নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ফুলকাম বাদশাহ

ফুলকাম বাদশাহ › বিস্তারিত পোস্টঃ

খোলাবাজার কতটুকু খোলা?

০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০১৬ রাত ৮:১৪

খোলাবাজার অর্থনীতিতে সবই খোলা, এখানে যে যার মত পণ্য তৈরি করে প্রতিযোগীতার মাধ্যমে টিকে থাকবে এটাই হওয়ার কথা।পণ্যকে বিক্রেতা স্থান কাল পাত্র এবং উপস্থাপনার নৈপুণ্যে বিক্রি করার পদক্ষেপ নিবেন। একইভাবে ক্রেতাও স্বাধীনভাবে পছন্দসই পণ্য সাধ আর সাধ্যের সমন্বয়ে ক্রয় করবেন।এই বাজারে কারোর পণ্য নিয়ে কেউ যেমন ঋণাত্মক প্রচারে নামবেন না তেমনি সরকারেরও এই খোলা বাজার ব্যবস্থা মেনে নিয়ে এর উপর বিধিনিষেধ আরোপ করে এর উপর নিয়ন্ত্রণ করে খোলাবাজারের প্রাণচাঞ্চল্য নষ্ট করবেন না।যদি করেন তবে তা হবে দ্বৈতনীতি চর্চা বা ডাবল স্টান্ডার্ড মূলক সমস্যা ।

এই খোলাবাজারের যমানাতে ইন্ডিয়াতে বিদেশী গাড়ী ক্রয়-বিক্রয় নিষিদ্ধ, বাংলাদেশী টিভি চ্যানেল নিষিদ্ধ না হলেও তাতে যে কঠোর নিয়ন্ত্রণ নীতি চালু আছে তাতে বাংলাদেশের চ্যানেলরা দাবি করে বলতে পারে যে ভাত চাই না আপদ খেদা। বাংলাদেশের কোন টিভি চ্যানেলের ভারতে প্রবেশে গুনতে হয় পাঁচ কোটি টাকা আর ইন্ডিয়ার চ্যানেল বাংলাদেশে প্রবেশে গুনতে হয় দেড় লাখ টাকা মাত্র । পার্থক্য দেখে একটা কৌতুক মনে পড়ে গেল,

এক ব্যাক্তি ব্যাংকে প্রথম চেক বই নিয়ে ব্যংকে গেছেন টাকা উত্তোলন করবেন বলে। কিন্তু তিনি জানেন না কিভাবে লিখতে হয়।পাশেই একজন পাচঁ লাখ টাকা উত্তোলনের একটা চেক লিখছিলেন যেখানে তিনি কথায় উল্লেখ করেছিলেন , "পাচঁ লাখ টাকা মাত্র"। এই দেখিয়া ঐ ভদ্রলোক পাঁচ হাজার টাকা উত্তোলন করতে লিখেছিলেন ,"পাঁচ হাজার টাকা কিছুই না!"
আন্দোলনরত টিভিশিল্পীবৃন্দ(ছবি সূত্র: সিলেট২৪ডটকম)

পাঁচ কোটি টাকা হয়তো ইন্ডিয়ার অতিরিক্ত দেশপ্রেমের কারণেই সম্ভব হয়েছে। আবার তাদের চ্যানেল এদেশে এত কম ফিতে প্রবেশের অনুমতি প্রদানের জন্য আমরা দ্বৈতনীতির দোষে দুষ্ট হয়েছি বলা যেতে পারে। যেমনটি আমরা খোলাবাজারের যুগেও নিত্যনৈমিত্তিক পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করে সহনীয় পর্যায়ে রাখার চেষ্টায় করি । এটা অবশ্য দোষের কিছু না, আপামর জনসাধারণের সুখের কথা মাথায় রেখেই হয়তো দেড় লাখ টাকায় ভারতীয় চ্যানেল প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়। কি আর করা জনগণের চাহিদা বলে কথা! তাছাড়া তারাইতো সকল ক্ষমতার উৎস । এসব বিবেচনায়,আমাদের ইউনিয়ন পরিষদ অনেক ক্ষেত্রেই নিজ খরচায় অনেক ঘাট জনগণের জন্য ফ্রি করে দেন।তাই বিনোদনের বেলাতে চাহিদা যদি আরো একটু বৃদ্ধি পায় তবে জনগনের সুখের কথা বিবেচনা করে ডিজেল কেরোসিনের মতো ভর্তুকি দিয়ে চ্যানেলগুলি ফ্রি করে দিলে মন্দ হবে না।

যখন দেশীয় শিল্পীরা আমাদের সংস্কৃতি রক্ষার নামে আন্দোলন করেন তখন আমরা আমাদের অর্থনৈতিক আন্দোলনে দৌর্দন্ড প্রতাপে এগিয়ে চলছি । তাঁরা দেশীয় গল্প উপন্যাস কবিতার জন্য কান্নাকাটি শুরু করেছেন। আমরা যারা বিদেশী মোবাইলসহ ভিনদেশীদের লাইন ব্যবহার করি, বিদেশী চ্যানেল দেখি, ডাবিং করে হলেও ভাষার প্রতিবন্ধকতা দূর করে সিরিয়াল দেখি, বিদেশী গাড়িতে চড়ি ,প্যারিসের পারফিউম গায়ে মাখি আর মাটির সুধাগন্ধের কবিতা পড়ি, সময় পেলেই অবসরে বিদেশের মাটিতে লেইজার কাটাতে হেলে পড়ি, বিদেশী ব্রান্ডের জামা ছাড়া চলেই না, আর আমদানী করা পানি ছাড়া ধরি না, আবার এই বিদেশী লাইফস্টাইলের বীরুদ্ধে প্রতিবাদও করি না; অন্ততঃ তাদের থেকে শিল্পীদের দেশপ্রেম একটু বেশিই আছে বলতে হবে । এতকিছুর মধ্যেও যারা এখনও দেশীয় সংস্কৃতির জন্য কাঁদেন তাঁরা আসলেই দেশপ্রেমিক । আর আমরা খোলাবাজারে একটু বেশিই খোলামেলা হয়ে গেছি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.