![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রবাদে আছে “Education is the Back Bone of a Nation” শিক্ষাবিহীন জাতি নাবিক বিহীন তরীর মত। যে জাতি শিক্ষাদীক্ষা ও জ্ঞান গরিমায় উন্নত নয় সেই জাতির সাংস্কৃতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসও তত সমৃদ্ধ নয়, অনেকটা অন্যান্য জাতির তুলনায় পিছিয়ে থাকে। তবে যে কোন দেশের ছাত্র সমাজ নিজেদের মেধা ও যোগ্যতার বলে একটি সুশিক্ষিত জাতি ও জাতীয়তাবোধ সৃষ্টিতে মূল শক্তি হিসাবে কাজ করতে পারে। জাতির ক্রন্তিকালে ছাত্র সমাজ নিজেদের মেধা মনন দেশপ্রেম ও ত্যাগ তিতীক্ষার বিনিময়ে জাতিকে ঘোর আমানিশার কবল থেকে সঠিক পথের দিকনির্দেশনা দিয়ে জাতির অগ্রজ হিসেবে ভূমিকা পালন করতে পারে। বাংলার ছাত্র সমাজের অতীত ইতিহাস বিশ্লেষন করলে দেখতে পাই বাঙ্গালির ইতিহাস বিণির্মানের পিছনে আষ্ঠে পৃষ্টে জড়িয়ে আছে ছাত্র সমাজের অপরিসীম সংগ্রাম। প্রায় দু’শ বছরের ইংরেজ জাতির উপনৈবেশিক শাসন শোষনের বিরুদ্ধে এতদঞ্চলের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সাথে ছাত্র সমাজকে সোচ্চার হতে দেখেছি। অধিকারের প্রতি তারা ছিল দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। বর্তমানের মত অস্ত্র দিয়ে নয় বরং মেধা দিয়ে তারা এগিয়ে গেছে। সেই সময় স্টুডেন্ট শদ্বটির সাথে আইডিয়াল শদ্বটি সমার্থক হিসেবে বিবেচিত হত। সমাজ ও দেশের মানুষ ছাত্র সমাজকে দেবতার আসনে আসীন করত। সমাজের প্রতিটি কাজে ছাত্র সমাজ স্বতঃস্ফুর্তভাবে অংশ নিত। ছাত্র সমাজ জাতির সামাজিক, সাংস্কৃতিক,রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটে নিজেদেরকে জাতির সেবক হিসেবে বিবেচনা করতঃ সঠিক দিকনির্দেশনার মাধ্যমে জাতিকে বিপদমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত পথ প্রদর্শক হিসেবে কাজ করেছে। বিপরীতে জাতিও ছাত্র সমাজের দিকে শ্রদ্ধা ও সম্মানের দৃষ্টিতে তাকাত। ঠিক তদ্রুপ আমরা যদি বাংলাদেশ সৃষ্টির ইতিহাস পর্যালোচনা করি তাহলে আমাদের সামনে দিবা লোকের মত স্পষ্ট হয় বাংলার ছাত্র সমাজের অবদানের কথা।
১৯৪৭ সালে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রের জন্ম হলে পশ্চিম পাকিস্তানের মানুষ প্রকৃত স্বাধীনতা লাভ করলেও পূর্বাঞ্চলের মানুষ ছিল সম্পূর্ণরুপে অধিকার উপেক্ষিত। দীর্ঘ ২৪ টি বছর পূর্ব বাংলার মানুষ শাসক চক্রের ষড়যন্ত্রের স্বীকার হয়েছে যেটি সর্বজনবিদিত। অবশেষে এই ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন ভিন্ন করার জন্য জাতির ক্রান্তিকালে সামনে এগিয়ে ছিল পূর্ব বাংলার ছাত্র সমাজ। প্রথমে তারা পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে ফেটে পড়েছিল তাদের মায়ের ভাষা রক্ষার আন্দোলন ৫২’র ভাষা আন্দোলনে। পরবর্তীতে একে একে ৫৪’র যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ৫৬ সালের সংবিধানে বাংলা ভাষার স্বীকৃতি, ৬২’র বৈষম্য মূলক শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন, ৬৬’র ছয় দফা, ৬৯ সালের ছাত্রদের ১১ দফা আন্দোলন,৭০’র সাধারণ নির্বাচন এবং ৭১’র স্বাধিকার আন্দোলনে ছাত্রদের অবদান ছিল অনস্বীকার্য। এমনকি স্বাধীনতা উত্তর সময়ে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনেও ছাত্র সমাজের অংশ গ্রহণ ছিল নজর কাড়ার মত। সর্বোপরি ছাত্র সমাজের প্রতিটি আন্দোলন, সংগ্রাম ছিল সার্বজনীন ও জাতির বৃহত্তর স্বাথেড়–। মূলত;সামাজিক দায়বদ্ধতা ও সুশিক্ষার সুফল হিসাবে ছাত্র সমাজের মধ্যে এ ধরনের জাতীয় চেতনা সৃষ্টি হয়েছিল। সেই সময় কেবল মাত্র আন্দোলন, সংগ্রাম ও জাতির সেবায় তাদের কর্মকান্ড সীমাবদ্ধ ছিল না। মেধা চর্চা ও সৃজনশীল কাজের মাধ্যমে তারা দৈশিক ও বৈশ্বিক অঙ্গনে নিজেদের মেধা ও যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখেছে, জাতির ইতিহাসকে করেছে সমুজ্জ্বল ও গৌরবাণি¦ত। অতীতে ছাত্র সমাজের মধ্যে নিখাদ দেশ প্রেমের পাশাপাশি শিক্ষক ও ছাত্রদের মধ্যে সুসম্পর্কের বিষয়টি পরিলক্ষিত হত। কিন্তু দেশ স্বাধীনতা লাভের পর ছাত্র সমাজের সেই দৃশ্যপট পাল্টে যেতে থাকে।
৯০’র স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈর শাসনের অবসান ঘটিয়ে গণতন্ত্রের সূচনা ছাত্র সমাজের হাত ধরে আসলেও তাদের মধ্যে নৈতিকতার স্খলন ত্বরাণি¦ত হতে থাকে। লেজুড়ভিত্তিক রাজনীতি করতে গিয়ে নিজেদের মধ্যে এক ধরনের অস্থিরতার বিরাজ করে। ফলে তারা বিভিন্ন সমাজ বিরোধী কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ে। ফল স্বরুপ মিডিয়ায় নজর দিলে ছাত্রদের মারামারিতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্টান বন্ধ ঘোষনা ,চাঁদাবাজিতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা,ছাত্রী ধর্ষনের মত ঘৃন্য কাজ, ইভটিজিং এর প্রতিবাদে ছাত্রের হাতে শিক্ষক নির্যাতন ও নিহত ইত্যাদি বিষয় সমূহ জাতির ইতিহাসে কলঙ্ক ও অশনি সংকেত হিসেবে সামনে চলে আসে। যেখানে ছাত্র সমাজের ব্রত হওয়া উচিত অধ্যয়ন ও নৈতিক চরিত্র গঠন সেখানে ছাত্র সমাজ নেমে পড়েছে মদ্যপান,অস্ত্রবাজি,চাঁদাবাজি,খুন,ধর্ষণ ও বিভিন্ন সমাজ বিরোধী কর্মকান্ডে। এক্ষেত্রে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা ও অনেকাংশে দায়ী । নৈতিক শিক্ষা আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় গৌণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে। তবে একথাও আমাদের স্বরণ রাখা দরকার যে,নৈতিক শিক্ষা ব্যতীত কোন জাতি সুপ্রতিষ্ঠিত জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারেনা। আজকে ছাত্র সমাজের মধ্যে জাতীয় স্বার্থের চেয়ে ব্যক্তিগত ও দলীয় স্বার্থ বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। নিজেেেদর হীন স্বার্থ চরিতার্থ করার মানসে ছাত্র সমাজ আজ নিকৃষ্ঠতম কাজ করতেও দ্বিধা বোধ করেনা । একটি সুন্দর সমাজ,দেশ ও জাতি গঠনের কথ্ াতারা ভুলতে বসেছে। ভাল কাজের প্রশংসা ও ধন্যবাদ জানাতেও আজ তারা অপারগ। বিদ্যা চর্চাকে একপাশে রেখে অর্থ উর্পাজনের জন্য তারা বিভিন্ন পথ অবলম্বন করছে। পড়ালেখা হয়ে পড়েছে গৌণ ও চাকুরি নির্ভর। ছাত্র সমাজ আজ পড়ার অভ্যাস পরিত্যাগ করছে। ফলে মেধাশুন্য ছাত্র সমাজের অবস্থান আগের মত সুসংহত ও গৌরবাণি¦ত নয় বরং কলংকিত। সমাজের মানুষ তাদেরকে আগের মত সমীহ করে চলেনা। বলতে গেলে ছাত্র সমাজ মূল সমাজ ব্যবস্থা থেকে দিন দিন বিচ্ছিন্ন্ হয়ে পড়ছে। দিন দিন হারিয়ে ফেলছে অতীতের গৌরব, সম্মান ও শ্রদ্ধা। তাই আজকে ছাত্র সমাজের উচিত অতীতের গৌরব ফিরিয়ে আনতে নিজেদের চরিত্র গঠনের মাধ্যমে জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সুন্দর সমাজ বিনির্মানে ভূমিকা রাখা। তবেই সম্ভব একটি সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী দেশ গড়ে তোলা।
(সংকলিত)
২| ১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১০:০০
ইশারা খালী বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ৯:০০
পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: একমত
ছাত্র সমাজ
জাতিতে গতিতে স্থিতিতে ক্ষনে
ভাঙ্গা গড়া সমীরণে
এরা শিক্ষায় প্রজ্ঞায় মেধায়
উন্নত যুগের সুচনা গড়ে
নব নব প্রতিভায় ।
এদের বিজ্ঞ নিঃশ্বাস
গড়বে সব আগামি সপ্ন
নতুন ইতিহাস ।
শুভকামনা