নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এখন বিশ্ব আমার হাতের মুঠোয়

গাজী কামরুল ইসলাম

My name is Md. Kamrul Islam. I completed MBA from Stamford University of Bangladesh. Now I'm Officer of Eastern Bank Ltd.

গাজী কামরুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

মফিজ ক্যানভাসার -৩১

০৩ রা এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৪:০১

৩১

আজ মফিজ মিয়ার ক্যানভাস স্থল উত্তরা আজমপুর ওভার ব্রিজের পাশে। মাঝখানে কয়েকদিন ক্যানভাসিং করেনি। ক্যানভাসিং ব্যবসায় স্বাধীনতা আছে। যখন ভাল লাগে করা যায়, না লাগলে ছুটিতে থাকা যায়। মফিজ মিয়ার একবার চাকরী হয়েছিল গার্মেন্সে। কিছুদিন করার পর টিকিতে পারে নাই। বাধ্যবাধকতার কোন কাজে মন বসে না তার। অনেক কাজ করে দেখেছে ক্যানভাসিং ছাড়া অন্য কাজে মন বসাতে পারে নাই।

আজ ক্যানভাসিং ছোট্র একটি ঘটনা দিয়ে শুরু করলাম। ফয়সাল নামে একলোক অনেক বয়সেও বিয়ে করে নাই। এলাকায় অনেকে জিজ্ঞাসা কওে, ‘কি, বুড়ো হলে বিয়ে করবে ?’ উত্তরে সে কিছু বলে না। একদিন তার বাবা মারা গেলে মা বললো, ‘বাবা আমি আর এই বয়সে সংসার সামলাতে পারছি না। তোমাদের রেঁধে খাওয়াতে পারছি না। এখন আমার ঘরে একটা বৌ দরকার।

ছোট ভাইয়েরা বললো, ‘ভাইয়া আমাদের ঘরে এখন একটা বৌয়ের দরকার। তোমার জন্য মেয়ে দেখি ?’

এ কথা শুনে ফয়সাল বললো, ‘না, আমি এখন বিয়ে করবো না। তোমাদের মধ্য কেউ কর।’

ভাইয়েরা বললো, ‘বড় ভাইকে রেখে ছোট ভাইর বিয়ে! সমাজের লোক কি বলবে ? ’

সে বললো, ‘লোকে যা বলে বলুক। আমাদের সমস্যার সমাধান হলেই হবে।’

ছোট ভাইরা বললো, ‘তুমি বিয়ে করবে না কেন ?’

সে বললো, ‘আমি বিয়ে করলে তোদের দেখবে কে ? ঘরে বৌ এলে বাবা-মা, ভাই-বোনের দ্বায়িত্ব নেওয়া যায় না।’

এ কথা শুনে সবাই বললো, ‘খোড়া যুক্তি।’

একদিন তাদের বাড়ির সামনের চায়ের দোকানদার জিজ্ঞাসা করলো, ‘ফয়সাল ভাই, ঘরের সবাই চাচ্ছে আপনাকে বিয়ে করাতে। রাজি হচ্ছেন না কেন ?’

দোকানদারের কাছে বললো আসল কথা।

ভাইয়েরা আসল কথা কি ?

আসল কথা হলো, বৌকে আগলে রাখতে যে শক্তির দরকার তা তার নাই। নিজে দেখতে শুনতে পালোয়ান কিন্তু বৌ না থাকার ভয়। দোকানদার তাকে বললো, ‘শিঘ্রই ডাক্তার দেখান।’

সে বললো, ‘অনেক ডাক্তার দেখানো হয়েছে কোন কাজ হচ্ছে না।’

একদিন চৈত্রের ভরদুপুরে শ্যামবাজারে বটগাছের নিচে বসে লেকচার দিচ্ছি আর ফয়সাল সাহেব দাড়িয়ে আমার লেকচার শুনছে। বুঝতে পেরেছি যৌবনী শক্তি ফিরে পাওয়ার জন্য এদিক ওদিক ঘুরে শেষে আমার সামনে এসে হাজির। তাকে বললাম, ‘ভাই, কোন চিন্তা নাই। আমার হাতে যেহেতু পড়েছেন আপনার মুশকিল আছান হবেই ইনশাল্লাহ।’

সাত দিনের ঔষধ দিলাম। সেই লোক গনাগনা সাতদিন পর আবার আমার কাছে আসলো নিজের বিয়ের দাওয়াত নিয়ে। আমি খুশি হয়ে আল্লাহ দরবারে তার জন্য দোয়া করলাম। আজও তার সাথে আমার যোগাযোগ হয়। এতসব কিসের জন্য বলেন ?

‘আমার ঔষধের গুনে। ভাইয়েরা, আপনারা যেন এই সমস্যায় না পড়েন তার ব্যবস্থা আছে আমার কাছে। কি ব্যবস্থা আছে তা আমি একটু পরে বলছি। আগে একটা খেলা দেখেন। এই ভাইয়ের নাম আতাহার

আলী। সে আপনাদের একখানা যাদু দেখাবে।’

আতাহার আলী এক জনের কাছে একটি সাইকেল চাইলো। লোকটা সাইকেল নিয়ে দাড়িয়ে আমার লেকচার শুনছে। সে আনন্দে গদগদ হয়ে বললো, ‘আমার সাইকেল দিয়ে যাদু দেখাবেন ?’

আতাহার:‘ইয়েস, আপনার সাইকেল দিয়ে যাদু দেখাবো।’

আতাহার আলী সাইকেলের একটা জটিল যাদু যানে। সাইকেলে বসা অবস্থাতেই সে ম্যাচবাতি দিয়ে সিগারেট ধরাবে। মশার কয়েল ধরাবে। ক্যানভাস স্থলের চারপাশে দাগকাটা লাইনের উপড়ে বিশবার সাইকেল দিয়ে চক্কর দিবে।

সাইকেলের যাদু দেখিয়ে অনেক লোক জড় করে ফেললো আতাহার আলী । সে অতি চমৎকারভাবে সাইকেলে চড়েই সিগারেটে আগুন ধরালো। মশার কয়েল ধরালো। সাইকেলটা পায়ের কেঁচকির ভিতরে রেখে সিগারেটায় কয়েকটা টান মারলো। সাইকেলের সিটে বসে জ্বলন্ত সিগারেটটা একটা তাসের উপড় দাড় করিয়ে রাখলো। চারপাশে একটা চিকন দাগটানা রেখার উপড় দিয়ে বিশবার নিখুঁতভাবে চক্কর দিল। মন্ত্রমুগ্ধেরমত অনেকেই আতাহার আলীর সাইকেলের যাদুটা দেখলো। যাদু দেখানো শেষ হলে আবার মফিজ মিয়া ক্যানভাসিং শুরু করলো। কয়েকটি সালসার বোতল বের করে রাখলো সামনে।

‘সম্মানীত ভাই ও বোনেরা আমার গল্পটি যারা শুনেছেন এবং যারা শুনেন নাই সবার জন্য বলছি, আপনার যে কোন যৌন সমস্যার চিরস্থায়ী সমাধান দিবে আমার তিন বোতল সালসা। জীবনে বড় বড় ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনের অনেক নামী-দামী ঔষধ খেয়েছেন কিন্তু ঘরের বৌকে সুখী করতে পারেন নাই তাদের জন্য বলছি, এক কোর্সই সব সমস্যার সমাধান। আপনার বৌ আপনাকে দেবতা মনে করবে। লজ্জা রাখবেন না, যার প্রয়োজন নির্দ্বিধায় নিয়ে নেন। আমার কাছে আরো পাবেন বাতের মলম ও উপকারী পাথরের আংটি।

হঠাৎ এক বিকট আওয়াজে সবকিছু স্তব্ধ হয়ে গেল। কিছু লোক দৌড়া-দৌড়ি করছে। দু’ তিনজনে কি নিয়ে যেন ঝগড়া-ঝাটি করছে। অনেকের হাতে অস্ত্র। একজনের হাতে চাপাতি। সে একজনকে তাড়া করছে। নাগালে পাইলেই কোপ। কয়েকটা বোম ফাঁটার আওয়াজ। মানুষজন যে যেদিকে পারছে পালাচ্ছে। কেউ কেউ আরো সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। হয় মারামারি করতে, না হয় মারামারি দেখতে। আমি আর আতাহার আলী সব কিছু নিয়ে দৌড়াচ্ছি। ঢাকাতে প্রায়ই এরকম হয়। রাস্তা-ঘাটে মানুষ মানুষকে গুলি করে হত্যা করে। এক শ্রেণীর লোক এসবকে আরো উসকে দেয়। খবরের কাগজে বের হয় অমুক জায়গায় মিছিলে মিটিংয়ে মানুষ খুন।

গোলমালে আমার পাঁচ বোতল সালসা ও তিনটা আংটি চুরি হয়ে গেছে। সারাদিন পরিশ্রম করেও আজ লোকসান। এ রকম অবস্থায় মাঝে মাঝে পড়তে হয়।



আগের প্রশ্নের উত্তর: জালাল উদ্দিন (পাকিস্তানের)

প্রশ্নঃ ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ সেঞ্চুরী করেন কে ?

উত্তর:

আপনার উত্তরটি সঠিক হয়েছে কিনা পরের অধ্যায়ের শেষে মিলিয়ে নিন ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.