নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ট্রুথ নেভার ডাই্‌জ

নিজের সম্পর্কে লেখার কিছু নেই । সাদামাটা ।

আহমেদ জী এস

পুরোপুরি একজন অতি সাধারন মানুষ । আমি যা আমি তাই ই । শয়তানও নই কিম্বা ফেরেশতা । একজন মানুষ আপনারই মতো দু'টো হাত, চোখ আর নিটোল একটা হৃদয় নিয়ে আপনারই মতো একজন মানুষ । প্রচন্ড রকমের রোমান্টিক আবার একই সাথে জঘন্য রকমের বাস্তববাদী...

আহমেদ জী এস › বিস্তারিত পোস্টঃ

পৃথিবীর বিতর্কিত সব ছবিরা……

২৪ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:১৭





পৃথিবীর বিতর্কিত সব ছবিরা……

[ ছবি যাদের দোলা দেয়, শুধু তাদের জন্যে ….. ]



দ্বিতীয় পর্ব



মাদাম এক্স / জন সিংগার সার্জেন্ট

Madame X / John Singer Sargent.




ছবি এঁকে দেশ ছাড়তে হবে এমোন দুর্ভাগ্য হয়তো কপালে লেখা ছিলো জন সিংগার সার্জেন্ট এর । সমাজে অসন্তোষ রূদ্র রূপে জড়ো হতে থাকলেও নিজের নামডাক সোচ্চার করতে একজন শিল্পীর কাছে ভালো একটি “স্ক্যান্ডাল” এর বিকল্প নেই । এটা যেমন সাই সাই করে পরিচিতি লাভের সহজ পথ তেমনি ভবিষ্যতে স্মরনীয় হয়ে থাকাতেও । জন সিংগার সার্জেন্ট কি তেমন একটি পথই বেছে নিয়েছিলেন ? কেউ কেউ বলেন, মোটেও নয় । উচ্চাকাঙ্খা ছিলো বটে তবে এমোন করে নয় । রূপমুগ্ধ হয়ে যাকে চিত্রিত করেছেন বিদেশ বিভূঁয়ে নামের আশায় , সে কূহকিনী আশাই তাকে আবার পরবাসী করেছে । শিল্পী হিসেবে নাম হয়েছে সত্য তবে তা কিনতে হয়েছে অনেক দামে । ছাপ লেগেছে “ বিতর্কিত শিল্পী” র । ধিক্কারের মেঘ তাকে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে আবাসভূমি থেকে দূরে ।

১৮৮২ সালে মাদাম গ্যত্রেয়্যু কে দেখে রূপমুগ্ধ হয়ে পড়েন সার্জেন্ট । শিল্পী মানুষ , তাই সুন্দরের প্রতি আকর্ষন থাকবেই । প্যারিসের অভিজাত মহলের এই মধূমক্ষিকাকে যদি তুলির আঁচড়ে ধরে রাখতে পারেন ক্যানভাসে তবে আমেরিকা থেকে ভাগ্যান্বেষনে এখানে আসা এই শিল্পীর সুনাম ছড়িয়ে যাবে পুরো ফ্রান্সে, এমোনটাই ধারনা ছিলো তার । এক বন্ধুর মাধ্যমে চিঠি লিখে তিনি এই আশাবাদ রেখেছিলেন যে, মাদাম গ্যত্রেয়্যুর সুন্দরতাকে তিনি সম্মানের সাথে স্মরনীয় করে রাখতে চান তার ছবিতে । অপেক্ষা করতে হয়েছে তাকে দু- দু’টি বছর । ব্যতিক্রমী ধরনের সুন্দরী , মাদাম গ্যত্রেয়্যু যখোন সায় দিলেন শিল্পীর অনুরোধে আর হাজির হয়ে গেলেন শিল্পীর ষ্টুডিওতে বার কয়েক; তখোন ক্যালেন্ডারে ১৮৮৩ সাল । সুন্দরী মডেল ভাবছিলেন তিনি ফ্রান্সবাসীর কাছে স্মরনীয় হয়ে থাকবেন তবে নগ্ন হয়ে নয়, পুরো পোষাকেই । আর শিল্পী ভাবছিলেন, এদ্যুয়ার মানে' বিশটি বছর আগে “ অলিম্পিয়া ” এঁকে যে হৈচৈ ফেলে দিয়েছেন তেমন একটা কিছু ঘটিয়ে ফেলবেন । ১৮৮৪ সালে কোন রকমের পারিশ্রামিক ছাড়াই যখোন ছবিটি আঁকা শেষ হলো, প্যারিসে শিল্পীদের প্রদর্শনীতে ঠাই হলো তার । গ্যালারীতে, একদম চোখ বরাবর । তবে ঘটে গেছে অন্যকিছু । ততোক্ষনে ছবিটির গায়ে “ বিতর্কিত” তকমা সাঁটা হয়ে গেছে । সমালোচনার মুখে ছবিটির নাম পর্য্যন্ত পাল্টাতে হয়েছে ।



ছবি - “প্যারিসের ষ্টুডিওতে তার স্বপ্নের মাদাম – এক্স এর ছবিতে তুলির শেষ টানে ব্যস্ত জন সার্জেন্ট । ”



কি নাম ছবিটির ? প্রথমে “Portrait de Mme *** ” এই নাম নিয়ে ছবিটি হাজির হয়েছিলো প্রদর্শনীতে । কিন্তু এক লহমায় দর্শকেরা ছবির মুখটি চিনে ফেলায় যে ঢি-ঢি পড়ে যায় আর তাতে বাধ্য হয়েই নামটি পাল্টে রাখতে হয় নাটকীয় আর রহস্যময় এক নামে - “Madame X “ (মাদাম – এক্স) । ক্যানভাসের উপর তেল রংয়ে আঁকা ৮২- ১/৮ ইঞ্চি বাই ৪৩ - ১/৪ ইঞ্চির একটি পোর্ট্রেট । রত্নখচিত স্ট্রাপ সহ কালো সাটিনের পোষাকে সজ্জিতা এক নারী । অপূর্ব দেহ সৈষ্ঠব আর ক্ষীন তটি নিয়ে মাধুর্য্যপূর্ণ ভঙ্গিতে দাঁড়ানো । তার পরিধেয়টি যতো না রেখেছে তাকে আবৃত করে তারও চেয়ে বেশী যেন করেছে অনাবৃত । কাঁধের একটি স্ট্রাপ খোলা । সফেদ চামড়ার জমিনে তার মরালী গ্রীবা, উন্নত কপাল আর বাহুলতা যেন বড় বেশী ফুঁটে আছে রহস্যময় কালো পোষাকের মাঝে । ছবিতে একই সাথে গাঢ় বাদামী রংয়ের উজ্জলতা আর আঁধারির খেলার কাজ , কানের কাছটিতে লাল ছোপের বিপরীতে তার ত্বকের সাদাকে যেন আরো সাদা করে তুলে ধরেছে । কেউ বলেন , “ অভিজাত ফ্যাকাশে” । শিল্পী তাকে দাঁড় করিয়েছেন অনবদ্য ভঙ্গিতে - তার শরীর সামনের দিক দৃপ্ত ভাবে আগানো অথচ মুখখানিকে রেখেছেন পাশ ফিরিয়ে । একই সাথে তার দেহ সুষমাকে জাহির আর লুকোনোর চেষ্টা যেন । অথচ এই আধখানি মুখই যে পুরো মুখটির চেয়েও সংবেদনশীল হয়ে উঠেছে ! মাষ্টার পীস, সন্দেহ নেই ।

কিন্তু দর্শক এই রূপ সুষমায় ভোলেননি । ছবিতে নারীটির পরিচয় লুকানোর চেষ্টা করা হলেও তারা আহত হয়েছেন তার আসল পরিচয় জেনে । পরিচয় পরিষ্কার , প্যারিসের অভিজাত সমাজের মধ্যমনি, মাদাম ভার্জিনি এমিলি এ্যাভিনো গ্যত্রেয়্যু যার চারিত্রিক বিশুদ্ধতা প্রশ্নবিদ্ধ । আটবছর বয়েসে মা’য়ের হাত ধরে দেশত্যাগী একজন মার্কিন রমনী, ফ্রেঞ্চ ব্যাংকার পীয়েরী গ্যত্রেয়্যুর বিবাহিতা স্ত্রী । প্যারিসে যিনি একদিকে যেমন ডাকসাইটে সুন্দরী অপরদিকে তেমনি বৈবাহিক অবিশ্বস্ততার প্রতীক হিসেবেই পরিচিত । নিজের সৌন্দর্য্য সম্পর্কে যিনি সজাগ এবং তা দেখাতে যার কার্পন্য নেই মোটেও ।

ছবিটি রিয়েলিষ্টিক হলেও একটা দূরাগত যৌনতার আভাস যেন রয়েছে কোথাও । দর্শকদের আরো যা অস্বস্তিতে ফেলেছে তা তার ডান কাঁধের খুলে রাখা স্ট্রাপ, ১৯৮৪ সালের আধুনিক প্যারিসবাসীদের কাছেও যা অকল্পনীয় । সমালোচকেরা আরো এগিয়ে বলেছেন, যৌনমিলনের পরপরেই যে ভাবে কান লাল হয়ে যায় তেমন করেই ছবিটিতে তার কান চিত্রিত করা হয়েছে । স্ট্রাপ খুলে ফেলাটাও কি সাজেষ্টিভ ? “লা ফিগারো” ম্যাগাজিনে এক সমালোচক তো লিখেই বসলেন – “ওয়ান মোর ষ্ট্রাগল এ্যান্ড দ্য লেডী উইল বী ফ্রি...” । সব মিলিয়ে যেন প্যারিসের উঁচুতলার একান্ত গোপনীয় কাহিনীটি-ই তুলে ধরেছে ছবিটি ।

ছবিটি তাই প্রত্যাখাত হয়েছে অশ্লীল হিসেবে । জনতার চাপে পড়ে বাধ্য হয়েই জন সিংগার সার্জেন্টকে খুলে রাখা স্ট্রাপটিকে ( প্রথম ছবিতে যেমনটি দেখছেন ) আবার আঁকতে হয়েছে । ছবির দুষ্ট ক্ষতটিকে না হয় সারিয়ে তোলা গেলো কিন্তু যা ক্ষতি হবার তা রোধ করা গেলোনা । চিরতরে শিল্পীকে প্যারিস ছেড়ে যেতে হলো লজ্জায় আর অবমানিত হয়ে । শেষতক থিতু হলেন লন্ডনে । সেখানে “ডাঃ পোজ্জি এ্যাট হোম” , “লেডী এ্যাগনিউ অব লাক্ষ্নৌ” , “মিসেস কার্ল মেয়ার এ্যান্ড হার চিল্ড্রেন” ব্রিটিশ এ্যারিষ্টোক্রাসি নিয়ে এই সব ছবিগুলো এঁকে শিল্পী আবার ফিরে পেলেন তার যোগ্য সম্মান ।

যাকে নিয়ে এতো কান্ড তাকেও প্যারিসের অভিজাত সোসাইটি থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিতে হলো একসময় ।

এক সময়ের বিতর্কিত এই ছবিটি আজ পৃথিবীর সবচেয়ে বেশী পরিচিত পোর্ট্রেটগুলোর একটি । বিনে পয়সায় পৃথিবী দাপিয়ে ঘুরছে ছবিটি এই মিয়্যূজিয়ম থেকে সে মিয়্যূজিয়মে । ছবিটির সুন্দরী শ্রেষ্ঠার প্রতিকৃতি নিয়ে বই আর ম্যাগাজিনগুলোর কভার পেজ হচ্ছে, গ্রিটিং কার্ড উঠেছে বাজারে । এমোনকি স্ক্রিন সেভার পর্য্যন্ত এসে গেছে ।

যে স্ট্রাপটি নতুন করে আঁকতে হয়েছে তার বাঁধনে জন সিংগার সার্জেন্টকে বাধা পড়তে হয়েছে ত্রিশটি বছর । ছবিটি তার কাছেই ছিলো এ দীর্ঘ সময়টুকু । বাঁধন কেটে ১৯১৬ সালের যেদিনটিতে মাত্র ১০০০ ডলারের বিনিময়ে ছবিটি শিল্পী বিক্রি করে দিলেন ম্যানহাটানের “মেট্রোপলিটান মিয়্যূজিয়ম অব আর্ট” এর কাছে সেদিন সার্জেন্ট বলেছিলেন, “ আমার মনে হয় আমি এ পর্য্যন্ত যা এঁকেছি তার মধ্যে এটিই শ্রেষ্ঠ । ” খেদ ভরে এও বলেছিলেন যেন ছবির মডেলের নামটি পাল্টে অন্যকিছু রাখা হয় । তার কথাটি রাখা হয়েছে ।

যে ছবি আর যে স্ট্রাপটি নিয়ে এতো এতো হৈ - চৈ তার দ্বিতীয় একটি অসমাপ্ত ভার্সন আপনি দেখতে পাবেন লন্ডনের “টেট” গ্যালারীতে যেখানে ডান কাঁধের স্ট্রাপটি নেই যেমনটি প্রথমে এঁকেছিলেন জন সিংগার সার্জেন্ট ।









ছবি – ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারীতে ন্যাশনাল গ্যালারী অব লন্ডনে মাদাম – এক্স কে নিয়ে আলোচনার ঝড় ...





লেস দিমোইলিস দ্য’এ্যাভিনো / পাবলো পিকাসো ।

এ্যাভিনোর তন্বীরা (দ্য ইয়াং লেডিজ অব এ্যাভিনো )

.Les Demoiselles d’Avignon - Pablo Picasso






একটি দু’টি নয় পাঁচ পাঁচটি নগ্ন বারবনিতার ছবি । কোনাকৃতি শরীর নিয়ে , কিম্ভুত কিমাকার মুখে সরাসরি তাকিয়ে আছে আপনার দিকে । এর চেয়ে অশ্লীল আর কী হতে পারে ? তবে যিনি এঁকেছেন তার কাছে এটা এক শিল্প, নগ্নতা নয় । ভূবনখ্যাত “গোয়ের্ণিকা” ছবির শিল্পীকে বোঝাতে যখোন জামার্নরা বলেন - বাচ্চাশিশুর আঁকা, সেই বাচ্চাশিশুটিই এই অশ্লীল ছবিটির জনক । ছবির ফিগারগুলোকে যিনি তেরাব্যাকা করে আঁকেন সব সময় যার মাথামুন্ড বোঝা ভার সেই শিল্পীই এঁকেছেন এটি, এক এবং অদ্বিতীয় - পাবলো পিকাসো ।

ছবিটি দেখেই দর্শক তো বটেই শিল্প সমালোচকেরাও ক্রোধে অন্ধ হলেন । ছবিটির গায়ে ছাপ লাগলো – Immoral “নীতিবিগর্হিত” ।

পাঁচ পাঁচটি বেবুশ্যা নারী যে ছবিতে অথচ প্রচলিত নারী-মাধুর্য্যের লেশমাত্র নেই যাদের শরীরে বরং আদিম বর্বরতা আর হিংস্রতা যাদের ভঙ্গীতে সেই ছবিকে মেনে নেয়া সহজ নয় মোটেও ।

আট বর্গফুটের তেল রংয়ের ছবিখানি শিল্পী যখোন তার ষ্টুডিওতে উপস্থিত অন্যান্য শিল্পী, গুনগ্রাহী, সমালোচক শিল্প পৃষ্ঠপোষকদের দেখাচ্ছিলেন তখোন প্রচন্ড আকস্মিকতায়, অরুচিতে আর ক্রোধে সমস্বরে আৎকে উঠেছিলেন তারা । একজন বারবনিতার ছবি “শকিং” নাও হতে পারে । কিন্তু তার ভেতরে সামান্যতম সৌন্দর্য্য, দুঃখি একটা ভাব, খানিকটা পরিহাস মোটেও থাকবেনা বরং একগাদা গাছের গুড়ির মতো দাঁড়িয়ে ভাবলেশহীন চোখে তাকিয়ে থাকবে, তা তো “শকিং” হতেই হবে ।

আপনাকে আঘাত করা্র জন্যেই যেন ছবিটি আঁকা হয়েছে । বিখ্যাত শিল্পী অঁরী মাতিস তার প্রতিক্রিয়া জানালেন এইভাবে - “ ত্রিমাত্রিক ছবি আঁকার প্রচেষ্টা করতে গিয়ে এটা পিকাসোর স্রেফ একটা ধাপ্পাবাজী ।”

শিল্প সমালোচক সালমন লিখেছেন – “ছবির মুখশ্রীগুলো এতো কুৎসিত যে তা আতঙ্ককেও জমাট বাধিয়ে ফেলেছে ।”

“দ্য কিস” খ্যাত শিল্পী গুস্তাভ ক্লীমট এর ভাষায় – এটি যৌনতায় ভরা । অথচ যৌনতার সাথে যার আদৌ কোন মিল নেই ....।

চিত্রশিল্পী দ্যেরাইন পরিহাস ছলে বলেছেন, “হয়তো একদিন দেখবো যে, পাবলো তার এই মহান ক্যানভাসটির পেছনে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলে পড়েছেন ।”

আমি, আপনি আর কি বলবো এর পরে ?

১৯০৭ সালে এঁকেছেন পিকাসো ছবিটি । পাঁচটি উলঙ্গ নারী । বার্সেলোনার এ্যাভিনো স্ট্রীটের বেশ্যালয়ের পাঁচ গনিকা । প্রতিটি ফিগারেই রয়েছে সন্দেহজনক ভাবে আক্রমনাত্মক ভঙ্গি এবং কেউই প্রচলিত নারীমূর্তি নয় । দু’জনার মুখে রয়েছে আফ্রিকার আদিবাসীদের মুখোশ । সর্বডানে পর্দা টেনে ধরা মূর্তিটি জবরজং গাঢ় রংয়ে আঁকা । পাঁচজনের ভেতরে তার মুখখানিই সবচেয়ে বেশী কোনাকৃতির । তাদের স্তন, কনুই সবখানেই যেন জ্যামিতিক আকৃতি দেয়া হয়েছে । আসলে চুড়ান্ত ছবিটি নামানোর আগে পিকাসোকে ১০০টি স্কেচ করতে হয়েছে । হয়েছে এই জন্যে যে, ত্রি-মাত্রিক একটি দৃশ্যকল্পকে ক্যানভাসের দ্বি-মাত্রিক তলে ফুটিয়ে তোলার সমস্যা নিয়ে তাকে খাটাখাটনি করতে হয়েছে প্রচুর । প্রথমদিকের স্কেচগুলিতে ছিলো দু’টি পুরুষ – একজন নাবিক খদ্দের আর অন্যজন মাথার খুলি হাতে মেডিক্যালের ছাত্র । হয়তো এটাই বোঝাতে যে, মৃত্যুই পাপাচারের অনিবার্য্য পরিনতি । নাবিকটিকে পরে ছবি থেকে সরিয়ে দিতে হয়েছে । আর ছাত্রটিকে রূপান্তর করা হয়েছে মুখোশ পরিহিত নারীতে, ছবিতে যে পর্দা টেনে ধরে আছে । তাই তার শরীরে নারীর আদলের চেয়েও পুরুষ আদলটাই যেন বেশী ।

আদিমতার (Primitivism) দিকে বিংশ শতাব্দীর আগ্রহ প্রতিবিম্বিত হয়েছে যেন খুবই সহজ একটি ঐক্যতান আর প্রাচীন সংস্কৃতির ছবির ভেতর থেকে পাওয়া শুদ্ধতম ভাবনাগুলোর ছাপ মেখে । আদিম চিত্রকরেরা আফ্রিকান এবং পলিনেশিয়ান ভাস্কর্য্য আর মুখোশগুলো থেকে তাদের ছবির প্রেরনা খুঁজতেন । পিকাসোও এটা স্বীকার করেছেন নিজে । স্প্যানিস ইবেরিয়ান ভাস্কর্য্য আর আফ্রিকান মুখোশ ছিলো তার প্রেরনা ।

ইম্প্রেশনিষ্ট এবং পোষ্ট- ইম্প্রেশনিষ্ট সময়কালে তো বটেই ধ্রুপদী শিল্পেও এই ষ্টাইলটিই যেন গায়ে-গতরে বড় হয়ে উঠেছিলো । তাই আপনি দেখবেন ইম্প্রেশনিষ্ট শিল্পী সেজান খুব জোরালো অবদান রেখেছেন ছবি আঁকার “ফ্যভিজম” , “এক্সপ্রেশনিজম” আর “প্রিমিটিভিজম” এইসব ফর্মগুলোতে । ১৯০৬ সালে পিকাসো হাটলেন সেজানের সেই পথ ধরেই । তাই তার ছবিগুলোতে পাহাড়সম শারীরিক শক্তিগুলো যেন দুমড়ে-মুচড়ে একাকার হয়ে আছে । এই ছবিটি যেন সেজানের আঁকা “গ্রান্ড বাথারস” এর দোমড়ানো-মোচড়ানো মানুষগুলোরই অনুকরন । এমোনটা মনে হলেও যেটা ঘটিয়ে ফেলেছেন পিকাসো তা হলো – বিংশ শতাব্দীর ছবিতে “কিউবিজম” এর যুগান্তকরী অধিষ্ঠান । আর পাশাপাশি উনবিংশ শতাব্দীর আদিমতাকে যেন নিয়ে গেছেন ক্লাইম্যাকসে ।

তাই এই ছবিতে আপনি মুখোশের ব্যবহার দেখতে পাবেন । নারী অবয়বগুলোতে দেখতে পাবেন “কলাম” এর মতো উর্দ্ধমুখীনতা । গোলাপী রংয়ের বিভিন্ন শেড ব্যবহার নগ্নিকাদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোকে আলাদা আলাদা করেছে । আর এই সব মিলিয়ে আকৃতিগুলোতে রেখা আর তল ; আয়তন আর গভীরতা ; রং আর রংয়ের বিন্যাস সূত্রপাত করেছে জ্যামিতিক রেখাচিত্র নিয়ে “কিউবিজম” এর । পিকাসো দেখাতে চেয়েছেন , শিল্পে মৌলিকতা এর বর্ণনা বা নৈতিকতার উপর নির্ভর করেনা । করে এর বিন্যাস আর শৃঙ্খলা উদ্ভাবনের উপর ।



প্রাথমিক প্রদশর্নীর পরে ছবিটি উনচল্লিশ বছর ধরে প্রায় অদেখা অবস্থায় পড়ে ছিলো । ১৯১৬ সালের পরে এটি চারটি বছর ধরে গোটানো অবস্থায় ছিলো পিকাসোর ষ্টুডিওতে । ১৯২০ সালে জ্যাকুইস ড্যুসেট এটি কিনে নেন । কোথায় ছিলো লুকিয়ে ? জানেনা কেউ । ১৯২৫ সালে “La Revolution Surrealiste” এ ছবিটির একটি প্রতিকৃতি প্রকাশিত হয় । তারপর থেকেই ১৯৩৭ সাল পর্য্যন্ত পিকাসোর পাঁচ বারবনিতা আর আলোর মুখ দেখেনি । ১৯৩৭ সালে প্যারিসের পেটিট পালাইজ এর প্রদশর্নীতে এটাকে আবার দেখা যায় । ন্যূয়র্ক এর মিউজিঅ্যাম অব মডার্ন আর্টস এর পরপরেই ছবিটিকে কিনে নেন যা তার সংগ্রহে থাকা সব ছবির মধ্যে “প্রাইজড” একটি ছবি হিসেবে দেখতে পাবেন আপনি ।



ছবি নিয়ে যখোন কথা তখোন শেষ কথা কে কি বললেন আপনার নিশ্চয়ই জানতে ইচ্ছে করবে -

শিল্প সমালোচক জন বার্গার ১৯৬৫ সালে প্রকাশিত “দ্য সাকসেস এ্যান্ড ফেলিওর অব পিকাসো” নামের জীবনীগ্রন্থে “লেস দিমোইলিস দ্য’এ্যাভিনো” কে বলেছেন এটি একটি প্ররোচনা যা থেকেই বিশ্বের চিত্রশিল্পে কিউবিজমের জন্ম । তারপরেও যে কথা থাকে তাকে একেবারে উড়িয়ে দেয়া যায়না । বর্তমান কালের চিত্রকলার এতো এতো বীভৎসতা আর ঔদ্ধত্য দেখে দেখে আমাদের শালীনতা এতোটাই ভোঁতা হয়ে গেছে যে, আমরা ছবিটির বীভৎস হিংস্রতাকে একবারেই খাটো করে দেখছি । এটা যারা দেখেছেন তারাই আতংকিত হয়েছেন – এ্যান্ড ইট ওয়াজ মেন্ট টু শক.........”

দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকাতে এই সেদিন ২০০৭ সালে জোনাথন জোন্স লিখেছেন –

শিল্পে মডার্নিজমের বয়স আজ একশো বছর আর পিকাসোর ছবি এ্যাভিনোর তন্বীরা’ র একশো বছর বয়সও ছুঁয়ে গেলো । ১৯০৭ সালে টাইটানিক যখোন ডুবে যাবার অপেক্ষায় - রাইট ভ্রাতৃদ্বয় যখোন তাদের আবিস্কৃত উড়াল জাহাজের প্রচারে য়্যুরোপ সফরে ব্যস্ত – সানফ্রানসিস্কো যখোনও গেল বছরের ভূমিকম্পের ধকল সামলে ওঠেনি – সিনেমার নিউজ রীল যখোন বোয়র এর যুদ্ধের ছবি প্রক্ষেপন করে চলেছে তখোন নৈরাজ্য আর ক্যাবারে নাচের ঝমঝমানির ভেতর প্যারিসের মন্তমার্ত্রে ধংশপ্রাপ্ত সংকীর্ণ এক গলিপথে শিল্পী- লেখকদের নিয়ে ঘরঠাসা একটি ষ্টুডিওতে পঁচিশ বছরের দেশান্তরী এক স্প্যানিস তরুন সৃষ্টি করে চলেছেন মডার্ণ আর্টের জগতে সর্বপ্রথম ও মহান একটি মাস্টারপীসের...”



পিকাসো নিজেও বলেছেন , “ শয়তানের হাত থেকে এটিই আমার প্রথম খোসা ছাড়ানোর ছবি । ”





ভার্জিন অব দ্য রকস / লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি

Virgin of the Rocks / Leonardo da Vinci






ছবির শিল্পীকে কে না চেনেন এক নামে ? আর ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রটির কাহিনীই বা জানেন না কে ? বলছি ভিঞ্চি আর কুমারী মাতা মেরীর কথা । তার জীবনে ছবি আঁকার সারাটা সময় জুড়ে ভিঞ্চি রহস্যময় এক শিল্পী । এখানেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি । একটি নয় , একই নামে ছবি এঁকেছেন দু-দু’টি - “ভার্জিন অব দ্য রকস” । সামান্য হেরফের ছা্ড়াই দু’টো ছবির বক্তব্যই এক । শিশু যেশাসকে আর এক শিশু জন দ্য ব্যাপ্টিষ্ট শ্রদ্ধাভরে সম্মান জানাচ্ছেন । বাইবেলে নেই এমোন একটি কাহিনীর উপর ভিত্তি করেই ছবিটি আঁকা হয়েছে । মধ্যযুগীয় ধারনা মতে, মেরীর স্বামী যোশেফ এর হাত ধরে যেশাসের পরিবার যখোন মিশরে পালিয়ে যেতে থাকেন রাজা হ্যারোডের রোষানল থেকে বাঁচতে, তখোন পথমাঝের ঘটনা এটি । বাইবেলের বাইরে এই যাত্রাপথের কাহিনীর অনেক ভার্সন পাবেন আপনি । তার একটি হোল, পথে তাদের সাথে যোগ দেন যেশাসের চাচাত ভাই জন আর জনকে নিয়ে আসেন দেবদূতী উরিয়েল । পাহাড় আর পাথরে ঘেরা সে যাত্রাপথে একটি গুহায় বিশ্রামকালীন সময়ের বর্ননায় তাই এসেছে “রকস” এর কথা ।

বিষয়বস্তু এক হলেও ঘোরপ্যাচ আছে একটু । ভার্জিন অর নট-ভার্জিন ? আর এই ঘোরপ্যাচ নিয়েই তুমুল হট্টোগোল । ছবির গায়ে ছাপ উঠলো “ কন্ট্রোভার্সিয়াল” । তাই-ই নয় আসল ছবি কোনটি এ নিয়েও বোদ্ধাদের তর্ক শুরুতে সুনামীর ঢেউ তুললেও এখোন অনেকটা স্থিত হয়ে এসেছে । ইচ্ছে হলে আপনিও এই তর্কে যোগ দিতে পারেন । তর্ক করতে পারেন , আসল ছবিটিতে কি মাতা মেরীকে শুদ্ধভাবে দেখানো হয়েছে, এই নিয়ে ।

ছবি দু’টির একটিকে আপনি দেখবেন ল্যুভর মিউজিঅ্যামের দেয়ালে ঝোলানো । এটিই নাকি প্রথম আঁকা ছবি । আর দ্বিতীয়টি আপনি পাবেন লন্ডনের ন্যাশনাল গ্যালারীতে ।





শিল্পে কন্ট্রোভার্সিয়াল আর নন-কন্ট্রোভার্সিয়াল এর যুদ্ধে জয়ী “নন-কন্ট্রোভার্সিয়াল” ।



ছবির বিষয় বস্তুতে বাইবেলের একটি পবিত্র ধারনা (কনসেপশান) কে তুলে ধরার কথা ছিলো । কুমারী মাতা মেরীর গর্ভে যেশাস ক্রাইষ্টের জন্ম । কথা রাখেননি ভিঞ্চি । ছবি আঁকতে গিয়ে তার স্বভাব মতো একটু গিট্টু দিয়ে রেখেছেন । ছবিতে ধর্মীয় মহামানবদের পবিত্রতা বোঝাতে তার মাথার চারদিকে একটি উজ্জল প্রভার ছটা দেখানোই রীতি । এটা আপনারা বিভিন্ন দেবদেবীদের ছবিতেও দেখেছেন । যেমন কৃষ্ণের ছবিতে, যেশাশের ছবিতে । প্রথম ছবিতে ভিঞ্চি মেরীমাতার মাথার চারদিকে কোনও প্রভার ছটা (halos) আঁকেন নি । বেখেয়াল নাকি ইচ্ছেকৃত ? একজন ফিলোসোফার শিল্পী যিনি সকল কাজের কাজীও বটে, তার বেখেয়ালী হবার কথা নয় । সেই পনের-শো শতকে যখোন ক্যাথলিক ধর্মবিশ্বাসে ক্রিশ্চিয়ান মানূষ অটল সেখানে এই ধৃষ্টতা ক্ষমার যোগ্য নয় । তাই ছবিটি “বিতর্কিত” ছবির খাতায় নাম লিখিয়ে ফেলেছে । আরেকটি ছবি (দ্বিতীয়টি) এঁকে ভিঞ্চিকে সে ক্ষতি পুষিয়ে দিতে হয়েছে তাই ।

ক্যানভাসের উপরে নয়, ছয় ফুট লম্বা কাঠের প্যানেলের উপরে তেল রংয়ে আঁকা হয়েছিলো ছবি দু’টি । ল্যুভরে যেটি রয়েছে সেটি এখোন ক্যানভাসের উপরে । কেন ? লম্বা ইতিহাস আছে পেছনে । দুটোতেই “কমিশন” এর তারিখ দেয়া থাকলেও কোনটি প্রথম আর কোনটি নয় এ নিয়ে সন্দেহ মাথা চাড়া দিয়েছে কারন ছবি দু’টির সম্পূর্ণ ইতিহাস পরিষ্কার নয় । বেশীর ভাগ শিল্প ঐতিহাসিকরাই ল্যুভরে রাখা ছবিটিকেই প্রথম বলেছেন । আঁকা হয়েছে ১৪৮৩ থেকে ১৪৮৬ সালের ভেতরে । এও বলেছেন, এটা ভিঞ্চিরই আঁকা । তাহলে আরো কেউ কি এঁকেছিলেন এটি ? হুম, আরো কেউ মূল ছবিটি না আঁকলেও ছবির পুরো দৃশ্যপটের সাথে জড়িত ছিলেন কয়েকজনই । তারপরেও হাইপোথিসিসের শেষ নেই । সাধারন ভাবে এটাই ধারনা করা হয় , ইতালীর মিলানে ১৪৮৩ সালে ছবিটির কমিশনিং হবার কথা ছিলো । কিন্তু তার আগেই ভিঞ্চি গোপনে অজ্ঞাত কারো কাছে ছবিটি বিক্রি করে দিলে চুক্তি পুরন করতে তাকে আর একটি ছবি আঁকতে হয় , যেটা ঝুলছে এখোন ন্যাশনাল গ্যালারীতে । ছবিটির সাম্প্রতিক “রেস্টোরেশান” করতে গিয়ে কনজারভেটরদের এই ধারনা হয়েছে , ছবিটির আংশিক এঁকেছেন ভিঞ্চির সহকারী কেউ । হয়তো !

মিলানের সান ফ্রান্সেসকো গীর্জায় “ইম্যাকিউলিট কনসেপশান” নামের ধর্মীয় ভ্রাতৃসঙের ভজনালয়ের জন্যে মূল ছবিটি আঁকতে ভিঞ্চিকে চুক্তিবদ্ধ করা হয় । চুক্তিটি ছিলো ভজনালয়ের জন্যে বেশকিছু কাঠের প্যানেলে ভার্জিন মেরীর ছবি সহ আরো কিছু এ্যাঞ্জেলের ছবি এঁকে দিতে হবে । কিন্তু পরে কাজটিকে দু’টো ভাগে ভাগ করে দেয়া হয় । ঠিক যেন আমাদের দেশের মতো, দলীয় ক্যাডারদের সন্তুষ্ট রাখতে একই কাজ কয়েক ভাগে ভাগ করে কন্ট্রাক্ট দেয়া । এখানেও সম্ভবত তাই ঘটেছে । কারন মূল ছবি আঁকবেন ভিঞ্চি আর মেরীর দু’পাশে আটজন এ্যাঞ্জেলের ছবি করে দেবেন এ্যামব্রোজিও দ্য প্রেডিস এবং কাঠের প্যানেলের কারুকাজ সহ পূনঃসজ্জাকরনের কাজ করবেন ইভাঞ্জেলিষ্টা দ্য প্রেডিস নামেরেএকজন । দু’ভাই এরা । কিন্তু যে “ইম্যাকিউলিট কনসেপশান” এর উপর মেরীর ছবি আঁকতে হবে ভিঞ্চি তা খানিকটা এড়িয়ে গেছেন । মেরীকে তিনি এঁকেছেন সাধারন এক নারী হিসেবে । মাথার চারদিকে প্রভার ছটা (halos) না এঁকে ।

কারনটি হয়তো হতে পারে এই – ক্রিশ্চিয়ান চার্চ সব সময়েই এই পবিত্র ধারনা লালন করে এসেছেন যে , ঈশ্বরপূত্র যেশাস কুমারীমাতা মেরীর গর্ভজাত । পনের শতকে ফ্রান্সিসকান অর্ডারের অনুসারীরা এই ধারনার মূলকে ঠিক রেখে আর একটু আধুনিক ঘরানার চিন্তা যোগ করতে চেয়েছেন তাতে । বলতে চেয়েছেন, যেশাস সত্যিকার অর্থে কুমারীমাতার গর্ভে জন্মগ্রহন করেননি । বরং মনুষ্যজন্মের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় যেশাসের জন্ম হলেও ঈশ্বর তাকে “ ইমিউন” করেছেন এইভাবে যে, মেরীকে “আদি পাপ” (অরিজিনাল সিন ) থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি দিয়েছেন তিনি । মেরীর কোনও পাপ নেই । স্বর্গ থেকে বিচ্যুত হয়ে এ্যাডাম আর ইভ যে পাপ করেছেন মানুষের মাঝে সেই “আদি পাপ” প্রবাহিত হবেই । ঈশ্বর মেরীকে ক্ষমা করে দিয়েছেন যেহেতু ঈশ্বর ক্ষমাশীল । আর যেশাসের জন্ম তেমন হলেও যেহেতু যেশাস ঈশ্বরের দূত তাই মাতা মেরী আর যেশাসকে “ইমপিউনিটি” দেয়া হয়েছে সর্বকালের জন্যে । নেপোটিজম ??? হতে পারে ! তাই মাতা মেরী পবিত্র । আর যেশাসও পবিত্র কুমারীমাতার গর্ভজাত ।

সম্ভবত ভিঞ্চি ফ্রান্সিসকান অর্ডারের এই ধারনাটিকেই তার ছবির মূল প্রতিপাদ্য হিসেবে তুলে ধরতে চেয়েছিলেন । তাই মেরীর মাথার পেছনে উজ্জলপ্রভা আঁকেননি । শিশু যেশাসকে বসিয়েছেন মেরীর থেকে দূরে আর এক এ্যাঞ্জেলের কাছে । মতভেদ থাকলেও প্রচলিত ধারনা, এই এ্যাঞ্জেলটি “ উরিয়েল ” । অঙ্গুলি নির্দেশ করে আছেন আর এক শিশু “জন দ্য ব্যাপ্টিষ্ট” এর দিকে যে আছে মাতা মেরীর হাতের ছায়াতলে । জন দ্য ব্যাপ্টিষ্ট হাত জোর করে প্রার্থনার ভঙ্গিতে যেন শিশু যেশাসের পবিত্রতার কাছে মাথা নত করে আছেন । মেরী তাকে আগলে রেখেছেন সস্নেহে । আর শিশু যেশাস হাত তুলে যেন আশীর্বাদ করছেন জন দ্য ব্যাপ্টিষ্টকে । তার মাথার ওপরে মাতা মেরীর হাত এই ডিভাইন মূহুর্তটিকেই যা “আদি পাপ” এর উর্দ্ধে উঠে যেশাসের পবিত্রতার ঘোষনা দিচ্ছে সে দিকেই যেন ঈঙ্গিত করছেন । আর উরিয়েল চেয়ে আছেন দর্শকদের দিকে, পরনে তার উজ্জল পোষাক যা দর্শকদের চোখ টানবে আগে । মেরীর ভার্জিনতাকে এভাবে চিত্রিত করার এই ধারনাটিকেই ক্রিশ্চিয়ান শিল্পবোদ্ধারা মেনে নিতে পারছেন না । মেরীকে যেন হেয় করা হয়েছে এখানে । অনেকটা যেন ব্লাসফেমীর ভাব আছে ছবিতে । তাই বিতর্কিত ।

রেগেমেগে “ইম্যাকিউলিট কনসেপশান” ভ্রাতৃসঙের কর্তাব্যক্তিরা ভিঞ্চির পারিশ্রামিক বন্ধ করে দিলেন । নতুন করে আঁকতে বললেন আবার, যেমনটা তারা চান । তথাস্তু । কিন্তু পারিশ্রামিক বাড়াতে হবে । কর্তাব্যক্তিরা তা মেনে নিলেন না । হতে পারে , পয়সা উশুল করতে ভিঞ্চি ছবিটা বিক্রি করে দিয়েছেন । মনে করা হয় , ভিঞ্চি ১০০ দ্যুকাতস এর বিনিময়ে ছবিটি বিক্রি করে দেন ফ্রান্সের রাজা দ্বাদশ লুইসের কাছে । সম্ভবত যিনি আবার ছবিটিকে উপহার দিয়ে বসেন হলি রোমান সম্রাট প্রথম ম্যাক্সিমিলিয়ানকে । তাই ভিঞ্চিকে আঁকতে হোল দ্বিতীয় আরেকটি । মেরীর মাথার চারধার ঘিরে উজ্জলপ্রভা বসানো হোল । এ্যাঞ্জেল উরিয়েলের হাত নামিয়ে দেয়া হোল । তার চোখের দৃষ্টিকে আনত করা হোল । তার বসনের উজ্জলতা হটিয়ে সবুজ মেটে রংয়ের ভাব আনা হোল যাতে দর্শকের চোখ তার দিকে না ফেরে । উজ্জল হোল ছবিটির ক্যানভাস । এবার বুঝি শান্ত হলেন ভ্রাতৃসঙ । প্রথমটির জায়গাতে দ্বিতীয় এই ছবিটি ঠাই পেলো “ইম্যাকিউলিট কনসেপশান” ভ্রাতৃসঙের ভজনালয়ে, যেমোনটা তারা চেয়েছিলেন ।



১৭৮১ থেকে ১৭৮৫ সালের মধ্যে গীর্জা কর্তৃপক্ষ ছবিটি গ্যাভিন হ্যামিল্টন নামের একজনার কাছে বিক্রি করে দিলে হ্যামিল্টন ছবিটিকে ইংল্যান্ড নিয়ে আসেন । এরপরে বহু হাত ঘোরা শেষে ন্যাশনাল গ্যালারী ছবিটিকে কিনে নেন ১৮৮০র দিকে । আজতক ছবিটি এখানেই আছে । তারপরেও আজও তর্ক থেমে নেই । তর্ক ছবিটির জন্ম তারিখ নিয়ে, কোন ছবি কার আঁকা তা নিয়ে এবং ছবিতে উচ্চারিত রূপকের ধরন নিয়ে । ২০১১/২০১২ সালে কয়েক মাসের জন্যে ন্যাশনাল গ্যালারীর একই কক্ষে , একই রকম আলোর নীচে ছবি দু’টোকে আনা হয় । সম্ভবত জীবনে দু’জনার এই প্রথম দেখা । সেই দেখা থেকে বিতর্কের কারনগুলো আসলেই কি, তা চিত্র বিশেষজ্ঞরা পরিষ্কার করতে পারবেন হয়তো । আমাদেরও সেদিনটির দিকে তাকিয়ে থাকতে দোষ কী ?



( তিন পর্বে সমাপ্ত )



সূত্র / সাহায্য : বিভিন্ন ইন্টারনেট সাইট ।



।। পৃথিবীর বিতর্কিত সব ছবিরা…… প্রথম পর্ব ।।

Click This Link

মন্তব্য ৫৬ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (৫৬) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:২৬

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: বেশ লম্বা প্যারিস কাব্য
বেশ ভাল লাগল

২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৯

আহমেদ জী এস বলেছেন: পরিবেশ বন্ধু .

অত্যন্ত দুঃখিত যে উত্তর দিতে দেরী হয়ে গেলো ।
শুধু প্যারিস নয় অনতিদীর্ঘ বিশ্ব কাব্য বলতে পারতেন ।

অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে ।

২| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:৫৮

বেলাল তামজীদ বলেছেন: nice post

২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১১

আহমেদ জী এস বলেছেন: বেলাল তামজীদ,

আ নাইস থ্যাংকস টু য়্যু ....

সরি ফর দ্য আনইনটেনশনাল ডিলে টু আনসার ।

৩| ২৪ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১১:৪৯

স্নিগ্ধ শোভন বলেছেন:

++++

২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৩

আহমেদ জী এস বলেছেন: স্নিগ্ধ শোভন ,

পাশে থাকার জন্যে ধন্যবাদ । প্লাস দেয়ার জন্যে স্নিগ্ধ শোভন এক শুভেচ্ছা ....

৪| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:০২

সেয়ানা বলেছেন: প্রিয়তে নিলাম।

২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৫

আহমেদ জী এস বলেছেন: সেয়ানা ,

প্রিয়তে নিয়েছেন জেনে প্রীত হয়েছি । তবে অনভিপ্রেত দেরীর জন্যে দুঃখিত ।

৫| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:১০

পেন্সিল স্কেচ বলেছেন: দোলা দেয়ার মতই
+++++

২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৮

আহমেদ জী এস বলেছেন: পেন্সিল স্কেচ ,
আপনার সুন্দর মন্তব্য আমাকে ও দোলা দিয়ে গেলো যে !
আপনার স্কেচ করা প্লাসগুনো ভালো হয়েছে... ( হা....হা...হা....) ।

শুভেচ্ছান্তে ।

৬| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১২:২৪

খাটাস বলেছেন: প্লাস সহ বক্সে। বোঝাই যাচ্ছে ভাল পোস্ট, পড়ে পড়ব।

২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৩

আহমেদ জী এস বলেছেন: খাটাস বলেছেন:

অনুমান করি এরই মধ্যে পড়ে ফেলেছেন । আমার আসতে অহেতুক দেরী হয়ে গেলো বলে দুঃখিত ।

অজস্র ধন্যবাদ আপনাকে প্লাস আর বক্সে নেয়ার জন্যে ।

মন্তব্যের জন্যে অপেক্ষা করছি ।

৭| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১:২৪

রোমেন রুমি বলেছেন: দুর্দান্ত একটা পোস্ট ।
ভাল লাগা রইল ।

২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:২৫

আহমেদ জী এস বলেছেন: রোমেন রুমি ,

আপনাদের ভালো লাগতে আমার পরিশ্রমকে আর শ্রম বলে মনে হচ্ছে না ।
অজস্র ধন্যবাদ আর শুভেচ্ছা ।

৮| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৩:১৭

স্বপ্নবাজ অভি বলেছেন: ছবির চেয়ে এর ব্যাখ্যা আর আপনার বর্ণনা অসাধারণ লাগলো !

২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩০

আহমেদ জী এস বলেছেন: স্বপ্নবাজ অভি,

কেন ছবিগুলি ভালো লাগেনি ? সারা পৃথিবীর পর্য্যটকেরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছে ছবিগুলোর সামনে .....
আর আমি তো সামনা সামনি না দেখেই পাগল । ব্যাখ্যা আর বর্ণনা তাই এই পাগলেরই "পাগলপন" ....

ভালো থাকুন আর বরাবরের মতো সাথে ।
শুভেচ্ছান্তে ।

৯| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১০:৫৭

শরৎ চৌধুরী বলেছেন: ইহা একটি সুপার্ব সিরিজ। অনবদ্য।

২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৩

আহমেদ জী এস বলেছেন: অন্যমনস্ক শরৎ ,

শরৎ ,আপনি ভালো আছেন তো ? অনেক দিন পরে আপনার দেখা মিললো । শরৎ বলেই কি ?

এর আগেও বিখ্যাত ছবিদের নিয়ে একটি সিরিজ আছে আমার ।
শুভেচ্ছা রইলো .....

১০| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ১১:১১

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


অসাধারণ একটি পোস্ট +++++

২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৬

আহমেদ জী এস বলেছেন: কান্ডারী অথর্ব ,

আমি অথর্বের মতো দেরী করে ফেলেছি আপনাকে ধন্যবাদ জানাতে । ব্যস্ত ছিলুম অনেক ।

বরাবরের মতোই আপনার সুন্দর মন্তব্যটির জন্যে খুশি হয়েছি ।

ভালো থাকুন । শুভেচ্ছান্তে ।

১১| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ দুপুর ১:০৯

হাসান মাহবুব বলেছেন: দুর্দান্ত পোস্ট।

২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৮

আহমেদ জী এস বলেছেন: হাসান মাহবুব,

মাহবুব, দেরী হয়ে গেলো উত্তর দিতে । খুব কাজ ছিলো, তাই ।

আপনাদের ভালো লেগেছে জেনে দুর্দান্ত খুশি ।


শুভেচ্ছান্তে ।

১২| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৩:৩৪

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: ভালো লেগেছে।

২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪২

আহমেদ জী এস বলেছেন: প্রোফেসর শঙ্কু ,

দেরী করে ফেলাতে বেশ শঙ্কিত হয়েই ধন্যবাদ জানাচ্ছি যদি ক্ষমা না মেলে !

শুভেচ্ছান্তে । ভালো থাকুন নিঃশঙ্ক চিত্তে ।

১৩| ২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৯

জুন বলেছেন: চমৎকার পোষ্ট আহমেদ জীএস। আপনার ব্যাখ্যা বিশ্লেষনে অশ্লীল আর বিতর্কিত ছবিও শ্লীল আর মানবিক হয়ে উঠেছে।
শুভেচ্ছা সন্ধ্যার....

২৫ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৫১

আহমেদ জী এস বলেছেন: জুন,

আগের বারেও আমার কোনও এক পোষ্টে আপনি "অনলাকি থার্টিন" নম্বরে মন্তব্য করে 'লাকি" করে দিয়ে গেছিলেন পোষ্টখানাকে , মনে আছে ? এ বারেও তাই ।

আপনি আমাকে যে ভাবে সব সময় প্রেরনা দিয়ে যাচ্ছেন তাতে আমার তো পিছে ফিরে তাকানোর সুযোগ বন্ধ করে দিলেন । সামনে আমাকে আরো খাটিয়ে নিতে চান বুঝি ?

আপনাদের মতো ঋদ্ধ সহ-ব্লগাররা সাথে থাকলে দুস্তর পথ পাড়ি দেয়ার খাটুনিও আমার সইবে ।

আপনাকে ও শুভেচ্ছা এই স্বর্ণালী সন্ধ্যার, চাঁদ জাগা রাতের .....

১৪| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:০৬

আমি তুমি আমরা বলেছেন: ভাল পোস্ট।নতুন কিছু তথ্য জানলাম। ধন্যবাদ

২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৭:০২

আহমেদ জী এস বলেছেন: আমি তুমি আমরা,

সুপ্রভাত ।

বিখ্যাত ছবিদের নিয়ে একটি সিরিজ আছে আমার এই ব্লগেই । হয়তো নতুন আরো কিছু জানতে পারবেন ।

সুন্দর মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ ।

১৫| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ২:২২

নাজিম-উদ-দৌলা বলেছেন: সত্যিই দুর্দান্ত পোষ্ট। একসময় সামুতে অনেক আসত এমন পোষ্ট। এখন কমে যাচ্ছে দিনে দিনে। আপনাকে সাধুবাদ। +++++
আগের পোষ্ট গুলো দেখব এই সিরিজের :)

২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ সকাল ৭:০৭

আহমেদ জী এস বলেছেন: নাজিম-উদ-দৌলা,

সুপ্রভাত ।
অজস্র ধন্যবাদ মন্তব্যটির জন্যে ।
চেষ্টা করছি সামুর সেই ঐতিহ্যকে খানিকটা হলেও যদি ফিরিয়ে আনা যায় । আপনাদের ভালো লাগলে আমার পরিশ্রমকে আর শ্রম বলে মনে হবে না ।

শুভেচ্ছা ।

১৬| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:০১

বোকামন বলেছেন:




ছবিগুলো নিয়ে আপনার বিচার-বিশ্লেষণ সত্যিই অ সা ধা র ণ !

আপনাকে ধন্যবাদ শ্রমসাধ্য পোস্টটির জন্য। বিশেষ ধন্যবাদ আমাদের মত অতি সাধারণের জন্য সহজ করে উপস্থাপনের জন্য। শিল্পবোদ্ধা নই তবে বুঝার চেষ্টা করি রঙ ও তুলির হরেক ব্যবহারকে.....। এই ধরনের পোস্টগুলো হয়ত সে বুঝার গতিকে পিচ-ঢালা পথে নিয়ে আসবে।।

জেনে বুঝে বিতর্ক হোক।।

ভালো থাকুন লেখক, সবসময় :-)

২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:৫৪

আহমেদ জী এস বলেছেন: বোকামন ,

কোন্ও ছবি আপনার চোখকে টা্নলেই তা আপনার কাছে ভালোলাগার একটি ছবি । এতে শিল্পবোদ্ধা হ্ওয়ার তেমন একটা প্রয়োজন নেই । শুধু সুন্দরতাকে পছন্দ করেন কিনা , সেটাই মুখ্য ।
লিখি আপনাদের সাথে একাত্ম হতে । তাই আপনাদের ভাষাতেই কথা বলতে চাই , যেন সামনে বসে আছেন আপনারা । খুব বেশি আশা করি হয়তো !
"বিতর্ক হোক" লিখেছেন । একটু বলি - যা বুঝতে পারি তাতে মনে হয় অনেক অনেক বিখ্যাত ছবি দেখার সৌভাগ্য আপনার হয়েছে । এইখানে দেয়া তেমন কোন্ও ছবি যদি আপনি দেখে থাকেন নিজ চোখে তবে একটু মনে হয় আমাকে দেখিয়ে দিতে পারতেন, আমার বর্ণনায় ও বিশ্লেষণে ঘাটতি আছে নাকি কোথা্ও । পারতেন তো !

ভালেঅ থাকুন আপনি ও ।

১৭| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ১০:১২

সানড্যান্স বলেছেন: আমি এতক্ষন ছিলাম প্যারিসে, তারপর ভিঞ্চির ইটালীতে!!!

পুরনো ভালোলাগা!!!

২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:৫৯

আহমেদ জী এস বলেছেন: সানড্যান্স,

ড্যান্স করতে করতে চলে গেলেন কি, প্যারিস থেকে ইটালী ? পাশের দেশটা্ও তো ছিলো ! ওখানটা একটু হয়ে যেতেন !

ভালো লাগলো খুব মন্তব্যটি ।
আর ভালোলাগা পুরোনো হয় না কখোনও , চির নতুন - চির সতেজ হয়েই থাকে ।

শুভেচ্ছান্তে ।

১৮| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৫:১৯

আরুশা বলেছেন: ছবির পিছনেও যে কত কাহিনী থাকে বলতে গেলে আমাদের সাদামাটা চোখে তা ধরা পরেনা । আপনার পোস্ট থেকে ছবির পিছনের সেই কাহিনীগুলি জানলাম। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আহমেদ জিএস জানানোর জন্য। ভাললাগলো আপনার পোস্ট+++++্

২৭ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৯:১০

আহমেদ জী এস বলেছেন: আরুশা,

দেখার চোখ থাকা চাই । তবেই তো ধরা পড়ে যা কিছু সব ।

আপনাদের সাথে মিলে যেতে আপনাদের চোখেই কোন্ও বিষয়টিকে দেখতে চেষ্টা করি আমি । সবসময় হয়ে ওঠেনা হয়তো ! তাই , আপনার ভালো লেগেছে বুঝতে পারছি ।

ছবির পিছনে কাহিনী তো থাকেই । যেমন আপনার নিকের ছবিটি ....

ধন্যবাদ দেখা আর সুন্দর মন্তব্যের জন্যে ।

ভালো থাকুন । শুভ রাত্রি ।

১৯| ৩০ শে আগস্ট, ২০১৩ রাত ৮:১৮

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: খুব চমৎকার একটা সিরিজ। ছবির পেছনের ব্যাখ্যা না দিলে এ চোখে কিছুই পড়তো না আমার নিশ্চিত।
মাদাম এক্স আর মেরীর ছবিটা এতো জীবন্ত ! কী বলবো।
এই সিরিজের সাথেই আছি।
ভালো থাকুন ভাইয়া

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩২

আহমেদ জী এস বলেছেন: অপর্ণা মম্ময় ,
দেরী হয়ে গেলো উত্তর দিতে, দুঃখিত । ব্যস্ততাই কারন ।

ছবির পেছনের ব্যাখ্যা দেয়ার জন্যেই তো লিখেছি । নইলে সব ছবি তো আপনারা নেটেই পেতে পারতেন ।

ছবিরা জীবন্ত বলেই তো তাদের নিয়ে এতো কথা ।
সাথে থাকার জন্যে ধন্যবাদ ।

শুভেচ্ছান্তে ......


২০| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:১৯

একজন আরমান বলেছেন:
দারুণ এক সিরিজ। চলুক।

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৩৬

আহমেদ জী এস বলেছেন: একজন আরমান,

ব্লগের ঢিলেমীর কারনে উত্তর দিতে হল বলে দুঃখিত ।

মন্তব্য আর সাথে থাকার জন্যে ধন্যবাদ , আরমান ।

২১| ০২ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৩:৪২

ভিয়েনাস বলেছেন: মজার বিষয় কি জানেন ?? পোস্ট পড়ার সময় একটু করে ব্যাখ্যা পড়ি আর একটু কোরে পেইন্টিং দেখি। যেকোনো ছবি নিয়ে আপনার স হজ সরল ব্যাখ্যা খুব অনবদ্য লাগে। অনেকক্ষন মনোযোগ দিয়ে ছবি আর ব্যাখ্যা পড়লাম।

ভালো লাগলো এবং শুভ কামনা রইলো।

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৭

আহমেদ জী এস বলেছেন: ভিয়েনাস,
আপনার আশা জাগানিয়া সুন্দর একটি মন্তব্যের উত্তর সাথে সাথে দিতে পারিনি ব্লগীয় জটিলতা আর ঢিলেমীর কারনে । দুঃখ প্রকাশ করতে পারি ।

আমিও আপনাদের যারা ছবিকে ভালোবাসেন , তাদের দিকে চোখ রেখেই লিখেছি । এক একটা ছবির পেছনে শিল্পী যে কতো গল্প, কতো কবিতার লাইন লুকিয়ে রাখেন ! সাদা চোখে তার অনেকটুকুই ধরা পড়েনা।

ছবির ব্যাপার-স্যাপারগুলো আমার কাছেও মজার । মজার তাদের কাছেই যাদের শিল্পবোধ আছে ।

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ । ভালো থাকুন ।
শুভেচ্ছান্তে ।

২২| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৩

শাহেদ খান বলেছেন: আরও একটা দারুণ পোস্ট !

আচ্ছা, “ভার্জিন অব দ্য রকস”-এর একটা ভার্সনে দেখছি শিশু জন দ্য ব্যাপ্টিষ্ট-এর কাঁধে ক্রস, আগের ভার্সনে সেটা ছিল না। এর কোনও ব্যাখ্যা আছে?

পরের অর্থাৎ শেষ পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম, যদিও পর্বসংখ্যা আরও বেশি হলে আরও খুশি হতাম।

ভাল লাগা জানবেন। এবং আপনি অনুসারিত।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩০

আহমেদ জী এস বলেছেন: শাহেদ খান ,

ভালো কথা বলেছেন । ধর্মীয় এক একটি ভাবের কনসেপ্ট নিয়ে এক একজন শিল্পী তার মতো করে আঁকেন । তাই দেখবেন একই বিষয়বস্তু নিয়ে একাধিক ছবি এঁকেছেন একাধিক শিল্পী । যে যার মতো করে নিজের দৃষ্টিভঙ্গী ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছেন সেখানে।

আবার এমোনটা্ও আছে একই শিল্পী একই বিষয়বস্তু নিয়ে একাধিক ছবি এঁকেছেন । আবার একটি ছবি আঁকতে গিয়ে শিল্পীকে ডজন ডজন স্কেচ করতে হয়েছে । সেগুলিই আবার একসময় ছবি হয়ে উঠেছে । যেমন উপরের এ্যাভিনোর তন্বীরা ছবিটির জন্যে পিকাসোকে ১০০টি স্কেচ করতে হয়েছে । এর অনেকটাই আবার পূর্ণাঙ্গ ছবি হিসেবে দেখতে পাবেন কোথা্ও । আবার মোনালিসা ছবির ভার্সন আছে অনেকগুলি । দেখে থাকবেন হয়তো ।

আশা করি আপনার ব্যাখ্যা পেয়েছেন ।

অনুসরনের জন্যে ধন্যবাদ এবং সাথে থাকার জন্যে তো বটেই ।

শুভেচ্ছান্তে ।

২৩| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:২৭

বোকামন বলেছেন:
তৃতীয় পর্বের অপেক্ষায় আছি :-)

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৪৪

আহমেদ জী এস বলেছেন: বোকামন,

অপেক্ষায় থাকুন , আসছি......

ততোক্ষনে হাতের কাজগুনো সেরে ফেলুন ।

২৪| ০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৪

ডট কম ০০৯ বলেছেন: অনেক কিছু জানলাম ছবি সম্পর্কে।

০৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৪৬

আহমেদ জী এস বলেছেন: ডট কম ০০৯,

ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্যে ।
তবে বেশ "কম" করে বলেছেন অর্থাৎ , একলাইনে সেরেছেন ।

ভালো থাকুন ।

২৫| ০৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৫৬

বোধহীন স্বপ্ন বলেছেন: চোখ রাখছি । চিত্রকলার প্রতি হঠাৎ হাল্কা আগ্রহ সৃষ্টি হচ্ছে

০৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:১৪

আহমেদ জী এস বলেছেন: বোধহীন স্বপ্ন,

ধন্যবাদ আপনাকে ।

ছবির প্রতি খানিকটা হলেও আপনার আগ্রহ দানা বাঁধছে জেনে ভালো লাগছে । একদিন এটাই হয়তো বিশাল হয়ে উঠবে ।

সাথেই থাকুন আর চোখ রাখুন ........

২৬| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:০১

নাভিদ কায়সার রায়ান বলেছেন: দারুণ ইন্টারেস্টিং লাগল

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪০

আহমেদ জী এস বলেছেন: নাভিদ কায়সার রায়ান ,

অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে । আমারো ইন্টারেস্টিং লাগছে আপনার ভালো লেগেছে জেনে ।

২৭| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৩৪

রাতুল_শাহ বলেছেন: দারুণ লাগলো.........

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪২

আহমেদ জী এস বলেছেন: রাতুল_শাহ ,

মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ । দারুন লেগেছে জেনে সাহস পাচ্ছি ।

শুভেচ্ছান্তে ।

২৮| ১৬ ই মে, ২০১৪ রাত ১০:০৭

মুদ্‌দাকির বলেছেন: সুন্দর

১৬ ই মে, ২০১৪ রাত ১০:২৮

আহমেদ জী এস বলেছেন: মুদ্‌দাকির ,


মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ।

ভালো থাকুন ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.