![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঠিক কখন মনে নাই, তবে বেশি দিনের কথা না। সমাজ কল্যাণ ইনিস্টিটিউটের ক্যান্টিনে বসে আছি। কিছুদিন থেকে আমার সাথে এই ক্যান্টিনের কেমন একটা সম্পর্ক তৈরি হয়ে গেছে। ক্যান্টিনের ষ্টীলের চেয়ারগুলি এবং টেবিলগুলোর সাথে ও আমার সখ্যতা গড়ে উঠে। ক্যান্টিন বয়গুলিও কেমন জানি যতন করে। মজার বিষয়, এই ক্যান্টিনে ফারুক নামে একজন বয় আছে। আমি সব সময় চঞ্চল প্রকৃতির ছেলে। কিন্তু এই ক্যান্টিনে আমি কেমন করে এত শান্ত হয়ে বসে থাকি, তা আমার কাছে আলাদীনের আশ্চর্য প্রদীপের মত রহস্যাবৃত মনে হয়। টেবিলের উপর পশ্চিম দিকে মাথা রেখে মুখখানা তার দিকে রেখে তাকিয়ে আছি। যতদূর মনে পড়ছে, তার হাতখানা আমার হাতের আঙ্গুলগুলির ভিতর আবদ্ধ। যেমন ফাঁদের ভিতর অতিথি পাখি। পাঠক এখানে “তার” মানে হচ্ছে আমার জীবনের নায়িকা। আমাদের জীবনের একটা কমন বিষয় আছে, তা হচ্ছে প্রতিদিন হালকা পাতলা চিল্লাচিল্লি করা। যাক প্রতিদিনের রুটিন সেরে বসে আছি। তার মুখখানা দেখলে তখন যে কেউ বলবে, এই মাত্র ঢাকা শহরের কাক তার মাথার উপর সাদা সস ঢেলে দিয়েছে। মনে করবেন না, তিনি আমার হাত ধরে আছে- ফাঁদ কিন্তু আমারই।
হঠাৎ খুব সিরিয়াস ভঙ্গিতে বলল, সত্যি করে একটা কথা বলবা? তার ভাবখানা দেখে আমার ভিতর মোচড় দিয়া উঠল। এমন ভাব ছিল যেন চোখ দিয়ে এখন জলধারা প্রবাহ হইবে।
ভয় পাইয়া তৃষ্ণার্ত গলায় বললাম, কী?
নিচু নিচু কণ্ঠে কহিল, মিথ্যা বলিবে না তো? আমি কিছু মনে করব না।
আমার ভিতর পানি একেবারে শুকিয়ে শূন্যের কোটায় নেমে আসল। বললাম, বল?
সে কিছুক্ষণ চুপ হয়ে গেলেন। মাথা নিচু করে কি যেন ভাবতে লাগলেন। এদিকে আমার ভিতর শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ, আমার মাথা ধরে চোখের দিকে তাকিয়ে বলল, তুমি আগে কারো সাথে প্রেম করনি তো?
আমার হাসি পেয়ে গেল। চিন্তা করলাম এত ভাব এই প্রশ্নের জন্য! যাক বাবা তার কঠিন এক্কান প্রশ্ন, আমার উত্তর দেওয়া লাগবে। আমি স্বভাবত হাসিয়া বললাম, হাঁ।
তিনি আবার গম্ভীর হয়ে বললেন, যা বলছি উত্তর দাও?
আমি আবার বললাম, হাঁ।
তিনি মুখখানা কাল করে বললেন, তো?
আমি হাসিয়া বললাম, তো আবার! অনেকের সাথে প্রেম করেছি।
তিনি চোখগুলি বর্ষার বর্ষণের মত করে বললেন, কত জনের সাথে?
আমি বললাম, অনেকের সাথে।
সে বলল, মানে!
আমি গম্ভীর হয়ে বললাম, মনে কষ্ট নিও না। আমি অনেকের সাথে প্রেম করেছি মানে, হয়ত আমি কাউকে পছন্দ করেছি বা কেউ আমাকে পছন্দ করেছে কিন্তু দুজন একসাথে কেউ কাউকে পছন্দ করিনি।
একখানা মিষ্টি হাসি দিয়ে বলল, সত্যি?
আমি বললাম, সত্যি সত্যি।
এরপর তার ঢেঁকুর দেখে মনে হল, তিনি আমাকে বিশ্বাস করেছেন।
পাঠক, তৃপ্তি পাওয়ার দরকার নেই। সেইদিন তাহাকে তৃপ্ত পাইলেও মাঝে মাঝে আমি তাহাকে কিছু বলতে গেলে, আমাকে বলতে ছাড়েনা খুবই এক্সপেরিয়েন্স বুঝি? এখনো অসমাপ্ত রহিয়া গেল...........................
©somewhere in net ltd.