলা অনুবাদে তো বটেই, কোরানের ছ'টি স্বীকৃত ইংরেজি অনুবাদেও উটপাখির ডিমের কথা উল্লেখ নেই, সব অনুবাদেই বিস্তৃত করার কথা বলা হয়েছে। সব ইহুদি-নাছারাদের ষড়যন্ত্র!
.
তাই মুফাসসিরের জন্য বেশ কিছু শর্তাবলী রয়েছে। যেমন ,
.
১- কুরআনের সকল আয়াতের উপর দৃষ্টি থাকতে হবে।
.
২- হাদীসের ব্যাপারে থাকতে হবে অগাধ পান্ডিত্ব।
.
৩. আরবী ভাষা ও ব্যকরণ তথা নাহু , ছরফ, ইশতিক্বাক্ব, এবং অলঙ্কার শাস্ত্রে রাখতে হবে গভীর পাণ্ডিত্য।
.
ডাক্তার সাহেবের মধ্যে এ সকল শর্তের একটিও যথাযথভাবে পাওয়া যায় না। তার না আছে আরবী ভাষা ও আরবী ব্যকরণ সর্ম্পকে যথাযথ পারঙ্গমতা।
না আছে হাদিস ভাণ্ডারের উপরকোন সুগভীর পড়াশোনা।
আর আরবী সাহিত্য ও অলঙ্কার শাস্ত্রেও নন তেমন জ্ঞানী।
.
হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে-
.
ﻣﻦ ﻗﺎﻝ ﻓﻲ ﺍﻟﻘﺮﺁﻥ ﺑﺮﺃﻳﻪ ﻓﺄﺻﺎﺏ ﻓﻘﺪ ﺃﺧﻄﺄ
.
অর্থ: যে ব্যক্তি কুরআনের তাফসীর কেবল নিজের জ্ঞান দিয়ে করে , তাহলে সে ঘটনাচক্রে সঠিক বললেও তাকে ভুলকারী সাব্যস্ত করা হবে। (তিরমিযি শরিফ-হাদীস নং-২৯৫২)
.
অন্য বর্ণনায় এসেছে যে,
.
ﻭﻣﻦ ﻗﺎﻝ ﻓﻲ ﺍﻟﻘﺮﺁﻥ ﺑﺮﺃﻳﻪ ﻓﻠﻴﺘﺒﻮﺃ ﻣﻘﻌﺪﻩ ﻣﻦ ﺍﻟﻨﺎﺭ
.
অনুবাদ- যে ব্যক্তি স্বীয় যুক্তি দিয়ে কুরআনের তাফসীর করে সে তার আবাস জাহান্নামকে বানিয়ে নিল।
.
{ সুনানে তিরমিযী , হাদীস নং-২৯৫১ }
.
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সবাইকে কুরআন সুন্নাহর সঠিক জ্ঞান ধান করুক।। আমিন.....

৪| ১৯ শে জানুয়ারি, ২০২১ দুপুর ২:৫৭

শায়মা বলেছেন: গুড। ভেরী গুড পোস্ট ভাইয়া। আসলেও সকলকে এই সব বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করলে জীবন হয়ে উঠবে সফল আর আনন্দময়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.