খোকন ভাই, সুখে থাকুন।

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৮:০৭

যে কয়জন গুনি পরিচালক বাংলাদেশে এসেছেন, তার মধ্যে একজন শহিদুল ইসলাম খোকন ভাই।


আমার প্রজন্মের প্রায় সবারই উনাকে চিনার কথা। আমি বরাবরই বলে এসেছি যে, আমি বাংলাদেরে ক্ষণজন্মা সুপার স্টার সালমান শাহের নির্ভেজাল ভক্ত ছিলাম। তার জন্যই আমার সিনেমা বা নাটকে পদার্পন। কিন্তু মনের অজান্তে সালমান শাহ ব্যতিত অনেক ফিল্ম সিনেমা হলে দেখতাম, বিশেষ করে রুবেল ও হুমায়ুন ফরিদি অভিনীত সিনেমাগুলো।
সালমান শাহের ছবি দেখলে পরিচালকের নাম দেখার প্রয়োজন পড়তো না, কারণ তার স্টাইল, কমেডি, রোমান্টিক আচরণ ভালো লাগত। কিন্তু রুবেল কিংবা হুমায়ুন ফরিদি অভিনীত সিনেমা দেখতে হলে অবশ্যই পরিচালকের নাম দেখতাম, আর সেটা যদি শ্রদ্ধেয় শহিদুল ইসলাম খোকন ভাই হয়। তবে কথাই নেই, যেভাবেই হোক ছবিটা দেখতাম।
আজ খোকন ভাই নাই, আমি ইংল্যান্ডের মাটিতে আর উনি বাংলার মাটির পরশে শোয়ে আছেন। আমি যখন এফডিসিতে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতিতে সদস্য হতে গেলাম, তার আগে অনেকে বলে ঘুষ লাগবে, স্বজন-প্রীতি আছে, কতকিছু। আমি ভয়ে গেলাম না, কারণ কাকে কিভাবে ঘুষ দিতে হবে, জানি না। পরে সব গুলমাল হয়ে যাবে। ড্যান্স ডিরেক্টর বন্ধু আজিজ রেজা ভাইকে বললাম যে পরিচলাক সমিতির সদস্য হবো। উনি নিয়ে গেলেন পরিচালক সমিতির সভাপতি খোকন ভাইয়ের কাছে। এই পরিচয়, চিনলাম মানুষটাকে। উনি আমাকে শিক্ষিত ও অনেক নাটক পরিচালনা করেছি দেখে বিনা শর্তে পরিচালক সমিতির সদস্য করে দিলেন। তারপর থেকে কেন জানি উনি আমাকে ভালোও বাসলেন। উনার গাড়িতে করে, চ্যনেল আইয়ের সাগর ভাইয়ের কাছেও নিয়ে গেলেন। আরো ডিস্টিবিউটরদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিলেন। সবার কাছে বললেন, ছেলেটার ইচ্ছা আছে চলচ্চিত্রে কাজ করার। তাকে সবাই সহযোগিতা করো।
আমাদের চলচ্ছিত্রে সেন্সর সার্টিফিকেটে চলচ্ছিত্র পরিচালকের নাম থাকে না, শুধু প্রযোজকের নাম থাকে। উনার কথা হলো যে কেউ কয়টা টাকা নিয়ে এসে ছবি বানালো আর আমরা দিন-রাত এক করে একটা ফিল্মের সার্টিফিকেট বের করলাম, তাতে আমাদের নাম থাকবে না, তা কি করে হয়। উনি মন্ত্রণালয়ে ধরনা দিতে শুরু করলেন। আমি সাক্ষি এই তার একক আন্দোলনে উনি সফলও হয়েছিলেন। মন্ত্রণালয় মানতে বাধ্য হলো যে, সেন্সর সার্টিফিকেটে অবশ্যই এখন থেকে পরিচালকের নামও থাকবে। ধন্যবাদ খোকন ভাই, আপনি চলচ্চিত্রের জন্য অনেক করে গিয়েছেন। সবতো এখানে লেখা সম্ভব না, শুধু আমার সামনে যেটা হলো সেটা লিখলাম।
যাইহোক, উনার আরো কয়টি ছবি পরিচালনা করে যাবার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু হলো না। ইনশাল্লাহ আপনার অসমাপ্ত কাজগুলো আমরা নবিন প্রজন্ম করে দেখাবো। আপনি সুখে থাকুন, শান্তিতে থাকুন। এই প্রার্থনা করি। আমিন।

৪ টি +১/-০