![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এই ব্লগের সকল মৌলিক লেখার স্বত্ত্ব লেখকের।এখান থেকে কোনো লেখা লেখকের অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ, ছাপা, অনুলিপি করা গ্রহনযোগ্যনয়। তা সৃজনশীল কাজের পরিপন্থী। লেখা অন্য কোথাওপ্রকাশ, ছাপা করতে চাইলে লেখকের সম্মতি নিতে হবে। লেখকের ইমেল - [email protected]
সরকারকে বিচক্ষণ হতে হবে কর্মপন্থায়
ফকির ইলিয়াস
====================================
ঢাকার রাশিয়ান রাষ্ট্রদূত আলেকসান্দর এ নিকোলায়েভ বলেছেন- ‘দুফোঁটা পানি বৃষ্টি বোঝায় না। বাংলাদেশে সা¤প্রতিক দুটি বিদেশি হত্যাকাণ্ডে রাশিয়াও উদ্বিগ্ন। আমি জানি, বাংলাদেশে তা কেন হচ্ছে। বাংলাদেশে দীর্ঘদিন শান্ত ও সুন্দর পরিবেশ বিরাজ করছে।’ সচিবালয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেননের সঙ্গে বৈঠকে রাষ্ট্রদূত এ কথা বলেন বলে খবর বেরিয়েছে। এ সময় মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক ভালো। তা সত্ত্বেও কয়েকটি দেশ তাদের নাগরিকদের বাংলাদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে অনাকাক্সিক্ষত এলার্ট জারির কারণে দেশের পর্যটন খাতসহ বাংলাদেশের উদীয়মান অর্থনীতির অগ্রগতি ব্যাহত হতে পারে, যা কাম্য নয়।’
বাংলাদেশে নানাভাবেই বাকযুদ্ধ হয়, বিভিন্ন সময়ে। কিন্তু যে বিষয়টি লক্ষণীয়, তাহলো- এই বাকযুদ্ধের আড়ালে প্রকৃত আসামিরা যেন পার পেয়ে না যায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিদেশে বসে খালেদা জিয়া ষড়যন্ত্র করছেন। তিনি বলেছেন, বিদেশে বসে দেশে খুন করাচ্ছেন। বিদেশি নাগরিক হত্যা করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন খালেদা জিয়া। তিনি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, এটা তার নতুন কৌশল। বিদেশে বসে এখন দেশে একটা অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টির পরিকল্পনা নিয়েছেন তিনি। রাষ্ট্রপ্রধান আরো বলেছেন, বিদেশে থেকে ওদিকে লবিস্ট রেখেছেন, ইউরোপ, ইউকে, ইউএসএ বিভিন্ন জায়গায়। তাদের কাজ হলো জামায়াত এবং বিএনপি মিলে নানা ধরনের অপপ্রচার এবং একটা প্যানিক ছড়ানো। সরকারপ্রধান বলেন, বিদেশে বসে বাংলাদেশে বিদেশিরা যারা আছেন তাদের হত্যা করে বিদেশিদের মধ্যে একটা আতঙ্ক সৃষ্টি করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করা। উনি দেশে থেকে দেশের মানুষ পুড়িয়ে আর বিদেশে থেকে দেশে থাকা বিদেশি আছে তাদের মেরে ওনার আন্দোলন। তিনি বলেন, উনি দেশে থেকে দেশের মানুষ হত্যা করেছেন। এখন আবার বিদেশে গেছেন। এখন নাকি আন্দোলনের কৌশল পাল্টেছেন। দেশবাসীকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, যখনই দেশের উন্নতি হয়, দেশ যখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সম্মানজনক অবস্থানে যায় তখন বিএনপি-জামায়াত জোট তাদের একটা অন্তঃপীড়া শুরু হয়ে যায়। দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এরা উঠেপড়ে লাগে। তখন তারা খুন করা, নানান ধ্বংসাত্মক কাজ করাসহ যা যা করা দরকার তাই করে। এ জন্য জনগণকে সচেতন হতে হবে। সহিংসতার কথা তুলে ধরে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ৯২টা দিন বিএনপি নেত্রী তার পার্টি অফিসে বসে ৬৪ জন মানুষ নিয়ে তিনি ঘোষণা করলেন, সরকার উৎখাত না করে ঘরে ফিরবেন না। তিনি সরকার উৎখাত করবেন দেশের নিরীহ মানুষ হত্যা করে? এমন বীভৎস দৃশ্য বোধহয় মানুষ আর কখনো দেখেনি। জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। শিশু-নারী কেউ তাদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। উনি অফিসে বসে থেকে মানুষ হত্যা করলেন। গাড়ি পোড়ানো, লঞ্চ পোড়ানো, বাস-ট্রেন পোড়ানো, জ্বালাও-পোড়াও, মানুষ খুন করা, বোমা মারা, পেট্রলবোমা মারা এই ছিল তার রাজনীতি। এটাই তার আন্দোলন। ২০০১-পরবর্তী বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, তারা সারা দেশে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করেছিল। খুন করা ছাড়া তাদের কোনো কাজ ছিল না।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই যে কথাগুলো বলেছেন- তা দেশবাসীর অজানা নয়। তারা দেখেছেন এই বছরের শুরুর দিকে কিভাবে বাংলাদেশে সহিংসতা হয়েছে। এর কারণ কি? খালেদা জিয়া নিজেকে আপসহীন নেত্রী মনে করেন। তিনি মনে করেছিলেন ১৯৯০ আর ২০১৫ একই সময়।
বাস্তবে তা কিন্তু নয়। এই সময়ে দেশে এককোটি নতুন ভোটার তৈরি হয়েছে। যে ভোটার মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার। যে ভোটার ঘাতক-দালাল-আলবদর-রাজাকারদের বিচার চেয়ে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোটকে ক্ষমতায় বসিয়েছিল।
একটা বিষয় নিয়ে সর্বমহলে আলোচনা বিদ্যমান। বাংলাদেশে জঙ্গি আছে কি নেই! কিন্তু আমাদের অদূর অতীত কি বলে? সেদিকে আমাদের একটু তাকানো দরকার। আমরা ভুলে যাইনি ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট বাংলাদেশের মোট ৬৪ জেলার ৬৩টিতেই একযোগে বোমা হামলা চালিয়ে জঙ্গিদের শক্তির জানান দিয়েছিল জেএমবি। ওরা কাঁপিয়ে দিয়েছিল পুরো বাংলাদেশ। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। হামলায় শেখ হাসিনা আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান। তবে নিহত হন আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন। পরে বেরিয়ে আসে, এই হামলা চালায় মুফতি হান্নানের হরকাতুল জিহাদ। এর আগেও ঢাকার রমনা বটমূল এবং যশোরে উদীচী সাংস্কৃতিক গোষ্ঠীর অনুষ্ঠানে জঙ্গি হামলা চালিয়েছিল হরকাতুল জিহাদ। জেএমবি ১৭ আগস্টের পর সারা দেশে একের পর এক আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে বিচারক, আইনজীবী, পুলিশ, সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তাসহ ৩৩ জনকে হত্যা করে। ২০০৫ সালের ১৪ নভেম্বর বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের ঝালকাঠিতে দুই বিচারক হত্যা মামলায় তখনকার জেএমবি প্রধান শায়খ আবদুর রহমান, সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাইসহ শীর্ষ ছয়জন জঙ্গির ফাঁসি হয়। ১৭ আগস্টের বোমা হামলার ঘটনায় বাংলাদেশে মোট ১৫৯টি মামলা হয়। এর মধ্যে ৯১টি মামলার বিচার শেষে তিনজনের মৃত্যুদণ্ড, ১১২ জনের যাবজ্জীবন এবং ১০১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। পলাতক আছে ফাঁসির তিন আসামিসহ ৭৪ জন সাজাপ্রাপ্ত জঙ্গি। গোয়েন্দা বিভাগের যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম ডয়চে’ভেলকে বলেছিলেন, গেল পাঁচ বছরে বাংলাদেশে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযান হয়েছে। বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত কমপক্ষে দেড় হাজার ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এই ধারাটি বাংলাদেশে তৈরি করেছিল কোন রাজনৈতিক দল? কারা রাজাকারদের মন্ত্রী বানিয়েছিল? সবকিছুই বাংলাদেশের মানুষ জানেন। কেউ কেউ বলছেন, এখন প্রতিপক্ষকে আক্রমণের সময় নয়। সময় জাতীয় ঐক্যের। কথা হচ্ছে- জাতীয় ঐক্যটি কার সঙ্গে? যারা এখনো মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে না তাদের সঙ্গে?
মানুষ যখন এগিয়ে যেতে থাকে, তখন একটি মহল শঙ্কিত হয়। তারা ভাবে- আর বুঝি ঠেকানো গেল না। মানুষকে ফাঁদে আটকানোর একটি হাতিয়ার হচ্ছে ধর্মীয় মৌলবাদ। বস্তিতে বস্তিতে কিংবা গ্রাম-গ্রামান্তরে মৌলবাদ ছড়িয়ে দেয়ার যে প্রবণতা তা বাংলাদেশে নতুন নয়, আগেও হয়েছে। মানুষ তখন ততটা সচেতন ছিল না। ধর্মের দোহাই দিয়ে কারা সমাজকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেছে, তা সবারই জানা। ‘বিবি তালাকে’র ফতোয়া আনার জন্য কয়েক মাইল পথও হেঁটেছে আগেকার দিনে কেউ কেউ। ধর্মীয় তমদ্দুনের দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে এক ধরনের ‘সামাজিক ব্যবসা’ও করেছে সেসব তালাকপত্র লেখক ফতোয়াবাজ। তারা মানুষের কাছ থেকে টাকাকড়িও নিয়েছে। ‘বিবি তালাক হয়ে গেছে’ এ মর্মে আড়াইশ টাকা ফি নিয়ে ফতোয়া দিয়েছেন একজন। ‘না, বিবি তালাক হয়নি’ এমন মর্মে লিখিত ফতোয়া দিয়েছেন অন্যজন পাঁচশ টাকা ফি গ্রহণ করে। সবই ছিল টাকার খেলা। এসব অপকর্মের হোতারা এখন তাদের কৌশল পাল্টাচ্ছে। নতুন রূপে আবির্ভূত হচ্ছে। এটা সবার জানা এবং বোঝা উচিত বাংলাদেশে মৌলবাদ যারা সমাজের ঘাড়ে চাপাতে চাইছে, তাদের জীবনাচার এর বিপরীত। তাদের ছেলেমেয়েরা পড়ছে বিদেশের দামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। আর তারা বাংলাদেশে মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার নামে চাঁদা তুলে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। একই অবস্থা মধ্যপ্রাচ্যের সেসব দেশে, যারা উপমহাদেশে তথা বাংলাদেশে মৌলবাদ প্রতিষ্ঠার বর্তমান কারিগর। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের আধুনিক মেয়েরাই এখন ‘হিজাব’ ছুড়ে ফেলে দিয়ে সমকালের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ পোশাক পরছে। অফিস, আদালত, ব্যাংক-বীমা, দপ্তর চালাচ্ছে। আর সেই হিজাবকে আরোপ করার চেষ্টা করা হচ্ছে বাংলাদেশে।
ভেতরে ভেতরে অনেক কিছুই ঘটছে বাংলাদেশে। খুনিরা কৌশল পাল্টাচ্ছে। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সরকার কতটা পেরে উঠছে? যদি পারত তাহলে ইতালিয়ান ও জাপানি দুজন নাগরিক হত্যার কোনো সুরাহা কেন এখনো করা গেল না? যারা রাষ্ট্রীয় আইন অমান্য করে দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে, তাদের আইনের মুখোমুখি করা হোক। তাদের বিচার করার জন্য সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেয়া হোক। তা না হলে আশকারা পেয়ে তারা দেশের ভবিষ্যৎ ক্রমেই অনিশ্চয়তার দিকেই ঠেলে দেবে। ৩০ লাখ শহীদের রক্তস্নাত এ ভূখণ্ড কোনো মৌলবাদী দানবতন্ত্রের লীলাক্ষেত্র হতে পারে না। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই সব সিদ্ধান্ত নেবেন বলে আশা করে এ দেশের মানুষ।
১৬ কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রেই এখন বাংলাদেশের নাম। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। পোশাক রপ্তানিতে চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারটিতে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ছিল যথাক্রমে ২ দশমিক ৮২ এবং ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। আর চতুর্থ বা এপ্রিল শেষে সেটি বেড়ে ৭ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। সব মিলিয়ে একক দেশ হিসেবে পোশাকের বড় এই বাজারে বাংলাদেশের তৃতীয় অবস্থানটি টিকে আছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে বড় এই বাজারটিতে ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি হয়ে আসছিল বাংলাদেশের। তবে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সেটি ইতিবাচক ধারায় ফেরে। বছরের প্রথম চার মাস অর্থাৎ জানুয়ারি-এপ্রিল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ৬৩ কোটি বর্গমিটারের সমপরিমাণ ১৮২ কোটি ৬৪ লাখ মার্কিন ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়। এই আয় গত বছরের একই সময়ের ১৭০ কোটি ডলারের চেয়ে ৭ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ বেশি। অবশ্য এই সুসংবাদের আড়ালে দুঃসংবাদও আছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রতিযোগী দুই দেশ ভিয়েতনাম ও ভারতের কাছে প্রবৃদ্ধির বিচারে পিছিয়ে পড়ছে বাংলাদেশ। এ বছরের প্রথম চার মাসে ভিয়েতনাম ৩২৩ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে যুক্তরাষ্ট্রে। তাদের প্রবৃদ্ধি ১৩ দশমিক ১৪ শতাংশ। তাহলে দেখা যাচ্ছে এই দেশের মানুষ নিরন্তর সংগ্রাম করেই যাচ্ছেন। এই চলমান ধারাকে ঠেকিয়ে দেয়ার পাঁয়তারা যারা করছে তাদের চিহ্নিত করতে হবে। দেশের মানুষকে প্রতিটি সেক্টরে সতর্ক করতে হবে। দায় সরকারেরই। কারণ যারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকেন- তারা কোনো দায়ই এড়াতে পারেন না। সরকারকে বিচক্ষণ হতে হবে কর্মপন্থায়ও।
-------------------------------------------------
দৈনিক ভোরের কাগজ ॥ ঢাকা ॥ শনিবার, ১৭ অক্টোবর ২০১৫
©somewhere in net ltd.