নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফয়েজ আহমেদ সৈকত এর বাংলা ব্লগ :)

ফয়েজ আহমেদ সৈকত

জীবন মানেই সুখ আর বেদনা, যাতে সবাই খুজে বেড়ায় বেঁচে থাকার প্রেরণা :)

ফয়েজ আহমেদ সৈকত › বিস্তারিত পোস্টঃ

গোপাল ভাঁড়ের মজার কৌতুক :)

২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:৪৯

ভূত



রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের দরবারে রাজবৈদ্য নিয়োগ দেওয়া হবে। দেশদেশান্তর থেকে চিকিত্সকেরা এলেন যোগ দিতে। গোপালকে রাজা দায়িত্ব দিলেন চিকিত্সক নির্বাচনের। গোপাল খুশিমনে বসলেন তাঁদের মেধা পরীক্ষায়।

—আপনার চিকিত্সালয়ের আশপাশে ভূতের উপদ্রব আছে?

—জি আছে। প্রচুর ভূত। ওদের অত্যাচারে ঠিকমতো চিকিত্সা পর্যন্ত করতে পারি না। দিন দিন ওদের সংখ্যা বাড়ছেই।

এবার দ্বিতীয় চিকিত্সকের পালা।

—আপনার চিকিত্সালয়ের আশপাশে ভূতের উপদ্রব কেমন?

—আশ্চর্য, আপনি জানলেন কীভাবে! ওদের জ্বালায় আমি অস্থির। দিন দিন ওদের সংখ্যা বাড়ছেই।

এভাবে দেখা গেল সবার চিকিত্সালয়ের আশপাশেই ভূতের উপদ্রব আছে। একজনকে শুধু পাওয়া গেল, যাঁর কোনো ভূতসংক্রান্ত ঝামেলা নেই। গোপাল তাঁকে রাজবৈদ্য নিয়োগ দিলেন। পরে দেখা গেল এই চিকিত্সকই সেরা। রাজাও খুশি। একদিন রাজা ধরলেন গোপালকে। গোপাল বললেন, ‘আজ্ঞে মহারাজ, দেখুন, সবার চিকিত্সাকেন্দ্রের আশপাশে ভূতের উপদ্রব শুধু বাড়ছে আর বাড়ছে। এর অর্থ হলো, তাঁদের রোগী মরে আর ভূতের সংখ্যা বাড়ে…আর যাঁকে নিলাম, তাঁর ওখানে কোনো ভূতের উপদ্রব নেই…অর্থাত্ তাঁর রোগীএকজনও মরে না।



নাম ধরে ডাকছি, কারণ…



গোপাল ভাঁড় একবার তার ছেলেকে নিয়ে মেলায় বেড়াতে গিয়ে ছেলেকে হারিয়ে ফেলে। ছেলে তখন একটুও না ঘাবড়ে ‘গোপাল, গোপাল’ বলে চেঁচাতে থাকে। ছেলের চিৎকার শুনে গোপাল ছুটে এসে ধমক দেয় ছেলেকে, ‘ছিঃ ছিঃ, আমার নাম ধরে ডাকছিস, বাবা বলে ডাকতে পারিস না?’

ছেলে তখন বলল, ‘হুঁ, বাবা বলে ডাকি আর মেলার সব লোক ছুটে আসুক!’



জানুক পাড়ার লোকে



গোপাল একবার গ্রামের মোড়ল হয়েছিল। তো একদিন ভোরবেলায় এক লোক এসে ডাকতে লাগল, ‘গোপাল? গোপাল?’ গোপাল ভাঁড় কোনো উত্তর না দিয়ে শুয়েই রইল। এবার লোকটা চিৎকার করে ডাকতে লাগল, ‘মোড়ল সাহেব, মোড়ল সাহেব।’ এবারও গোপাল কোনো কথা না বলে মটকা মেরে শুয়ে রইল। গোপালের বউ ছুটে এসে বলল, ‘কী ব্যাপার, লোকটা মোড়ল সাহেব মোড়ল সাহেব বলে চেঁচিয়ে পড়া মাত করছে, তুমি কিছুই বলছ না!’ গোপাল কিছুক্ষণ চুপ করে রইল। তারপর বলল, ‘আহা, ডাকুক না কিছুক্ষণ, পাড়ার লোকজন জানুক আমি মোড়ল হয়েছি।’



বিশ্বাস



গোপাল যাচ্ছে শ্বশুরবাড়ি। মাথার ওপর গনগনে সূর্য। গরমে অতিষ্ঠ হয়ে গোপাল এক গাছের নিচে বিশ্রাম নিতে বসল। বেশি গরম লাগায় ফতুয়াটা খুলে পাশে রেখে একটু আয়েশ করে বসল। বসে বিশ্রাম নিতে নিতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়ল, নিজেই জানে না।

ঘুম যখন ভাঙল গোপাল দেখে, তার ফতুয়াটা চুরি হয়ে গেছে। হায় হায়! এখন কী হবে! খালি গায়ে তো আর শ্বশুরবাড়ি ওঠা যায় না। কী আর করা। সে হাঁটতে হাঁটতে মনে মনে বলতে লাগল, ‘হে ভগবান, রাস্তায় অন্তত ১০টি মুদ্রা যেন কুড়িয়ে পাই, তাহলে পাঁচ মুদ্রায় আমার জন্য একটা ভালো ফতুয়া কিনতে পারি। আর তোমার জন্য পাঁচটি মুদ্রা মন্দিরে দান করতে পারি···।’ আর কী আশ্চর্য! ভাবতে ভাবতেই দেখে, রাস্তার ধারে কয়েকটি মুদ্রা পড়ে আছে। খুশি হয়ে উঠল গোপাল, গুনে দেখে পাঁচটি মুদ্রা! গোপাল স্বগত বলে উঠল, ‘হে ভগবান, আমাকে তোমার বিশ্বাস হলো না, নিজের ভাগটা আগেই রেখে দিলে?



সাবধান থাকবে



রামবাবুর সাথে গল্প করতে করতে গোপালের খুব তেষ্টা পেয়েছে। সে ওর ভৃত্যকে ডেকে ঠাস ঠাস তিনটে চড় লাগিয়ে দিয়ে বলছে, ‘যা এক ঘটি জল নিয়ে আয়! ঘটি যেনো না ভাঙে।’ ব্যাপার দেখে রামবাবু বলছে, ‘গোপাল, ঘটি ভাঙার আগেই ওকে চড় মেরে বসলে যে?’ গোপাল জবাব দিচ্ছে, ‘আরে ভেঙে ফেলার পর মেরে কি আর লাভ আছে? এর চেয়ে আগেই মেরে দিলাম। সাবধান থাকবে।’



কাশীতে মৃত্যু



গোপালের জ্যোতিষ চর্চার খ্যাতি শুনে দূর গ্রাম থেকে হাত দেখাতে এসেছেন এক ভদ্রলোক।

গোপাল খুব ঘটা করে হাত-টাত দেখে বলে, ‘আপনি তো অতি ভাগ্যবান মশাই! হাতে স্পষ্ট দেখছি আপনার দেহাবসান হবে কাশীতে।’

পূণ্যস্থানে মৃত্যু হবে জেনে ভদ্রলোক খুব খুশি মনে ফিরে গেলেন।



কিছুদিন যেতে না যেতেই ভদ্রলোকের ছেলে এসে উপস্থিত। সে তেড়েফুঁড়ে গোপালকে জিজ্ঞেস করে, ‘আপনি গননা করে বলেছিলেন বাবার মৃত্যু হবে কাশীতে। কই, উনি তো বাড়িতেই মারা গেলেন?’



গোপাল আমতা আমতা করে বলে, ‘আমি কি তাই বলেছি নাকি? আমি বলতে চেয়েছি উনি কাশতে কাশতে মারা যাবেন। তা সেটা ঠিক বলেছি কি-না? বলুন?



কুকুর কার?



মন্দিরে ঢুকতে যাবার সময় পেছন থেকে পন্ডিতের বাঁধা, ‘এ তুমি কী করছো গোপাল! মন্দিরে কুকুর নিয়ে ঢুকছো?’

‘কোথায় কুকুর?’ অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে গোপাল।

‘এই তো তোমার পেছনে!’ একটি কুকুরের দিকে হাত তুলে দেখায় পন্ডিত।

‘এটি আমার কুকুর নয়!’

‘তোমার নয় বললেই হলো?’ রাগ দেখিয়ে বলে পন্ডিত, ‘তোমার পেছন পেছনেই তো যাচ্ছে!’

‘বটে? তা তুমিও তো আমার পেছন পেছন আসছো!’



তামাক আর গাধা



গোপালের তামাকপ্রীতি রাজা কৃষ্ণচন্দ্র মোটেই পছন্দ করতেন না। একদিন গোপালকে সঙ্গে নিয়ে পালকিতে কোথাও যাচ্ছেন, দেখেন তামাক ক্ষেতে এক গাধা চড়ে বেড়াচ্ছে। সেই গাধা ক্ষেতের আগাছা খাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু তামাক পাতায় ভুলেও মুখ দিচ্ছে না।



সুযোগ পেয়ে রাজা বলেন, ‘দেখেছো হে গোপাল, একটা গাধাও তামাক খায় না!’



শুনে গোপাল বলে, ‘আজ্ঞে রাজা মশাই, তা যা বলেছেন। কেবল গাধারাই তামাক খায় না।’



মাছি



মিষ্টির দোকানের পাশ দিয়ে যাবার সময় থরে থরে সাজানো মিষ্টি দেখে গোপালের খুব লোভ হয়েছে। কিন্তু ট্যাকে নেই একটি পয়সাও।



ভেতরে গোপাল ঢুকে দেখে ময়রার ছোট ছেলেটি বসে আছে।

গোপাল শুধায়, ‘কি-রে, তোর বাপ কই?’

‘পেছনে। বিশ্রাম নিচ্ছে।’

‘তোর বাপ আমি আমি খুব বন্ধু বুঝলি? আমার নাম মাছি। ক’টা মিষ্টি খাই? তোর বাপ কিচ্ছু মনে করবে না।’ বলেই গোপাল টপাটপ মিষ্টি মুখে পুরতে শুরু করেছে।

মিষ্টি নিমিষে শেষ হয়ে যাচ্ছে দেখে ছেলে চেঁচিয়ে বলে বলে, ‘বাবা, মাছি কিন্তু সব মিষ্টি খেয়ে ফেলছে!’

শুনে পেছন থেকে ময়রা বলে, ‘আরে খেতে দে! মাছি আর কট্টুকু খাবে?’



চেহারায় মিল



রাজা কৃষ্ণচন্দ্র সব সভাসদদের সামনে গোপালকে জব্দ করার উদ্দেশ্যে বলছেন, ‘বুঝলে গোপাল, আমার সাথে তোমার চেহারার কিন্তু দারুণ মিল! তা বাবার শাসনামলে তোমার মা কি এদিকে আসতেন-টাসতেন নাকি?’



গদগদ হয়ে গোপাল বলে, ‘আজ্ঞে না রাজামশাই! তবে মা না এলেও বাবা কিন্তু প্রায়শই আসতেন!’



ব্যবধান



রাজা গোপাল ভাঁড় কে প্রশ্ন করল, গাধা আর তোমার মধ্যে ব্যবধান কতটুকু? গোপাল রাজা থেকে নিজের দুরত্ব টা মেপে তারপর জবাব দিল, বেশি না, মাত্র সাড়ে চার হাত ব্যবধান।



গোপালের উপবাস



গোপাল তখন ছোট। গুরুদেবের সাথে থেকে দীক্ষা নিচ্ছে।



কোনো এক একাদশীর দিন গোপাল দেখে উপবাস শেষে গুরুদেব ষোলো প্রকারের পদ দিয়ে সেই রকমের ভোজ দিচ্ছেন। গুরুদেবের খাবারের বহর দেখে গোপাল ঠিক করে ফেলে আগামীবার গুরুদেবের সাথে উপবাস দিতে হবে। উপবাসের অজুহাতে যদি ষোলো পদের ভোজ পাওয়া যায় তবে কষ্টের চেয়ে লাভই বেশি!



সেই পরিকল্পনা মতো সামনের একাদশীতে গোপালও গুরুদেবের সাথে উপবাস করে বসে রইলো। কিন্তু বেলা গড়িয়ে যায় গুরুদেব আর জলযোগে যান না! শেষ-মেষ ক্ষুধার জ্বালায় আর থাকতে না পেরে গোপাল জিজ্ঞেসই করে বসে, ‘গুরুদেব, বেলা হয়ে গেলো, জলযোগ করবেন না?’



গুরুদেব স্মিত হেসে বলেন, ‘ওরে আহাম্মক, আজ যে ভীম একাদশী… নিরম্বু উপবাস।’



মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:১৫

মাক্স বলেছেন: :P :P :P :P :P

২| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৩৫

তামজিদা সুলতানা বলেছেন: :D :D গোপাল ভালা পাই B-)

৩| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৩৭

প্রত্যাবর্তন@ বলেছেন: :-B :-B

৪| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১:৪৮

দি সুফি বলেছেন: গোপাল ভাড়ের কার্টুন দেখতাম আগে :D :D

৫| ২৮ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৩:২১

ফয়েজ আহমেদ সৈকত বলেছেন: :) :P :D

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.