![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এই ব্লগের সকল মৌলিক লেখার স্বত্ত্ব লেখকের।এখান থেকে কোনো লেখা লেখকের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা, অনুলিপি করা গ্রহনযোগ্যনয়। তা সৃজনশীল কাজের পরিপন্থী। লেখা অন্য কোথাওপ্রকাশ, ছাপা করতে চাইলে লেখকের সম্মতি নিতে হবে। লেখকের ইমেল - [email protected]
ফিরে দেখা ২০১৪ : আলো ও আঁধারের লুকোচুরি
ফকির ইলিয়াস
__________________________________________________
চলে গেল ২০১৪। রেখে গেল অনেক রক্তের দাগ। রেখে গেল অনেক বিরহ। রেখে গেল অনেক সম্ভাবনার শিশিরবিন্দু। হতে পারতো অনেক কিছু। হয়নি। অনেক সম্ভাবনা ছিল। কাজে লাগাতে পারেননি বিশ্বের শাসকগোষ্ঠী। মানবতার পরাজয় হয়েছে বিশ্বের অনেক রাষ্ট্রে। ফিলিস্তিনে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে অগণিত মানুষ। মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে আইএস। এমন একটি জঙ্গিবাদী সংগঠনের উত্থান শঙ্কিত করেছে বিশ্ব-প্রজন্মকে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের বন্দি শিবিরে টর্চারিংয়ের ঘটনা শিউরে তুলেছে সভ্যতার ইতিহাসকে।
বাংলাদেশে ৫ জানুয়ারি ২০১৪ এর নির্বাচন পাল্টে দিয়েছে রাজনীতির হিসেব-নিকেশ। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ২০১৪ বাংলাদেশে ৫ জানুয়ারি ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনটি নবম জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ অধিকাংশ দলই বর্জন করে এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্রসহ ১৭টি দল নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করে। এছাড়াও নির্বাচনে ৩০০টি আসনের মধ্যে ১৫৪টি আসনে বিনা প্রতিদ্ব›িদ্বতায় প্রার্থীরা বিজয়ী হওয়ায় নির্বাচনটি নিয়ে অনেক বিতর্কের সৃষ্টি হয়।
৩০ শে জুন ২০১১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করে জাতীয় সংসদে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বিল পাশ হয়। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও তার শরিক জোটগুলো এর পর থেকেই নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারব্যবস্থা পুনরায় চালু করার জন্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। সরকারী দল আওয়ামী লীগ ও বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমান সরকারের অধীনেই নির্বাচনের ঘোষণা দেন এবং তখনই বিরোধী দলীয় প্রধান খালেদা জিয়া বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না বলে ঘোষণা দেন। নির্বাচনের দিন সহিংসতায় নিহত হয়েছেন ১৯ জন। নির্বাচনপূর্ব সহিংসতার দিক থেকেও ২০১৪ এর নির্বাচন অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর তফসিল ঘোষণার পর থেকে ভোটের আগের দিন পর্যন্ত ৪১ দিনে মারা গেছেন ১২৩ জন। ভোটের দিন এত সংখ্যক মানুষের প্রাণহানি এর আগে দেখা যায়নি। তারপরও ঐ নির্বাচন বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র বলেছিল, তারা বর্তমান নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজ করবে। এটাই নিয়ম। কারণ বাংলাদেশের সমস্যা সমাধান করবে এ দেশের মানুষ। ঐ নির্বাচনের পর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হু মু এরশাদ, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত নিযুক্ত হয়েছিলেন। এটাই চাইছিলেন এরশাদ। আগের পাঁচ বছর যাবৎ তার এই খায়েশ ছিল। তা শেষ পর্যন্ত পূরণ হয়েছিল। এরশাদ জয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি কি কোনো কাজ করতে পেরেছেন? ‘বিশেষ দূত’ হিসেবে তার কোনো পদচারণা চোখে পড়েনি, ২০১৪ সালে।
বিজয়ী বিশেষ দূত হওয়ার পাশাপাশি একই সঙ্গে পরাজয় হয়েছিল দেশে পরিশুদ্ধ গণতন্ত্র চর্চার। ‘রাজাকারের চেয়ে স্বৈরাচার ভালো’ এই যুক্তি অনেকবার দেখিয়েছেন বাংলাদেশের অনেক বুদ্ধিজীবী। খালেদা জিয়া, রাজাকার নিজামী-মুজাহিদের গাড়িতে মন্ত্রিত্বের পতাকা তুলে দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা সেটা করেননি। বিএনপি বলেছে, এটা একতরফা নির্বাচন। আর আওয়ামী লীগ বলছে, তারা সংবিধান রক্ষা করছে। সংবিধান বাংলাদেশে অনেকভাবেই সংশোধিত হয়েছে। পনেরোতম সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিপুপ্ত করে মহাজোট। এটা ছিল মহাজোটের একটি একচেটিয়া শক্তি পরীক্ষা। কারণ বিএনপির ২৮ জন এমপি নিয়ে ভোটাভুটির কোনো সুযোগ বিএনপির ছিল না। এর আগে যে প্রশ্নটি আসে, তাহলো বিএনপি ২০০৮-এর নির্বাচনে এমন পরাজয় বরণ কেন করেছিল? এর প্রধান কারণ ছিল, দলটিতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অবক্ষয়। মীর শওকত আলী কিংবা আজকের এলডিপির অলি আহমেদও সেদিন প্রশ্ন তুলেছিলেন বিএনপির জঙ্গিবাদপ্রিয়তা নিয়ে। তারা দল ছেড়েছিলেন সে কারণেই।
জাতীয় পার্টি প্রধান বিরোধী দল হলেও তারা মন্ত্রিত্বও নিয়েছে। জাতীয় পার্টি এই যে দ্বৈতনীতি গ্রহণ করলো, তাতে আওয়ামী লীগের মদদ লীগের জন্য ক্রমশ কাল হয়ে দাঁড়াতে পারে এ সম্ভাবনা ছিল ২০১৪ সালে। সমঝোতার সরকার কিংবা জাতীয় সরকার কখনই বড় একটি রাজনৈতিক দলকে বাদ দিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্রের কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না। এতে বরং ভাগ-বাটোয়ারার হিসেবই বাড়ে। ফড়িয়া শ্রেণি লাভবান হয়। খুবই দুঃখের কথা, বাংলাদেশ সবদিক থেকেই সেই ক্ষতির মুখোমুখি ছিল। কিছু রাজনীতিবিদ লুটপাট করছে। আর কিছু রাজনীতিবিদ জ্বালাও-পোড়াও করছে। নির্বাচনের পর যে লুটপাট হয়েছে, হিন্দু স¤প্রদায়ের ওপর যে আক্রমণ হয়েছে তা মানবতার সকল নীতিকে পদদলিত করেছে। এটা রুখতে সরকারের ব্যর্থতাও ছিল চোখে পড়ার মতো। এই ধ্বংসযজ্ঞ আর কতো চলবে? এক সময়, লাগাতার অবরোধ ও লাগাতার হরতাল কর্মসূচি থেকে সরে এসেছিল বিএনপি। নতুন ধারায় সরকারবিরোধী আন্দোলন চাঙ্গা করার কথা ভাবলেও আন্দোলনের পরিকল্পনা নিয়ে বিএনপি ও জোটের শরিকদের মধ্যে মতভিন্নতা ছিল পুরো বছর জুড়ে।
সরকারের সামনে চ্যালেঞ্জ ছিল অনেক। সেই সঙ্গে ছিল শঙ্কাও। শঙ্কার প্রধান কারণ ছিল আগের মহাজোট সরকারের বেশ কিছু ব্যর্থতা। আমরা দেখেছি, প্রায় চল্লিশজন সাবেক মন্ত্রী বর্তমান কেবিনেট থেকে বাদ পড়েছেন। কেন বাদ পড়েছেন? দেশে এখন অবাধ, মুক্ত মিডিয়ার বিচরণ রয়েছ। এর ফলেই অনেক মন্ত্রী, এমপির দুর্নীতির চিত্র ছিল মানুষের মুখে মুখে। এটা প্রধানমন্ত্রীরও অজানা নয়। এসব দুর্নীতিবাজদের বিষয়ে খতিয়ে দেখা দরকার ছিল। বিচারের আওতায় আনার দরকার ছিল। তা করতে না পারায় রাজনৈতিক শঙ্কা শুধুই বেড়েছে। সরকারের প্রতিপক্ষ সুযোগ পেয়েছে। মনে রাখা দরকার, যে পরিস্থিতিতে এই সরকার গঠিত হয়েছিল তা ছিল অনেক রক্তস্রোতের সাক্ষী। অনেক মানুষ বলির শিকার হয়েছেন এই ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে গিয়ে।
এবছরের আরেকটি আলোচিত ঘটনা ছিল, দুর্নীতির অভিযোগে খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বিএনপি নেতা তারেক রহমানকে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে না দিতে দেশটির ঢাকা দূতাবাস থেকে ওয়াশিংটনে একটি গোপন বার্তা গিয়েছিল। আলোচিত ওয়েবসাইট উইকিলিকসের ফাঁস করা ওই বার্তাটি ২০০৮ সালের ৩ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস থেকে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরে পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, ‘রাজনৈতিকভাবে সংঘটিত ব্যাপক মাত্রায় দুর্নীতির জন্য তারেক দায়ী বলে দূতাবাস মনে করে। তার দুর্নীতির কারণে মার্কিন ঘোষণাপত্রের ৪ নম্বর ধারায় বর্ণিত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের স্থিতিশীলতা এবং যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তার লক্ষ্য বিনষ্ট হওয়ার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থ ক্ষুণœ হয়েছে।’
২০১৪ সালে একটি বিষয় স্পষ্ট হয়েছে, বিএনপির সঙ্গে একটা বড় দূরত্ব তৈরি হয়েছে ভারতের। এর জন্য বিএনপির নাশকতামূলক মানসিকতাই দায়ী বলে মন্তব্য করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। এই বছরে বিলাতে থেকে তারেক রহমান নানা আজগুবি তথ্য শুনিয়েছেন দেশবাসীকে। বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রথম দাবি করে বলেন, তার বাবা জিয়াউর রহমান দেশের ‘প্রথম রাষ্ট্রপতি’। এর একদিন পর খালেদা জিয়াও একই দাবি করেন। বিএনপির অনেক নেতা এই বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি দেয়ারও চেষ্টা করেন। কিন্তু তারা যখন এই দাবি করছেন তখনো বিএনপির অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে দেখা যায় জিয়াউর রহমান সপ্তম রাষ্ট্রপতি! বছরের শেষ দিকে তিনি আরও অনেক মিথ্যা কথা বলেন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে। যা ছিল একটি উন্মাদনা মাত্র। বছরের আলোচিত ঘটনা ছিল ভারতের নির্বাচন। ভারতে বিজেপি ক্ষমতায় এসেছে। ভারতের রাজনীতি অনেকটা আমেরিকার মতো। যে দলই ক্ষমতায় যাক না কেন- প্রায় একই নীতিই অনুসরণ করে।
২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-এর বাংলাদেশ সফরের সময় দুই রাষ্ট্রের সরকারের মধ্যে যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, তার বিপরীতে নিজেদের অবস্থান সুস্পষ্ট করেছে বিজেপি। হাসিনা ও তার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড প্রোগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স সরকারের ব্যর্থতায়ও হতাশ। ভারতের পার্লামেন্টে চুক্তিটি দৃঢ়ভাবে অনুমোদন পাবে, এমন আশা করেছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু, মূলত বিজেপি ও আঞ্চলিক অসম গণপরিষদের বিরোধিতার কারণেই সেটা সম্ভব হয়নি।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ছিল, একটি আগ্রাসন ঠেকাতে আরো বহুমুখী আগ্রাসনের জন্ম যেন না দেয় ভারত। তা করা হলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার শান্তি বিনষ্ট হতে পারে। ভারত এই সময়ে বিশ্বরাজনীতির একটি অন্যতম ফ্যাক্টর। ভারতকে বাদ দিয়ে কোনো উন্নত কিংবা উন্নয়নশীল দেশ নিজেদের আগামী ভাবতে পারছে না। সেই ভারত যদি কট্টরবাদীদের চারণভূমি হয়- তাহলে প্রকারান্তরে মৌলবাদই আশকারা পাবে। নরেন্দ্র মোদি ও তার দলকে তা ভাবতে হবে। কারণ ভারতের ইতিহাসে গোঁড়ামি তো কম লিখিত হয়নি। গাজায় গণহত্যা ছিল এ বছরের বিষাদময় ঘটনা। পিছন ফিরে পড়া যাক সেই ঘটনাগুলো। বিশ্বে এখন একক পরাক্রমশালী শক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তারা গাজায় গণহত্যা বিষয়ে খুবই নির্বিকার। যেন কিছুই হচ্ছে না। অথচ শিশু, নারী, বৃদ্ধ মানুষের রক্তে রঞ্জিত ফিলিস্তিন। কোথায় জাতিসংঘ? তারা কথা বলছেন- খুব ধীরে। কাজেও খুব ধীরগতি। নিহতের সংখ্যা এই লেখার সময় পর্যন্ত ছয় শতেরও বেশি।
গত ১৯ জুলাই শনিবার রাত থেকে ইসরায়েল, ফিলিস্তিনে স্থল অভিযান আরো জোরদার করেছে। একই সঙ্গে নিহতের সংখ্যাও বাড়ছে সমানতালে। রোববার পূর্বাঞ্চলের সুজাইয়া জেলায় ৫০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। বিবিসি জানিয়েছে, বহু ফিলিস্তিনি বিধ্বস্ত বাড়িঘরের নিচে চাপা পড়েছেন। তাদের উদ্ধার তৎপরতায় বাধা দিচ্ছে ইসরায়েল। ওই অঞ্চলে অ্যাম্বুলেন্সও প্রবেশ করতে দিচ্ছে না তারা। প্রচণ্ড হামলার মুখে দিগি¦দিক পালাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। ইসরায়েল দাবি করেছে, হামাসের হামলায় তাদেরও সাত সেনার মৃত্যু হয়েছে। জানা গেছে, দুপক্ষ দুই ঘণ্টার মানবিক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। এরই মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের কাতার সফরে এসেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন। সেখানে তার ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে। ইসরায়েলের সহিংসতা বন্ধে একটি পথ খুঁজে পেতেই বৈঠকে বসছেন তিনি। এর আগে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, দুঃখের সঙ্গে জানাতে হচ্ছে যে, আমাদের যুদ্ধবিরতির আহ্বানে কেউ সাড়া দেয়নি। আরো বেশি বেসামরিক মানুষের হতাহতের আশঙ্কায় আমারা উদ্বিগ্ন। জাতিসংঘ বলছে, স্থল অভিযান শুরুর পর দ্বিগুণ সংখ্যক ফিলিস্তিনি বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। স্থল অভিযানে ১৩তম দিন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৪০০ ছাড়িয়েছিল। ইসরায়েলি ট্যাংকের গোলা আর বিমান হামলায় কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে গাজা। হামলা এড়াতে গাজার পূর্বাঞ্চল থেকে পালিয়ে যাচ্ছেন লাখ লাখ ফিলিস্তিনি। পূর্বাঞ্চলের সুজাইয়া, আল-শাফ ও আল-তুফা শহর প্রায় মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, নিহতের সংখ্যা ৪১০; আহত হয়েছেন ৩ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। এই গণহত্যার প্রতিবাদ হয়েছে বিশ্বজুড়ে। কিন্তু যারা প্রতিবাদ করেছেন তাদের ক্ষমতা ছিল কম। যাদের ক্ষমতা বেশি তারা জোরালো কোনো ভূমিকা নেয়নি।
২০১৪ সালে আমরা হারিয়েছি অনেক বরেণ্য মানুষকে। সাহিত্যিক গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ, বাংলার মহানায়িকা সুচিত্রা সেন, গায়ক পিট সিগার, হলিউডের প্রখ্যাত অভিনেতা-পরিচালক রিচার্ড অ্যাটেনবরো। ভিডিও গেমের পথিকৃৎ রালফ হেনরি বায়ের, সাহিত্যিক খুশবন্ত সিং,সাহিত্যিক নবারুণ ভট্টাচার্য্য, প্রখ্যাত কত্থক শিল্পী সিতারা দেবী, ঐতিহাসিক তপন রায় চৌধুরী এমন অনেক মানুষকে। বাংলাদেশে জিল্লুর রহমান সিদ্দিকী, কাইয়ুম চৌধুরী, অভিনেতা খলিল, ভাষা সৈনিক আব্দুল মতিন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান, বিচারপতি গোলাম রসুল, সাংবাদিক জগলুল আহমেদ চৌধুরী, এমন অনেক মহান মানুষকে। যে ঋণ কোনো দিন শোধ হবার নয়।
ঘাতক-দালাল-যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ চলেছে নিজ গতিতে। রাজনৈতিক অস্থিরতা ছিল কম। আইটি ফিল্ডে এগিয়েছে বাংলাদেশ। জনজীবনের নিরাপত্তা ভেঙে পড়েছে বার বার। বছরের শেষে এসে জিহাদের মত একটি শিশুকে উদ্ধার করতে না পারা ছিল সরকারের চরম ব্যর্থতা। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ এগিয়েছে, বলা যাবে হয়তো। কিন্তু বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এগোতে পারেনি। সব গ্লানি মুছে দিতে আসছে ২০১৫। বছরটি রাজনৈতিকভাবে গোটা বিশ্বের জন্য উত্তপ্ত হতে পারে- এমন আশঙ্কা করছেন সমাজ বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশেও রাজনীতি নতুন মোড় নিতে পারে। তারপরও মানুষজন শান্তি চান। তারা চান, আইনের শাসন। নিরাপত্তা। সামজ ও রাষ্ট্রের উন্নতি। তারা চান প্রজন্মের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ। সেই আলোয় আলোকিত হোক ইংরেজি নতুন বছর। সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা।
-------------------------------------------------
দৈনিক ভোরের কাগজ॥ ঢাকা ॥ বৃহস্পতিবার, ১ জানুয়ারি ২০১৫ প্রকাশিত
©somewhere in net ltd.