![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত ঘুরে বেড়াতে চাই।দুচোখ ভরে সুন্দর্য কুড়িয়ে যেতে চাই।
অমিয় চক্রবর্তীর লিখা আমার কিছু প্রিয় কবিতা,শেয়ার করলাম,হয়ত আপনাদের ভাল লাগবে।
রাত্রি
অতন্দ্রিলা,
ঘুমোওনি জানি
তাই চুপি চুপি গাঢ় রাত্রে শুয়ে
বলি, শোনো,
সৌরতারা-ছাওয়া এই বিছানায়
---সূক্ষ্মজাল রাত্রির মশারি---
কত দীর্ঘ দুজনার গেলো সারাদিন,
আলাদা নিশ্বাসে---
এতক্ষণে ছায়া-ছায়া পাশে ছুঁই
কী আশ্চর্য দু-জনে দু-জনা---
অতন্দ্রিলা,
হঠাত্ কখন শুভ্র বিছানায় পড়ে জ্যোত্স্না,
দেখি তুমি নেই |
***********
বৃষ্টি
কেঁদেও পাবে না তাকে বর্ষার অজস্র জলধারে।
ফাল্গুন বিকেলে বৃষ্টি নামে।
শহরের পথে দ্রুত অন্ধকার।
লুটোয় পাথরে জল, হাওয়া তমস্বিনী;
আকাশে বিদ্যুত্জ্বলা বর্শা হানে
ইন্দ্রমেঘ;
কালো দিন গলির রাস্তায়।
কেঁদেও পাবে না তাকে অজস্র বর্ষার জলধারে।
নিবিষ্ট ক্রান্তির স্বর ঝরঝর বুকে
অবারিত।
চকিত গলির প্রান্তে লাল আভা দুরন্ত সিঁদুরে
পরায় মূহুর্ত টিপ,
নিভে যায় চোখে
কম্পিত নগরশীর্ষে বাড়ির জটিল বোবা রেখা।
বিরাম স্তম্ভিত লগ্ন ভেঙে
আবার ঘনায় জল।
বলে নাম, বলে নাম, অবিশ্রাম ঘুরে-ঘুরে হাওয়া
খুঁজেও পাবে না যাকে বর্ষায় অজস্র জলধারে।
আদিম বর্ষণ জল, হাওয়া, পৃথিবীর।
মত্ত দিন, মুগ্ধ ক্ষণ, প্রথম ঝঙ্কার
অবিরহ,
সেই সৃষ্টিক্ষণ
স্রোত:স্বনা
মৃত্তিকার সত্তা স্মৃতিহীনা
প্রশস্ত প্রচীর নামে নিবিড় সন্ধ্যায়,
এক আর্দ্র চৈতন্যের স্তব্ধ তটে।
ভেসে মুছে ধুয়ে ঢাকা সৃষ্টির আকাশে দৃষ্টিলোক।
কী বিহ্বল মাটি গাছ, দাঁড়ানো মানুষ দরজায়
গুহার আঁধারে চিত্র , ঝড়ে উতরোল
বারে-বারে পাওয়া, হাওয়া, হারানো নিরন্ত ফিরে-ফিরে-
ঘনমেঘলীন
কেঁদেও পাবে না যাকে বর্ষায় অজস্র জলধারে।
***********
বিনিময়
তার বদলে পেলে---
সমস্ত ঐ স্তব্ ধ পুকুর
নীল-বাঁধানো স্বচ্ছ মুকুর
আলোয় ভরা জল---
ফুলে নোয়ানো ছায়া-ডালটা
বেগনি মেঘের ওড়া পালটা
ভরলো হৃদয়তল---
একলা বুকে সবই মেলে ||
তার বদলে পেলে---
শাদা ভাবনা কিছুই-না-এর
খোলা রাস্তা ধুলো-পায়ের
কান্না-হারা হাওয়া---
চেনা কণ্ঠে ডাকলো দূরে
সব-হারানো এই দুপুরে
ফিরে কেউ-না-চাওয়া |
এও কি রেখে গেলে ||
**********
কোথায় চলছে পৃথিবী
তোমারও নেই ঘর
আছে ঘরের দিকে যাওয়া।
সমস্ত সংসার
হাওয়া
উঠছে নীল ধূলোয় সবুজ অদ্ভূত;
দিনের অগ্নিদূত
আবার কালো চক্ষে বর্ষার নামে ধার।
কৈলাস মানস সরোবর
অচেনা কলকাতা শহর—
হাঁটি ধারে ধারে
ফিরি মাটিতে মিলিয়ে
গাছ বীজ হাড় স্বপ্ন আশ্চর্য জানা
এবং তোমার আঙ্কিক অমোঘ অবেদন
আবর্তন
নিয়ে
কোথায় চলছে পৃথিবী।
আমারও নেই ঘর
আছে ঘরের দিকে যাওয়া।।
********
১৩৫০
হাত থেকে তার পড়ে যায় খসে
অবশ্য আধলা ধুলোয়।
চোখ ঠেলে খোলা অসাড় শূন্যে।
প্রাণ, তুমি আজো আছ ঐ দেহে,
আছ মুমূর্ষু দেশে।
কঙ্কাল গাছ ভাদ্রশেষের ভিখারী ডালটা নাড়ে,
কড়া রোদ্দুর প্রখর দুপুরে ফাটে।
হাতের আঙুলে স্নেহ দিয়েছিলে
চোখে চেনা জাদু আপন ঘরের বুকে -
বাঙলার মেয়ে, এসে ছিল তার জীবনের দাবি নিয়ে,
দুদিনের দাবি ফলন্ত মাঠে, চলন্ত সংসারে;
কতটুকু ঘেরে কত দান ফিরে দিতে।
সামান্য কাজে আশ্চর্য খুশি ভরা।
আজ শহরের পথপাশে তাকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে কোথা
সভ্যতা ছোটে তেরোশো পঞ্চাশিকে।।
***********
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে নভেম্বর, ২০১০ রাত ৯:৩৭
পদ্মাচরের লাঠিয়াল বলেছেন: ++++++++++++