নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

গণদাবি

গণদাবি › বিস্তারিত পোস্টঃ

শিশুর কথা শিখানোর জন্য কি করতে পারি?-পারামর্শ

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:২২


প্রিয় ব্লগার ভাইয়েরা আমার ২৩ মাস বয়সি ছেলে বাবু ঠিকমত কথা বলেনা। দুই একটা শব্দ বলে যেমন চা, ঝাল, মা etc. কথা ছাড়া সব কিছুই স্বাভাবিক মনে হয়। কথা শিখানোর জন্য কি করতে পারি? অভিজ্ঞদের পারামর্শ চাচ্ছিলাম।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:০৪

বিমল বিডি বলেছেন: আমার মনে হয় সে বাড়িতে থাকে, বাহিরের পরিবেশ নিয়ে আসুন,

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৪

গণদাবি বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ভালো থাকবেন

২| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:১৮

সপ্নাতুর আহসান বলেছেন: আপনি শিশু বিশেষজ্ঞকে দেখান। সমস্যাটা শারীরিক, মানসিক নাকি পরিবেশের সাথে সংশ্লিষ্ট (অথবা কোন সমস্যা নাও থাকতে পারে) তাঁরাই ভাল বলতে পারবে। আমার মতে দেরি না করাই উত্তম।

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৪

গণদাবি বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ভালো থাকবেন

৩| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৫

সপ্নাতুর আহসান বলেছেন: ১।
শিশু দেরিতে কথা বললে মা-বাবা বা পরিবারের লোকজনকে আতঙ্কিত হতে দেখা যায়। শিশুর দেরিতে কথা বলার দুটি কারণ উল্লেখ করেন বারডেম হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ তাহমিনা বেগম। প্রথমত, শিশু অসুস্থ থাকলে। দ্বিতীয়ত, যেসব শিশু পরিবারের সদস্যদের সাহচর্য কম পায়, তারা দেরিতে কথা বলে। তিনি বলেন, কর্মজীবী মা-বাবার সন্তানরা দেরিতে কথা বলা শেখে। কারণ, সারা দিন তারা মা-বাবাকে কাছে পায় না। টিভি দেখিয়ে শিশুকে ব্যস্ত রাখা হয়। ফলে তারা কথা শুধু শোনে, কিন্তু বলার অভ্যাস গড়ে ওঠে না। তিনি আরো বলেন, শিশুর কথা বলার শুরুটা হয় কিছু বর্ণ উচ্চারণের মধ্য দিয়ে। শিশু প্রথম তা, কা, মা এসব বর্ণ উচ্চারণ করে, যার তেমন কোনো অর্থ থাকে না। ছয় থেকে আট মাস বয়সে ধীরে ধীরে এ বর্ণগুলো এক শব্দে রূপ পায়, যা অর্থপূর্ণ। যেমন মামা, চাচা, কাকা, দাদা এটা করে ১২ থেকে ১৮ মাস বয়সের মধ্যে।
শিশু যখন থেকে কথা বলা শুরু করবে, ওই সময় মা-বাবার উচিত শিশুকে বেশি সময় দেয়া। শিশুর আধোবুলির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মা-বাবাকেও তার সঙ্গে কথা বলতে হবে। তাকে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ চেনাতে হবে। তাহলে শিশু দ্রত কথা বলা শিখবে। কারণ, শিশু শুনে শুনেই কথা বলা শেখে।
গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের শিশুবর্ধন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মোরশেদা বেগম বলেন, শিশুরা অনুকরণপ্রিয়। শিশুরা যখন আধোবুলিতে কথা শুরু করে, তখন তার সঙ্গে শুদ্ধভাবে কথা বলা দরকার। শিশু কোনো কথা ঠিকভাবে বলতে না পারলে নিজের মতো করেই উচ্চারণ করে। এতে মা-বাবা অনেক সময় খুশি হয়ে থাকেন। শিশু ভুল উচ্চারণ করলে মা-বাবার উচিত তা শুধরে দেয়া। ধমক না দিয়ে বারবার ওই শব্দ উচ্চারণ করলে শিশু তাৎক্ষণিক তা ঠিকভাবে উচ্চারণ করবে। শিশুকে বকা দেয়া যাবে না। এতে শিশুর মধ্যে ভয় দানা বাঁধে এবং পরে সে কথা বলতে চায় না। শিশুর দ্রত কথা বলা শেখার জন্য তার সঙ্গে বেশি করে কথা বলার কোনো বিকল্প নেই। শিশুকে বারবার শোনাতে হবে নানা ধরনের ছড়া বা ঘুমপাড়ানি গান। একসময় সে হয়তো নিজের মতো করেই গানের কথাগুলো উচ্চারণ করবে।
অসুস্থ শিশু সম্পর্কে তাহমিনা বেগম বলেন, জন্মের পরই শিশু জন্ডিসে আক্রান্ত হলে, মস্তিষ্কে অক্সিজেন কম পেলে দেরিতে কথা বলে। অটিস্টিক শিশুরা কথা বলতে পারে না। এসব ক্ষেত্রে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। ঠিকমতো পরিচর্যা পেলে আপনার শিশুটিও কথা বলবে ঠিক সময়ে।
শিশু থাকুক নিরাপদে : তিন বছর বয়সী সৌম্যর মা-বাবা দুজনই চাকরিজীবী। দরজায় তালা দিয়ে তারা সকালে অফিসে চলে গেলে সৌম্যের সময় কাটে তার চেয়ে মাত্র পাঁচ বছরের বড় কাজের ছেলেটির সঙ্গে। একদিন লুকোচুরি খেলতে গিয়ে স্টোররুমে আটকা পড়ে যায় সৌম্য। অনেক দিন ব্যবহার না করার কারণে জং ধরে নষ্ট হয়ে গেছে দরজার তালাটা। আটকে যাওয়া দরজাটা কিছুতেই খুলতে না পেওে ভেতর থেকে চিৎকার করতে থাকে সে। এ অবস্থা দেখে দরজার বাইরে থাকা কাজের ছেলেটিও ভয় পেয়ে ইস্কাটনের ১৩ তলার ওপরের ফ্ল্যাটটির বারান্দা থেকে চিৎকার করতে থাকে। কিন্তু এত ওপর থেকে সেই ডাক পেঁৗছায় না কারো কানে। অবশেষে সন্ধ্যার সময় মা-বাবা এসে স্টোররুমের তালা ভেঙে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে সৌম্যকে। 'শিশুদের বাসায় একা রেখে গেলে এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে। তাই শিশুটিকে বাসায় যার কাছে রেখে যাওয়া হবে, তার বয়স অবশ্যই ১৫ বা তার চেয়ে বেশি হতে হবে। সাত থেকে ১০ বছর বয়সী একটি ছেলে বা মেয়ে যে নিজেই কিনা শিশু, সে কিভাবে আরেকটি বাচ্চার দেখাশোনা করবে। এ বিষয়টি মা-বাবার মাথায় রাখতে হবে।' বলছিলেন গার্হস্থ্য অর্থনীতি মহাবিদ্যালয়ের শিশুবর্ধন ও পারিবারিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মোরশেদা বেগম।
তিনি বলেন, অনেক মা-বাবাই বাচ্চা বা কাজের লোক যাতে দরজা খুলে বের হতে না পারে, সেজন্য দরজা বাইরে দিয়ে তালাবদ্ধ করে যান। দরজায় তালা না দিয়ে গল্পের ছলে শিশুকে বোঝাতে পারেন, যে তুমি যদি কখনো দরজা খুলে বের হও, তাহলে খারাপ লোকেরা তোমাকে ধরে নিয়ে যাবে। আর আমাদের তুমি দেখতে পাবে না। এ ছাড়া তাদের প্রিয় জিনিসগুলো দেখিয়ে বলা যেতে পারে, দরজা খোলা দেখলে বাইরের লোকেরা ঘরে ঢুকে তোমার এই জিনিসগুলো নিয়ে যাবে। মায়েরা কর্মজীবী হলে প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করতে হবে। তাহলে প্রতিবেশীরাই মা-বাবা বাইরে গেলে বাচ্চার খেয়াল রাখবেন। আর তা সম্ভব না হলে কর্মজীবী মা-বাবাকে অবশ্যই কোনো নিকটাত্মীয় অথবা ভালো সম্পর্ক আছে এমন কোনো বন্ধু-বান্ধবের কাছাকাছি বাসা নেয়ার চেষ্টা করতে হবে। আর কাজের মেয়ে অথবা ছেলেটি যতই বিশ্বস্ত হোক না কেন, থানায় তার নামে একটা সাধারণ ডায়েরি করিয়ে রাখতে ভুলবেন না। অফিসে যাওয়ার সময় বাসার দারোয়ানকে জানিয়ে রাখতে হবে, তারা বাসায় না থাকলে বাসার কাউকে একা বের হতে দেখলে অথবা বাইরের কাউকে ঢুকতে দেখলে অবশ্যই যেন তাদের সঙ্গে সঙ্গে ফোন করে জানায়। সে ক্ষেত্রে প্রতিবেশী যদি সুহৃদ হন, তাদের এবং বাড়ির দারোয়ানকে অবশ্যই আপনার এবং কাছের আত্মীয়স্বজনের ফোন নাম্বারের একটা তালিকা দিয়ে যান। ফোনের ব্যবহার শিখিয়ে আপনার শিশু ও তার তত্ত্বাবধায়কের কাছে সবার নাম্বার সংরক্ষিত করে একটি মোবাইল ফোন রেখে যান। বাসার দরজার ছিটকিনি ওপরেরটা লাগানো থাকলে টুল বা এ ধরনের উঁচু আসবাবের ওপর উঠে বাচ্চারা দরজা খুলে ফেলে। এজন্য এ ধরনের আসবাব তার চোখের আড়ালে রাখতে হবে। এ ছাড়া সব ঘরের তালা ঠিক আছে কি না, সেদিকটিও খেয়াল রাখবেন। না হলে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।
আবার অনেক মা-বাবাই আছেন, যারা স্কুলে যাওয়া শুরু করলে সেই বাচ্চাকে বাড়িতে একা রেখে যান। বাচ্চাটি যদি বাসায় এসে অসুস্থ হয়ে যায় অথবা কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে, সে ক্ষেত্রে একা সে কিছুই করতে পারবে না। বিশ্বস্ত কাজের লোক না পেলে অন্তত কাছের কোনো মানুষকে এনে বাসায় রেখে যেতে পারেন; কিন্তু বাচ্চাকে কখনোই একা বাসায় রেখে যাবেন না। কথাগুলো বলছিলেন একজন কর্মজীবী মা ও বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা কংকনা দত্ত চৌধুরী। কাজের লোকের কাছে বাচ্চা রেখে গেলে তাকে আর অন্য কাজের দায়িত্ব দেয়া উচিত নয়। কারণ এতে সে রান্নাঘওে গেলে বাচ্চাও তার সঙ্গে গিয়ে চুলায় হাত দিতে চাইবে। বঁটি দিয়ে কিছু কাটতে গেলে সামনে গিয়ে দাঁড়াবে। প্রয়োজনীয় সবকিছু বাইওে রেখে রান্নাঘরের দরজা আটকে যাওয়াটাই নিরাপদ মনে করেন তিনি। এ ছাড়া আমার বাচ্চারা ছবি অাঁকতে ও বই পড়তে পছন্দ করে। তাই আমি বের হওয়ার আগে এই জিনিসগুলো তাদের কাছে দিয়ে যাই। এতে করে অন্যদিকে তাদের আর মনোযোগ যায় না বলে জানান তিনি। মোরশেদা বেগম বলেন, শিশুকে তার পছন্দেও কোনো কাজ যেমন টিভি দেখা অথবা খেলার আয়োজন করে দিতে হবে। তবে সে ক্ষেত্রেও কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যেমন কাচ বা আঘাত পাবে এমন কোনো খেলনা শিশুর হাতে দেয়া যাবে না। বিশেষ কওে ছেলে বাচ্চারা বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি খুলে দেখার চেষ্টা করে। এজন্য বাসার টিভি টিভিস্ট্যান্ডের ওপর না রেখে এমন কিছুর ওপর রাখুন, যাতে সে নাগালে না পায়। বাচ্চার পছন্দের খাবারগুলো টেবিলে বের কওে রেখে ফ্রিজে তালা দিয়ে রাখুন। অনেক বাচ্চাই ওয়্যারড্রব বা আলমারির ভেতর ঢুকে থাকতে পছন্দ করে। তাই বাইরে যাওয়ার সময় আলমারির তালা বন্ধ কওে যেতে ভুল করবেন না। বাচ্চা ছোট হলে ঘরে কাচের আসবাব না রাখাই ভালো। বাচ্চাকে যে পাত্রে খাবার দেবেন, তা ভঙ্গুর না হওয়াই ভালো।
আরেকটি বিষয় হলো, আপনি বাসায় না থাকলে কাউকে দরজা খুলে দেয়া হবে না, এই কথাটি আত্মীয়স্বজনদের জানিয়ে রাখুন।

২। শিশুর কথা না শেখা বা দেরিতে কথা বলার পেছনে থাকতে পারে বেশ কিছু কারণ। যেমন -

শিশু বংশগত কারণে দেরিতে কথা বলা শুরু করতে পারে।
মস্তিষ্কের জন্মগত ত্রুটি।
প্রসবকালীন জটিলতা।
প্রসবোত্তর স্বল্পকালীন অসুখ যেমন - ভীষণ জ্বর, খিঁচুনি, জীবাণু সংক্রমণ, মস্তিকের ভেতর জীবাণু সংক্রমণ ইত্যাদি শিশুর কথা বলার বাধা হতে পারে।
জিহ্বার ত্রুটির কারণে অনেক শিশু ঠিকমতো উচ্চারণ করতে পারে না।
শিশুরা অনুকরণপ্রিয়। অনেক সময় দেখা যায় বড়রা শিশুদের সাথে ঠিকমতো কথা না বললে শিশুরা ভুল উচ্চারণ শিখে থাকে।
শিশুর মানসিক প্রতিবন্ধকতা থাকলে অর্থাৎ বুদ্ধির মাত্রা কম হলেও শিশু দেরিতে ভাষা শেখে।
শিশুর সামনে ঝগড়া বা উচ্চারণ বেশি মাত্রায় করলে তাদের কথা জড়িয়ে যাওয়ার আশংকা থাকে।

করণীয় :

শিশুর কথা বলার বয়স হওয়া সত্ত্বেও মুখে বুলি না ফুটলে দ্রুত ডাক্তার দেখানো উচিত। আবার কোনো শারীরিক বা মানসিক সমস্যা না থাকলেও অনেক শিশু দেরিতে কথা বলা শুরু করে বা বলেই না। সেক্ষেত্রে কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করে শিশু কথা বলাকে ত্বরান্বিত করা যেতে পারে। যেমন -

শিশুর সাথে কথা বলুন :
পরিবারের সদস্যরা শিশুর সাথে শুদ্ধ উচ্চারণে প্রচুর কথা বলুন। শিশুকে এমন প্রশ্ন করুন যার উত্তর সে ছোট ছোট শব্দ বা বাক্য অথবা অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে দিতে পারে। অনেকেই শিশুকে টিভি দেখতে বসিয়ে দেন। তা না করে তাকে গল্পের বই পড়ে শোনান।

গান বা ছড়া শোনান :
শিশুকে ছড়া বা গান শুনিয়ে ঘুম পাড়ান। গানের অর্থ না বুঝলেও গান ছুঁয়ে যায় শিশুর কোমল হৃদয়ও। শিশুকে গান শোনান বা ছন্দোবদ্ধ ছড়া-কবিতা শোনান। নিজে না পারলে মিউজিক সিস্টেমের সাহায্য নিন। আপাতদৃষ্টিতে এটা শুধুমাত্র বিনোদনের মাধ্যম মনে হলেও শিশুর কথা পরিষ্কারভাবে বলতে সাহায্য করবে।

শিশুর বেড়ে ওঠার পরিবেশ অনুকূল রাখুন :
শিশুকে সুস্থ্য ও স্বাভাবিক পরিবেশে বেড়ে উঠতে দিন। শিশুর সামনে তর্ক বা ঝগড়া করবেন না। কোনো ব্যাপার দ্বিমত হলে তা শিশুর সামনে প্রকাশ করবেন না।

উচ্চারণ শুধরে দিন :
শিশুর ভুল উচ্চারণে ভাঙা ভাঙা কথা শুনতে ভালো লাগলেও তাতে উত্‍সাহ দেবেন না। শিশুর ভুল উচ্চারণ শুনে খুশি না হয়ে বরং তা তত্‍ক্ষণাত্‍ শুধরে দিন।

বাচ্চাকে সময় দিন :
শিশুর মা-বাবা যতটা সম্ভব শিশুর সাথে সুন্দর সময় কাটান। বাচ্চা যেন হীনমন্যতায় না ভোগে বা নিজেকে অসহায় না ভাবে সেদিকে খেয়াল রাখুন।

৩। যেসব শিশু কথা বলা শিখছে না বা দেরিতে বলছে বা ভালো করে বলতে পারছে না- তাদের অভিভাবকদের কিছু কাজ করার আছে। অনেকেই জানি না, স্পিচ থেরাপির সহায়তা নিলে শিশুটি দ্রুত কথা বলা শিখতে পারে। যথাসময়ে কথা বলা না শিখলে স্কুল থেকে শুরু করে সামাজিক কর্মকাণ্ডে শিশুটি অনগ্রসর হয়। যা তাকে সারা জীবন বহন করতে হয়।

যেসব শিশু দেরিতে কথা বলে বা ঠিকমতো কথা বলা শিখছে না তাদের ক্ষেত্রে প্রতিটি কাজে একটি নির্দিষ্ট শব্দের ওপর গুরুত্ব দিয়ে কথা বলতে হবে। যেমন- শিশুকে গোসল করানোর সময় 'গোসল' শব্দটির ওপর অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। আবার বাইরে যাওয়ার সময় 'যাব' শব্দটি বারবার বলে শিশুকে বোঝাতে হবে।

শিশু যদি ইশারার সাহায্যে যোগাযোগ করতে চায়, তবে সেই ইশারার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ এবং অর্থবোধক শব্দ যোগ করে তাকে কথা বলতে উৎসাহিত করুন। যেমন- শিশু বিদায় জানাতে হাত বাড়ালে আপনি বলুন 'বাই বাই' অথবা 'টা টা'।

শিশুর সবচেয়ে পছন্দের জিনিসটি একটি নির্দিষ্ট উচ্চতায় রেখে (শিশুর নাগালের বাইরে) তাকে জিনিসটি দেখান। যখন সে ওটা নিতে চাইবে বা আপনার হাত ধরে টানবে, তখন আপনি জিনিসটির নাম একটু স্পষ্টভাবে বলুন। যেমন- যদি 'গাড়ি' হয় তবে বলুন 'ও, তুমি গাড়ি খেলতে চাও?' অথবা 'এই যে তোমার গাড়ি।'

শিশুর অনুকরণের দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর বেশি গুরুত্ব দিন। যেমন- শিশুর হাসি বা মুখভঙ্গির অনুকরণ করে দেখান। তারপর আপনার সঙ্গে শিশুকে অন্যান্য শারীরিক অঙ্গভঙ্গি যেমন- হাততালি দেওয়া, হাতের উল্টোপিঠে চুমু খাওয়া ইত্যাদি করান। পাশাপাশি উচ্চারণ স্থান দেখিয়ে বিভিন্ন শব্দ অনুকরণের ওপর গুরুত্ব দিন।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, শিশু মূল শব্দের আগে অনেক ক্ষেত্রে আগে প্রতীকী শব্দ ব্যবহার শুরু করে। তাই এ ক্ষেত্রে আপনিও প্রাথমিকভাবে প্রতীকী শব্দ ব্যবহারে বেশি গুরুত্ব দিন। যেমন- গাড়ি বোঝাতে পিপ্পিপ্। বেড়াল বোঝাতে মিঁউ মিঁউ ইত্যাদি।

যেসব শিশু মাঝেমধ্যে দু-একটি শব্দ বলছে, তাদের শব্দভাণ্ডার বৃদ্ধির ওপর জোর দিন। যেমন- শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ (মাথা, হাত, পা), বিভিন্ন জিনিসের নাম (বল, গাড়ি, চিরুনি), বিভিন্ন ক্রিয়াবাচক শব্দ (খাব, যাব, ঘুম) ইত্যাদি শেখান।

দুই বছরের বড় শিশুদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে পরিচিত এবং অতি পছন্দের ৮-১০টি ছবি নিয়ে একটি বই তৈরি করুন। প্রতিদিন একটু একটু করে বই দেখিয়ে শিশুকে ছবির মাধ্যমে নাম শেখাতে পারেন।

যেসব শিশু চোখে চোখে তাকায় না এবং মনোযোগ কম, আবার কথাও বলছে না, তাদের ক্ষেত্রে আগে চোখে চোখে তাকানো ও মনোযোগ বৃদ্ধির বিভিন্ন কৌশলের ওপর গুরুত্ব দিন। যেমন- লুকোচুরি খেলা, কাতুকুতু দেওয়া, চোখে চোখে তাকিয়ে শিশুর পছন্দের ছড়াগান অঙ্গভঙ্গি করে গাওয়া।

আপনার কথা না বলা শিশুটির সামনে অন্য একটি শিশুর 'দাও' বলার পরে পছন্দের জিনিস দিচ্ছেন এমন কৌশল দেখিয়ে তাকে কথা বলার গুরুত্ব বোঝাতে পারেন।

যা করবেন না

কথা বলার জন্য অত্যধিক চাপ যেমন- 'বল, বল' ইত্যাদি করা যাবে না।

শিশুকে অপ্রাসঙ্গিক অথবা অতিরিক্ত প্রশ্ন করা থেকে বিরত থাকুন।

একসঙ্গে অনেক শব্দ শেখানোর চেষ্টা করবেন না, এতে শিশু কথা বলার আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে। স্পিচ অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপি কিছুটা দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসাব্যবস্থা। সঠিক সময়ে এই পদ্ধতির কৌশলগত প্রয়োগ হলে শিশু কথা এবং যোগাযোগের অন্যান্য মাধ্যমে উন্নতি করবেই।

অনেক মা-বাবাই ভাবেন, অন্যান্য স্বাভাবিক শিশুর সঙ্গে তাঁদের পিছিয়ে পড়া শিশুর খেলার পরিবেশ করে দিলেই আপনা আপনিই কথা শিখে যাবে। কিন্তু মনে রাখবেন, এমনটা না-ও হতে পারে। তাই নিজেরা বাড়িতে চেষ্টা করুন, প্রয়োজনে স্পিচ থেরাপির সহায়তা নিন।

বিভাগীয় প্রধান, স্পিচ অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপি ইউনিট, আইএনডিআর, ঢাকা।

[email protected]

****** ভাই ব্যস্ত তাই কোন কিছু গুছিয়ে কিংবা লিঙ্ক ঠিক করে দিতে পারলাম না। ****

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫০

গণদাবি বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ভালো থাকবেন

৪| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:৪৫

সপ্নাতুর আহসান বলেছেন: ১।
শিশু দেরিতে কথা বললে মা-বাবা বা পরিবারের লোকজনকে আতঙ্কিত হতে দেখা যায়। শিশুর দেরিতে কথা বলার দুটি কারণ উল্লেখ করেন বারডেম হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ তাহমিনা বেগম। প্রথমত, শিশু অসুস্থ থাকলে। দ্বিতীয়ত, যেসব শিশু পরিবারের সদস্যদের সাহচর্য কম পায়, তারা দেরিতে কথা বলে। তিনি বলেন, কর্মজীবী মা-বাবার সন্তানরা দেরিতে কথা বলা শেখে। কারণ, সারা দিন তারা মা-বাবাকে কাছে পায় না। টিভি দেখিয়ে শিশুকে ব্যস্ত রাখা হয়। ফলে তারা কথা শুধু শোনে, কিন্তু বলার অভ্যাস গড়ে ওঠে না। তিনি আরো বলেন, শিশুর কথা বলার শুরুটা হয় কিছু বর্ণ উচ্চারণের মধ্য দিয়ে। শিশু প্রথম তা, কা, মা এসব বর্ণ উচ্চারণ করে, যার তেমন কোনো অর্থ থাকে না। ছয় থেকে আট মাস বয়সে ধীরে ধীরে এ বর্ণগুলো এক শব্দে রূপ পায়, যা অর্থপূর্ণ। যেমন মামা, চাচা, কাকা, দাদা এটা করে ১২ থেকে ১৮ মাস বয়সের মধ্যে।
শিশু যখন থেকে কথা বলা শুরু করবে, ওই সময় মা-বাবার উচিত শিশুকে বেশি সময় দেয়া। শিশুর আধোবুলির সঙ্গে তাল মিলিয়ে মা-বাবাকেও তার সঙ্গে কথা বলতে হবে। তাকে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ চেনাতে হবে। তাহলে শিশু দ্রত কথা বলা শিখবে। কারণ, শিশু শুনে শুনেই কথা বলা শেখে।
গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের শিশুবর্ধন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মোরশেদা বেগম বলেন, শিশুরা অনুকরণপ্রিয়। শিশুরা যখন আধোবুলিতে কথা শুরু করে, তখন তার সঙ্গে শুদ্ধভাবে কথা বলা দরকার। শিশু কোনো কথা ঠিকভাবে বলতে না পারলে নিজের মতো করেই উচ্চারণ করে। এতে মা-বাবা অনেক সময় খুশি হয়ে থাকেন। শিশু ভুল উচ্চারণ করলে মা-বাবার উচিত তা শুধরে দেয়া। ধমক না দিয়ে বারবার ওই শব্দ উচ্চারণ করলে শিশু তাৎক্ষণিক তা ঠিকভাবে উচ্চারণ করবে। শিশুকে বকা দেয়া যাবে না। এতে শিশুর মধ্যে ভয় দানা বাঁধে এবং পরে সে কথা বলতে চায় না। শিশুর দ্রত কথা বলা শেখার জন্য তার সঙ্গে বেশি করে কথা বলার কোনো বিকল্প নেই। শিশুকে বারবার শোনাতে হবে নানা ধরনের ছড়া বা ঘুমপাড়ানি গান। একসময় সে হয়তো নিজের মতো করেই গানের কথাগুলো উচ্চারণ করবে।
অসুস্থ শিশু সম্পর্কে তাহমিনা বেগম বলেন, জন্মের পরই শিশু জন্ডিসে আক্রান্ত হলে, মস্তিষ্কে অক্সিজেন কম পেলে দেরিতে কথা বলে। অটিস্টিক শিশুরা কথা বলতে পারে না। এসব ক্ষেত্রে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। ঠিকমতো পরিচর্যা পেলে আপনার শিশুটিও কথা বলবে ঠিক সময়ে।
শিশু থাকুক নিরাপদে : তিন বছর বয়সী সৌম্যর মা-বাবা দুজনই চাকরিজীবী। দরজায় তালা দিয়ে তারা সকালে অফিসে চলে গেলে সৌম্যের সময় কাটে তার চেয়ে মাত্র পাঁচ বছরের বড় কাজের ছেলেটির সঙ্গে। একদিন লুকোচুরি খেলতে গিয়ে স্টোররুমে আটকা পড়ে যায় সৌম্য। অনেক দিন ব্যবহার না করার কারণে জং ধরে নষ্ট হয়ে গেছে দরজার তালাটা। আটকে যাওয়া দরজাটা কিছুতেই খুলতে না পেওে ভেতর থেকে চিৎকার করতে থাকে সে। এ অবস্থা দেখে দরজার বাইরে থাকা কাজের ছেলেটিও ভয় পেয়ে ইস্কাটনের ১৩ তলার ওপরের ফ্ল্যাটটির বারান্দা থেকে চিৎকার করতে থাকে। কিন্তু এত ওপর থেকে সেই ডাক পেঁৗছায় না কারো কানে। অবশেষে সন্ধ্যার সময় মা-বাবা এসে স্টোররুমের তালা ভেঙে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে সৌম্যকে। 'শিশুদের বাসায় একা রেখে গেলে এ ধরনের দুর্ঘটনা প্রায়ই ঘটে থাকে। তাই শিশুটিকে বাসায় যার কাছে রেখে যাওয়া হবে, তার বয়স অবশ্যই ১৫ বা তার চেয়ে বেশি হতে হবে। সাত থেকে ১০ বছর বয়সী একটি ছেলে বা মেয়ে যে নিজেই কিনা শিশু, সে কিভাবে আরেকটি বাচ্চার দেখাশোনা করবে। এ বিষয়টি মা-বাবার মাথায় রাখতে হবে।' বলছিলেন গার্হস্থ্য অর্থনীতি মহাবিদ্যালয়ের শিশুবর্ধন ও পারিবারিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক মোরশেদা বেগম।
তিনি বলেন, অনেক মা-বাবাই বাচ্চা বা কাজের লোক যাতে দরজা খুলে বের হতে না পারে, সেজন্য দরজা বাইরে দিয়ে তালাবদ্ধ করে যান। দরজায় তালা না দিয়ে গল্পের ছলে শিশুকে বোঝাতে পারেন, যে তুমি যদি কখনো দরজা খুলে বের হও, তাহলে খারাপ লোকেরা তোমাকে ধরে নিয়ে যাবে। আর আমাদের তুমি দেখতে পাবে না। এ ছাড়া তাদের প্রিয় জিনিসগুলো দেখিয়ে বলা যেতে পারে, দরজা খোলা দেখলে বাইরের লোকেরা ঘরে ঢুকে তোমার এই জিনিসগুলো নিয়ে যাবে। মায়েরা কর্মজীবী হলে প্রতিবেশীদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করতে হবে। তাহলে প্রতিবেশীরাই মা-বাবা বাইরে গেলে বাচ্চার খেয়াল রাখবেন। আর তা সম্ভব না হলে কর্মজীবী মা-বাবাকে অবশ্যই কোনো নিকটাত্মীয় অথবা ভালো সম্পর্ক আছে এমন কোনো বন্ধু-বান্ধবের কাছাকাছি বাসা নেয়ার চেষ্টা করতে হবে। আর কাজের মেয়ে অথবা ছেলেটি যতই বিশ্বস্ত হোক না কেন, থানায় তার নামে একটা সাধারণ ডায়েরি করিয়ে রাখতে ভুলবেন না। অফিসে যাওয়ার সময় বাসার দারোয়ানকে জানিয়ে রাখতে হবে, তারা বাসায় না থাকলে বাসার কাউকে একা বের হতে দেখলে অথবা বাইরের কাউকে ঢুকতে দেখলে অবশ্যই যেন তাদের সঙ্গে সঙ্গে ফোন করে জানায়। সে ক্ষেত্রে প্রতিবেশী যদি সুহৃদ হন, তাদের এবং বাড়ির দারোয়ানকে অবশ্যই আপনার এবং কাছের আত্মীয়স্বজনের ফোন নাম্বারের একটা তালিকা দিয়ে যান। ফোনের ব্যবহার শিখিয়ে আপনার শিশু ও তার তত্ত্বাবধায়কের কাছে সবার নাম্বার সংরক্ষিত করে একটি মোবাইল ফোন রেখে যান। বাসার দরজার ছিটকিনি ওপরেরটা লাগানো থাকলে টুল বা এ ধরনের উঁচু আসবাবের ওপর উঠে বাচ্চারা দরজা খুলে ফেলে। এজন্য এ ধরনের আসবাব তার চোখের আড়ালে রাখতে হবে। এ ছাড়া সব ঘরের তালা ঠিক আছে কি না, সেদিকটিও খেয়াল রাখবেন। না হলে ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।
আবার অনেক মা-বাবাই আছেন, যারা স্কুলে যাওয়া শুরু করলে সেই বাচ্চাকে বাড়িতে একা রেখে যান। বাচ্চাটি যদি বাসায় এসে অসুস্থ হয়ে যায় অথবা কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে, সে ক্ষেত্রে একা সে কিছুই করতে পারবে না। বিশ্বস্ত কাজের লোক না পেলে অন্তত কাছের কোনো মানুষকে এনে বাসায় রেখে যেতে পারেন; কিন্তু বাচ্চাকে কখনোই একা বাসায় রেখে যাবেন না। কথাগুলো বলছিলেন একজন কর্মজীবী মা ও বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা কংকনা দত্ত চৌধুরী। কাজের লোকের কাছে বাচ্চা রেখে গেলে তাকে আর অন্য কাজের দায়িত্ব দেয়া উচিত নয়। কারণ এতে সে রান্নাঘওে গেলে বাচ্চাও তার সঙ্গে গিয়ে চুলায় হাত দিতে চাইবে। বঁটি দিয়ে কিছু কাটতে গেলে সামনে গিয়ে দাঁড়াবে। প্রয়োজনীয় সবকিছু বাইওে রেখে রান্নাঘরের দরজা আটকে যাওয়াটাই নিরাপদ মনে করেন তিনি। এ ছাড়া আমার বাচ্চারা ছবি অাঁকতে ও বই পড়তে পছন্দ করে। তাই আমি বের হওয়ার আগে এই জিনিসগুলো তাদের কাছে দিয়ে যাই। এতে করে অন্যদিকে তাদের আর মনোযোগ যায় না বলে জানান তিনি। মোরশেদা বেগম বলেন, শিশুকে তার পছন্দেও কোনো কাজ যেমন টিভি দেখা অথবা খেলার আয়োজন করে দিতে হবে। তবে সে ক্ষেত্রেও কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যেমন কাচ বা আঘাত পাবে এমন কোনো খেলনা শিশুর হাতে দেয়া যাবে না। বিশেষ কওে ছেলে বাচ্চারা বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি খুলে দেখার চেষ্টা করে। এজন্য বাসার টিভি টিভিস্ট্যান্ডের ওপর না রেখে এমন কিছুর ওপর রাখুন, যাতে সে নাগালে না পায়। বাচ্চার পছন্দের খাবারগুলো টেবিলে বের কওে রেখে ফ্রিজে তালা দিয়ে রাখুন। অনেক বাচ্চাই ওয়্যারড্রব বা আলমারির ভেতর ঢুকে থাকতে পছন্দ করে। তাই বাইরে যাওয়ার সময় আলমারির তালা বন্ধ কওে যেতে ভুল করবেন না। বাচ্চা ছোট হলে ঘরে কাচের আসবাব না রাখাই ভালো। বাচ্চাকে যে পাত্রে খাবার দেবেন, তা ভঙ্গুর না হওয়াই ভালো।
আরেকটি বিষয় হলো, আপনি বাসায় না থাকলে কাউকে দরজা খুলে দেয়া হবে না, এই কথাটি আত্মীয়স্বজনদের জানিয়ে রাখুন।

২। শিশুর কথা না শেখা বা দেরিতে কথা বলার পেছনে থাকতে পারে বেশ কিছু কারণ। যেমন -

শিশু বংশগত কারণে দেরিতে কথা বলা শুরু করতে পারে।
মস্তিষ্কের জন্মগত ত্রুটি।
প্রসবকালীন জটিলতা।
প্রসবোত্তর স্বল্পকালীন অসুখ যেমন - ভীষণ জ্বর, খিঁচুনি, জীবাণু সংক্রমণ, মস্তিকের ভেতর জীবাণু সংক্রমণ ইত্যাদি শিশুর কথা বলার বাধা হতে পারে।
জিহ্বার ত্রুটির কারণে অনেক শিশু ঠিকমতো উচ্চারণ করতে পারে না।
শিশুরা অনুকরণপ্রিয়। অনেক সময় দেখা যায় বড়রা শিশুদের সাথে ঠিকমতো কথা না বললে শিশুরা ভুল উচ্চারণ শিখে থাকে।
শিশুর মানসিক প্রতিবন্ধকতা থাকলে অর্থাৎ বুদ্ধির মাত্রা কম হলেও শিশু দেরিতে ভাষা শেখে।
শিশুর সামনে ঝগড়া বা উচ্চারণ বেশি মাত্রায় করলে তাদের কথা জড়িয়ে যাওয়ার আশংকা থাকে।

করণীয় :

শিশুর কথা বলার বয়স হওয়া সত্ত্বেও মুখে বুলি না ফুটলে দ্রুত ডাক্তার দেখানো উচিত। আবার কোনো শারীরিক বা মানসিক সমস্যা না থাকলেও অনেক শিশু দেরিতে কথা বলা শুরু করে বা বলেই না। সেক্ষেত্রে কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করে শিশু কথা বলাকে ত্বরান্বিত করা যেতে পারে। যেমন -

শিশুর সাথে কথা বলুন :
পরিবারের সদস্যরা শিশুর সাথে শুদ্ধ উচ্চারণে প্রচুর কথা বলুন। শিশুকে এমন প্রশ্ন করুন যার উত্তর সে ছোট ছোট শব্দ বা বাক্য অথবা অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে দিতে পারে। অনেকেই শিশুকে টিভি দেখতে বসিয়ে দেন। তা না করে তাকে গল্পের বই পড়ে শোনান।

গান বা ছড়া শোনান :
শিশুকে ছড়া বা গান শুনিয়ে ঘুম পাড়ান। গানের অর্থ না বুঝলেও গান ছুঁয়ে যায় শিশুর কোমল হৃদয়ও। শিশুকে গান শোনান বা ছন্দোবদ্ধ ছড়া-কবিতা শোনান। নিজে না পারলে মিউজিক সিস্টেমের সাহায্য নিন। আপাতদৃষ্টিতে এটা শুধুমাত্র বিনোদনের মাধ্যম মনে হলেও শিশুর কথা পরিষ্কারভাবে বলতে সাহায্য করবে।

শিশুর বেড়ে ওঠার পরিবেশ অনুকূল রাখুন :
শিশুকে সুস্থ্য ও স্বাভাবিক পরিবেশে বেড়ে উঠতে দিন। শিশুর সামনে তর্ক বা ঝগড়া করবেন না। কোনো ব্যাপার দ্বিমত হলে তা শিশুর সামনে প্রকাশ করবেন না।

উচ্চারণ শুধরে দিন :
শিশুর ভুল উচ্চারণে ভাঙা ভাঙা কথা শুনতে ভালো লাগলেও তাতে উত্‍সাহ দেবেন না। শিশুর ভুল উচ্চারণ শুনে খুশি না হয়ে বরং তা তত্‍ক্ষণাত্‍ শুধরে দিন।

বাচ্চাকে সময় দিন :
শিশুর মা-বাবা যতটা সম্ভব শিশুর সাথে সুন্দর সময় কাটান। বাচ্চা যেন হীনমন্যতায় না ভোগে বা নিজেকে অসহায় না ভাবে সেদিকে খেয়াল রাখুন।

৩। যেসব শিশু কথা বলা শিখছে না বা দেরিতে বলছে বা ভালো করে বলতে পারছে না- তাদের অভিভাবকদের কিছু কাজ করার আছে। অনেকেই জানি না, স্পিচ থেরাপির সহায়তা নিলে শিশুটি দ্রুত কথা বলা শিখতে পারে। যথাসময়ে কথা বলা না শিখলে স্কুল থেকে শুরু করে সামাজিক কর্মকাণ্ডে শিশুটি অনগ্রসর হয়। যা তাকে সারা জীবন বহন করতে হয়।

যেসব শিশু দেরিতে কথা বলে বা ঠিকমতো কথা বলা শিখছে না তাদের ক্ষেত্রে প্রতিটি কাজে একটি নির্দিষ্ট শব্দের ওপর গুরুত্ব দিয়ে কথা বলতে হবে। যেমন- শিশুকে গোসল করানোর সময় 'গোসল' শব্দটির ওপর অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। আবার বাইরে যাওয়ার সময় 'যাব' শব্দটি বারবার বলে শিশুকে বোঝাতে হবে।

শিশু যদি ইশারার সাহায্যে যোগাযোগ করতে চায়, তবে সেই ইশারার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ এবং অর্থবোধক শব্দ যোগ করে তাকে কথা বলতে উৎসাহিত করুন। যেমন- শিশু বিদায় জানাতে হাত বাড়ালে আপনি বলুন 'বাই বাই' অথবা 'টা টা'।

শিশুর সবচেয়ে পছন্দের জিনিসটি একটি নির্দিষ্ট উচ্চতায় রেখে (শিশুর নাগালের বাইরে) তাকে জিনিসটি দেখান। যখন সে ওটা নিতে চাইবে বা আপনার হাত ধরে টানবে, তখন আপনি জিনিসটির নাম একটু স্পষ্টভাবে বলুন। যেমন- যদি 'গাড়ি' হয় তবে বলুন 'ও, তুমি গাড়ি খেলতে চাও?' অথবা 'এই যে তোমার গাড়ি।'

শিশুর অনুকরণের দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর বেশি গুরুত্ব দিন। যেমন- শিশুর হাসি বা মুখভঙ্গির অনুকরণ করে দেখান। তারপর আপনার সঙ্গে শিশুকে অন্যান্য শারীরিক অঙ্গভঙ্গি যেমন- হাততালি দেওয়া, হাতের উল্টোপিঠে চুমু খাওয়া ইত্যাদি করান। পাশাপাশি উচ্চারণ স্থান দেখিয়ে বিভিন্ন শব্দ অনুকরণের ওপর গুরুত্ব দিন।

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, শিশু মূল শব্দের আগে অনেক ক্ষেত্রে আগে প্রতীকী শব্দ ব্যবহার শুরু করে। তাই এ ক্ষেত্রে আপনিও প্রাথমিকভাবে প্রতীকী শব্দ ব্যবহারে বেশি গুরুত্ব দিন। যেমন- গাড়ি বোঝাতে পিপ্পিপ্। বেড়াল বোঝাতে মিঁউ মিঁউ ইত্যাদি।

যেসব শিশু মাঝেমধ্যে দু-একটি শব্দ বলছে, তাদের শব্দভাণ্ডার বৃদ্ধির ওপর জোর দিন। যেমন- শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ (মাথা, হাত, পা), বিভিন্ন জিনিসের নাম (বল, গাড়ি, চিরুনি), বিভিন্ন ক্রিয়াবাচক শব্দ (খাব, যাব, ঘুম) ইত্যাদি শেখান।

দুই বছরের বড় শিশুদের ক্ষেত্রে সবচেয়ে পরিচিত এবং অতি পছন্দের ৮-১০টি ছবি নিয়ে একটি বই তৈরি করুন। প্রতিদিন একটু একটু করে বই দেখিয়ে শিশুকে ছবির মাধ্যমে নাম শেখাতে পারেন।

যেসব শিশু চোখে চোখে তাকায় না এবং মনোযোগ কম, আবার কথাও বলছে না, তাদের ক্ষেত্রে আগে চোখে চোখে তাকানো ও মনোযোগ বৃদ্ধির বিভিন্ন কৌশলের ওপর গুরুত্ব দিন। যেমন- লুকোচুরি খেলা, কাতুকুতু দেওয়া, চোখে চোখে তাকিয়ে শিশুর পছন্দের ছড়াগান অঙ্গভঙ্গি করে গাওয়া।

আপনার কথা না বলা শিশুটির সামনে অন্য একটি শিশুর 'দাও' বলার পরে পছন্দের জিনিস দিচ্ছেন এমন কৌশল দেখিয়ে তাকে কথা বলার গুরুত্ব বোঝাতে পারেন।

যা করবেন না

কথা বলার জন্য অত্যধিক চাপ যেমন- 'বল, বল' ইত্যাদি করা যাবে না।

শিশুকে অপ্রাসঙ্গিক অথবা অতিরিক্ত প্রশ্ন করা থেকে বিরত থাকুন।

একসঙ্গে অনেক শব্দ শেখানোর চেষ্টা করবেন না, এতে শিশু কথা বলার আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে। স্পিচ অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপি কিছুটা দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসাব্যবস্থা। সঠিক সময়ে এই পদ্ধতির কৌশলগত প্রয়োগ হলে শিশু কথা এবং যোগাযোগের অন্যান্য মাধ্যমে উন্নতি করবেই।

অনেক মা-বাবাই ভাবেন, অন্যান্য স্বাভাবিক শিশুর সঙ্গে তাঁদের পিছিয়ে পড়া শিশুর খেলার পরিবেশ করে দিলেই আপনা আপনিই কথা শিখে যাবে। কিন্তু মনে রাখবেন, এমনটা না-ও হতে পারে। তাই নিজেরা বাড়িতে চেষ্টা করুন, প্রয়োজনে স্পিচ থেরাপির সহায়তা নিন।

বিভাগীয় প্রধান, স্পিচ অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ থেরাপি ইউনিট, আইএনডিআর, ঢাকা।

[email protected]

****** ভাই ব্যস্ত তাই কোন কিছু গুছিয়ে কিংবা লিঙ্ক ঠিক করে দিতে পারলাম না। ****

৫| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৩

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: আইনস্টাইন নাকি ৫ বছর বয়সে কথা বলেছিল । =p~

৬| ০২ রা জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৪

সুলতানা রহমান বলেছেন: তার সাথে বেশি বেশি কথা বলতে থাকুন।
কোন কোন বাচ্চা একটু দেরিতেই কথা বলে।

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫৫

গণদাবি বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই ভালো থাকবেন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.