![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখতে দেখতে কেটে গেল কটা সময়; হয়তো বছর কিংবা মাস, নয়তো অজানা ক’দিন। পাগলা ঘোড়ার মত ছুটে চলছে স্রোতের তালে তালে আমার বয়সটাও। আর তাতে অবলীলায় জায়গা করে নিয়ে আছে স্মৃতির কিছু আনাগোনা। মানুষ জীবনে দুটি বিষয় সব সময় অজানায় রাখতে চাই কিন্তু একটি বিষয় তবুও মানুষকে সজাগ করে দিয়ে যায়। তেমনি এই বিষয়টা হলে তোমার স্পষ্ট ছায়া। আজ তোমার কথা মনে হচ্ছে। জানি না আবার কেন? তোমাকে তো আমি ভুলেই ছিলাম, না না ভুল বললাম; ভুলে আছি। আমি তো আজ অন্যেরই। এখন তো অন্যের মাঝে স্বপ্ন দেখি। বসে আছি আমার বুকের মাঝে হয়তো একদিন তার নিঃশ্বাসের ছোঁয়া পড়বে...
তোমাকে আমার আজকাল তেমন একটা মনেই পড়ে না। তোমাকে নিয়ে ভাবনার সময়টুকু আজ হয়ে উঠে না। সারাটা সময় ভবিষ্যতের চিন্তা মাথায় ভর করে থাকে। এই ভবিষ্যৎ ভেবেই তো চলে গিয়েছিলে। আজ আমি ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবতে শিখেছি। তবুও আজ কেন তোমাকে লিখতে বসা? কেন স্মৃতির বন্ধ দুয়ার ইচ্ছে করে খুলে ধুলো মাখা মৃত আটটি লাল গোলাপ গুলোকে তুলে আনা? না কান্না করার জন্য নয়। তোমাকে ভেবে দুখু মিয়াঁ হওয়ার জন্যও নয়। তবে কেন? কারণ আজ এই মৃত গোলাপ গুলোকে স্মৃতির পাতায় সজাগ করে তোমাকে আমার কিছু কথা বলবো....
ছোট এই জীবনে কত স্বপ্নই না ছিল দুজনার। রূপকথার রাজ্যের সেই কুঁড়েঘর আর পুকুর পাড়ের নীল পদ্মের উঠোন। চারদিকে হুহু বাতাস আর দুজনার ছোট্ট সংসার, একসাথে বাঁচার স্বপ্ন। আর সুখে দুখে পাশে থাকার কত আলপনাই না এঁকে ছিলুম। তুমি আমাকে আমার মত ভালবাসতে কিনা আমি জানিনা কিন্তু আমি যে তোমাকে অন্ধের মত ভালবাসতাম সেটা মিথ্যা ছিল না। কি প্রচণ্ডই না ছিল সে আবেগ আর কি উন্মত্ত তার প্রকাশ। কত ছেলে মানুষি-ই না করেছি তোমার জন্য। কত পাগলামি-ই না করেছি তোমাকে পাওয়ার জন্য! ভাবলে এখন হাসিই পায়।
তুমি ছাড়া বাঁচব না, এ জগত সংসার আমার জন্য ফ্যাঁকাসে হয়ে যাবে। তুমি ছাড়া আমি কাউকে ভালবাসতে পারব না। সেই সময় সারাক্ষণ এই ভাবনার অতলে পড়ে থাকতাম। কিন্তু এখন আমি বেঁচে আছি, অনেক ভাল আছি - আছি মহাসুখে। আজ আমি ভালবাসার মানুষ খুঁজে পেয়েছি। আসলে খুঁজে পাইনি সেই আমাকে খুঁজে নিয়েছে। জানো আমি ভাবতাম আমি তোমাকে যতটুকু ভালবাসি এত টা বোধ হয় আর কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব না। কিন্তু কি আশ্চর্য জানো, যে এখন আমার নিত্য সময়ের সঙ্গী সে আমাকে তার থেকে অনেক বেশি ভালবাসে। কি করে ও এত ভালোবাসে তার কোন অর্থ আমি খুঁজে পাই না।
ভেবেছিলাম তুমি ছাড়া এ জীবনে আর আমার সুখই হওয়া হবে না। কিন্তু আমি নিজেও অবাক হই তোমার দেওয়া কষ্ট গুলো এখন আমাকে আর কাঁদায় না, কাঁদাতে পারে না। কারণ ওর ভালবাসার অনেক শক্তি। ওর ভালবাসায় ঘেরা আমার জীবনে তোমার দেওয়া কষ্ট কোন সুযোগই পায় না আমাকে কষ্ট দেবার। জানো ওর কারণে আমি তোমার অভাবই কখনও বোধ করি নি। তোমার মনে কি প্রশ্ন আসছে যে আমি কি তাহলে তোমাকে ভালবাসতাম না?? না, তোমাকে আমি ভালবাসতাম। অনেক বেশি ভালবাসতাম, কিন্তু এখন যদি আমাকে বলা হয় তোমার আর ওর মধ্যে কোন একজন কে বেছে নিতে হবে, আমি ওকে বেছে নিব। ভাবছ দায়বদ্ধতা কিংবা অন্য কোন কারণ আছে। না একটাই কারণ, সে টা হল আমি ওকে ভালবাসি। এবং অনেক বেশি ভালবাসি।
এখন নিশ্চয়ই ভাবছ কেন ওকে ভালবাসি বা যেই আমি তোমাকে অন্ধের মত ভালবাসতাম তাকে ভুলে অন্য একজন কে কি করে ভালবাসছি?? তবে কি মিথ্যে ছিল সেটা নাকি মিথ্যে এটা? কোন টাই মিথ্যে না। তুমি আমার জীবনের প্রথম ভালবাসা। আর ও আমার জীবনের সত্যিকারের ভালবাসা। বলতে পারো, তবে তো তুমি মিথ্যে। না, তুমি পড়ন্ত বিকালের গোধূলির মত সত্য। জানেতে ইচ্ছে করছে কেন ওকে ভালবাসি?? আরে ভালবাসতে কি কোন কারণ লাগে? লাগে না। তবুও তোমার কৌতূহল মেটানোর জন্য দেখি, ভেবে পাই কিনা, কেন ওকে ভালবাসব না। কারণ কেন ভালবাসি, কেন বাসব না এর উত্তর দেয়া সহজ হয় আমার জন্য। তোমাকে প্রমাণ দিয়েও বোঝাতে পারি নি তোমাকে ভালবাসি। আর ওর কাছে কোন দিন প্রমাণ দেয়ার প্রয়োজনই হয় নি।
যখন আমার জীবন প্রায় থেমে যাচ্ছিল, তুমি ছাড়া আমি যখন নিজেকে শেষ করে দিচ্ছিলাম। আর নিজেকে কষ্ট দিচ্ছিলাম ঠিক সে সময় ও পাশে এসে আমার হাতটা ওর হাতে গুঁজে নিয়ে ছিল, কাঁধে মাথা রেখে কাঁদতে দিয়েছিল, আমাকে ছোট বালকের মত আগলে রেখে দিয়েছিল, আমার দুগন্ড বেয়ে পড়া অশ্রু দেখে অঝরে কেঁদেছিল। ও জানত না এর বিনিময়ে ও কিছু পাবে কিনা, কিন্তু তবুও নীল নাগিনীর মত আমার সব বিষ শুষে নিতে ছিল। কোন দিন মুখ ফুটে ওকে কিছু বলতে হয় না আমার, আমার চোখে ও নাকি সব পড়তে পারে। কি আজব তাই না! ভালবাসলে নাকি চোখে দেখে সব বুঝে নেয়া যায়। তাহলে আমি কেন তোমার চোখ দেখে তোমার প্রতারণার খেলার কিছুই বুঝতে পারি নি? তাহলে মনে হয় আমি তোমাকে ওর মত করে ভালবাসতে পারি নি।
ওকে কেন ভালবাসব না বলো, ও আমাকে দেয়নি এমন কিছু নেই। আমি না চাইতেই ওর কাছ থেকে এমন অনেক কিছু পেয়েছি যা আমাকে অন্য কেউ মনে হয় না দিতে পারতো। আসলে অনেকখানি ভালবাসলেই বোধহয় এত টা দেওয়া যায়। ও আমাকে এতখানি ভালবাসে যে আমার জন্য ও ওর ভালবাসাকেই বিসর্জন দিতে পারে। তুমি খুব অবাক হচ্ছ তাই না, কষ্টও হয়তো হচ্ছে। কিন্তু তুমি কি জানো যখন আমার ভালবাসাকে জীবন্ত কবর দিয়ে তুমি চলে গিয়েছিলে তখন আমি কেমন কষ্ট পেয়েছি। শুধু কষ্ট পাইনি কষ্ট দিয়েছি অনেক নিজেকে। যে মানুষ টা আমাকে পাগলের মত ভালবাসে তাকে অবহেলা করেছি তারপরও ও আমাকে ভালবেসেছে আমাকে একা ফেলে চলে যায়নি। সর্বদা আমার ছায়া হয়ে থেকে ছিল।
ভাবতে পারো কতোটা ভালবাসলে ভালবাসার মানুষের অবহেলাকে উপেক্ষা করা যায়। তুমি কি করে বুঝবে তুমি তো ভালোবাসোই নি কখন। তোমার দেওয়া কষ্ট ওর ভালবাসার কাছে হেরে গেছে। তবে ভালই করেছ আমাকে কষ্ট দিয়ে নয়ত ওর ভালবাসা পেতাম না। পেতাম না আমার সুন্দর এই ভালবাসায় ঘেরা মনটা। খুব বেশি কষ্ট হচ্ছে? এতটুকুতেই ভেঙ্গে পড়োনা তোমার তো আর অনেক কষ্ট পাওনা আছে। তবে তোমার কষ্ট দেওয়ার কারণে ওকে পেয়েছি বলেই তোমাকে কষ্টটা কম ফেরত দিলাম।
ইতি
ফারুক আহমদ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়...
©somewhere in net ltd.