নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর।

নিরন্তর যাত্রা

Be a positive thinker..

নিরন্তর যাত্রা › বিস্তারিত পোস্টঃ

‘আমি তোমাকে ছেড়ে কোথায় যাবো?’ কিন্তু...(নিজের জীবনের সত্য ঘটনা অবলম্বনে

০৮ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:০৩

বড় বোনের বিয়ে, বাসার ছাঁদে খুব সুন্দর আয়োজন করা হয়েছে। আলোর ছড়াছড়ি! আলোরা পসরা দল বেঁধে বসে আছে রূপ বিলাতে। লাল নীল হলুদ বাতিগুলো মিটিমিটি করে জ্বলছে। আমি আমার হোটেলের অন্ধকার রুমটাতে বসে দেখছি আলোর উন্মাদ খেলা। তোমার মনে আছে? তোমাকে বলতাম আপুর গায়ে হলুদে যাব, তোমার সব বন্ধুরা আসবে, অনেক মজা করবো। তুমি সবাইকে পরিচয় করিয়ে দিবে। মনে নেই তোমার?



আচ্ছা তুমি এখন কি করছ? আমার কথা কি মনে পড়ছে নাকি কত শত মানুষদের নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত তুমি? বোনের বিয়ের গায়ে হলুদে তুমি নিশ্চয়ই অনেক সুন্দর করে সেজে আছো, ঠিক যেমনটা আমাকে বলতে, নীল-হলুদের আঁচড় দেওয়া শাড়িতে সাজতে না ভীষণ ইচ্ছে করত তোমার, আর তোমাকে নীল শাড়িতে দেখতে কেমন সুন্দর লাগবে এটা ভেবেই আমি কেমন আনমনা হয়ে যেতাম! তোমার মনে পড়ে?



আচ্ছা তোমার মনে আছে, আমি যখন তোমাকে বলতাম, আমাকে কখনো ছেড়ে যাবে না তো? তুমি বলতে কি সব বাজে বকো তুমি, আমি তোমাকে ছেড়ে কোথায় যাবো? তুমি ছাড়া আমার আর কে আছে? খুব জানতে ইচ্ছে করে এখন তুমি কেমনে আছো! আমি তোমার এত কাছে তবুও তুমি কিভাবে স্থির আছ? কিভাবে তোমার দেহ এখন দণ্ডায়মান! আমাকে দেখতে কি একবারও মন চাইনি। মনে পড়ে, হলের সামনে থেকে বিদায় নিয়ে আসার সময় শুধু একদিন পিছনে ফিরে তাকাই নি বলে কত রাগ করে ছিলে? আজ কই সব?



তোমার মনে আছে? তোমার সাথে রাতে একটু কথা না হলে আমি সারা রাত জেগে থাকতাম, আর তুমি ঘুম পাড়িয়ে দিলে আমি ছোট্ট শিশুর মত ঘুমিয়ে পড়তাম!! এটা ভেবে তুমি কখনো রাতে দেরি করতে না, যাই হোক না কেন তুমি ঠিক ই আমাকে ঘুম পাড়িয়ে দিতে। মনে আছে বাসায় একদিন তুমি অসুস্থ হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলে, আর সারারাত তোমার জন্য জেগে ছিলাম। আজ আমি কিভাবে ঘুমবো বলতে পারো?



তোমার মনে আছে? তুমি বলেছিলে পৃথিবীতে তুমি আমাকে ছাড়া আর কাউকে বিশ্বাস করতে পারো না, তা হলে আজ কেন আমার ওপর বিশ্বাস রাখতে পারলে না। আমি না হয় ভুল করেছি? আমার ভুলের জন্য আমি অনুতপ্ত, আমি লজ্জিত। তবুও কেন তুমি আমাকে ক্ষমা করে আপন করে নিতে পারছ না। কেন এমন করলে? আমাকে একবার বল?



তোমাকে জানিয়ে দিয়, একটা ছেলে আমাকে ফোন দিয়ে তোমার ব্যাপারে কতো আজেবাজে কথা বলেছিল, আমার মত মানুষ হয়েও একটি বারের জন্য তোমাকে বলিনি। কারণ তুমি এমন হতেই পারো না, তোমার সাথে নাকি তার সম্পর্ক ছিল, আশ্চর্য! ফেইসবুকের মাধ্যমে তোমাদের রিলেশনটা হয়ে ছিল। এরপর থেকে তোমার ফেইসবুক পাসওয়ার্ড নিজের কাছে রাখতে চাইতাম। আমি মনে করেছিলাম ছেলেটি হয়তো ফেইসবুকে তোমাকে ডিস্টার্ব করে। তাই তার আইডি জানার চেষ্টা করতাম। কিন্তু......।



তোমার মনে পড়ে? সেই ভার্সিটির প্রথম দিন তোমার সাথে দেখা হয়েছিল আর তখন থেকেই আমি তোমাকে ভালবেসে ফেলেছি। এরপর কতদিন পাশাপাশি ছিলাম। তোমার মনে পড়ে? শেষবার যখন ট্রেন স্টেশনে তোমাকে বিদায় দিয়েছিলাম তুমি আমাকে ছুঁয়ে কথা দিয়েছিলে তুমি কখনো আমাকে ছেড়ে যাবে না। ভুলে গেছ? বিশ্বাস করতে পারছি না, এই কি সেই তুমি?! একটা মানুষ কি করে একদিনে এত বদলে গেল, একবারও ভাবল না আমার কথা।



বন্ধু বান্ধবীদের সাথে হৈ-হুল্লোড় করছো হলুদের আসরে, একবার কি আমার খবর নেওয়ার ও প্রয়োজন বোধ কর নি? একবারও কি মনে পড়ছে না সে মানুষটির কথা যে তোমাকে একটি বার দেখার জন্য দূর থেকে অনেক দূরে এক অজানার মাঝে ছুটে এসেছে!



আর পারছিনা! আর একটুও বাঁচতে ইচ্ছে হচ্ছে না! জীবনটাকে শেষ করে দিতে ইচ্ছে হচ্ছে! পুরো পৃথিবীটাকে ছোট মনে হচ্ছে! কিন্তু ভাবি কার জন্য জীবন দিব, যাকে এই জীবনের সবটুকুই দিয়ে দিলাম সে তো এর কোন পরোয়াই করলো না! ডুকরে কেঁদে উঠি, শরীরের শেষ শক্তিটুকু থাকা পর্যন্ত চিৎকার করে কাঁদলাম আজ।



রাত- ০২.৩৮

২৮.০২.২০১৪

গুলশান হোটেল

তালতলা, সিলেট।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.