নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আলোর আয়না এই ব্লগের সকল মৌলিক লেখার স্বত্ত্ব লেখকের।এখান থেকে কোনো লেখা লেখকের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা, অনুলিপি করা গ্রহনযোগ্য নয়।লেখা অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা করতে চাইলে লেখকের সম্মতি নিতে হবে। লেখকের ইমেল - [email protected]

ফকির ইলিয়াস

এই ব্লগের সকল মৌলিক লেখার স্বত্ত্ব লেখকের।এখান থেকে কোনো লেখা লেখকের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা, অনুলিপি করা গ্রহনযোগ্যনয়। তা সৃজনশীল কাজের পরিপন্থী। লেখা অন্য কোথাওপ্রকাশ, ছাপা করতে চাইলে লেখকের সম্মতি নিতে হবে। লেখকের ইমেল - [email protected]

ফকির ইলিয়াস › বিস্তারিত পোস্টঃ

জানমালের নিরাপত্তায় রাষ্ট্রের শক্তিশালী হাত

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:০০





জানমালের নিরাপত্তায় রাষ্ট্রের শক্তিশালী হাত
ফকির ইলিয়াস
=========================================

এই দেশ রক্ষা করার দায়িত্ব কার? যারা ক্ষমতায় আছেন তাদের দায় এড়াবার কোনো সুযোগ নেই। দেশের মানুষ বলছেন, আমাদের বাঁচান। আমরা সহিংসতা চাই না। এ নিয়ে জাতীয় সংসদে দাবি উঠেছে। বোমার আগুন থেকে রেহাই পাচ্ছেন না নারীরাও। এটা কি একাত্তর সাল? পশ্চিমা হায়েনাদের কায়দায় মৌলবাদী অবরোধকারীরা হামলে পড়ছে এ দেশের মানুষের ওপর! পুড়ছে ট্রাক। পুড়ছে মানুষ। কয়লা হয়ে যাচ্ছে মানুষের দেহ। খালেদা জিয়া বলছেন তিনি অবরুদ্ধ। তিনি তার গৃহে যাওয়ার চেষ্টা করছেন? না এমনটি কেউ দেখেনি। বরং অফিসেই আছেন। সেখানে থেকেই নির্দেশ দিচ্ছেন। আর তা প্রচার করছেন তার মুখপাত্ররা। তাদের লক্ষ্য হচ্ছে সরকারের পতন। পতন না হওয়া পর্যন্ত তারা অবরোধ চালিয়ে যাবেন। আপাতত এটাই তাদের কথা। এখন তো পুলিশ নেই। তিনি বাড়িতে ফিরছেন না কেন?

অন্যদিকে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধানরা বেশ শক্ত কথা বলেছেন। তারা রীতিমতো রাজনীতিকদের মতো ভাষণ দিয়েছেন। এসব তারা না বললেও পারতেন। তারা রাষ্ট্রের আইন প্রয়োগ করার মালিক। কথা বলা তাদের কাজ নয়। আইন যা বলবে- সেটা তারা তামিল করবেন। দেশে সহিংসতা চলছে। পশ্চিমা ও এশিয়া উভয় অঞ্চলের প্রভাবশালী দেশের ক‚টনীতিকরা আন্দোলনের নামে সহিংসতার নিন্দা জানিয়েছেন। পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক জানিয়েছেন, ক‚টনীতিকরা সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতির প্রশংসা করেন এবং চলমান সহিংস ঘটনার নিন্দা জানান। একাধিক দেশের ক‚টনীতিকরা তাদের মতামত তুলে ধরে বলেন, সহিংস কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে কখনই গণতন্ত্র শক্তিশালী হয় না। তাদের প্রত্যাশা, খুব শিগগির সহিংস কর্মকাণ্ড বন্ধ হবে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘হরতালের নামে এখন যেটা হচ্ছে সেটা হচ্ছে সন্ত্রাস। এগুলো মোকাবেলায় সন্ত্রাস দমন আইন আছে। এখন এ আইন প্রয়োগ করা হবে।’ তিনি বলেন, ‘যে আইনে জনগণের সম্পৃক্ততা রয়েছে, সে আইন করা হয়। হরতাল বন্ধের জন্য দাবি উঠলে এ বিষয়েও আইন করা হবে।’ আমার মনে হয় এই দাবিটি এখন সময়ের। অবরোধ, হরতাল বন্ধ করার জন্য আইন প্রণীত হওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। তা না হলে বাংলাদেশের উন্নয়ন মুখথুবড়ে পড়বে।

আমাদের জানা আছে রাষ্ট্র পরিচালনায় ভুলের কর্তৃত্ব সবসময়ই গণমানুষের জন্য অশান্তি বয়ে আনে। আর তা যদি হয় ভোগবাদীদের দ্বারা তৈরি, তবে তো কথাই নেই। একটি রাষ্ট্রে, স্বার্থপর ভোগবাদীদের সম্মিলিত একটি চক্র সব সময়ই তৎপর থাকে। তারা মানুষের স্বার্থ শুধু হরণই করে না, উচ্চ পর্যায়ে নিজেদের একটি সিঁড়িও তৈরি করে রাখে। সেই সিঁড়ি ব্যবহার করে তারা শাসকদের কারো কারো আনুক‚ল্য পায়। ফলে দুর্নীতি চরম আকার ধারণ করে এবং তা একটি রাষ্ট্রকে ক্রমশ দেউলিয়া করে তোলে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে মৌলবাদী ও স্বৈরতান্ত্রিক রাজনীতি সেই পথ উন্মুক্ত করে গেছে। এর পথ ধরেই এই দেশে মানুষের জানমালের নিরাপত্তা হয়ে উঠেছে রাজনীতির হাতিয়ার। বাংলাদেশে এখনো কৃষক-মজুরই প্রধান শক্তি। অবরোধের কারণে আজ তারা কাজ করতে পারছে না। ফসল-সবজি-আনাজ আসতে পারছে না শহরে। এটা কেমন রাজনীতি?

বাংলাদেশে ২০১৫-এর প্রথম জাতীয় সংসদ অধিবেশন শুরু হয়েছে। গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার চ্যালেঞ্জ নিয়ে বর্তমান সরকার দেশ পরিচালনা করছে মন্তব্য করে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সরকার ও বিরোধী দলসহ সবাইকে জাতীয় সংসদে গঠনমূলক ও কার্যকর ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানিয়েছেন তার স্বাগত ভাষণে। রাষ্ট্রপতি বলেছেন, ‘সাংবিধানিক প্রক্রিয়া সমুন্নত রেখে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখার চ্যালেঞ্জ নিয়ে বর্তমান সরকার দেশ পরিচালনা করছে। গণতন্ত্রের বিকাশ, আইনের শাসন সুদৃঢ়করণ এবং সামাজিক শান্তি ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে সরকার দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। গণতন্ত্রের ধারাবাহিক চর্চা ও অনুশীলন জাতির বিভিন্নমুখী সমস্যার সমাধান দিতে সক্ষম।’

মহামান্য রাষ্ট্রপতি বলেছেন, ‘জাতীয় সংসদ দেশের সব কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু। এ প্রেক্ষাপটে আমি সরকারি দল ও বিরোধী দল নির্বিশেষে সবাইকে জনগণের আকাক্সক্ষা পূরণের প্রতিষ্ঠান জাতীয় সংসদে গঠনমূলক ও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাই।’ বর্তমান সরকারের দায়িত্ব নেয়ার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক অস্থিরতা, আন্দোলনের নামে কতিপয় রাজনৈতিক দলের জ্বালাও-পোড়াও, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, খুন-জখমসহ ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের মধ্যে বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে।’ রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করতে সরকার আন্তরিকতার পরিচয় দিয়েছে। ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গৌরবোজ্জ্বল স্বাধীনতা সমুন্নত এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুজ্জ্বল রাখতে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন সুদৃঢ় করতে এবং শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে, বাঙালি জাতিকে আবারো ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।’ হ্যাঁ- সেটাই আজ আসল কথা। রাষ্ট্র ক্ষমতা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করা, দেশে জঙ্গিবাদ প্রতিষ্ঠা করার জন্য যারা মরিয়া হয়ে উঠেছে তাদের রুখে দিতে হবে সাধারণ মানুষকেই।

আমরা জেনেছি বাংলাদেশে ভাইবার ও ট্যাঙ্গোর পর এবার হোয়াটস অ্যাপসহ আরো তিনটি ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং ও ভিওআইপি এপ্লিকেশন ‘নিরাপত্তাজনিত কারণে’ বন্ধ করেছে বাংলাদেশ সরকার। টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়েগুলোকে (আইআইজি) হোয়াটস অ্যাপ, মাইপিপল ও লাইন নামের এই তিনটি অ্যাপ বন্ধের নির্দেশনা পাঠিয়েছে। এটা কি সাময়িক? এটা কি দেশের মানুষের নিরাপত্তার জন্য? এমন অনেক কথা আসছে। অস্বীকার করার উপায় নেই, অনলাইন যোগাযোগ এই সময়ে কোনো রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতেই পারে। কিন্তু অবাধ তথ্যপ্রবাহ বন্ধ করা, স্থায়ী সমাধান নয়। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিয়েছেন। খুব দ্বিধাহীন চিত্তে বলতে চাই, এই বিজয় আমাদের মহান মুক্তি সংগ্রামের। যে চেতনায় বাংলার হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান-আদিবাসীরা মহান মুক্তিযুদ্ধে শরিক হয়েছিলেন, সেই চেতনার বিজয় নিশানই আজ উড়াচ্ছে রাষ্ট্র। অভিবাদন, মাননীয় প্রধান বিচারপতি।

বলে নিতে চাই, গেল এক বছর তো দেশে স্থিতিশীলতা ছিল। এখন তা হলে অস্থির করে তোলার নেপথ্যে মতলব কি? রাষ্ট্রক্ষমতা দখল? যুদ্ধাপরাধীদের মুক্ত করে দেশে জঙ্গিবাদ কায়েম করা? মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভূলুণ্ঠিত করে রাজাকারদের হাতে দেশ তুলে দেয়া? ‘আমরা সবাই তালেবান-বাংলা হবে আফগান’ এই স্লোগান কারা দিয়েছিল, তাদের চেহারা বাংলার মানুষ এখনো মনে রেখেছেন। আজ সেই দানবরাই তাদের প্রকৃত চেহারা আবারো দেখাচ্ছে। বাংলাদেশে জানমালের নিরাপত্তার জন্য যা যা করা দরকার তা সরকারকে করতে হবে। পেট্রল বোমা হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইন করতে হবে। মোবাইল কোর্ট করে অপরাধীদের দ্রুত বিচার করতে হবে। দীর্ঘমেয়াদি শাস্তি দিতে হবে। অপরাধীর কোনো দল নেই। এটা মনে রেখেই সরকারকে এগোতে হবে। চার দশকেরও বেশি বয়সী বাংলাদেশ এখনো দাঁড়িয়ে আছে গুচ্ছ গুচ্ছ ভুল কর্তৃত্বের হাতে। সুবিধাবাদী এসব কর্তা সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিকভাবে বিভিন্ন অশুভ শক্তির প্রতিভু। এদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে এই প্রজন্মকে। শুদ্ধতার অতন্দ্র মনীষা প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে গ্রামীণ জনপদের মানুষকে সতর্ক, সাহসী করে গড়ে তুলতে হবে। মনে রাখতে হবে আটষট্টি হাজার গ্রামই বাংলাদেশের মূল শক্তি বিন্দু। সেই কৃষক মজুর সমাজই শ্রেষ্ঠ শক্তি যারা এ দেশের ধান, পাঠ, সবজি, ফলমূলসহ সব আহার্যের জোগানদার। সেই গ্রাম থেকে উঠে আসা মানুষই শক্তি যারা রিকশার প্যাডেল চাপে কিংবা গার্মেন্টসের চড়কা ঘুরায়। গণমানুষের সঙ্গে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক প্রচারণা বন্ধ হলেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে অনেক ধাপ। আর এ জন্য এ প্রজন্মকেই নিতে হবে অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা। আর সরকারকে প্রতিষ্ঠা করতে হবে আইনের সাংবিধানিক শাসন।
--------------------------------------------------------------
দৈনিক ভোরের কাগজ ॥ ঢাকা ॥ শনিবার, ২৪ জানুয়ারি ২০১৫ প্রকাশিত

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১১:১০

আহলান বলেছেন: গোড়ায় গলদ ...সে ব্যাপারে তো কিছুই বলা হয় নাই .... এই দেশে দুটি রাজনৈতিক দল আছে .... আলীগ-বিএনপি। বাকি যে দলগুলো আছে তারা পরগাছা .... বৃহৎ একটি দলকে বাইরে রেখে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো তা সমগ্র জনগোষ্ঠির কতটুকু আস্থাভাজন? গনতন্ত্র মানে কি? জনগন এর মতামতের ভিত্তিতে নির্বাচিত সরকার। যে নির্বাচনে দেশের সকল জনগন তাদের মতামত দিতে পারেনি, সেই নির্বাচনের উপর ভিত্তি করে গঠিত সরকার, পুরো একটি টার্ম দেশ শাসন করবে, সেটা চিন্তা করাটা কতটা গনতান্ত্রিক? যুক্তি সংগত?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.