![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
‘২০,০০০ টাকা দামের’ মরে যাওয়া লোকটির জন্য শোক প্রকাশ,ফেসবুক স্ট্যাটাস,কয়েকটা শোক সভা,তদন্ত কমিটি নাটক আরো কত ভুং ভাঙ। তারপর...??
আবার কোন ভবন ধ্বস,আবার কোন কারখানায় আগুন,আবার শতাধিক লাশের সাড়ি...
আমার বরং ওই বেঁচে থাকা সজনটির জন্য অনেক বেশি কষ্ট হয়,যে তার বাবা,মা,ভাই কিংবা বোনের লাশ সনাক্ত করতে এসেছে!
১০০ টা লাশ দেখেও কি কেউ খুশি না হোক সস্তি পেতে পারে? পারে হয়তো!! যদি ওই ১০০ জনের মধ্যে নিজের খুব কাছের মানুষটা না থাকে... প্রচন্ড কষ্টের মধ্যেও হয়তো কিছুটা সস্তি এসে ভর করে,মনের কোনে আবার একটু আশার আলো উঁকি দেয়-মানুষটা বোধয় বেঁচে আছে...
বাসা থেকে বেড় হয়ে আসার সময় যে শিশুটি তার বাবার শার্টের কোনা ধরে আধো বুলিতে বলেছিল-“বাবা,চকলেট আনবা” সে শিশুটি হয়তো তার শোকে প্রায় উন্মাদিনি মায়ের কোলে চড়ে তার বাবার লাশ শনাক্ত করতে আসবে। কংক্রিটের নিচে চাপা পড়ে বিকৃত চেহারা দেখে তার বাবা কে শনাক্ত করার সামর্থ তার হবে না। সে হয়তো লাশের সাড়ি থেকে কোন এক শার্টের কোনা ধরে টেনে বলবে-“এই যে বাবা” যে শার্টের কোনা ধরে সকাল বেলায় চকলেট আবদার করেছিল!!
ধংস স্তুপের নিচে চাপা পরে আছে একটা মেয়ে। সারা শরীর,মুখ তার ইট,পাথরের তলায়। চেহারা দেখার উপায় নেই। শুধু পা টি বেড় হয়ে আছে,সেই পায়ে নুপুর। সে হয়তো শখ করে কিনিছিল সেই নুপুর অথবা সেটি ছিল তার ভালবাসার মানুষের দেয়া কোন উপহার। ছেলেটি হয়ত খুঁজতে খুঁজতে তারই দেয়া নুপুরটি দেখে তার ভালবাসার মানুষটিকে চিনে নিবে!!
মেয়ের মুখে “বাবা, আমরা মরে যাচ্ছি। আমাদের বাঁচাও।” শুনে সেই বাবার মনের অবস্থা কি ছিল?
“মা শরীরের প্রতি খেয়াল রেখো। ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করো। আমাকে নিয়ে চিন্তা করো না। আমি ১০ তারিখে বেতন নিয়ে বাড়ি আসবো।”-বলা ছেলেটি যখন তার মার কাছে ফিরে যাবে লাশ হয়ে তখন ওই মা কি করবে??
মা চিন্তা কোরো না, ১০ তারিখে বেতন নিয়ে বাড়ি আসবো
আর মুনাফা লোভীরা ‘১০০ বছরের গ্যারান্টিনামা’ হাতে নিয়ে শ্রমিকদের বেতন না দেয়ার হুমকি দিয়ে বাধ্য করবে মৃত্যুপুরীতে কাজে যোগ দিতে। মন্ত্রী মহোদয়গন দোষী ব্যাক্তিকে জামাই আদরে লুকিয়ে রেখে ভবন ধ্বসের উদ্ভট উদ্ভট কারণ ব্যাখ্যা করবেন।
সন্তান হারা বাবা-মা,স্ত্রী হারা স্বামী বা স্বামী হারা স্ত্রী,বাবা-মা হারা সন্তান দের ভিতর থেকে আসা অভিশাপের বুলি গুলো বিশ্ব নিয়ে খেলে যাওয়া ‘বিরাট শিশু’টিকে মোটেও বিচলিত করে না। হয়তো তিনি তখন তার খেলাতেই মগ্ন সময় পার করছেন!! তাই জীবনের সাথে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে বেঁচে থাকা পরিবারের মুখে অন্ন তুলে দেয়া মানুষ গুলো মরে দেয়াল চাপায়। আর এত এত অভিশাপ নিয়েও তাদেরই রক্ত,হাড়,অস্থিমজ্জা সহ চুষে খাওয়া লোকগুলো বছরের পর বছর বেঁচে থাকে...
©somewhere in net ltd.