নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ট্রুথ নেভার ডাই্‌জ

নিজের সম্পর্কে লেখার কিছু নেই । সাদামাটা ।

আহমেদ জী এস

পুরোপুরি একজন অতি সাধারন মানুষ । আমি যা আমি তাই ই । শয়তানও নই কিম্বা ফেরেশতা । একজন মানুষ আপনারই মতো দু'টো হাত, চোখ আর নিটোল একটা হৃদয় নিয়ে আপনারই মতো একজন মানুষ । প্রচন্ড রকমের রোমান্টিক আবার একই সাথে জঘন্য রকমের বাস্তববাদী...

আহমেদ জী এস › বিস্তারিত পোস্টঃ

মহাবেকুব জাতক কথন- ষোল ।। অপুষ্ট মগজওয়ালা একটি জাতি……..

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৭


আমাদের দেশের মানুষগুলো এখনও যে কেন “মানুষ” হইয়া উঠিতে পারিলোনা এমন আক্ষেপ আমাদের সবারই কমবেশি আছে, এই মহাবেকুবেরও আছে। ইহা লইয়া কতো কথাই তো আমরা বলিয়া থাকি- এ জাতিটা একেবারেই গোল্লায় গিয়াছে, কাহারো মানবিক মূল্যবোধ একেবারেই নাই, মানুষগুলা দিনদিন হিংস্র হইয়া উঠিতেছে, অধঃপতনে গিয়াছে গোটা সমাজটাই, মানুষ এখন পশু হইয়া গিয়াছে ইত্যাদি… ইত্যাদি।
মহাবেকুব বুঝিয়া পায়না, কেন এবং কি কারনে সবাই এই জাতিটারে গালাগালি দিয়াই খালাস কিন্তু কেন এমন হইলো উহার কোনও কার্য্যকরণ কেন হাতাইয়া হাতাইয়া বাহির করিতে পারিলোনা? কিছু বিজ্ঞজনেরা কেবল এক-আধখানা কারণ লইয়াই লুঙ্গি কাছা মারিয়া পড়িয়া রহিয়াছেন যে, সঠিক শিক্ষার অভাব মানুষের মন-মানসিকতার অধঃপতন ঘটাইয়াছে। লোভ তাহাদের খাইয়া ফেলিয়াছে। ইহার বাহিরে যেন আর কিছু নাই! আবার ইহা হইতে উত্তরণের জন্য তাহারা সঠিক শিক্ষার কথাও বাৎলাইতেছেন, বাৎলাইতেছেন “এলেম দ্বারা জ্ঞান ধরা হয়” এর রাস্তাও । ইহা লইয়া মোটিভেশনাল স্পিকাররা দু’পয়সা কামাইবার ভালো ব্যবসা ফাঁদিয়া বসিতে পারিতেছেন কিন্তু পাবলিকের মন-মানসিকতার দু’পয়সারও লাভ হইতেছেনা।
কিন্তু এই জাতিটা কেন গোল্লায় গিয়াছে তাহা কেহ ভাবিয়া দেখিয়াছেন কি? ইহা লইয়া কোনও সারগর্ভ গবেষণা হইয়াছে কি ? মূল কারনটি কি খুঁজিয়া-পাতিয়া বাহির করিয়া সমাধানের পথটি কি বাৎলানো হইয়াছে? হইলেও এই মহাবকুবের বেকুবী এন্টেনায় তাহা ধরা পড়ে নাই!

কি আর করা!!!!!
তাই এই মহাবেকুব নিজে নিজেই ভাবিতে বসিলাম।
দেখিলাম, একদঙ্গল অপুষ্টিতে ভোগা, অনুর্বর মস্তিষ্কওয়ালা দরিদ্র জনগোষ্ঠীর নিকট হইতে সুচিন্তক, যৌক্তিক, আত্মনিয়ন্ত্রক কোনও কিছু আশা করার জায়গাটা আমাদের কোথায়ও আছে কিনা!
নাই…… থাকার কথাও নহে।
কারন জন্মের পর হইতেই দারিদ্রতাজনিত অপুষ্টি আর মানসিক চাপ এই জনগোষ্টির সত্যিকারের মগজের গড়নটাই বদলাইয়া দিয়াছে। জন্ম নিয়াছে অপুষ্ট মস্তিস্ক লইয়া একটি আত্মনিয়ন্ত্রহীন-অস্থির-অসংযমী ব্যক্তি-সমাজ-জনগোষ্ঠী! আমাদের কথামতো যাহারা গোল্লায় গিয়াছে। মহাবেকুব বুঝিয়া পায়না, গোল্লায় যাওয়ার জন্য যে অপুস্ট মগজটাই দায়ী তাহা দেশের তাবৎ বুজর্গগণ বুঝিতে না পা্রিয়া কেন শুধু মন-মানসিকতার, শিক্ষার দোষ দিয়াই যাইতেছেন!!!!!

এখন আপনারা বলিতেই পারেন, “আরে ব্যাটা বেকুব, দারিদ্রতা আর পুষ্টির সাথে দেশের জনগনের গোল্লায় যাওয়ার সম্পর্ক কি ?”
ইহার জবাব খুঁজিতে গিয়া অন্তর্জাল হাতরাইয়া পুষ্টির সহিত আর্থিক অস্বচ্ছলতা মানে দারিদ্রতা, দারিদ্রতার কারনে সামাজিক অসাম্য, সামাজিক অসাম্যের কারনে ব্যক্তি মানষ এমনকি পারিবারিক মানসিকতাতে চাপ, মানসিকতায় চাপের কারনে…….. ইত্যাকার হরেক কিসিমের যোগসাজসের গাদা-গাদা তথ্য পাইলাম। এই সব তথ্য পাইয়া এই বেকুবের জ্ঞান বৃদ্ধি পাইয়াছে বটে কিন্তু আমি মহাবেকুব বলিয়াই সাহস করিয়া সেই বিশাল তথ্য ভান্ডার হইতে অল্পসল্প জ্ঞান মাত্র লইয়া এই কথন কহিতে বসিলাম-----

আমরা সাধারণ জনগণ সচারচর যে বিষয়ের ভুক্তভোগী তাহা হইলো এই যে, গরীবের প্রতি সমাজের ধনী-মধ্যবিত্ত এমনকি কমগরীব মানুষেরও বৈষম্যমূলক আচরণ। মানসিক চাপটি আসে মূলতঃ সমাজের একটি অংশের এই বৈষম্যমূলক আচরণ হইতে। ঘোগের পেছনে ফেউয়ের মতো মানসিক চাপের পেছনে আরও যা আছে তাহা হইলো শিশুকাল হইতেই চাহিদার বিপরীতে প্রাপ্তি আর অপ্রাপ্তির মাঝের বিশাল সব ফারাক । দারিদ্রতার কারনে শিক্ষার উপকরণের অভাবে শিক্ষাক্ষেত্রের বৈষম্য । দরিদ্র বলিয়া প্রতিবেশী এবং সমাজের অবহেলা । জীবিকার প্রয়োজনে সর্বক্ষন ব্যস্ত অসহায় পিতামাতার আদর-স্নেহ-সাহচর্য্য, যথাযথ নির্দেশনা হইতে বঞ্চিত হওয়া।
তাই দরিদ্র- হতদরিদ্র মানুষ মনের দিক হইতেও ধনী আর স্বচ্ছলদের চাইতে যুগ যুগ ধরিয়া দরিদ্রই থাকিয়া গিয়াছে।

এবারে আসি অপুষ্টির সহিত “অপুষ্ট মগজ” গঠনের গল্পটিতে-------
জানিয়া রাখুন, অপুষ্টির কারনে শিশুকাল হইতেই এ দেশের মানুষের মস্তিষ্ক যথাযথ পূর্ণতা নিয়া গঠিত হইতে পারে নাই। এ জন্যই ধনীদের তুলনায় দেশের ৮০-৯০% মানুষ শুধু টাকা-পয়সাতেই দরিদ্র নহে, তাহারা মগজের দিক দিয়াও দরিদ্র হইয়া পড়িয়াছে এবং পড়িতেছে। এই ঘটনা ঘটিতেছে আমাদের বাপ-দাদাদের আমলেরও অনেক আগ হইতেই, প্রজন্মের পরে প্রজন্ম ধরিয়া, চক্রবৃদ্ধি হারে।
সাধারণত একটি শিশুর ৪ বছর বয়সকাল পর্যন্ত তাহার মগজ (ব্রেইন) বিশেষ করিয়া “গ্রে-ম্যাটার” দ্রুত বৃদ্ধি পাইতে থাকে। গ্রে-ম্যাটার হইলো কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন যাহা স্নায়ূকোষ দ্বারা ঠাসা এবং মূলত আপনার দৈনন্দিন সকল স্বাভাবিক কাজকে যাহারা পরিচালিত করিয়া থাকে। তবে মগজের ফ্রন্টাল লোবটি (Frontal Lobe) ধীরে ধীরে পূর্নবয়স্কতা প্রাপ্তি পর্যন্ত বৃদ্ধি হইয়াই চলে। এই দীর্ঘকালীন সময়ে অপুষ্টি এবং পরিবেশগত চাপে এই বৃদ্ধি ঝুঁকির মুখে থাকে।
শিশুদের জীবনযাত্রার সময়কালে মগজের এমআরআই (MRI) স্ক্যান বিশ্লেষণ হইতে দেখা গিয়াছে যে, ধনী পরিবারের শিশুদের তুলনায় দরিদ্র এবং প্রায় দরিদ্র পরিবারের শিশুদের মাথায় সামগ্রিক ফ্রন্টাল, প্যারিটাল এবং টেম্পোরাল লোবে ধূসর পদার্থের( গ্রে-ম্যাটার) গড় পরিমাণ উল্লেখযোগ্য ভাবে কম এবং আকৃতিতেও ঐ এলাকা দুইটি খর্বকায়।



Source: Hanson et al. 2013.
[ চিত্রে গ্রে-ম্যাটারের পরিমানের সহিত SES = Socio Economic Status এর সম্পর্ক। নীল রংয়ের রেখাটি খেয়াল করুন। ]

অপুষ্টি আর মানসিক চাপ শিশুকাল হইতে ২০-২২ বছর বয়স পর্যন্ত মগজের মানে মস্তিষ্কের ফ্রন্টাল লোবের “প্রি-ফ্রন্টাল কর্টেক্স” অংশটিকে স্বাভাবিক ভাবে বাড়িয়া উঠিতে দেয় না।
অপুষ্টি তাদের মস্তিষ্কের প্রি-ফ্রন্টাল কর্টেক্সের স্বাভাবিক নিউরোকেমিক্যালস যেমন- ডোপামাইন, সেরোটোনিন, গ্লুটামেট, নরইপিনেফ্রিন, গাবা, এসিটাইলকোলিন ইত্যাদির কার্যকারিতা কমাইয়া দেয়। দারিদ্রতা প্রয়োজনীয় পুষ্টি যেমন ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড, আয়রন, জিঙ্ক, ভিটামিন ইত্যাদির ঘাটতির সহিত জড়িত। এই পুষ্টিগুলি প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্সের নিউরোট্রান্সমিটারগুলোকেকে প্রভাবিত করে। অথচ এই নিউরোকেমিক্যালসগুলোই বাড়ন্ত শিশুদের অনুপ্রেরণা প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণকে প্রভাবিত করে। মেজাজ সংবেদনশীল প্রতিক্রিয়া, এবং সামাজিক আচরণগুলোও এরা নিয়ন্ত্রণ করিয়া থাকে। মনোযোগ, উত্তেজনা এবং মানসিক সংকটজনিত প্রতিক্রিয়াগুলিকে প্রভাবিত করার পাশাপাশি কিছু শেখা এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতেও এই অঞ্চলটি সহায়তা করিয়া থাকে। অর্থাৎ মস্তিষ্কের এই অংশটিই কিন্তু সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণের সহিত জড়িত। এই অঞ্চলটিকে আপনি “ সিইও (CEO) অব ব্রেইন” বলিতে পারেন যাহার কাজ হইলো আপনি কী করিবেন তাহার পরিকল্পনা করা, আপনার ব্যক্তিত্ব প্রকাশে সাহায্য করা এবং আপনাকে ভাল সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করা। এটি আপনাকে সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য আচরণ করার জন্যও নির্দেশনা দেয়। মোদ্দা কথা হইলো, প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স আপনার লক্ষ্যে পৌঁছাইতে সাহায্য করার জন্য আপনার চিন্তাভাবনাকে আপনার কর্মের সহিত সংযুক্ত করে। কোনটি ভালো বা কোনটি মন্দ বুঝিতে শেখায়। কোন ধরনের কাজের পরিনাম কি হইতে পারে তাহারও ধারনা দেয়।
এসব নিউরোকেমিক্যালসগুলোর প্রভাব কমিয়া গেলে উল্টোটাই আমরা ঘটিতে দেখি। অপুষ্টির ফলে এই সিইও (CEO) অঞ্চলটি প্রশ্নফাঁস জেনারেশনের সিইও (CEO) দের মতোই আকামের সব সিদ্ধান্ত গ্রহন করিয়া থাকে!
মোট কথা,পিতামাতার আর্থিক অস্বচ্ছলতা শিশুদের জ্ঞানীয় কর্মক্ষমতার (cognitive performance) উপর ঋণাত্মক প্রভাব ফেলে।
এজন্য গরীব-দরিদ্র ঘরের ছেলেমেয়েদের আত্মসংযম, আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং সামাজিক যোগাযোগ ক্ষমতা শোচনীয়ভাবে দূর্বল হইয়া পড়ে। যেহেতু দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীই যুগ যুগ ধরিয়া গরীব বা দরিদ্র সেহেতু অবিবেচক, অসংবেদনশীল, অসংযমী, হিংস্র, উন্মত্ত চরিত্রের এক একটি প্রজন্ম আমাদের সামনে আসিয়া হাজির হয়।

শিশুদের নিউরোএন্ডোক্রাইন ফাংশন, প্রাথমিক মস্তিষ্কের বিকাশ এবং জ্ঞানীয় ক্ষমতার উপর দারিদ্র্তার প্রভাবের ক্রমবর্ধমান প্রমানের পর্যালোচনা করিয়া বিশেষজ্ঞ গবেষকেরা বলিতেছেন যে, দিন দিন ইহাই পরিষ্কার হইয়া উঠিতেছে যে, মগজের উপরে মানসিক চাপের বিষক্রিয়াই দরিদ্র্ শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্কদের স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার উপর প্রভাব ফেলিতেছে। সব মিলাইয়া গবেষকরা ইহাও দেখিয়াছেন, শুধু একক পরিবার ভিত্তিক দারিদ্রতাই নহে, পরিপার্শ্বিক দারিদ্রতাও প্রজন্মের মন ও মননে একই রকমের প্রভাব ফেলিয়া যাইতেছে।
গবেষকরা আরও দেখিয়াছেন, নিম্ন পারিবারিক আর্থ-সামাজিক অবস্থা এবং অন্যান্য প্রাথমিক জীবনের চাপ (যেমন, শারীরিক নির্যাতন, অবহেলা) শিশুদের মগজের হিপোক্যাম্পাস এবং অ্যামিগডালার পরিমাণ কম হওয়ার সাথে সম্পর্কিত।
মগজের “ অ্যামিগডালা” (amygdala) অঞ্চলটি আপনাকে পরিবেশগত হুমকি এবং চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কিভাবে আপনার আবেগকে যথাযথ ভাবে নিয়ন্ত্রন করিতে হইবে তাহা শিখাইয়া; আগ্রাসী মনোভাবকে দমাইয়া সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহন করিতে শেখায়। অন্যদিকে হিপোক্যাম্পাস, মস্তিষ্কের এমন একটি এলাকা যা স্থানিক এবং প্রাসঙ্গিক তথ্য প্রক্রিয়াকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি কার্যকারিতা এবং সংরক্ষনের সাথে সম্পর্কিত। দেশের ৮০-৯০% জনগোষ্ঠীর এই হিপোক্যাম্পাস এলাকাটি আর্থ-সামাজিক অবস্থার কারনে সম্ভবত ক্ষুদ্র হইয়া গিয়াছে বলিয়াই আমরা আক্ষেপ করি --- “হায়রে! গোল্ডফিস মেমরী বাঙালী, কিছুই মনে রাখেনা!” অর্থাৎ শত-শত বছর ধরিয়া দারিদ্রতার মধ্যে বসবাস করিতে গিয়া হিপোক্যাম্পাসের স্বাভাবিক কার্যকারীতা হারাইয়া (আয়তনে কম হওয়ার কারনে), সব কিছু ঘটনা-ইতিহাস ভুলিয়া বসা একটি স্মৃতিভ্রষ্ট জাতির প্রতিই ইঙ্গিত করি আমরা।

দারিদ্র্তার মধ্যে বসবাসকারী শিশুরা জীবনের চাপ বৃদ্ধি, পারিবারিক অস্থিরতা বৃদ্ধি এবং সহিংসতার ক্রমবর্ধমান সংস্পর্শের মুখোমুখি হওয়ার সময় পিতামাতার যে সংস্পর্শ তাহাদের অতীব প্রয়োজন তাহা হইতে অধিকাংশ সময়ই বঞ্চিত থাকে। কারন দরিদ্র পিতা-মাতাকে জীবিকার প্রয়োজনে বেশীর ভাগ সময়ই বাহিরে বাহিরে থাকিতে হয় বলিয়া সন্তানদের প্রতি আদৌ মনযোগী হইতে পারেন না, এমনকি সন্তানদের মানসিক, শারীরিক সংকটের কালেও।
দরিদ্র পরিবারের বাড়িগুলি বেশি জনাকীর্ণ, প্রায় আলো-বাতাসহীন, অরক্ষিত এবং সেখানে প্রায়শই জ্ঞানীয় উদ্দীপনা প্রদান ও গ্রহনের কোনও পরিবেশ বিরাজ করেনা। পারিপর্শ্বিক দারিদ্রতাও ইহাতে ইন্ধন যোগাইয়া থাকে। ফলে শিশুরা পরিচর্যাহীন ভাবেই প্রবৃত্তিপরায়ণ ও আত্মসংযমহীন হইয়া বড় হইতে থাকে। তাই এই বয়সকালের প্রজন্মের ভেতর হঠকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং অনিয়ন্ত্রিত প্রবৃত্তির আলামত প্রকট হইতে দেখা যায়। সোশ্যাল মিডিয়াতে তাহাদের রূচির দৈন্যতা দেখিয়া আপনার ঘৃনার উদ্রেক হয়। তাহারা অস্বাভাবিক সব কন্টেন্ট তৈরী করে, মত প্রকাশে তাহারা সভ্যতা-ভব্যতা সব গুলাইয়া খাইয়া ফেলে। অন্যদিকে সমাজে চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই- রাহাজানি জাতীয় ঘটনার আধিক্য দেখা যায় আর যার কারনেই পাড়ায়–মহল্লায় কিশোর গ্যাংদের দৌরাত্ব্য দেখিতে পান আপনি। এই গ্যাংয়ের সদস্যদের প্রায় সবাই-ই কিন্তু দরিদ্র পরিবারের। একই কথা খাটে দরিদ্র, নিম্নবৃত্ত পরিবার হইতে আগত প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের বেলাতেও। তাহারাও ঘুষ-দূর্নীতির যে মহোৎসব দেখাইতেছেন, নির্বাহী কার্যকারীতায় সুচিন্তার যে ঘাটতি তাহাদের কাজেকামে প্রকাশিত হইতেছে তাহাও ঐ কিশোর গ্যাংয়ের কার্যকলাপেরই অপর পিঠ। নুন আনতে যে জনগোষ্ঠীর পান্তা ফুরায় ব্যতিক্রম বাদে তাহাদের কপালে এর বিপরীত কিছুই ঘটেনা!

এইসব কিছু না জানিয়া, না বুঝিয়াই আমরা শত শত বছর ধরিয়া দারিদ্রতার মধ্যে বাড়িয়া ওঠা প্রজন্মের পর প্রজন্মকে গালাগালি, দোষারোপ, অভিসম্পাৎ দিয়াই গিয়াছি। বর্তমান কালের মানুষের অনাচার-অত্যাচারে বিষাইয়া উঠিয়াছি, তাহাদের সোজা করিতে কতো কতো নিষ্ঠুর পন্থা মনে মনে দাঁড় করাইয়াছি। লেখালিখিতে যে যাহার মতো তাহাদের চৌদ্দগুষ্ঠী উদ্ধার করিয়া মন-মানসিকতার পরিবর্তন করার ওয়াজ নসিহত করিয়াছি।
দেশের চতৃর্দিকে ঘুষ-দূর্নীতি-হানাহানি-দখল-মারামারি- নৃশংস ভাবে হত্যা, কবর হইতে মৃতের লাশ উঠাইয়া পোড়াইয়া ফেলার মতো ঘটনা দেখিয়া শুনিয়া এই মহাবেকুবেরও অনেক সময়ই মনে হইয়াছে, একটি এটমবোমা মারিয়া দেশের মানুষগুলিকে জাহান্নামে পাঠাইয়া, নতুন একটি প্রজন্ম যদি গড়িয়া তোলা যাইতো তবে ঐসব অনাচার-অনাসৃষ্টি আর দেখিতে হইতোনা, অমানুষগুলার হাত হইতে রক্ষা পাওয়া যাইতো! এই ব্লগেই দেশের মানুষের মন-মানসিকতার দুর্ভিক্ষের প্রতি আক্ষেপ জনিত কোনও একটি পোস্টে এই মহাবেকুব এমন মন্তব্য করিয়াছিলো যে, জাতির “হোল ব্লাড ট্রান্সফিউশন” করা ছাড়া আর গতি নাহি! মহাবেকুব বলিয়াই হয়তো অমন বিধ্বংশী ভাবনা ভাবিয়াছি! এই বেকুবের মতো আপনারও হয়তো আরও ভয়ঙ্কর কিছু ভাবনা ভাবিয়াছেন!

কিন্তু বুঝিতেই পারিতেছেন, কিছুতেই কিছু হইবেনা যদি “যতো দোষ, নন্দঘোষ” দারিদ্রতা সমূলে দূরীকরণ না করা যায়। একমাত্র পারিবারিক এবং প্রতিবেশ/পারিপার্শ্বিক দারিদ্রতার পর্যায়ক্রমিক অনুসঙ্গের কুফলের কারনে এই মাটিতে কেন যে একটি সুশৃঙ্খল-আত্মমর্যাদা সম্পন্ন, জ্ঞানবুদ্ধিতে সমৃদ্ধ,পরমত সহিষ্ণু, প্রজ্ঞাবান, প্রবৃত্তিপরায়নহীন, আত্মসংযমী জাতি শত বছর ধরিয়াও গড়িয়া উঠিতে পারে নাই তাহা এখন বিলক্ষন অনুধাবন করিতে পারিতেছেন।
এতোক্ষনে ইহাও নিশ্চয়ই বুঝিতে পারিতেছেন, জুতা আবিষ্কারের মতো “মন-মানসিকতা পরিবর্তন” এর ঝাড়ু দিয়া সারা দেশ ধুলাময় না করিয়া কেবলমাত্র “দারিদ্র বিমোচন” এর জুতাখানি বানাইয়া পরাইতে পারিলেই এই অমানুষ জনগোষ্ঠীকে হয়তো “মানুষ” বানানো যাইতো।

মহাবেকুব বলিয়া যতো সহজে “দারিদ্র বিমোচন” কথাটি বলিয়া ফেলিলাম, আপনারা মহাজ্ঞানী-মহাজন বলিয়া ততো সহজেই ইহা ফুঁ দিয়া উড়াইয়াও দিতে পারেন।

তথ্য সূত্র –
http://www.irp.wisc.edu/publications/focus/pdfs/foc282f.pdf.
https://jamanetwork.com/journals/jamapediatrics/fullarticle/2381542
https://pmc.ncbi.nlm.nih.gov/articles/PMC5765853/

চিত্র – “ইন্সটিটিউট ফর রিসার্চ অন পভার্টি”র সৌজন্যে।

মন্তব্য ৪০ টি রেটিং +১১/-০

মন্তব্য (৪০) মন্তব্য লিখুন

১| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:২৩

শায়মা বলেছেন: ভাইয়া

কত কত বড় লোকের কুলাঙ্গার সন্তান দেখিয়াছি ..... এত ডিম দুধ ফল মূল পনির ঘি খাইয়াও তো তারা নিজেদের জন্য ভালো কিছু পরিকল্পনা করিতে পারে নাই...... তাইলে আর ২০/২২ পর্যন্ত এত এত ভালো ভালো পুষ্টিকর খানাদানার কি কাজ পড়িলো? :((

৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:৫৯

আহমেদ জী এস বলেছেন: শায়মা,




তাহারা যতোই ডিম দুধ ফল মূল পনির ঘি খাইয়া থাকুক সে সবে সেরোটনিন, ডোপামিনের ঘাটতি ছিলোই কারন তাতে তো কেমিক্যাল মেশানো ছিলো। :P
বড় বড় লোকের সন্তান কুলাঙ্গার হইয়াছে সঙ্গ দোষে। টাকার কারনে দরিদ্র প্রতিবেশিরা তাহাদের বেশি বেশি কদর করে বলিয়া তাহারা চতুর্পাশ্বের দরিদ্র পরিবেশের সাথেই বেশি সময় কাটাইয়াছে। আর যদি গুলশান-বনানীর কথা বলেন তবে বলিতেই হয়, সেখানে বসবাসের আবহাওয়ায় জৌলুষ আছে বটে কিন্তু তাতে বসবাস করা মানুষগুলোতো অপুষ্ট মগজের, জৌলুষবিহীন.... #:-S

২| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:৫০

শেরজা তপন বলেছেন: আহা কতদিন /মাস বাদে আপনার লেখা পেলুম- এবার আরাম করে সময় করে আমাদের মহাবেকুব জাতক কথন পড়ব :)

০১ লা অক্টোবর, ২০২৫ ভোর ৪:৫৬

আহমেদ জী এস বলেছেন: শেরজা তপন,



আহা কতোদিন পরে আমিও "মহাবেকুব জাতক কথন" লিখলুম!
আরাম করে সময় নিয়ে পড়ুন আর বলে যান বিষয়টি নিয়ে আপনার যতো ভাবনাদের কথা।

৩| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:৫২

করুণাধারা বলেছেন: অনেক রাত হয়ে গেছে এবং আমার চোখে ব্যথা করছে। তাই আপাতত একটা লাইক দিয়ে যাচ্ছি।

০১ লা অক্টোবর, ২০২৫ ভোর ৫:০৪

আহমেদ জী এস বলেছেন: করুণাধারা,



ধন্যবাদ।
এখন কিছু না বলে গেলেও চোখব্যথা দূর হলে দিনের বেলা যে অনেক কিছুই বলে যাবেন তার আভাষ মিললো!

৪| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৫৬

শাইয়্যানের টিউশন (Shaiyan\'s Tuition) বলেছেন:




হিংস্রতা মানুষের মজ্জাগত, জীনে দিয়ে দেওয়া হয়েছে।

আমাদের পূর্বপুরুষ হিংস্র ছিলেন, ভাইয়ের হত্যাকারী ছিলেন।

ধর্মের কথায়, নবী আদমের দুই ছেলের বিয়ে করা নিয়ে যে মতানৈক্য হয়, তাতে এক ভাই আরেক ভাইকে হত্যা করেন।

সেই হিংস্রতা, বর্বরতা এখনো আমাদের মাঝে এখনো রয়ে গিয়েছে।

০১ লা অক্টোবর, ২০২৫ ভোর ৫:১১

আহমেদ জী এস বলেছেন: শাইয়্যানের টিউশন (Shaiyan's Tuition),



সেই হিংস্রতা, বর্বরতা এখনো আমাদের মাঝে এখনো রয়ে গিয়েছে।
হাইপোথিসিস হিসেবে কথাটি একদম উড়িয়ে দেয়ার মতো নয়।
"মানুষ" একজাতীয় প্রানী বলে তার মধ্যে কিছুটা "হিংস্রতা" থাকাটা মনে হয় অস্বাভাবিক নয়!

৫| ০১ লা অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১২:৩৬

মোহাম্মাদ আজাদ বলেছেন: :(

০১ লা অক্টোবর, ২০২৫ ভোর ৫:১৩

আহমেদ জী এস বলেছেন: মোহাম্মাদ আজাদ,



আমার ব্লগে স্বাগতম।

৬| ০১ লা অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১:১৭

কামাল১৮ বলেছেন: বেশিরভাগ মানুষ বেকুব ধর্মের কারণে।সারা বিশ্বেই মুসলমানরা একটু বেকুব।একটা মাত্র বই মুখস্ত করে জ্ঞানি হবার সম্ভাবনা শূন্য।

০১ লা অক্টোবর, ২০২৫ সকাল ৭:০৭

আহমেদ জী এস বলেছেন: কামাল১৮,




এই পোস্টে কাউকেই বেকুব বলা হয়নি আর ধর্মীয় কোনও ভেদাভেদও করা হয়নি। তাই আপনার মন্তব্যটি অপ্রাসঙ্গিক মনে হলো।

৭| ০১ লা অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৩:৪৫

শ্রাবণধারা বলেছেন: কথাটা বোধকরি "দারিদ্র বিমোচন" হবে। "দরিদ্রতা বিমোচন" কথাটিও সঠিক হয়না, আর "দারিদ্রতা" শব্দটিই সঠিক নয়।

আপনার পোস্টের বক্তব্যের সাথে একমত। আমাদের পুরো জাতিরই একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত ছিল এই সীমাহীন দারিদ্র থেকে মুক্তি। সেটা না করে আমাদেরকে কৌশলে একটি সাংস্কৃতিক যুদ্ধে ঠেলে দেওয়া হলো। দারিদ্রমুক্ত শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর পরিবর্তে আমরা হয়ে উঠছি বর্বর জঙ্গি-তালেবান।

০১ লা অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৯:১০

আহমেদ জী এস বলেছেন: শ্রাবণধারা,



ত্রুটি ধরিয়ে দেয়ার জন্যে ধন্যবাদ। সংশোধন করে দিয়েছি।

আমাদের পুরো জাতিরই একমাত্র লক্ষ্য হওয়া উচিত ছিল এই সীমাহীন দারিদ্র থেকে মুক্তি।
সেটাই বলতে চেয়েছি এখানে। দারিদ্র থেকে মুক্তিই ব্যক্তি-সমাজের মানসিকতা পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম। আর মানসিকতা পরিবর্তন হলে মগজের পুষ্টতাও বেড়ে যায়। মানসিকতার পরিবর্তন হলে মানুষ নতুন নতুন চিন্তায় নিজেকে নিয়োজিত রাখে ফলে তার মগজে "গ্রে-ম্যাটার" এর পরিমান বৃদ্ধি পায়। তার মগজের নিউরাল সার্কিটে নতুন নতুন সংযোগ তৈরী হয়। তার মগজের বুদ্ধিবৃত্তিক কার্যক্রমের পরিধি বাড়ে।

৮| ০১ লা অক্টোবর, ২০২৫ সকাল ৯:৪৩

মাথা পাগলা বলেছেন: বাংলাদেশের বাস্তবতায়, এরকম বিশ্লেষণধর্মী চিন্তা-ভাবনার লেখা আরও বেশি দরকার। নিজের চিন্তা-ভাবনাতেও নতুন কিছু যুক্ত হয়।
এসব চদু-মদু মেরিটলেস দলকানা রাজনৈতিক পোস্ট থেকে এধরনের পোস্ট শতগুনে ভালো।


শ্রাবণধারা বলেছেন: দারিদ্রমুক্ত শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর পরিবর্তে আমরা হয়ে উঠছি বর্বর জঙ্গি-তালেবান।

একদম!

০১ লা অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১০:৪১

আহমেদ জী এস বলেছেন: মাথা পাগলা,



অনুপ্রেরণামূলক মন্তব্যের জন্যে কৃতজ্ঞ।

পোস্টের বিষয়বস্তু যাই-ই হোক না কেন তা যেন দেশ-জাতি-সভ্যতা-মানসিকতার উৎকর্ষ সম্পর্কিত হয়, সেটাই কাম্য।

৯| ০১ লা অক্টোবর, ২০২৫ সকাল ১০:০৬

খায়রুল আহসান বলেছেন: "অপুষ্ট মগজ" - যথার্থ শনাক্ত করেছেন।
এই বিষয়টি নিয়ে আপনার জ্ঞান সুগভীর এবং আগ্রহ সীমাহীন, তার পরিচয় বেশ কিছুকাল আগে এ বিষয়ে লেখা আপনার কয়েকটি পোস্ট পড়ে পেয়েছিলাম। এ দুয়ের সাথে মিলে আপনার ভাষার সাবলীলতা ও জটিল বিষয়টি ব্যাখ্যা করার দক্ষতা পোস্টগুলোকে সুখপাঠ্য করে তোলে।

বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। আপনি আপনার প্রয়াস চালিয়েছেন ব্লগের পাঠকদের মাঝে এবং মাধ্যমে গুরুত্বের কথাটি ছড়িয়ে দেয়ার জন্য। যারা এর প্রতি মনোনিবেশ করবেন, তারা উপকৃত হবেন নিঃসন্দেহে।

পোস্টে ষষ্ঠ প্লাস। +

০১ লা অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১১:০২

আহমেদ জী এস বলেছেন: খায়রুল আহসান,



"আপনি আপনার প্রয়াস চালিয়েছেন ব্লগের পাঠকদের মাঝে এবং মাধ্যমে গুরুত্বের কথাটি ছড়িয়ে দেয়ার জন্য।"
সঠিক পর্যবেক্ষন।
আমাদের দেশের মানুষগুলো এখনও যে কেন “মানুষ” হয়ে উঠতে পারেনি সেই আক্ষেপ থেকেই এই পোস্ট। আমরা যে অমানুষ হয়ে উঠছি দিনে দিনে তার পেছনেই রয়েছে "অপুষ্ট মগজ" এর ভূমিকা। পুষ্ট মগজ হলে চিন্তা-চেতনায় উৎকর্ষতার দেখা মিলতো।

১০| ০১ লা অক্টোবর, ২০২৫ দুপুর ১:০৭

জুল ভার্ন বলেছেন: সভা-সেমিনারের মঞ্চে "দারিদ্র্য বিমোচন" আজ এক ট্রেন্ডি ফ্যাশন শোয়ের স্লোগান হয়ে গেছে! নেতারা মাইকে গলা ফাটান, দর্শক হাততালি দেন- কিন্তু মাঠে-ময়দানে গরিব মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না এক চুলও। আসলে দারিদ্র্য বিমোচনের নামে যারা বক্তৃতার ঝড় তোলেন, তারাই জনগণের ঘাম-রক্ত চুষে নিজেদের আখের গুছিয়ে নিচ্ছেন। দারিদ্র্য দূর করা নয়, দারিদ্র্যকে জীবন্ত রেখে নিজেদের রাজনীতি, অর্থনীতি আর বিলাসবহুল জীবনধারার জ্বালানি যোগাচ্ছেন। দারিদ্র্য বিমোচনের আড়ালে এই ভণ্ডামি আসলেই জাতির জন্য অভিশাপ।

সত্যিকারের দারিদ্র্য বিমোচন হবে তখনই, যখন স্লোগান নয়—কর্মই হবে প্রতিটি নেতার পরিচয়।

০১ লা অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১১:১১

আহমেদ জী এস বলেছেন: জুল ভার্ন,



চমৎকার সত্য কথাই বলেছেন আপনার মন্তব্যের বোল্ডকৃত অংশে।
সভা-সেমিনারের মঞ্চে "দারিদ্র্য বিমোচন" আজ এক ট্রেন্ডি ফ্যাশন শোয়ের স্লোগান হয়ে গেছে! কিন্তু দারিদ্র্য বিমোচন কিভাবে হবে, সে সব সভা-সেমিনারে তার কোনও রূপরেখা দেয়া হয় কি? আমার জানা নেই । আপনি/আপনারা জানলে এখানে আলোচনা করতে পারেন।
ধন্যবাদ মন্তব্যটির জন্যে।

১১| ০১ লা অক্টোবর, ২০২৫ দুপুর ১:১০

রাজীব নুর বলেছেন: অনেকদিন পর লিখলেন!!

আসলে আমাদের দেশের মানুষ গুলো ভালো। এরা না পেরে অনেক ভুল এবং অন্যায় করে ফেলে।

০২ রা অক্টোবর, ২০২৫ রাত ২:০৩

আহমেদ জী এস বলেছেন: রাজীব নুর ,


ক্ষেত্র বিশেষে আমাদের দেশের মানুষ গুলো ভালো সন্দেহ নেই। এই ভালোত্বের কারনে ভুল বা অন্যায় হয়না। । অন্যায় হয়
কোনটি ভালো বা কোনটি মন্দ বুঝতে না পারা। সঠিক ভাবে বেড়ে ওঠা মন্তিষ্কের "প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স" আপনার চিন্তাভাবনাকে শানিত করে, কোনটি ভালো বা কোনটি মন্দ বুঝতে শেখায়। কোন ধরনের কাজের পরিনাম কি হতে পারে তারও ধারনা দেয়।
আপনি পুরোটা পড়লে এটুকু বুঝতে পারতেন।

১২| ০১ লা অক্টোবর, ২০২৫ দুপুর ২:৩১

নতুন নকিব বলেছেন:



চমৎকার ও গবেষণাভিত্তিক একটি লেখা। দারিদ্র্য, অপুষ্টি আর সামাজিক বৈষম্যের সঙ্গে মগজের গঠন ও মানুষের আচরণগত পরিবর্তনের যে বৈজ্ঞানিক যোগসূত্র আপনি এত সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করেছেন, সত্যিই চিন্তার খোরাক জাগায়।

আন্তরিক ধন্যবাদ এমন গভীর ও প্রাসঙ্গিক বিশ্লেষণ আমাদের সামনে তুলে ধরার জন্য।

০২ রা অক্টোবর, ২০২৫ সকাল ৭:৫৩

আহমেদ জী এস বলেছেন: নতুন নকিব,



এটা আমার গবেষণাভিত্তিক লেখা নয়। গবেষণা করেছেন বিশেষজ্ঞেরা আমি শুধু তার ফলাফলের সাথে নিজের কথা যোগ করেছি মাত্র। তাই এটাকে উপলব্দিভিত্তিক বলা যেতে পারে।
দারিদ্র্য, অপুষ্টি আর সামাজিক বৈষম্যের কারনে মগজের গঠনের ও মানুষের আচরণগত যে পরিবর্তন হয় সেটাই আমি পেয়েছি বিভিন্ন তথ্যাদি ঘেটে।
আমাদের মস্তিষ্কের "প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স", আমরা কী করবো তার পরিকল্পনা করে, আমাদের ব্যক্তিত্ব প্রকাশে সাহায্য করে । এটি আমাদের সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য আচরণ করার জন্যও নির্দেশনা দেয়। মোদ্দা কথা , এই প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছুতে সাহায্য করার জন্য আমাদের চিন্তাভাবনাকে আমাদের কর্মের সাথে সংযুক্ত করে। কোনটি ভালো বা কোনটি মন্দ বুঝতে শেখায়। কোন ধরনের কাজের পরিনাম কি হতে পারে তার ধারনাও দেয়।
পরিপূর্ণ ভাবে প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স এর সাথে সাথে মস্তিষ্কের অন্যান্য অঞ্চলগুলিও গঠিত হতে না পারলে উল্লিখিত কার্যাদি আমাদের পক্ষে করা সম্ভব হয়ে ওঠেনা। ফলে অপুষ্ট মস্তিস্ক নিয়ে আমরা একটি আত্মনিয়ন্ত্রহীন-অস্থির-অসংযমী ব্যক্তি-সমাজ-জনগোষ্ঠীতে পরিনত হই!

অনুপ্রেরণামূলক মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ।

১৩| ০১ লা অক্টোবর, ২০২৫ বিকাল ৪:২৯

গেঁয়ো ভূত বলেছেন: মানিক বন্দোপাধ্যায় তাঁর প্রাগৈতিহাসিক গল্পের একেবারে শেষে এসে বলেছিলেন, "হয়তো ওই চাঁদ আর এই পৃথিবীর ইতিহাস আছে। কিন্তু যে ধারাবাহিক অন্ধকার মাতৃগর্ভ হইতে সংগ্রহ করিয়া দেহের অভ্যন্তরে লুকাইয়া ভিখু ও পাঁচী পৃথিবীতে আসিয়াছিল এবং যে অন্ধকার তাহারা সন্তানের মাংসল আবেষ্টনীর মধ্যে গোপন রাখিয়া যাইবে তাহা প্রাগৈতিহাসিক, পৃথিবীর আলো আজ পর্যন্ত তাহার নাগাল পায় নাই, কোনোদিন পাইবেও না।"

আমাদের ক্রোমোজোমে যে কোটি কোটি জিন রয়েছে তা আমরা কিভাবে বদলাবো???

০২ রা অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৯:৩৮

আহমেদ জী এস বলেছেন: গেঁয়ো ভূত,



সুন্দর মন্তব্য।
এদেশের ভিখু ও পাঁচীরা প্রাগৈতিহাসিক কাল হইতেই ধারাবাহিক দারিদ্রের অন্ধকার মাতৃগর্ভ হইতে সংগ্রহ করিয়া দেহের অভ্যন্তরে লুকাইয়া রাখিয়াছে।

আমাদের ক্রোমোজোমে যে কোটি কোটি জিন রহিয়াছে তাহা হয়তো বিবর্তনের ধারায় কালক্রমে বদলাইবে কিন্তু তাহা তো "দিল্লী হনুজ দূর অস্ত"! আমরা শুধু সচেতন অনুশীলনের মধ্যে দিয়া সেই দূরত্ব কমা্ইয়া আনিতে পারি।

১৪| ০১ লা অক্টোবর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২৭

ঢাবিয়ান বলেছেন: আপনার পোস্টে অপুষ্টি নিয়া প্রতিবেদন পড়িয়া একটা কৌতুক মনে পড়ল।

বিড়ালদের এক কুস্তি প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশী বিড়াল চ্যম্পিয়ন হয়েছে। অবাক হয়ে সবাই সেই বিড়ালকে তার বিজয়ের সিক্রেট জানতে চাইল। বিড়াল সবাইকে বলল যে, '' পুষ্টির অভাব। আমি আসলে বাঘা, পুষ্টির অভাবে হয়ে গেছি বিড়াল'' !:#P

০২ রা অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১১:১৫

আহমেদ জী এস বলেছেন: ঢাবিয়ান,



পুষ্টির অভাব। আমি আসলে বাঘা, পুষ্টির অভাবে হয়ে গেছি বিড়াল''
আমাদের অবস্থাও অনেকটা তাই! শিরোনামের ছবিতে অপুষ্ট মগজের সেই বিড়ালের খ্যাঁচ খ্যাঁচই দেখানো হয়েছে! :P

১৫| ০১ লা অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৯:৪২

আলামিন১০৪ বলেছেন: হা হা হা, ঢাবিয়ানের কথায় হাসলাম।

আমার মনে হয় আপনার বিশ্লেষণ সঠিক নয়। ইবনে বতুতার নিয়ামতপূর্ণ এ দোযখে আদিকাল থেকেই মানুষ-জন তস্কর প্রকৃতির ছিল। কোন এক ইংরেজ এ বিষয়ে বিস্তর গবেষণা করে গেছেন। আমাদের জিন পরিস্কার না হওয়া পর্যন্ত এ ধারা সহসা পরিবর্তন হবে না, যতই ঘি কলা খাওয়ান লাভ হবে না। দুর্নীতিবাজ চোর-ডাকাতের পুষ্ট মগজ তাকে আরো চুরি বিদ্যায় পটু করে তুলে আর দরিদ্র জনগোষ্ঠী আধপেটা খেয়ে শুকুর আলহামদুল্লাহ বলে।

০৩ রা অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১:৪৪

আহমেদ জী এস বলেছেন: আলামিন১০৪,



সব দেশেই সবকালে দারিদ্র ছিলো এবং আছে। ইবনে বতুতার ভ্রমন বৃত্তান্তে সে সময়ে আমাদের দেশটি যে সমৃদ্ধশালী ছিলো তা আমরা জানি। কিন্তু সে সমৃদ্ধির মালিক ছিলো কে এবং কয়জন? আপামর জনগন তো ছিলো সে সমৃদ্ধির বাইরে, দরিদ্র হিসেবে। তাই ক্ষুধার অন্ন যোগাতে মানুষকে তস্করবৃত্তি বেছে নিতে হয়েছে। জমিদার- জোতদারদের ভান্ডার থেকে শস্য ছিনিয়ে নিতে হয়েছে। এর সাথে জিনের সম্পর্ক নেই বললেই চলে। তস্করবৃত্তির পেছনেই আছে দারিদ্র (Poverty) আর এই দারিদ্রই তার মগজের অপরিপূর্ণ/অপরিপক্ক গঠনের জন্যে দায়ী।
গবেষণালব্ধ এসব তথ্যই আমি এইখানে তুলে ধরেছি।
তার পরেও যদি বলেন সবটাই "জিন" এর দোষ তাহলে বলি --বাহ্যিক কারণগুলির জটিল মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে, পরিবেশ জিনগুলিকে "চালু" বা "বন্ধ" করতে পারে, যা শেষ পর্যন্ত আমাদের স্বাস্থ্য, আচরণ এবং এমনকি আমাদের বিবর্তনীয় গতিপথকেও প্রভাবিত করে। জিনবিদ্যায় "এপিজেনেটিক্স" নামে এবটি অধ্যায় আছে যাতে পরীক্ষা করে দেখানো হয় কীভাবে বাহ্যিক উপাদানগুলি যেমন জলবায়ু, খাদ্য, সামাজিক মিথস্ক্রিয়া, তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, আলোক চক্র এবং দূষণকারী বা মিউটেজেন বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জিনের প্রকাশকে পরিবর্তন করে। এইসবগুলো উপাদানই আপনি দারিদ্রপীড়িত এলাকাতে পাবেন।
ফলে এই যে বললেন, "আমাদের জিন পরিস্কার না হওয়া পর্যন্ত এ ধারা সহসা পরিবর্তন হবে না, যতই ঘি কলা খাওয়ান লাভ হবে না।" তাও অসার হয়ে যাওয়ার কথা। আমাদের হতদরিদ্র পরিবেশ উন্নত করতে পারলেই জিনের যেটুকু দোষ আছে সেটারও পরিবর্তন হতে পারে!

১৬| ০১ লা অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১০:০৬

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:



আংশিক রঙিন সিনেমার মতো আপনার লেখার সাথে আমি আংশিক সহমত। হত দরিদ্রদের মাঝে আমি যেই ধরনের জ্ঞান বুদ্ধি বিবেচনা বোধ দেখেছি তা উল্লেখ করতে হলে তিন পর্বের পোস্ট লিখতে হবে।

১। আমাদের দেশের মানুষ দারিদ্রের কষাঘাত থেকে বের হতে পারেনি এবং দীর্ঘ সময় যাবত দারিদ্রতার সাথে লড়াই করছে এটি তাদের সরলতা। সরলতা যদি বেকুবি হয় তাহলে কি আর করার আছে। আমাদের দেশে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে দরিদ্র মানুষগুলো হতদরিদ্র হতে থাকেন।

২। শিক্ষার জগত থেকে দূরে থাকার কারণ: দেশের এক শ্রেণীর মানুষ চায় না - দেশের মানুষ শিক্ষিত হোক, সুন্দর স্বাভাবিক জীবন যাপন করুক।

৩। আমাদের দেশের এক শ্রেণীর মানুষ বাংলাদেশি হলেও নিজেকে বৃটিশ মনে করে আর বাদবাকী মানুষকে কুলি মজুর নীচ জাতি মনে করে। আর এই মনে করার কারণে নীচ জাতিকে আজীবন প্রতারিত করে আসছে তথাকথিত বৃটিশ নামক বাংলাদেশি।

৪। নীচ জাতি নিজেরা নিজেরা লড়াই করে মরে। লড়াই শেষে শাসন ও শোষণ করছে তথাকথিত বৃটিশ নামক বাংলাদেশি।

৫। নিকৃষ্ট থেকে নিকৃষ্টতম কেউ যদি একবার চেয়ারে বসতে পারে সে নিজেকে এলিট / বৃটিশ মনে করে। এবং তারপর শুরু হয় তার শাসন ও শোষণ।

আশা করি আমার ব্যাখ্যা আমি দিতে পেরেছি। আপনাকে অশেষ অশেষ ধন্যবাদ।

০৩ রা অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১০:৩১

আহমেদ জী এস বলেছেন: ঠাকুরমাহমুদ,



আপনার মন্তব্যের বিশ্লেষণ করা যাক---
১) আমাদের দেশের মানুষ দরিদ্র হওয়ার জন্যে "সরল" হয় এটা সত্য কিন্তু কেন হয় ? ঐ যে, দারিদ্রের বিভিন্ন অনুপানের মিথস্ক্রিয়ার কারনে তাদের মস্তিষ্ক পূর্ণতা পায়না। গ্রে-ম্যাটারের ঘাটতি দেখা যায়। সে কারনেই তাদের সরল বলে মনে হয়। অনেকটা বাচ্চা ছেলেদের মতো যাদের মস্তিষ্ক পরিপূর্ণ ভাবে বিকশিত হয়নি।

২) এটা একটা রাজনৈতিক মন্তব্য। আসলে দারিদ্র তাদের শিক্ষার সমুদয় উপকরণ থেকে দূরে সরিয়ে রাখে, অর্থাৎ তারা যথেষ্ট শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়। আর যদি আপনি দেশের শিক্ষানীতির দিকে ইঙ্গিত করে থাকেন তবে বলি-- ঐ শিক্ষানীতি কারা প্রনয়ন করে? আমাদের প্রশ্নফাঁস জেনারেশনের সিইও (CEO)রাই ঐসব আকামের সিদ্ধান্ত গ্রহন করে থাকে! কারন অপুষ্টির ফলে তাদেরও মস্তিষ্কের প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স যেটাকে মস্তিষ্কের সিইও (CEO) অঞ্চল বলা হয় সেটা পূর্ণতা পায়নি। আমাদের প্রশাসনিক কর্তারা কি সবাই ধনী পরিবার থেকে আসা ? না, তাদের বেশিরভাগই মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্ত পরিবার খেকে আসা অথবা দারিদ্রপীড়িত গ্রামাঞ্চল থেকে আসা। সুতরাং তারাও মগজ ঘাটতির শিকার।

৩) এ ব্যাপারে এই পোস্টেই বলা আছে অপুষ্ট মগজধারীরা কি কি ধরনের হতে পারেন।

৪) একই কথা প্রযোজ্য। পিতামাতার আর্থিক অস্বচ্ছলতা শিশুদের জ্ঞানীয় কর্মক্ষমতার (cognitive performance) উপর ঋণাত্মক প্রভাব ফেলে।
এজন্য গরীব-দরিদ্র ঘরের ছেলেমেয়েদের আত্মসংযম, আত্মনিয়ন্ত্রণ এবং সামাজিক যোগাযোগ ক্ষমতা শোচনীয়ভাবে দূর্বল হয়ে পড়ে। যেহেতু দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীই যুগ যুগ ধরে গরীব বা দরিদ্র সেহেতু অবিবেচক, অসংবেদনশীল, অসংযমী, হিংস্র, উন্মত্ত চরিত্রের এক একটি প্রজন্ম আমাদের সামনে এসে হাজির হয়। এদেরই কেউ কেউ উন্মত্ত চরিত্রের কারনে "শোষক" হয়ে ওঠে বাকীরা শোষিত।

৫) উপরের ৩ ও ৪ নম্বর দেখুন তা হলেই বুঝবেন বিষয়টা কেন ঘটে।

আশা করি আপনাকে বোঝাতে পেরেছি।
শুভেচ্ছান্তে।

১৭| ০২ রা অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১:৩৬

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



বেশ অনেকদিন ব্লগে আনিয়মিত থাকার পর আজ ব্লগে এসে পাতা উল্টাতে উল্টাতে এই লেখাটিতে চোখ
আটকে যায় । মুল্যবান লেখাটি এক ঝলকেই মনোযোগ আকর্ষণ করে। কিছুটা রম্য হলেও সরল ভাষায়
বাস্তবচিত্রের ওপর ভিত্তি লেখাটি একধরনের সামাজিক আক্ষেপ তৈরি করে।

আপনার দাবী একেবারে সঠিক । বাংলাদেশের জনসংখ্যার বড় অংশের আচরণগত সমস্যার প্রধান শিকড় হলো
জন্মগত ও প্রজন্মনুকুল অপুষ্টি + দারিদ্র্য শৈশব থেকেই পুষ্টিহীনতা ও মানসিক চাপে মস্তিষ্কের (বিশেষত
প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স, হিপোক্যাম্পাস, অ্যামিগডালা) সঠিক বৃদ্ধি ব্যাহত হয়, ফলে আত্মনিয়ন্ত্রণ, সিদ্ধান্তগ্রহণ ও
সামাজিক আচরণ দুর্বল হয়। আপনি সমাজের সমালোচনা ও মোরাল রাগের বদলে দারিদ্র্য বিমোচনকে
প্রধান সমাধান হিসেবে সুন্দর করে উপস্থাপন করছেন।

অপুষ্টি ও দারিদ্র্য মানুষের মনস্তাত্ত্বিক ও আচরণগত প্রশিক্ষণে কীভাবে প্রভাব ফেলতে পারে এ বিষয়ে আপনার
বক্তব্য বেশ পরিষ্কার। গ্রে-ম্যাটার, প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স ইত্যাদির সচিত্র বিবরণ আমাদেরকে বিষয়টি নিয়ে গভীরে
ভাবতে প্ররোচিত করেছে। যারা সমগ্র জাতিকে কেবল একতরফাভাবে নিন্দা করেন, তাদের দিকে আপনার
অঙ্গুলী নির্দেশ বেশ গুরুত্ব রাখে । সমস্যার পেছনে সমাজ-অবকাঠামো ও ঐতিহ্যগত দারিদ্র্যের অবস্থা দেখা
দরকার । এ ধারনাটি কোন মহাবেকুবের মস্তিস্ক থেকে আসতে পারেনা , এর জন্য যে মেধা, প্রজ্ঞা ও জ্ঞান
গরীমা থাকা দরকার তা বুঝার মত মেধা সামু পাঠককুলের আছে । তাই আপনার নিজস্ব ভঙ্গি ও নৈর্ব্যক্তিক রূপ
“মহাবেকুব” আত্মপরিচয়ে বলা সরল বাক্যগুলো পাঠক হিসাবে আমাদেরকে লেখাটির সাথে আরো দৃঢ়ভাবে
সংযুক্ত রাখতে প্রলুব্ধ করেছে ।

আপনি সঠিক জায়গায় আঘাত করেছেন, সমস্যাটির পশ্চাতে যে অদৃশ্য জেনেটিক না, সামাজিক-জন্মগত কারণ
কাজ করছে সেটিই গুরুত্বপূর্ণ।এ প্রসংগে মনে হল আপনি আপনার দাবিগুলোকে আরো শক্ত করে সূত্রবদ্ধতা
ও বাস্তবায়নযোগ্য সমাধান যোগ করে লেখাটিকে আরো সমৃদ্ধ করার যোগ্যতা রাখেন । তবে সংক্ষিপ্ত আকারে
লেখাটিতে তুলে ধরা বিষয়গুলি সমস্যাটির বিষয়ে ব্যপক আলোচনা শুরুর একটি ক্ষেত্র হিসেবে দারুণভাবে কাজ
করবে বলে বিশ্বাস করি ।

লেখাটি প্রিয়তে নিয়ে গেলাম ।
শুভেচ্ছা রইল ।

০৩ রা অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১১:০৪

আহমেদ জী এস বলেছেন: ডঃ এম এ আলী,




বিশ্লেষণধর্মী মন্তব্য আর পোস্টদাতার প্রতি আপনার আস্থা দেখে আপ্লুত এবং একইসাথে কৃতজ্ঞ।

লেখাটিতে তুলে ধরা বিষয়গুলি সমস্যাটির বিষয়ে ব্যপক আলোচনা শুরুর একটি ক্ষেত্র হিসেবে দারুণভাবে কাজ
করবে বলে বিশ্বাস করি ।

আমি সেই আলোচনাটাই এখানে দেখতে চেয়েছি, বোঝাতে চেয়েছি দারিদ্রই আমাদের আগোছালো এবং অস্থির সমাজ গড়ে ওঠার পেছনের প্রধানতম কারন।

ভালো থাকুন আর সুস্থ্য......

১৮| ০২ রা অক্টোবর, ২০২৫ দুপুর ১:৩৫

রাজীব নুর বলেছেন: পোষ্টে আবার এলাম। কে কি মন্তব্য করেছেন সেটা জানতে।

০৫ ই অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৯:১৪

আহমেদ জী এস বলেছেন: রাজীব নুর,




বাহ .. বেশ.....

১৯| ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৫ সকাল ৭:১৭

জনারণ্যে একজন বলেছেন: @ আহমেদ জী এস, প্রথমে আপনার সাথে পুরোপুরি একমত ছিলাম না। কারণ এবং উদাহরণ হিসেবে ধরে নিয়েছিলাম দেশের বুয়েট/ডিএমসি কিংবা ঢাকা ইউনিভার্সিটির ভালো সাবজেক্টে পড়া ছেলে-মেয়েদেরকে। ওদের ম্যাক্সিমামই আসে মফঃস্বল শহর থেকে। এই দেশেও যেসব ছেলে-মেয়েদের দেখেছি, উচ্চশিক্ষার্থে এসেছে - বেশিভাগই নিম্নবিত্ত/নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেমেয়ে।

মাগার - বিলিভ মি, এই প্লাটফর্মের স্থূলবুদ্ধিসম্পন্ন, জিরো আইকিউ এবং সেন্স অফ হিউমার সম্পন্ন ইউজারদের দেখে ধারণা পাল্টেছি।

দু'একটা এক্সেপশন ছাড়া - ম্যালনিউট্রিশনে ভোগা, অপুষ্ট মগজওয়ালা এই জাতির ভবিষ্যৎ বড়োই অন্ধকার।

০৫ ই অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১১:৩৫

আহমেদ জী এস বলেছেন: জনারণ্যে একজন,




এটা সত্য যে, দেশের বুয়েট/ডিএমসি কিংবা ঢাকা ইউনিভার্সিটির ভালো সাবজেক্টে পড়া ছেলে-মেয়েদের ম্যাক্সিমামই আসে মফঃস্বল শহর থেকে। ব্যতিক্রম কোনও উদাহরণ নয়। সারা দেশের ছেলে-মেয়েদের সংখ্যার তুলনায় এই ছেলে-মেয়েদের সংখ্যা কতো? ২% - ৩ % ? এই সংখ্যা কি হিসেবের মধ্যে পড়ে?
তারপরেও এই মেধারীরা কেমন করে একটি দরিদ্র পরিবেশ থেকে আসে তার ব্যাখ্যাও গবেষকরা দিয়েছেন ----
তারা "নিউরোপ্লাস্টিসিটি"র কথা বলেছেন। নিউরোপ্লাস্টিসিটি হলো আপনার মগজের শিখে নেয়া আর অভিযোজিত হওয়ার ক্ষমতা। একটুকরো ইলাষ্টিক টানলে যেমন প্রসারিত হয় তেমনি মগজকে দিয়ে কাজ করিয়ে নিলে সে মগজও প্রসারিত হয়, পুষ্ট হয়। এতে আপনার মন- মানসিকতার প্রসারণ ঘটে যেমন ব্যায়ামের মধ্যে দিয়ে আপনার মাংশপেশী শক্তিশালী আর সুগঠিত হয় তেমনি। মস্তিক অনেকটা প্লাস্টিকের মতো। আমরা চাইলে একে আমাদের মন মতো যেকোনো রূপ দিতে পারি। এতে মগজ তার আগের অবস্থা থেকে ভিন্ন অবস্থায় মানিয়ে নেওয়ার এবং কাজ করার সক্ষমতা পেয়ে যায়। মস্তিষ্ক কখনো ভেঙে যায় না, বরং প্রতিদিনই এটি নতুনভাবে গড়ে ওঠে। প্রতিটি অভিজ্ঞতা, প্রতিটি শেখা, এমনকি প্রতিটি চিন্তার সাথেই ব্রেনের ভেতরে নতুন সংযোগ তৈরি হয়।
নিউরোপ্লাস্টিসিটি আসলে মাথার খুলির ভেতরে আপনার মগজের ভৌত পরিবর্তন। অল্প কথায় আপনার মগজের তারগুলোর পূনর্বিন্যাস করা।
যেকোনো কিছু শিখতে এবং নতুন অভ্যাস গঠন করতে সাহায্য করে নিউরোপ্লাস্টিসিটি। আমরা যখন নতুন কিছু শিখতে যাই, তখন আমাদের মস্তিষ্কে বেশ কিছু রাসায়নিক উপাদানের ক্ষরণ হয় এবং মস্তিষ্কে একটি সাময়িক পরিবর্তন ঘটে যায় । বারংবার সেই একই কাজ করলে তা স্থায়ী হয়ে যায়। অর্থাৎ মগজের নিউরোন বা স্নায়ুকোষগুলি পুরাতনের বদলে নতুন নতুন সার্কিট তৈরী করে ফেলে যেমন গাছের পুরোনা পাতা ঝরে গিয়ে নতুন পাতারা জন্ম নেয়।
আমাদের দারিদ্রপীড়িত অঞ্চলের ছেলে-মেয়েদের কেউ কেউ পরিবেশের গড্ডালিকায় গা না ভাসিয়ে নিজেরা নিজেরা নতুন কিছু শিখতে চায়। অন্য সবার মতো এরা দৈনন্দিন স্বভাবের উপর নিজেকে ছেড়ে না দিয়ে শেখায় আগ্রহী হয়, বই পড়ে, মেলোডিয়াস গান শোনে, ছবি আঁকে, নাচ- গান শেখে, সাঁতার কাটে, সাইকেল চালায় ইত্যাদি ইত্যাদি। এতে করে তাদের মগজে স্নায়ুকোষগুলির নতুন নতুন সংযোগ তৈরী হয় এবং এক সময় তা স্থায়ী সার্কিটে পরিনত হয়। এবং তাদেরকে ঐ সমাজের অন্য ছেলে-মেয়েদের তুলনায় আলাদা বলে মনে হয় যাদের কে আমরা "মেধাবী" বলি।

সুতরাং দেখা যাচ্ছে, দারিদ্রপীড়িত এলাকার ছেলে-মেয়েদের ভেতর থেকেও বুয়েট/ডিএমসি কিংবা ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার মতো কিছু ছেলে-মেয়ে বেরিয়ে আসা অসম্ভব নয়।

আশা করি, আপনার সংশয় এখন অনেকটাই কেটে যাবে।

২০| ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৫ রাত ৯:৪৭

করুণাধারা বলেছেন: জন্মের পর হইতে দারিদ্রতাজনিত অপুষ্টি আর মানসিক চাপ এই জনগোষ্ঠীর সত্যিকারের মগজের গড়নটাই বদলাইয়া দিয়াছে। জন্ম নিয়াছে অপুষ্ট মস্তিষ্ক লইয়া একটি আত্মনিয়ন্ত্রণহীন- অস্থির- অসংযমী ব্যক্তি- সমাজ- জনগোষ্ঠী।

:( :( :( :(

আপনার পোস্ট ভালভাবে পড়েছি, তথ্যবহুল পোস্টে তথ্যসূত্রও দিয়েছেন। তিনবছর বয়স অবধি শিশুর মগজের ধূসর পদার্থের বৃদ্ধি যে সামাজিক ভাবে উঁচু স্তরে অবস্থানকারী শিশুর তুলনায় নিচুস্তরের অবস্থানকারী শিশুর কম হয় সেটাও গ্রাফের সাহায্যে সহজবোধ্য করে দিয়েছেন।‌ কিন্তু আমার দেখা কিছু মানুষের বেলায় কিন্তু এই কথা ঠিক প্রযোজ্য হয় না, অবশ্য এক্ষেত্রে বলাই যায় যে exceptions prove the law. যেমন পরিচিত একটা ছেলে বুয়েট থেকে পাশ করেছে, অতি মেধাবী, দেশের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসেছে অথচ ওর এগারো ভাইবোনের মধ্যে সে ছাড়া আর মাত্র একজন এস এসসি পাশ! এই ছেলেটি আর তার ভাইবোনেরা একই রকম সুবিধা বঞ্চিত, অথচ সে এরই মাঝে থেকে দেশের সেরা মেধাবীদের একজন হয়ে উঠেছে।

আবার গণিত, ফিজিক্স ইত্যাদি অলিম্পিয়াডে বিদেশে গিয়ে যারা বিজয়ী হয়, দেখা গেছে তাদের অধিকাংশই মফস্বলের স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী। যাদের পরিবার মধ্যবিত্ত হিসেবে পরিচিত।

ঘাসের উপর কিছুদিন একটা ইট চাপা দিয়ে রেখে কিছুদিন পর ইট সরিয়ে নিলে দেখা যায়, প্রায় সব ঘাস মরে গেলেও কিছু ঘাস বেঁচে থাকে। কিছু মানুষেরও হয়তো এমন হয়, দারিদ্রতা এবং অন্য সব প্রতিকূলতার চাপে থেকেও তাদের মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটে। অবশ্যই তারা স্বল্পসংখ্যক।

তবে আমাদের দেশে র দারিদ্র্যতা বিমোচন হবে এমন স্বপ্ন দেখি না।‌ দারিদ্র্যতা হটানোর সাধ্য যাদের আছে তাদের কখনোই দেশের জনগণের দারিদ্র্যতা হটানোর সাধ হবে না।‌ কারণ দরিদ্র জনগোষ্ঠী না থাকলে তারা কার উপর প্রভুত্ব করবে?

ভাবনার খোরাক উদ্রেককারী পোস্ট! ধন্যবাদ।

০৬ ই অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১:১৪

আহমেদ জী এস বলেছেন: করুণাধারা,



বুয়েট থেকে পাশ করা ছেলেটির আর ইট চাপা দেয়ার যে উদাহরণ দিয়েছেন তার শানে-নযুল ১৯ নম্বর (ঠিক উপরেই) প্রতি মন্তব্যেই দিয়েছি। আশা করি সেখান থেকেই আপনার কাঙ্খিত জবাবটি পেয়ে যাবেন। তারপরেও আরো কিছুটা যোগ করি ---
একই জেনেটিক কোড নিয়ে জন্মগ্রহণকারী দুটি অভিন্ন যমজ ( Identical Twin) সন্তানের কথা বিবেচনা করুন। বড় হওয়ার সাথে সাথে, বিভিন্ন খাদ্য, বিষাক্ত পদার্থের সংস্পর্শ, চাপের মাত্রা এবং পরিবেশ ও সামাজিক মিথস্ক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে তাদেরকে যেতে হয়। তাদের একজন হয়তো ঐ পরিবেশগত কারণগুলিতে ভিন্ন ভাবে সাড়া দিয়েছে, অভিযোজিত হয়েছে। এটাই তাদের চেহারা, স্বাস্থ্য এবং এমনকি ব্যক্তিত্বের মধ্যে লক্ষণীয় পার্থক্য তৈরি করতে পারে। সে কারনেই আমরা দেখি, অভিন্ন যমজ দুই সন্তান দুই ভিন্ন চরিত্রের হয়েছে। একজন মেধাবী, পুষ্ট মগজের; অন্যজন নিতান্তই সাধারণ।

বাড়তি একটা কথা বলি---দারিদ্র বিমোচন তখনই সম্ভব হতে পারে যখন দেশে কর্মসংস্থান তৈরী এবং তা ধারাবাহিক ভাবে টেকসই থাকতে হবে। এ জন্যে থাকতে হবে সামাজিক ও রাজনৈতিক সদিচ্ছা। আপনার কথামতো রাজনৈতিক সদিচ্ছা যখন পাওয়া যাবেই না তখন সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে আগে। আর সমাজ তো আমাদেরকে নিয়েই গড়া!

মন্তব্যের জন্যে ধন্যবাদ।
শুভেচ্ছান্তে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.