![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গোঁফগুলি ইদানীং বড়ই জ্বালাতন করিতেছে। তাহাদের বসবাস আমার গোধূলি বেলার জল খাবার সহ ধরিয়া চৌ-বেলা আহারের পথ্যি মধ্যে। তাহাদের বাড়াবাড়ি রকম চুলকানি ইদানীংকালে মাত্রা ছাড়িয়া যাইতেছে। তবুও তাহাদের নিয়া আমি বড় রকমের অসন্তুষ্ট নহে। তাহাদেরকে উল্টা চাঁদ বাঁকা করিয়া মুখের দাঁড়িগুলি চাঁদের আকৃতি লইয়া আছে। গোঁফগুলির মত তাঁহারা অতিমাত্রার জ্বালাতন না করিলেও তাঁহারা কারণে অকারণে আমার হস্ত খানার আঁচড় লইয়া ব্যস্ত থাকে। আমার অতীব গভীরতম দার্শনিক চিন্তাগুলি তাহাদের উপর হস্ত না রাখিয়া প্রসব হয়না। ইহারা আমাকে বিরক্ত-ব্যতিব্যস্ত রাখিলেও আমাকে গর্বিত করিয়াছে। তাই প্রত্যহ দু-চারটা ভিটামিন বড়ি ও ভাল খাদ্য তাঁহাদের জন্য নির্ধারিত রাখিয়াছি। দিবারাত্রি আয়নায় তাঁহাদেরকে চক্ষুর সামনে বড় হইতে দেখিয়া বড়ই ভাল লাগিতেছে। একটু একটু করিয়া কখন যে তাঁহারা ইঞ্চির কাছাকাছি হইয়া গেল তাহা ভাবিতেই নাসা হইতে গরম বায়ু ছাড়িয়া যাইতেছে। শরৎ বাবু বাঁচিয়া থাকিলে তাঁহার গো দেবতায় ভর করিয়া তাঁহাদের দেখিতে আসিতেন। তিনি তাঁহাদের দেখিয়া বড়ই প্রীত হইতেন বলিয়া আমি হলপ করিতে পারি।
ভরা পথ্যি মধ্যে হাঁটিয়া যাইতেছি। একিজন দেবুদা-দেবুদা করিয়া ছুটিতেছেন আমার পিছু পিছু। সেই দশ বছরে দেখিয়া ছিলুম তাঁহাতে এত বাড়ন্ত হইবে ভাবিতেই কেমন যেন হইয়া গেলুম। রীনা আমার খেলার সাথী। আমার ডাক খানা বেমালুম ভুলিয়াছে। তাঁহাতে গোঁফদাড়ি দেখিয়া শরৎ বাবুর দেবুদা নামে ডাকিয়াছেন। সত্যিই, তাঁহাতে আমি মোটেও আশ্চর্যান্বিত হয়নি। গোঁফদাড়িতে সুমন-ইসহাক হইতে পরিচিত সকলে আমাকে শরৎ বাবুর দেবুদা ডাকিয়াছেন। রীনা জানিতে চাহিলেন, আমার দেবুদা হয়ে উঠার গল্প, পারুর কথা। তাঁহাকে আমার পারু গোঁফদাড়ির গল্প শুনাইয়া দিলুম। তিনি না বুঝিয়া আমার কাছে ব্যাখ্যা চাহিলেন, “গোঁফ-দাঁড়ি আমার পারু, ইহারা না থাকিলে আমার দেবুদা হইয়া উঠিত না। কোন জীবিত বা সৎকার করা কোন পারু নাই। গোঁফ আর দাঁড়ি রাখিবার কারণে লোকের কাছে আমি দেবুদা হইয়া উঠিলাম”। শরৎ বাবু এই যুগে বাঁচিয়া থাকিলে নিশ্চিত করিয়া বলিতে পারি লোক মুখে গোঁফ-দাঁড়িতেই দেবুদা ডাকে বড়ই ব্যথিত হইতেন।
ঢাকা/সন্ধ্যা ৭.০০/১৯.০২.২০১৫
লিংক: Click This Link
©somewhere in net ltd.